• If you are trying to reset your account password then don't forget to check spam folder in your mailbox. Also Mark it as "not spam" or you won't be able to click on the link.

Erotica অসম বয়সের বসন্ত

5
0
2
পর্ব :১

{***গল্প শুরু করার আগে আমি কিছু বলেনেই। আমার মনে হয় এটা আপনাদের জানা থাকা দরকার। আমি কোনো লেখক নই। আমার লেখা লেখির কোনো অভিজ্ঞতা নেই। আমি অনেক চটি গল্প পড়ি সেখান থেকেই আমার এই চেষ্টা। আমার নাম দেখার পর অনেকে ভ্রু কুঁচকে ফেলতে পারেন বা বলতে পারেন এইটা কেমন নাম? আসলে এই নামের পিছনের কারণ হলো আমার বয়স্ক মহিলাই বেশি ভালো। এখন অনেকে বলতে পারেন আপনার কি কম বয়সী মেয়ে ভালো লাগে না? লাগে তা লাগবে না কেন কিন্তু ২৫ থেকে ৪৫ এই বয়সের মহিলারা আমার একটু বেশি ভালো লাগে। আর তাঁদের নিয়ে ফ্যান্টাসি করতে ভালো লাগে।আর আমার গল্পে কতটা যৌনতা থাকবে সেটা বলতে পারছি না কারণ আমি একটু রোমান্টিক ধরণের গল্প লেখার চেষ্টা করবো। যাই হোক অনেক কথা হলো। গল্প কেমন লাগছে। ভালো না খারাপ সেটা জানাবেন।***}



মধ্যরাত মাথার ওপরে ফ্যান ঘুরছে নিজের গতিতে। ফ্যানের নিচে শুয়ে আছে ৩৫ বছরের এক যৌবনা এক নারী। সারা শরীরের মধ্যে একটি সুতো নেই। নগ্ন হয়ে তার নিজের ২ পা ফাঁক করে নিজের যোনির ভেতরে এক পুরুষ লিঙ্গের মতো দেখতে একটা খেলনা যা বার বার নিজের ভেতর ঢুকাছে আর বের করছে। সারা শরীর ঘামে ভিজে গেছে।
"আহঃ আহঃ উহঃ আহঃ দাও দাও শেষ করে দাও আমাকে। আহঃ আমি আর পারছি না।"
চাপা গোঙানির ওয়াজ চারদিকের পরিবেশ আরো উষ্ণ করে দিচ্ছে। আস্তে আস্তে নিজের যোনির ভেতর সেই খেলনার চলাচল বাড়িয়ে দিলো। সেই খেলনা নিজের ২ হাত দিয়ে নিজের যোনিতে প্রবেশ করাতে লাগলো। এই ভাবে কিছুক্ষন করার পর নারীটি মৃগী রোগীর মতো কাঁপতে লাগলো। আর রাগমোচন করলো। রাগমোচন করার পর ঐ ভাবেই পরে রইলো নারী দেহটি। এই নারী দেহটি হলো নায়নী দত্ত এর। নায়নী ৩৫ বছর বয়সের এক পূর্ণ যুবতী। যার শরীরের প্রত্যেক ভাঁজে আছে যৌনতার আবেদন। ৩৫ বছরের নায়নীকে ২৭ বা ২৮ এর বলেই অনায়াসেই চালিয়ে নেয়া যাবে। বয়সের ছাপটা নিজের ওপর পড়তে দেয়নি। নিজেকে ভালোই মেনটেইন করেছে। নিজের জীবন নিয়ে ভালোই সুখে আছে। সবই আছে নায়নীর কাছে শুধু একটা ভালোবাসার মানুষ নেই, শুধু রাত হলে তাকে তৃপ্ত করার মানুষটি। সারাদিন কি হলো এই কথাটা বলার মানুষটার খুব অভাব নায়নীর জীবনে। ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলো রাত অনেক হয়েছে, কালকে অফিস আছে। তাই আর দেরি না করে ঘুমের সাগরে ডুব দিলো নায়নী।

ঘুম ভাঙলো ফোনের অ্যালার্ম শুনে। দেখে ঘড়িতে সময় ৬:৩০ আর শুয়ে না থেকে। বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়ে এসে এক্সসেরসাইজ করতে শুরু করলো। নিজের শরীরকে এই সব এক্সসেরসাইজ এর মাধ্যমে ধরে রেখেসে। যতই কাজ থাকুক নিজেকে সময় দিতে কখনোই ভুলে না। আগে অন্যের জন্য নিজের অনেক সময় আর নিজের অনেক ক্ষতি করেছে কিন্তু এখন আর সে সব করে না নায়নী। এক্সসেরসাইজ করার পর এক কাপ কফি করে আর হালকা ব্রেকফাস্ট করেই রওনা হয়ে গেলো অফিসের জন্য।


চলবে
কেমন লাগছে জানাবেন আপনাদের রিভিউ এর ওপর পরের পর্ব আসবে
 
5
0
2
পর্ব ২


কলকাতার এক সুনামধন্য কোম্পানিতে কাজ করে নায়নী। বেতন আহামরি না হলেও খুব বেশি খারাপ বলা যাবে না। এইখানে মানুষরুপী শকুন গুলো নেই যারা ওর শরীরকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে চায়। তাই এইখানে বেতন কম হলেও এইখানে কাজ করতে ভালোবাসে নায়নী। অফিসে গিয়ে নিজের ডেস্ককে বসার কিছুক্ষন পরই দরজায় টোকা পড়লো তাকিয়ে দেখলো আর কেও না। তাঁর টিম এর সদস্য রুপা। মেয়েটা চঞ্চল বয়স কতই বা হবে এই ২৫ মেয়েটার শরীরের গঠন ভালো একটু নিটোল বা ইংলিশে যাকে বলে chubby, এক বার দেখার পর আরেকবার দেখার জন্য মানুষ ঘুরে তাকায়। রুপা বললো,
"আসবো দিদি।"
নায়নী ও ছোট্ট একটা হাসি দিয়ে বললো,
"আসো।"
রুপা আসার পরেই বললো,
"সৌমিত্র স্যার তোমাকে একবার দেখার করতে বলেছে।"
"আমাকে এতো সকালে?"
কথাটা বলে কিছুটা ভ্রু কুচকিয়ে ফেললো নায়নী। রুপা তখন বললো,
"জরুরি কথা আছে বলে আমাকে বললো।"
"ঠিক আছে যাও আমি যাচ্ছি।"
"ঠিক আছে দিদি।"
এই বলে রুপা বিদায় নিলো। আস্তে করে নিজের ডেস্ককে থেকে উঠে সৌমিত্র রায়ের কেবিনের সামনে গিয়ে বললো,
"আসবো স্যার।"
সৌমিত্র রায় নায়নীকে দেখার পর এক গাল হেসে দিয়েই বললো,
"আরে নায়নী আসো আসো বাইরে দাঁড়িয়ে কেন।"
নায়নী এসে ভেতরে বসলো। নায়নী বসার পর বললো,
"বলো কি খাবে তোমার জন্য ছা কফি কিছু আনতে বলি।"
"আরে স্যার না না থাক। কিছুই আনতে হবে না। আপনার। "
হাসি খুশি মানুষ সৌমিত্র রায়। বয়সই বা কতো হবে ৫০ এর একটু কম বা বেশি। নায়নীকে তাঁর নিজের মেয়ের মতোই স্নেহ করে সৌমিত্র রায়। এই কোম্পানিতে থাকার একটা মাত্র কারণ হলো সৌমিত্র রায়। নায়নী জিজ্ঞেস করলো,
"স্যার আমাকে এতো সকালে ডাকলেন যে জরুরি কিছু?"
সৌমিত্র রায় তখন বললো,
"হ্যা আমি খেয়াল করেছি তোমার টিমের মধ্যে মানুষ একজন কম অন্য সব টিমে যেখানে পাঁচজন করে তোমার টিমে চারজন করে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি তোমাদের টিমে নতুন একজন মেম্বার যোগ করবো।"
এই কথা শোনার সাথে সাথে নায়নী বলে উঠলো,
" কিন্তু স্যার আমরা তো ঠিকই আছি একটা নতুন মেম্বার কি খুব দরকার? "
এই কথা শুনে সৌমিত্র রায় হেসে দিলো আর বললো,
"হাহা আমি বুঝতে পেরেছি তোমার ভয় কোন জায়গায়। আমি জানি তোমরা কম মানুষ নিয়েও সবচেয়ে ভালো করা টিম। কিন্তু একটি টিমমেম্বার কম থাকার দরুন তোমাদের সবার একটু বেশি কাজ করতে হয় সেটার জন্যই আমার এই ডিসিশন। আর তুমি ভাবছো স্যার কি আবার কোনো নতুন লোক আমাদের টিমের মধ্যে আনবে না তো? "
এই কথা শোনার পর নায়নী শুধু হালকা মাথা নাড়ালো যা বুঝালো ও ঐ কথাটাই ভাবছিলো। সৌমিত্র রায় তখন বললো,
"চিন্তা করো না যে আসবে তোমাদের টিমে আসবে তাঁর এক্সপেরিয়েন্স আছে কাজের। আমি একটা মিটিং এ ওদের কোম্পানিতে গিয়েছিলাম সেখানেই দেখা। আমি ওকে বলেছিলাম ও যদি কখনো চাকরি পরিবর্তন করার চিন্তা ভাবনা করে তাহলে যেনো আমার সাথে যোগাযোগ করে। আর ভাগ্যের কি পরিহাস কিছুদিন আগেই ও আমাকে ফোনে বললো আমাদের অফিসে কোনো ভেকেন্সি খালি আছে কিনা। আমি শুধু একটা নিলাম আর ওকে সঙ্গে সঙ্গে হ্যাঁ বলে দিলাম।"
এইসব কথা আর নায়নী শুনলো। আর জিজ্ঞেস করলো,
" তাহলে উনি আগের অফিসে কেন ছাড়লো? "
সৌমিত্র রায় বলল,
"সেটা তুমি তার কাছ থেকে জেনে নিও।"
নায়নী আর কিছু টুকটাক কথা বলে কেবিন থেকে বেরিয়ে এসে পড়ল।
ঘড়িতে সময় তখন দশটা বাজে, রুপা জানালো একজন তার সাথে দেখা করতে এসেছে। নায়নীর বুঝতে বাকি রইলো না, এইটা সেই মানুষ যার কথা বলেছিলো সৌমিত্র স্যার। রুপাকে বললো তাকে যেন পাঠিয়ে দেয়। রুপা যাওয়ার কিছুক্ষন পরেই নায়নীর দরজায় দাঁড়িয়ে বললো,
"আসতে পারি?"
নায়নী একবার তাকিয়ে দেখে বললো,
"জ্বী আসুন।"
ছেলেটি ভেতরে আসলো, আর চেয়ারে বসলো।
নায়নী দেখলো একটা ছেলে বয়স কতই বা হবে ২৫ কি ২৬, পুরো ক্লিন শেভ করা। যেখানে অন্য লোক সবার আগে এসেই নায়নীর বক্ষযুগলের দিকে তাকায় সেখানে ছেলেটি সোজা ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। নায়নীও দেখলো ছেলেটির কক্ষে অন্য সব পুরুষদেড় মতো লালসা বুঝা যাচ্ছে না। নায়নী আর বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারলো না। বললো,
"জ্বী আপনার নাম কি?"
"আমার নাম আকর্ষ ব্যানার্জী। এই যে আমার সিভি।"
নায়নী কিছুটা অবাক হলো। ছেলেটির চাকরি কালকেই হয়ে গেছে কিন্তু আজকেও সিভি নিয়ে এসেছে। কিছুটা অভাব লাগলো তাও কিছু বললো না। নায়নী দেখলো ছেলেটির বয়স ২৭, দেখে তা বুঝা যায় না। আর আগের কোম্পানিতে খুব পজিশনেই ছিলো নায়নী ধারণা করলো বেতনও নেহাতই মন্দ নয় তাহলে কেন ছাড়লো। টেকি সাথে সাথে সে আকর্ষকে প্রশ্ন করলো,
"আপনার পজিশন তো ভালো ছিলো আমি মনে করি বেতনও খুব খারাপ ছিলো না। তাহলে চাকরিটা কেন ছাড়লেন?"
এই কথা শোনার পর আকর্ষ বললো,
"জ্বী আপনি যা বলেছে সব ঠিক বলেছেন কিন্তু আমি যেখানে ছিলাম তা এই জায়গা থেকে অনেকটাই দূরে। আর আমার মা ছাড়া আমার কেও নেই তারও বয়স ও হয়েসে একা থাকতে হয় আর যদি কিছু হয়ে যায় সেই ভয় থেকেই এই জায়গায় জব নেওয়া।"
এটা শোনার পর নায়নী বলে উঠলো,
"এখানে তো ঐ জায়গার থেকে বেতন কম সেটাতে আপনার পোষাবে তো? "
"জ্বী সেটা চলে যাবে। ২ জন মানুষের খরচ খুব বেশি না। আমার সমস্যা হবে না।"
"ঠিক আছে আপনার সমস্যা না হলে আমারো সমস্যা নেই। স্বাগতম আমাদের ছোট্ট টিমে। আশা করি আপনার ভালো লাগবে।"
"জ্বী আমিও আশাবাদী।"


শুরু হলো এক নতুন অধ্যায় কি হবে এর পর। নায়নীর জীবনে কি হতে চলেছে?
 
Last edited by a moderator:
5
0
2
পর্ব :৩

"আসুন আপনাকে আমাদের টিম মেম্বারদেড় সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।"
এই বলে নায়নী উঠে দাঁড়ালো।
"ঠিক আছে চলুন।"
নায়নীর পিছনে পিছনে আকর্ষ যেতে লাগলো। একটু দূরে যাওয়ার পরেই দেখলো। কয়েকটা ছোট ছোট ডেস্ক এক সাথে সেখানে ২ জন ছেলে একজন মেয়ে কাজ করছে। নায়নী এসে সবাইকে বলল
"শোনো সবাই এ হচ্ছে মিস্টার আকর্ষ। উনি আমাদের নতুন টিম মেম্বার। আজকে থেকে উনি আমাদের সাথেই কাজ করবে। "
এই কথা শোনার পর,
ঐ ৩ জন আকর্ষ এর কাছে আসলো আর পরিচিত হতে লাগলো, সবার আগে মেয়েটি আসলো,
"হাই আমি রুপা।"
আকর্ষ ও খুব সুন্দর করে বললো,
"হ্যালো। আকর্ষ।"
মেয়েটির দিকে আকর্ষ ভালো করে খেয়াল করে দেখলো। মেয়েটি দেখতে ভালো তথাগত সুন্দরী বলতে যা বুঝায় তাই, ফর্সা লম্বা চুলও বড়ো, আর কাপড় পড়ছেও মর্ডান মিনি স্কার্ট আর শার্ট, শার্টএর সবার ওপরের বোতাম দুটো খোলা, যা দিয়ে তাঁর বিশাল বক্ষযুগল ভালোই বুঝা যাচ্ছে।নিজেকে অনেকটা আবেদনময়ী হিসেবে প্রকাশ করেছে, একে দেখলেই যে কেও একবারের জায়গায় আরেকবার দেখবেই। আকর্ষ এইসব নিয়ে বেশি মাথা ঘামালো না। তারপর একটা ছেলে আসলো,
"হাই। আমি কৌশিক।"
"হ্যালো। আমি আকর্ষ।"
এর পর আরেকটা ছেলে এলো,
"হাই। আমি জয়দেব।"
"হ্যালো। আকর্ষ।"
সবার পরিচয় পর্ব শেষ হলে, নায়নী সবার উদ্দেশ্য করে বলে,
"আজকে থেকে মিস্টার আকর্ষ আমাদের সাথেই কাজ করবে তার আগে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে আশা করি তাঁর এইখানে খুব ভালো সময় যাবে। আর তোমরা তাকে হালকা কাজ বুঝিয়ে দিও। আর কোনো দরকার হলে আমাকে জানিয়ো।"
সবাই এক সাথে জ্বী ম্যাম বলে উঠলো।
নায়নী তাঁর কেবিনে চলে গেলো। নায়নী চলে যাওয়ার পর, কৌশিক আসলো এসে বললো,
"আমাদের অফিসে তোমাকে স্বাগতম। আশা করি তোমার খুব ভালো লাগবে আশা করি।"
আকর্ষ ও হেসে বললো,
"থ্যাংক ইউ।"
তারপর আকর্ষকে ওর ডেস্ক দেখিয়ে দেওয়া হলো।
আকর্ষ নিজের ডেস্ক এ গিয়ে নিজের মন মতো নিজের ডেস্ক গুছাতে লাগলো। ডেস্ক গুছাতে গুছাতে আর কাজ গুলো বুঝে নিতে সময় পেরিয়ে গেছে কোন দিক দিয়ে সেটা আকর্ষএর খেয়াল নেই। জয়দেব এসে আকর্ষকে বলে,
"কি ভাই তুমি এখনও ডেস্কে বসে আছো। এই দিকে যে লাঞ্চটাইম শেষ হতে চললো সে দিকে কি খেয়াল আছে।"
এই কথা শোনার পর আকর্ষ খেয়াল করলো,
ঘড়িতে তখন বাজে ২ টা বেজে ১০ মিনিট। লাঞ্চটাইম ২টা ৩০ পর্যন্ত। এই দেখার পর।
জয়দেবের দিকে তাকিয়ে ছোট্ট করে হাসি দিয়ে বললো,
"সরি একদম ভুলে গেছি। এইখানে এতো তাড়াতাড়ি লাঞ্চটাইম দেয় সেটা জানতাম না। আর একটা কাজ দেখতে দেখতে একটু দেরি হয়ে গেলো। এই উঠছি।"
এই বলে আকাশ নিজের ডেস্ক ছেড়ে উঠে পড়লো আর জয়দেবের সাথে যেতে লাগলো। ক্যান্টিনে যাওয়ার সময় আকর্ষ জিজ্ঞাসা করলো
" আচ্ছা সবাই চলে গেছে তুমি যাওনি কেন? "
জয়দেব উত্তর দিল
" সত্যি বলতে কি আমার হাতে ছোট্ট একটা কাজ ছিল তার জন্য আমি যেতে পারিনি যখন কাজটা শেষ হয়েছে আমি মনে করছি সবাই আমাকে ছেড়ে চলে গেছে কিন্তু দেখি না তুমি যাওনি। তাই তোমাকে ডাক দিলাম। "
এই কথা শোনার পর আকর্ষ উত্তর দিল,
" আসলে আমার আগের অফিসে লাঞ্চ টাইম আরেকটু দেরিতে ছিল তো যার কারণে আমি মনে করেছি এখনই না কিন্তু এখানে অনেক আগে দেয় তাই আর কি সমস্যা।"
" ও সমস্যা নেই। নতুন জায়গা একটু হয় আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। "
আকর্ষ আর জয়দেব ক্যান্টিনে যাওয়ার পর দেখল রুপা আর কৌশিক একসাথে বসে খাবার খাচ্ছে আর সাথে দুই তিনজন আছে। সেখানেই জয়দেব আর আকর্ষণ গেল। আকর্ষ সেখানে তাদের সাথে পরিচিত হলো, আর খাবার খেতে বসে পড়লো, সেখানেই কৌশিক জিজ্ঞেস করলো,
" আচ্ছা আকর্ষ আমার কাছে একটা প্রশ্ন আছে?"
আকর্ষ কৌশিকের দিকে তাকিয়ে একটু ভ্রু কুচকিয়ে বলল,
" বল কি প্রশ্ন ? "
কৌশিক প্রশ্ন করলো,
"আগে তুমি একটা অফিসে কাজ করেছ তুমি সেখানে কি ছিলে আর সেই চাকরিটাই কেন ছাড়লে।"
আকর্ষ এই কথা শুনে হেসে দিল,
"ও আচ্ছা আমি ঐ খানে টীম লিডার ছিলাম এই বছরটা থাকলে প্রোডাক্ট ম্যানেজার হয়ে যেতাম।"
এই কথা শোনার পর টেবিলে বসে সবাই চোখ বড় বড় করে আকর্ষএর দিকে তাকিয়ে রইল। সবার এরকম ভাবে তাকানো দেখে,আকর্ষ জিজ্ঞাসা করল, "কি হয়েসে?"
রুপা সাথে সাথে বলল,
" তোমার মাথা ঠিক আছে তো? "
"১০০% কেন কোনো সন্দেহ আছে।"
এই বললা আকর্ষ হেসে দিল।
কৌশিক বলল,
মাথা ঠিক থাকলে কেন কেউ টিম লিডারের দায়িত্ব ছেড়ে এখানে এসে পড়বে। আর তোমার আগের অফিসের তো বেতন ও অনেক বেশি ছিলো। "
"হ্যা তা কিছুটা ছিলো বটে।"
"তাহলে ছাড়লে কোনো?"
"আসলে আমার মা একা মানুষ। আমার বাবা নেই। ছোট থেকে মা একা হাতে আমাকে মানুষ করেছে। আমার আগের অফিসে বেতন ভালো ছিলো ঠিকই কিন্তু মা সব সময় বলতো, তাঁর একা একা ভালো লাগে না। আর আমিও ছিলাম বেঙ্গালুরুতে মা আমার রোগী মানুষ। তাকে নিয়ে আমার এতো দূর যাওয়ার আশা করা সম্ভব না। একদিন এক
অফিস পার্টিতে সৌমিত্র দাদার সাথে দেখা। প্রথম পরিচয়েই আমার সৌমিত্র দাদার সাথে খুব ভাব হয়ে গেলো। তাই তাকে বললাম যদি কোনো ভ্যাকেনছি খালি থাকে আমাকে যেনো একটিবার জানায়। তো এই কিছু দিন আগে সৌমিত্র দাদা ফোন দিয়ে বললো, একটা জায়গা খালি কিন্তু বেতন কম। আমি শুধু বলেছি থাক দাদা আমার বেতন দিয়ে কোনো কাজ নেই। আমি কবে থেকে জয়েন করতে পারবো বলুন? আমি আসছি। তারপর কি আগের অফিসে রেসিগ্ন্যাশন দিয়ে এখানে এসে পড়লাম।"
আকর্ষএর কথা শুনে আর কেও কিছু জিজ্ঞেস করলো না। আকর্ষ বললো,
"এই খানে কি স্মোকিং জোন আছে?"
এই কথা শোনার পর আরেকবার সবাই শক খেলো। সবাই হা করে তাকিয়ে আছে, আকর্ষ এর দিকে,
আকর্ষ তা দেখে জিজ্ঞেস করলো,
"কি হলো এইরকম করে তাকিয়ে আছো কেন?"
জয়দেব বললো,
"তুমি স্মোকিং করো?"
"খুব একটা করি না এই দিনে দুই একটা আরকি। তা কেন?"
জয়দেব বললো,
"না আসলে তোমাকে দেখে তো বুঝা যায়না যে তুমি স্মোকিং করো। তাই আর কি?"
"ওঃ আচ্ছা।"
কৌশিক বললো,
"আচ্ছা চলো আমরা যাই সময় শেষ হয়ে গেলে আবার ঝামেলা হবে।"
" হ্যা চলো চলো। "
এই বলে ওরা চলে গেলো। আর রুপা ও অন্যদের বললো ওরা যেন ডেস্কে গিয়ে বসে ওরা আসছে একটু পরেই। এই বলে ওরা চলে গেলো স্মোকিং জোনে।

চলবে
 
Last edited by a moderator:
5
0
2

পর্ব:৪

দেখতে দেখতে প্রথম দিনের অফিস আওয়ার্স শেষ আকর্ষ এর। নতুন জায়গা নতুন মানুষ নতুন পরিবেশ সব মিলিয়ে গুছিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে আকর্ষ এর। বেঙ্গালুরু থেকে এসেছে আজকে ৮ দিন। সাত দিন বাড়িতে থাকার পরেই ৮দিনের দিন অফিসে জয়েন করেছে আকর্ষ। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখলো, সূর্য পশ্চিমের আকাশে ঢোলে পরেছে। আর কিছু সময় পর যে সন্ধ্যা হয়ে যাবে সেটা ভালোই বুঝা যাচ্ছে। তাই নিজের ব্যাগ গুছিয়ে ছিলো। এমন সময় কৌশিক আর জয়দেব আসলো ওর কাছে। কৌশিক বললো
"বাড়িতে কি কোনো কাজ আছে আজকে?"
"নাহ তো কেন?"
"চলো তাহলে আমাদের সাথে সময় কাটাবে তুমি আমাদের নতুন টীমমেম্বার তুমি আসার উপলক্ষে একটু ঘুরে আশা যাক।"
আকর্ষ ও না করতে পারলো না। তাই ওদের সাথে যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে গেলো। তারপর সবাই নিজের কাজ আর ডেস্ক গুছিয়ে বের হতে লাগলো। আকর্ষ বললো তোমরা অফিসের সামনে গিয়ে দাড়াও আমি আসছি। এই বলে আকর্ষ নামতে লাগলো। কৌশিক জয়দেব আর রুপা নিচে নেমে গেলো আর ওরা নিজেদের মধ্যেই আড্ডা দিতে লেগে গেলো আর হাসাহাসি করতে লাগলো। আর মধ্যেই দেখলো নায়নী আসছে তাই দেখে ওরা একটু চুপ হয়ে গেলো। সবাইকে এক সাথে দেখে বললো,
"সবাই এক সাথে যে?"
"আসলে ম্যাম আকর্ষ নতুন এসেছে তো তাই ওর জন্য ছোট্ট একটা পার্টির আয়োজন করেছিলাম আর কি।"
রুপা সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো,
"ম্যাম আপনিও চলুন না আমাদের সাথে।"
এই কথা শুনে নায়নী হেসে দিলো, আর বললো,
" হা হা কি যে বলোনা। আমার কি ঐ বয়স আছে তোমাদের সাথে পার্টি করার। তোমরা যাও। "
তাও ওরা জোড় করতে লাগলো। এমন সময় ওদের পেছনে শোনা গেলো মোটরসাইকেলের একটা জোরালো আওয়াজ। সবাই আওয়াজ লক্ষ্য করে দেখলো কেও একজন একটা মোটরসাইকেল নিয়ে তাঁদের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে ওরা সবাই মনে করলো হয়তো যাওয়ার জন্য রাস্তা চাচ্ছে তাই ওরা রাস্তা দিলো। এইটা দেখে আকর্ষ বুঝলো না কি হলো তাই আকর্ষ নিজের হেলমেট খুলে ফেললো। যখন দেখলো আর কেও না, এইটা আকর্ষ সবাই তখন আকর্ষের পাশে গেলো। সবাই একটু অবাক হলো, কারণ এতো দামি মোটরসাইকেল সচরাচর দেখার যায় না। জয়দেব সাথে বলে উঠলো, এইটা "Kawasaki Ninja ZX-4R না?"
আকর্ষ শুধু বললো,
"হ্যা।"
তখন কৌশিক বললো,
"চলো তাহলে দেরি না করাই ভালো।"
সবাই এক সাথে বলে উঠলো হ্যা। যখন রুপা নায়নীকে ডাকতে যাবে তখন দেখে নায়নী রাস্তায় গিয়ে একেবারে ট্যাক্সি ঠিক করে ফেলেছে। তখন রুপা তাড়াতাড়ি করে কাছে গিয়ে বললো,
"দিদি চলো না আমাদের সাথে।"
নায়নী শুধু একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো,
"যাবো কিন্তু আজকে না আরেকদিন। আজকে তোরা এনজয় কর "
এই বলে একবার আকর্ষের দিকে তাকিয়ে নায়নী চলে গেলো। আকর্ষ বললো,
"তাহলে তোমরা সবাই ট্যাক্সি ঠিক করে উঠে পড়ো আমি তোমাদের সাথে আসছি।"
কৌশিক বললো,
"ঠিক আছে তুমি আমাদেরর পিছনে আসো।"
এই বলে ওরা ট্যাক্সি ঠিক করে উঠে পড়লো। আর আকর্ষ পেছনে পেছনে আসতে লাগলো।

ট্যাক্সি চলছে নিজের আপন গতিতে। আকাশে তাকালে দেখা যায় পশ্চিমের আকাশ লাল হয়ে গেছে, সূর্য যে আর বেশিক্ষণ নেই সেটা বোঝা যায়। পাখিরাও ঘরে ফিরতে শুরু করেছে নিজেদের ডানা ঝাপ্টে। গাড়ির জানালার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে নায়নী ভাবছে, নিজেকে এখন আর একটা মানুষ মনে হয় না। মনে হয় একটা যন্ত্র। যার বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে সব আছে। কথাটা কি আসলেই সত্যি? সত্যি বলতে গেলে না।
নায়নী এখন একা। নায়নীর মা-বাবা গত হয়েছে অনেক আগেই। এক ভাই আছে, সে কাজের জন্য থাকে দিল্লি। বয়সে বড়ো হলেও বোনের কথায় উঠে বসে। ঐ ভাইটা ছাড়া আর কেও নেই। রাত হলে নিজেকে একা লাগে। ঢুকরে কাঁদতে ইচ্ছা করে নায়নীর। নায়নীর টাকা-পয়সা, বাড়ি-গাড়ি থাকলেও ভালোবাসার একটা মানুষ নেই। যে ওকে আগলে রাখবে, শাসন করবে, নিজের মতো করে দেখে রাখবে।
অন্যদিকে ট্যাক্সির পিছনে পিছনে আসছে আকর্ষ। কৌশিক তখন ড্রাইভারের পাশে বসে আছে। কৌশিক পেছন ঘুরে বললো, "আচ্ছা, জয়দেব, আমাকে একটা কথা বলতো?"
"কি?"
"আকর্ষের বাইকটা তো অনেক দামি?"
"হ্যা, অনেক দামি। সুপারবাইক রে ভাই।"
"ইসস! কত সুন্দর বাইকটা!"
"হ্যা, রে ভাই অনেক সুন্দর।"
"টাকা হলে আমিও একটা কিনবো।"
"হ্যা রে ভাই, কিনতে পারবে।"
"হ্যাঁ, বলছিলাম জয়দেব, আকর্ষটা দেখতে বেশ সুন্দর ছেলে।"
"হ্যাঁ রে, তাই মনে হচ্ছে।"
"রুপা কি ভাবছে?"
"জানি না রে, কিছু বলছে না।"
"এইসব বলছিলো জয়দেব আর কৌশিক। আর রুপা দেখছে আকর্ষকে। রুপার এই প্রথম কোনো ছেলেকে দেখে তারপর থেকে মুখ ফেরাতে কষ্ট হচ্ছে।"
ট্যাক্সি ঘরে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। সারাদিন কম ধকল যায়নি তাই আগেই ঘরে এসেই অফিসের জামাকাপড় খুলে ফ্রেশ হতে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়ে এসে পিঙ্ক কালারের নাইটি পরে নিলো। রাতে এই সময়ে নাইটি পরে থাকে নায়নী। চা করবে এর জন্য পানি গরম দিয়েছে। কিন্তু চায়ের পানি গরম দিয়ে অপেক্ষা করছিলো এর মধ্যেই একটা ফোন আসলো নায়নীর ফোনে। ফোন কানে নিয়ে, "হ্যালো" বলতেই।
"তুই আমাকে ভুলে গেছিস।"

এই কথা শুনে অবাকের সর্বোচ্চ সীমানায় পৌঁছে গেলো। নায়নী ফোন তোলার সময় খেয়াল করে দেখেনি কে? ফোনের স্ক্রিনে ভেসে থাকা নাম আর কারো না। নায়নীর বান্ধবী রাখির। রাখি আর নায়নী ২ জনে এক স্কুল ও এক কলেজ থেকেই পড়াশোনা শেষ করেছে। এমন কিছু নেই যে ২ জন ২ জনের ব্যাপারে জানে না। একেবারে বেস্টফ্রেইন্ড যাকে বলে তারা সেটাই। নায়নী আবার ফোন কানে নিয়ে বললো,
"জ্বী আপনি কে? আমি আপনাকে চিনতে পারছি না।"
"এক্টিং বন্ধ কর।"
"তাহলে তুই ও এইটা বলা বন্ধ কর যে আমি তোকে ভুলে গেছি।"
"আমি তো ঐটা মজা করেছি।"
"হ্যা বুঝেছি বল কেমন আছিস?"
"আমি ভালো আছি তুই কেমন আছিস?"
"এইতো যেভাবে দেখেছিলি।"
"অফিস থেকে কখন এসেছিস?"
"এই মাত্র অফিস থেকে এসেই ফ্রেশ হলাম আর এর মধ্যেই তুই ফোন দিলি।"
"আমাকে একটু ফোন দিতে পারিস তো?"
"চাইরে কিন্তু সময় করে উঠতে পারি না, কিন্তু তুই তো দিতো পারিস।"
"জানিস তো আমার ছেলেটা আর স্বামীকে সামলাতে সামলাতে সময় চলে যায়।"
"তা রণ কেমন আছে?"
রণ হলো রাখির ছেলে। বয়স বেশি না। রণ খুব ভক্ত নায়নীর। নায়নী বলতে পাগল রণ।
"রণ আমাকে পাগল করে মারলো। একটুও পড়তে চায় না।"
"বাচ্চা মানুষ একটু বড়ো হোক।"
"হুমম। তা এইভাবে আর কতদিন নায়নী? এইভাবে কি সুখে থাকা যায় "
"কেন কি হলো? আমি তো দিব্বি সুখে আছি।"
"তুই বাইরের দুনিয়াকে বুঝাতে পারিস এই কথা বলে কিন্তু আমাকে বুঝাতে পারবি না।"
"আমি ভালো আছি তুই বেশি চিন্তা করছিস।"
"নায়নী কারো জন্য জীবন থেমে থাকে না সেই ঘটনার ঘটে গেছে আজকে অনেক দিন তুই এইভানে নিজেকে শেষ করে দিস না। তোর একটা জীবন আছে সেটাকে বাঁচতে শেখ। ভেবে দেখ একবার "
"ঠিক আছে বাবা আমি ভেবে দেখবো।"
"নায়নী তুই যাই বলিস বয়স বাড়ছে কিছু দিন পরেই আমরা ৪০ এর ঘরে পা দেবো শরীর আমাদের সাথ ছেড়ে দিবে তখন আর কিছু করার থাকবে না।"
"হুমম বুঝেছি। আমি ভেবে দেখবো।"
"আচ্ছা আজকে রাখছি।"
"ভালো থাকিস।"
"তুই ও ভালো থাকিস।"
এই বলে কল কেটে দেয় নায়নী।



(কিসের কথা বলছে রাখি? কি হয়েছিল নায়নীর সাথে? আপনাদের কি মনে হয় কমেন্ট করে জানাতে পারেন।)
 
5
0
2
কৌশিকদেড় ট্যাক্সির সাথে আসতে আসতে চলে আসলো বিধাননগরের, সেক্টর পাঁচের, ২৫ নম্বর রোডে The Brewhive বারে।ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে আর আকর্ষ নিজের বাইক পার্ক করে ঢুকে পড়লো বারে। বারটা দেখতে খুব সুন্দর। ভেতরে ঢুকেই দেখতে পেলো মানুষ আসছে রাত আরেকটু বাড়লে হয়তো আরো লক আসবে। ওরা বসে পড়লো টেবিলে সেখানে ওরা নিজেদের জন্য কিছু ড্রিঙ্কস অর্ডার করলো। কৌশিক আর জয়দেব ড্রিংক অর্ডার করলেও আকর্ষ খেলো না। আর রুপা ড্রিংক করে না। তাই ওরা নিজেরাই খেতে লাগলো। আর আড্ডা দিতে লাগলো। আকর্ষকে বুঝাতে লাগলো কে কেমন অফিসে। অফিসের ভেতর কিরকম অফিস পলিটিক্স চলে। কে ভালো কে খারাপ এই গুলো। মাঝে মাঝে জয়দেব সবাইকে নিয়ে কিছু জোকস বলছিলো আর ওরা সবাই হেসে শেষ।
আকর্ষের যে প্রথম দিন হিসেবে খুব খারাপ লাগছে সেটাও না, তার আগের অফিসের থেকে এখানে অনেক বেশি ভালো লাগছে, কারণ আকর্ষ যখন বেঙ্গালুরু গিয়েছিল তখন আকর্ষ পুরো একা ছিল, নতুন জায়গা নতুন পরিবেশ নতুন মানুষ সব কিছুই নতুন কিন্তু কি করবে আর পেটের তাড়নায় যেতেই হয়েসিলো। আস্তে আস্তে সেখানে আকর্ষ অভ্যস্ত হয়ে যায়। নিজেকে মানিয়ে নেয়। বেঙ্গালুরুতে সব থাকলেও মন খুলে কথার মতো একজন মানুষ ছিলো না বা বলতে গেলে বাঙালি ছিলো না তার থাকলেও কম, এইসব কারণে একা লাগতো কিন্তু আজকে থেকে আর লাগবে না। এইসব ভাবছিলো আর রুপা বলে উঠে,
"কি হয়েছে কি ভাবছো?"
"নাহ কিছু না।"
এমন সময় কৌশিক বলে উঠলো,
"সামনের মেয়েটা কিন্তু গিলে খাচ্ছে তোমাকে আকর্ষ।"
এটা বলে জোরে জোরে হেসে দিলো, কৌশিক।
ওর কথা লক্ষ্য করে সবাই তাকায় সামনের টেবিলে। দেখলো একটা মেয়ে সাথে সাথে অন্য দিকে তাকালো, মেয়েটির ভাব দেখেই বুঝা যাচ্ছে এই মেয়েটিই তাকিয়ে ছিলো। কৌশিক এটা নিয়ে মজা নিতে লাগলো। তারপর আড্ডা দেখতে সময় অনেক গড়িয়ে গেলো মানুষ ও ভরে গেছে বারে। একটু পর চলেই যাবে তাই ওরা ডিসিশন নিলো ওরা ট্রুথ আর ডেয়ার খেলবে যাই কথা সেই কাজ আকর্ষের ব্যাগে একটা বোতল ছিলো সেটা নিয়ে খেলতে শুরু করলো। ঘুরালো জয়দেব বোতল থামলো কৌশিকের দিকে, জয়দেব বললো,
"বল কি নিবি?"
"আমি ট্রুথ নিবো।"
জয়দেব বললো তাহলে আমি জিজ্ঞেস করি বলে বললো
"তুই অফিসের কাউকে কি পছন্দ করিস?"
এই কথা শুনে কৌশিকের মাথায় হাত, কি বলবে এখন। কৌশিক যে অফিসার একজনকে পছন্দ করে সেটা কেউ জানে না। আর কৌশিক জানাতেও চায় না। কিন্তু কি করবে ফেঁসে গেসে,
তাই বললো,
"হ্যা।"
সবাই ওর দিকে হা করে তাকালো। কৌশিক তাই তাড়াতাড়ি করে বললো,
"এখন আমি ঘুরাবো।"
এই বলে বোতল ঘুরিয়ে দিলো, দেখলো এইবার রুপা,
কৌশিক জিজ্ঞেস করলো,
"ট্রুথ না ডেয়ার?"
"ট্রুথ।"
"তাহলে বল তোর কি বয়ফ্রেইন্ড আছে?"
"নাহ।"
এইবার রুপা বোতল ঘুরালো, এইবার হলো আকর্ষের পালা, জয়দেব দিবে এইবার,
"ট্রুথ না ডেয়ার?"
"ডেয়ার।"
জয়দেব আর কৌশিক নিজেদের দিকে তাকালো,
আর হাসলো। আকর্ষ বুঝলো কিছু তো করবে ওরা।
জয়দেব ডেয়ার দিলো,
" তোমার সামনের টেবিলে বসে যে মেয়েটা আছে তার নাম্বার এনে দিতে হবে।"
আকর্ষ তো পরে গেলো বিপদে কারণ আকর্ষ নিজে গিয়ে কারো সাথে কথা বলে না কিন্তু আজ এই ডেয়ারের চক্করে বলতে হবে কি করার।
"ঠিক আছে।" বলে উঠে পড়লো টেবিল থেকে মেয়েটার কাছে গিয়ে বললো,
" এক্সকিউজ মি আমি আকর্ষ। আমার সাথে আপনার কিছু কথা ছিল। "
মেয়েটি চেয়ার থেকে সাথে সাথে দাঁড়িয়ে বলল, "হাই আমি কুহু বলুন আপনার কি কথা আছে?"
আকর্ষ একটু ইতস্ত করছে বুঝা যাচ্ছে,
তাই মেয়েটি বলল,
" সব ঠিক আছে কি? "
"হ্যা আমি কি আপনার নাম্বার পেতে পারি ?"
কুহু সাথে সাথে হ্যা বলে দিলো মনে হয় এইটার জন্যই বসে ছিলো ও। আর আকর্ষকে নাম্বার দিয়ে দিলো। আকর্ষ বললো,
"থ্যাংক ইউ আমি আপনাকে সময় করে ফোন দিবো।"
"ওকে।"
পরে কথা হবে এই বলে আকর্ষ চলে আসলো।
এবার জয়দেবের পালা,
" ট্রুথ না ডেয়ার।
জয়দেব ডিয়ার নিলো। কৌশিক বলল
" তুই মাথায় পানি গ্লাস নিবি আর জামাল কুদু গানে নাচবি। "
কৌশিক ডান্স কর্নারে গিয়ে বলল জামাল কুদু গান বাজাতে। যখনই গান স্টার্ট হলো জয়দেব মাথায় গ্লাস রেখে নাচতে শুরু করলো। আর তাই দেখে সবাই অনেক হাসলো ভিডিও করলো মজা নিলো। এইভাবে ঘড়িতে বেজে গেলো রাত্রি নয়টা। কোথায় দিয়ে সময় চলে গিয়েসে সেটার হিসাব নেই। তাই ওরা আর দেরি না করে ক্লাব থেকে বের হলো।
জয়দেবের আর কৌশিক রুপার জন্য ট্যাক্সি করে দিল, আর এর মধ্যেই আকর্ষ পার্কিংলট থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে হাজির। রুপা ওদের bye বলে ট্যাক্সি নিয়ে চলে গেলো। আকর্ষ থাকে বেহালার দিকে তাই আকর্ষ ওদের থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলো।




ফ্রিজ খুলে দেখলো কাজের মাসি আজকে রান্না করে গিয়েছে। রুটিটা বানিয়ে নিতে হবে তরকারি আর ডাল রান্না করে গিয়েছে। বানাতে ইচ্ছে করছে না কিন্তু খেতে হবে। একা মানুষ খাবে কতই বা ইচ্ছে থাকবে। তাও খেতে হবে। তাই নায়নী কিছু রুটি বানানোর জন্য গেলো। রুটি বানাতে বানাতে ভাবতেই লাগলো আজকে যদি তার সব ঠিক থাকতো তার যদি একটা পরিবার থাকতো তাহলেও তার ঘরটা থাকতো পরিপূর্ণ। রান্নার তাগাদা থাকতো কিন্তু পরিবার নেই রান্নার তাগাদা নেই। রাখির বিয়ে হয়েসে নায়নীর পরে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজকে নায়নী এই একাকিত্বে ভুগছে। মাঝে মাঝে নায়নীরও ইচ্ছে হয় পার্টিতে যেতে রুপাদের সাথে মজা করতে কিন্তু বয়সের জন্য নিজেকে আটকে রাখতে হয়। আজকে যখন অফিস থেকে বের হওয়ার সময় ভেবেছিলো রুপার সাথে যাবে। কিন্তু যখন আকর্ষ আসলো তখন কেন যেন নিজের ভেতর জড়তা ভরে কাপড়ে বসলো। হাজারো ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও যেতে পারলো না। সাদা শার্ট কালো প্যান্ট ইন করা কাঁধে একটা ব্যাগ ঝুলানো। দেখে নিজের ভেতর এক অচেনা অনুভূতি মাথা চারা দিয়ে উঠলো। নায়নী এইসব নিয়ে আর ভাবতেই চায় না। তাই সেখানে ওদের রেখেই প্রস্থান করলো
 
Last edited by a moderator:
Top