1. তরুণ প্রতিবেশী
তিনতলার এপার্টমেন্টের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে স্নান করার পরে ভিজে চুল মুছছিলো ও আঁচড়াচ্ছিলো রুপালি। কোথায় একটা কোকিল ডাকছে তারস্বরে। আর একটা ঘুঘু উদাস সুরে অনেক্ষন থেকে মন কেমন করা ডাক ডাকছে। পরনে এলো করা একটা সাধারণ ঘরে পড়ার শাড়ি, নীল ব্লাউজ। চুল মুছতে মুছতে শুকাতে শুকাতে সে দেখছিলো নিচে একটা ট্যাক্সি এলো। ড্রাইভার বেরিয়ে পিছনের ডালা খুলে বার করছে বড়ো বড়ো দু তিনটে সুটকেস, রোল করে বাঁধা বিছানার বান্ডিল আর কয়েকটা বাক্স, মনে হলো তাতে বই আছে। ট্যাক্সি থেকে আরো দুএকটা ছোট সুটকেস আর পিঠের ব্যাগ নিয়ে নামলো এক বয়স্ক ভদ্রলোক আর বছর কুড়ি একুশের একজন, ছেলেই হবে নিশ্চই। ভারী সুন্দর ছিপছিপে চেহারা, বোধহয় ভালো খেলাধুলা করে, একটা গতিময় চঞ্চলতা আছে তার চলাফেরায়। একমাথা ঝাঁকড়া কালো চুল। ভদ্রলোক ড্রাইভার-এর সাহায্যে জিনিসপত্র নিয়ে বিল্ডিঙের দরজা দিয়ে ঢুকে যেতে ছেলেটি পিঠ বাঁকিয়ে আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে চারিদিক দেখছিলো। চোখে চোখে দেখা হলো দুজনের। টিকালো নাক, পরিষ্কার করে কামানো দাড়িগোঁফ, সুগঠিত চিবুক। আর চোখে চোখ পড়তেই যখন একটা হাসিতে তার মুখ ভরে গেলো, রুপালি খেয়াল করলো ঝকঝকে দুপাটি দাঁত। ছেলেটি আলতো করে মাথা নেড়ে নড করে জিনিসপত্রে হাত লাগালো। সুঠাম পেশিগুলো বোঝা যাচ্ছে স্পষ্ট তার ঘামে ভেজা টিশার্টটার ভিতর দিয়ে। রূপালীর মনে পড়লো তাদের ঠিক উল্টো দিকে মনোময়বাবুদের ফাঁকা ফ্ল্যাটে তাদেরই কোন আত্মীয় আসার কথা ছিল বটে, মেডিকেল কলেজে পড়ে। এই ছোকরাই তবে সে।
রুপালি কিছুক্ষন পরে শব্দ পায় তাদের তলায় সিঁড়ি বেয়ে লোকজন উঠে আসার। কিছুক্ষন ধরে শুনতে পেলো বাক্সপ্যাঁটরা বয়ে আনা, নামানো, জানালা খোলা, চেয়ার টেবিল নড়াচড়া করার শব্দ। ব্যালকনিতে বসে গল্পের বই পড়তে পড়তে এক কান দিয়ে শুনছিলো বাপ ছেলের ঘরোয়া সব কথাবার্তা। বাপ শরীর স্বাস্থ্যের কথা, সাবধানে থাকার কথা, ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করার কথা, মনে করে নিয়মিত ফোন করার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। যেমন সব বাপ মায়েরা বাড়ি থেকে দূরে পড়তে পাঠানো ছেলেদের বলে আর কি। রূপালীর বিয়ে হয়েছে বছর চারেক হলো। দিলখুশ এমনিতে ভালোই, কিন্তু সে কাজে বেরিয়ে যাবার পর থেকে ভরন্তযৌবনা রুপালি সারাটাদিন বড় একলা থাকে। মনটা ভারী হাঁফিয়ে ওঠে কথাবলার মানুষের খোঁজে, একটু আড্ডা, দুষ্টুমি, হিহি হাসি আর খুনসুটির জন্য মাঝে মাঝে মনটা আকুলিবিকুলি করে। আর কোন কোন ঘুঘু ডাকা উদাস দুপুরে ফেরিওয়ালা যখন রাস্তায় হাঁক দিয়ে এটা ওটা বিকিয়ে বেড়ায়, সেই মস্ত দুপুর জুড়ে অনেকসময় দুপায়ের ফাঁকে একটা মোটা পাশবালিশকে জোরে টিপে ধরে বিছানায় ধড়ফড় ছটফট করে আমাদের রুপালি। বুকদুটো, তলপেটটা টনটন করে একটা গরম লোমশ পুরুষ দেহের, হাতের বা অন্য কোনো পুরুষ অঙ্গের ছোঁয়ার জন্য। এক একার দুপুর বিকেল গুলোয় তাই আশেপাশে নতুন কিছু হলেই সিনেমা দেখার মতো রুপা চোখ কান খোলা রাখে। এই পঁচিশ বছরে আগুনে গরম শরীরটাকে ঠাণ্ডা করে ভুলিয়ে রাখতে মন দিয়েই সব গিলে খায় চারপাশের পৃথিবীটার।
তিনতলার এপার্টমেন্টের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে স্নান করার পরে ভিজে চুল মুছছিলো ও আঁচড়াচ্ছিলো রুপালি। কোথায় একটা কোকিল ডাকছে তারস্বরে। আর একটা ঘুঘু উদাস সুরে অনেক্ষন থেকে মন কেমন করা ডাক ডাকছে। পরনে এলো করা একটা সাধারণ ঘরে পড়ার শাড়ি, নীল ব্লাউজ। চুল মুছতে মুছতে শুকাতে শুকাতে সে দেখছিলো নিচে একটা ট্যাক্সি এলো। ড্রাইভার বেরিয়ে পিছনের ডালা খুলে বার করছে বড়ো বড়ো দু তিনটে সুটকেস, রোল করে বাঁধা বিছানার বান্ডিল আর কয়েকটা বাক্স, মনে হলো তাতে বই আছে। ট্যাক্সি থেকে আরো দুএকটা ছোট সুটকেস আর পিঠের ব্যাগ নিয়ে নামলো এক বয়স্ক ভদ্রলোক আর বছর কুড়ি একুশের একজন, ছেলেই হবে নিশ্চই। ভারী সুন্দর ছিপছিপে চেহারা, বোধহয় ভালো খেলাধুলা করে, একটা গতিময় চঞ্চলতা আছে তার চলাফেরায়। একমাথা ঝাঁকড়া কালো চুল। ভদ্রলোক ড্রাইভার-এর সাহায্যে জিনিসপত্র নিয়ে বিল্ডিঙের দরজা দিয়ে ঢুকে যেতে ছেলেটি পিঠ বাঁকিয়ে আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে চারিদিক দেখছিলো। চোখে চোখে দেখা হলো দুজনের। টিকালো নাক, পরিষ্কার করে কামানো দাড়িগোঁফ, সুগঠিত চিবুক। আর চোখে চোখ পড়তেই যখন একটা হাসিতে তার মুখ ভরে গেলো, রুপালি খেয়াল করলো ঝকঝকে দুপাটি দাঁত। ছেলেটি আলতো করে মাথা নেড়ে নড করে জিনিসপত্রে হাত লাগালো। সুঠাম পেশিগুলো বোঝা যাচ্ছে স্পষ্ট তার ঘামে ভেজা টিশার্টটার ভিতর দিয়ে। রূপালীর মনে পড়লো তাদের ঠিক উল্টো দিকে মনোময়বাবুদের ফাঁকা ফ্ল্যাটে তাদেরই কোন আত্মীয় আসার কথা ছিল বটে, মেডিকেল কলেজে পড়ে। এই ছোকরাই তবে সে।
রুপালি কিছুক্ষন পরে শব্দ পায় তাদের তলায় সিঁড়ি বেয়ে লোকজন উঠে আসার। কিছুক্ষন ধরে শুনতে পেলো বাক্সপ্যাঁটরা বয়ে আনা, নামানো, জানালা খোলা, চেয়ার টেবিল নড়াচড়া করার শব্দ। ব্যালকনিতে বসে গল্পের বই পড়তে পড়তে এক কান দিয়ে শুনছিলো বাপ ছেলের ঘরোয়া সব কথাবার্তা। বাপ শরীর স্বাস্থ্যের কথা, সাবধানে থাকার কথা, ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করার কথা, মনে করে নিয়মিত ফোন করার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। যেমন সব বাপ মায়েরা বাড়ি থেকে দূরে পড়তে পাঠানো ছেলেদের বলে আর কি। রূপালীর বিয়ে হয়েছে বছর চারেক হলো। দিলখুশ এমনিতে ভালোই, কিন্তু সে কাজে বেরিয়ে যাবার পর থেকে ভরন্তযৌবনা রুপালি সারাটাদিন বড় একলা থাকে। মনটা ভারী হাঁফিয়ে ওঠে কথাবলার মানুষের খোঁজে, একটু আড্ডা, দুষ্টুমি, হিহি হাসি আর খুনসুটির জন্য মাঝে মাঝে মনটা আকুলিবিকুলি করে। আর কোন কোন ঘুঘু ডাকা উদাস দুপুরে ফেরিওয়ালা যখন রাস্তায় হাঁক দিয়ে এটা ওটা বিকিয়ে বেড়ায়, সেই মস্ত দুপুর জুড়ে অনেকসময় দুপায়ের ফাঁকে একটা মোটা পাশবালিশকে জোরে টিপে ধরে বিছানায় ধড়ফড় ছটফট করে আমাদের রুপালি। বুকদুটো, তলপেটটা টনটন করে একটা গরম লোমশ পুরুষ দেহের, হাতের বা অন্য কোনো পুরুষ অঙ্গের ছোঁয়ার জন্য। এক একার দুপুর বিকেল গুলোয় তাই আশেপাশে নতুন কিছু হলেই সিনেমা দেখার মতো রুপা চোখ কান খোলা রাখে। এই পঁচিশ বছরে আগুনে গরম শরীরটাকে ঠাণ্ডা করে ভুলিয়ে রাখতে মন দিয়েই সব গিলে খায় চারপাশের পৃথিবীটার।