• If you are trying to reset your account password then don't forget to check spam folder in your mailbox. Also Mark it as "not spam" or you won't be able to click on the link.

Fantasy উলটপুরাণ

Ranaanar

Active Member
806
770
109
তখন বয়স আর কত ? এই আট হবে। এখানে আর কোন কিছুই রইল না। আমার সে সব বোঝার সময় ও হয়নি। আমার মাসী চাকরি পেয়ে আমাকে নিয়ে দেশ ছাড়লেন জাহাজে করে। আমরা চলেছি শ্রীকলা দ্বীপের উদ্দেশ্যে। এখানে যা কিছু সব বিক্রি করে ওখানেই পাকাপাকি ব্যবস্থা করে ফেলেছিল মাসী।
মাসীর নাম উমা রায়। তার তখন বয়স ৩৭। আমারও তখন তিনকূলে কেউ নেই মাসী ছাড়া। দুজনে চললাম। মাসী খবর নিয়েছিল যে দেশে যাচ্ছে সেখানে এমনি সবই ঠিক আছে। ভাষা সমস্যা ও হবে না। এতয়েব কেউ যখন আর রইল না, তখন।
আমার নাম বিজয় রায়। দুদিন জাহাজে কাটিয়ে তিনদিনের দিন সকালবেলা আমরা শ্রীকলা দ্বীপে নামলাম।
যার সাথে যোগাযোগ এই চাকরি তিনি জাহাজঘাটায় ছিলেন। আমাদের একটা গাড়ি করে নিয়ে গেলেন একটি বাড়িতে। খুব সুন্দর বাড়ি। জানলাম এখানেই থাকব আমরা। চারিদিকে আরো বাড়ি থাকলেও সবার আলাদা আলাদা প্লট। সুন্দর।
প্রথম দিন আমাদের প্রতিবেশী কমলা মাসীর সাথে পরিচয় হল। বহুদিনের বাসিন্দা ওনারা। মাসীর সাথে বন্ধুত্ব ও হয়ে গেল। কমলা মাসীর এক মেয়ে আর এক ছেলে। মেয়ের বয়স হবে ১৯ আর ছেলের বয়স ২৪। আমার থেকে দুজনেই বড়। কমলা মাসীর বর অতীন ও থাকে।
পরদিন ওই ভদ্রলোক আমাদের নিয়ে গেলেন নাম নথিভুক্ত করানোর জন্য সেদেশে। সমস্তকাজ কর্ম সেরে আমরা বাড়ি ফিরলাম বিকেলে।
যাতায়াতের পথে একটা জিনিস ই খালি চোখে পড়েছিল। সেটা হল যে এখানে বাড়ি র সামনে নাম লেখা থাকে। মহিলাদের নামের পাশে পদবি কিন্তু দেখলাম পুরুষদের কোন কোন নামের পাশে দুটৌ করে পদবী।
প্রথম যে বাড়িটা রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়েছিল তিনটে নাম।
সীমা সেন।
অজিত সেন(বোস)
পাপিয়া সেন।
পরের বাড়িটা দেখলাম। সেখানে চারটে নাম।
নীতা মিত্র।
রমেন মিত্র (দত্ত)
অদিতি মিত্র
অমিত মিত্র।
কি ব্যাপার খটকা লাগলেও বিষয়টি বুঝতে পারলাম না বলে মাথা ঘামালাম না অত।
পরদিন সকালবেলা মাসী আছে নিয়ে গিয়ে স্কুলে ভর্তি করে এল।
বিকেলে কমলামাসী আমাদের নিমন্ত্রণ করেছিল। ওখানে গেলাম।
অদ্ভুত ভাবে দেখলাম দরজায় নাম লেখা।
কমলা সরকার
অতীন্দ্রনাথ সরকার (মজুমদার)
রিমা সরকার
প্রতীক সরকার।
যা হোক ওদের বাড়িতে দেখলাম তিনজন ছিল। কমলা মাসীর বর ছিল না।
মাসী: হ্যাঁ কমলাদি।
কমলা: হ্যাঁ গো।
মাসী: দাদা নেই?
কমলা: না গো। ও অনেকদিন পর আজ একটু বাপের বাড়ি গেল। মা বাবার সাথে দেখা করতে।
কথাটা কানে খটকা লাগলেও বুঝলাম যে অতীনবাবুর মা বাবা অন্য জায়গায় থাকেন। তাই দেখা করত গেছে।
 
Last edited:

Ranaanar

Active Member
806
770
109
আমরা দুজনে বেশ খানিকক্ষণ থেকে গল্প করে তারপর বাড়ি চলে এলাম। ওই বাড়ির দাদা আর দিদি খুবইভাল। আমাকে নিয়ে খুব মজা করল। আনন্দ করল। পরদিন সকালে আমাদের যিনি জাহাজঘাটায় রিসিভ করেছিলেন সেই ভদ্রলোক এলেন। একথা ওকথায় জানা গেল ভদ্রলোকের নাম রমেন পাল।
রমেন: হ্যাঁ উমাদি আপনারা কি আজ যাবেন?
মাসী: হ্যাঁ, সে আপনি যা বলবেন।
রমেন: হ্যাঁ তাহলে বিজয়ের কলেজের ব্যাপারটা আজ মিটে যেত।
আমরা দুজনে রেডি হয়ে ওনার সাথেই ওনার গাড়িতেই গেলাম।
কলেজ দেখে আমার ভারি পছন্দ হল। সামনে দেখতে ছোট হলেও মূল কলেজটি ছিল বেশ বড়। গাড়িতে যেতে যেতেই রমেনবাবূ বলেছিলেন যে উনি এই কলেজ কমিটি মেম্বারদের একজন ।
নামতেই বড় করে নাম লেখা দেখলাম।
রাজনগর সি,এফ,এন,এম কলেজ ।
প্রিন্সিপাল মিসেস চন্দনা সেন। সুন্দর দেখতে । আমরা ভিতরে যেতেই
চন্দনা: ও রমেনবাবু আসুন।
রমেন: দিদি ওনারা।
চন্দনা: হ্যাঁ বুঝেছি। ম্যাডাম আপনার নাম?
মাসী: উমা রায়।
তারপর আমার দিকে তাকালেন চন্দনা সেন।
চন্দনা: তোমার নাম কি সোনা?
আমি: বিজয় রায়।
চন্দনা: বা: ভারি সুন্দর নাম। আচ্ছা রমেনবাবু আপনি কলেজের ব্যাপারটা সব বলে দিয়েছেন তো?
রমেন: হ্যাঁ দিদি।
কথাবার্তা বলে বুঝলাম যে তখন ছুটি চলছে। দিন পনেরো পর থেকে নতুন শেসন শুরু হবে। আমি ভর্তি হলাম।
বাড়ি ফিরে কলেজের ব্রোশারটা পড়তে পড়তে দেখলাম যে টিচারের সকলেই মহিলা।
কমিটি মেম্বারদের নাম পড়তে গিয়ে দেখলাম। রমেনবাবু নাম। ওনার পুরো নাম রমেন পাল(গুপ্ত)। কি জানি বাবা। পরে দেখা যাবে।
 
Last edited:
  • Like
Reactions: Son Goku

Ranaanar

Active Member
806
770
109
আমি: মাসি
উমা: হ্যাঁ।
আমি: কলেজটি কি রকম সব বলল। ব্যাপারটা রকম বলোতো।
উমা: এটা এই দেশের নিয়ম।
যাক কলেজ খূললে দেখা যাবে।
এর মধ্যে একটা ঘটনা ঘটল।
আমরা যেহেতু অন্য দেশ থেকে এসেছি তাই খবর এলো যে আমাদের দুজনকে দিন দশেকের জন্য দেশের মূল সদর দপ্তরে থাকতে হবে সেখানে নাগরিকত্ব পেয়ে আমরা এখানে আসব। পরদিন যেতে হবে।
সেদিন কমলা মাসী এল।
কমলা: ঊমা। কাল প্রতীকের বিয়ের পাকা কথা। দুদিন বাদে বিয়ে। তোমরা কিন্তু কাল থেকেই।
ঊমা: দিদি আমরা কোথায়। কাল থেকে তো আমাদের সিটিজেনশিপ দেওয়ার কথা।
কমলা: ঔ দশ দিন থাকবে না না।
যাক আমরা দশ দিন বাদে নাগরিক হয়ে ফিরলাম।
 
Last edited:

Ranaanar

Active Member
806
770
109
বাড়ি আসতে রাত হয়ে গেল। তাই পরদিন সকাল থেকে সব সেরে আমি আর মাসী দূজনে গেলাম কমলা মাসীর বাড়ি। সবে বিকেল হয়েছে। গিয়ে দেখি কমলামাসী আর রিমা দিদি বসে টিভি দেখছে।
কমলা: আরে উমা এসো
আমরা বসলাম।
উমা: তোমার ছেলে বৌ দেখতে এলাম গো।
কমলা: ছেলে বৌ এখানে কোথায়? ওরা তো শ্বশুরবাড়িতে।
উমা: ও , ঠিক আছে কবে ফিরবে সেদিন আসব।
কমলা: ফিরবে কি?
শুনে অবাক হই আমরা।
কমলা: ও আসলে তুমি তো জানো না। এদেশের নিয়ম তো আলাদা।
আমরা অবাক হই।
উমা: আলাদা মানে।
কমলা: এখানে মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি যায়না। ছেলেরা যায়। এর পর রিমার বিয়ে দিয়ে আমি জামাই আনব ঘরে।
আমরা অবাক।
আরো জানলাম।যে মেয়েদের পদবী পাল্টায় না। পাল্টায় ছেলেদের। প্রতীক দা এখন আর সরকার নেই। প্রতীক পাল।
 
Last edited:
  • Like
Reactions: Son Goku
Top