• If you are trying to reset your account password then don't forget to check spam folder in your mailbox. Also Mark it as "not spam" or you won't be able to click on the link.

Adultery অভিশপ্ত সেই বাড়িটা by Baban

392
498
79
dada don't mind me saying that, repost e jodi korben tahole ekshathe update dilei to paren.
হুম, সেটা করা যায়। মহৎ কাজটা তবে আপনিই করুন। পিডিএফ আকারে শেয়ার করুন পাঠকদের সাথে।
 

ShaifBD

Love everyone, respect everyone 💐
457
312
78
দাদা এখানে অভিমানের কিই বা আছে, আমি শুধু আমার (পাঠকের) একটি মন্তব্য করেছি এবং প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলাম এবং "যদি" শব্দটিও ব্যাবহার করেছি।

আমার কাছে থাকলে অবশ্যই আপনাকে প্রাইভেট ভাবে পাঠাতাম বা সবার সাথে শেয়ার করতাম। যাক, আপনিই সবার সাথে শেয়ার করেন। আমি বা আমরা তো তুচ্ছ পাঠক আমার বা আমাদের কথা না শুনলেই বা কি আশে যায়, করবেন তো নিজের ইচ্ছা মতো করেই
 
392
498
79
দাদা এখানে অভিমানের কিই বা আছে, আমি শুধু আমার (পাঠকের) একটি মন্তব্য করেছি এবং প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলাম এবং "যদি" শব্দটিও ব্যাবহার করেছি।

আমার কাছে থাকলে অবশ্যই আপনাকে প্রাইভেট ভাবে পাঠাতাম বা সবার সাথে শেয়ার করতাম। যাক, আপনিই সবার সাথে শেয়ার করেন। আমি বা আমরা তো তুচ্ছ পাঠক আমার বা আমাদের কথা না শুনলেই বা কি আশে যায়, করবেন তো নিজের ইচ্ছা মতো করেই
আপনি কথাটা কিভাবে নিয়েছেন জানি না, তবে আমি সত্যিই চাই কেউ একজন ভালো ভালো বাংলা চটিগুলো পিডিএফ আকারে শেয়ার করুক। হিন্দি থ্রেডে এরকমটা করেছেন সিরাজ প্যাটেল দাদা। এখানেও যদি কেউ করতো তবে ব্যাপারটা মন্দ হতো না।
 
392
498
79
আর হ্যাঁ, আমি কারোর রেসপন্স পাইনি বলেই এই গল্পের আপডেট নিয়ে আসছি না।
 
  • Like
Reactions: xDark.me

Baban

ᴇᴋ ᴋᴀʜᴀᴀɴɪ... ᴀɪꜱɪ ʙʜɪ
573
1,088
139
জেনে ভালো লাগলো যে আমার গল্পটা এখানে অভিষেক বাবু শেয়ার করছেন. আমার এই গল্পটা যেখানে লিখেছিলাম অর্থাৎ যে সাইটে লিখেছিলাম সেখানে বেশ সাড়া পেয়েছিলো গল্পটি. তার জন্য পাঠকদের সবসময় ধন্যবাদ জানাই আমি. আমি নিজেই ভেবেছিলাম এখানেও গল্পটা শেয়ার করবো কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি এই সাইটের বাংলা ফোরামে সেই ভাবে পাঠক ফিডব্যাক দেয়না... যেখানে হিন্দি ফোরাম দারুন সাপোর্ট পায়. একজন লেখকের কাছে ফিডব্যাক খুবই গুরুত্বপূর্ণ... সেটা একজন লেখক নিশ্চই বুঝবে. তাই আমি আর এখানে শেয়ার করিনি.
 
392
498
79
ঠিক বলেছে বাবান দাদা, চুপিসারে গল্প পড়ে কেটে পড়ে সবাই। একই ফোরামে হিন্দি গল্পগুলোর ফিডব্যাক দেখলে খুবই আক্ষেপ হয়। এই জন্যই ভালো ভালো লেখকরা হারিয়ে যাচ্ছে।
 
392
498
79

Update 06
.
.
পরের দিন সকালে সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে শুরু হলেও সকলের আড়ালে কিছু অস্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয়ে গেছিলো. কিছু পরিবর্তনের সূচনা হয়ে গেছিলো. অনিমেষ বাবু সকালে উঠে দেখেন স্নিগ্ধা তখনো ঘুমাচ্ছে. এটা একটু অন্যরকম লাগলো তার. কারণ এতো বছরের বিবাহিত জীবনে তার স্ত্রীই আগে উঠে তাকে আর তাদের সন্তানকে ঘুম থেকে তুলেছে. খুব কম সময়ই আছে যখন এই নিয়মের অন্যথা হয়েছে. তবু এটা কোনো বড়ো ব্যাপার নয় মনে করে অনিমেষ বাবুই স্ত্রীকে ডেকে তোলেন. স্নিগ্ধা যেন জাগতেই চাইছিলনা এতটাই গাঢ় ঘুম. স্নিগ্ধা উঠে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো. এতো দেরি?


স্নিগ্ধা : এ বাবা এতো দেরি হয়ে গেলো ! চলো চলো তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও, আমি তোমার টিফিন বানিয়ে দিচ্ছি. ওদিকে ছেলেটাকেও তুলতে হবে.

অনিমেষ বাবু হেসে বললেন : আরে... ঠিক আছে. ওতো তাড়াহুড়ো করোনাতো, মাঝে মাঝে এটা হতেই পারে. আচ্ছা....কাল রাতে কি তুমি আমায় ডাকছিলে?

স্নিগ্ধা : আমি? কৈ নাতো.

অনিমেষ : ওহ.... তাহলে মনে হয় ঘুমের ঘোরে ভুল শুনেছি. কিন্তু মনে হলো কেউ.......... যাকগে যাই স্নান করেনিই আমি .

স্নিগ্ধা উঠে ছেলেকে গিয়ে তুললো. বুবাই উঠেই মাকে জড়িয়ে ধরে. স্নিগ্ধা বুবাইয়ের কপালে একটা ছোট্ট চুমু দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় এটা তার প্রত্যেকদিনের অভ্যেস. বুবাইকে উঠিয়ে স্নিগ্ধা রান্নাঘরে গিয়ে দেখে মালতি আলু কাটছে. স্নিগ্ধাকে দেখে মালতি বলে : দিদি.... আজ দেরি হলো যে? স্নিগ্ধা মালতির পাশে রাখা একটা টেবিলে বসে বলে : আর বলোনা.... রাতে ঠিক ঘুম হয়নি তাই সকালে উঠতে দেরি হয়ে গেলো. স্নিগ্ধাও মালতির সাথে মিলে রান্না করতে লাগলো. এমনিতে তার রান্নাঘরে যাবার দরকার পড়েনা সব কাজ মালতিই করে কিন্তু সকালে স্বামীর টিফিন আর চা সে নিজেই করতে পছন্দ করে. আগে বুবাই যখন ছোট ছিল তার সব রান্না স্নিগ্ধা নিজেই করতো তবে এখানে এসে বুঝেছে মালতির হাতের রান্নাও দারুন. অনিমেষ বাবু প্রাতকির্ত ও স্নান সেরে তৈরী হয়ে নিলেন আর টিফিন খেয়ে দুই সন্তানের মাথায় চুমু খেয়ে বেরিয়ে গেলেন. ওদিকে বুবাইয়ের জন্য মালতি সকালের খাবার দিয়ে গেছে, সে সেটাই খাচ্ছে আর ভাইয়ের সঙ্গে বসে টিভি দেখছে. বুবাই মাত্র আট বছরের তাই সে কার্টুন ছাড়া কিছুই পছন্দ করেনা. স্নিগ্ধা ছেলেকে খেতে বলে কল ঘরে গেলো তার সব কাজ বাকি.

বাড়ি থেকে হাসপাতাল মাত্র 10 মিনিটের রাস্তা তাই তিনি হেঁটেই যান. অনিমেষ বাবু হাসপাতালে পৌঁছে দেখলেন জগবন্ধু বাবু বসে আছেন. অনিমেষ বাবুকে আসতে দেখেই হেসে উঠলেন উনি. জগবন্ধু বাবু বললেন : কি? সব ঠিক থাক চলছে তো? কোনো অসুবিধ হচ্ছে নাতো? অনিমেষ বাবু হেসে বললেন : না.... না.... কোনো অসুবিধা নেই. আপনার জন্যই আমার কাজ করতে কোনো অসুবিধা হচ্ছেনা. আপনি যদি এখানকার কয়েকজন কে আমার এই হাসপাতালের হেল্পার হিসাবে না নিয়ে আসতেন তাহলে অবশ্য বিপদে পড়তাম হা... হা... হা. জগবন্ধু বাবু হেসে বললেন : আপনি আমাদের কথা কথা ভেবে শহর ছেড়ে এখানে আমাদের মাঝে এসেছেন, আর আমরা আপনার জন্য এইটুকু করবোনা? আপনার যা দরকার পড়বে আমাকে বলবেন. অনিমেষ বাবু হেসে বললেন : থ্যাংক ইউ স্যার, এবার শুধু ওষুধের সাপ্লাইটা ঠিকঠাক হলেই আর কোনো অসুবিধা হবেনা. কাল আমি এই ব্যাপারে একবার কলকাতায় যাবো. আমার কয়েকটা কাজ আছে, কয়েকটা মিটিং করতে হবে, আবার অঞ্জন বাবুর সাথে ফোনে কথা হলো, ওনাকে বললাম এই হাসপাতাল এর পরিস্থিতি আর উন্নতির ব্যাপারে কিছু ডিটেলে কথা বলার আছে. উনি বললেন সামনাসামনি কথা বলাই ভালো টাকা পয়সার ব্যাপার. তাই ওনার সাথেও দেখা করতে হবে এসবেই হয়তো সন্ধে হয়ে যাবে. তাছাড়া আমার বাবা মা আমার ভাইয়ের কাছে হুগলী চলে গেছে. বাড়িটাও ফাঁকা, তাই ভাবছি যাচ্ছি যখন একবার বাড়িটা দেখে আসবো. হয়তো কাল আর ফেরা হবেনা. পরেরদিন ফিরবো.
কথাটা শুনে জগবন্ধু বাবু একটু চিন্তিত হয়ে পড়লেন. সেটা অবশ্য অনিমেষ বাবুর চোখ এড়ালোনা. তিনি জগবন্ধু বাবুকে জিজ্ঞেস করলেন : কি হলো জগবন্ধু বাবু? আপনি হটাৎ কোনো দুশ্চিন্তায় পড়লেন মনে হচ্ছে. জগবন্ধু বাবু একটু মুচকি হেসে বললেন : চিন্তা করছি বটে তবে সেটা আপনাকে নিয়ে, আপনি আমাদের কথা ভেবে এই গাঁয়ের সেবা করতে এসেছেন, তাই আমাদেরও উচিত আপনার খেয়াল রাখা, তাই ভাবছিলাম আপনি থাকবেননা, এদিকে আপনার স্ত্রী সন্তান ওই বাড়িতে একা থাকবেন, আসলে বাড়িটার অতীতটাতো ঠিক ভালো নয় তাই........ অনিমেষ বাবু হো হো করে হেসে উঠে বললেন : ওহ বুঝেছি... আবার সেই ভুত? মশাই আপনি একজন শিক্ষক হয়ে এসবে বিশ্বাস করেন? ঐসব গুলো গল্প আমি কোনোদিন মানিনি আর মানবোও না. হটাৎ পেছন থেকে একটা গলা ভেসে এলো : ভুত আছে অনিমেষ. সবাই পেছন ফিরে দেখলো অচিন্ত বাবু আসছেন. অচিন্ত বাবু এসে অনিমেষের কাঁধে হাত রেখে বললেন : এইদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম, তা তোমাদের দেখেই এলাম. তুমি বলছো ভুত নেই? ভুত আছে অনিমেষ, তাদের অস্তিত্ব আছে. অনিমেষ বাবু হেসে বললেন : হা... ভুত আছে তো, তাদের অস্তিত্ব আছে...... তবে সেটা ছোটদের গল্পের বইতে. আপনি কোনোদিন ভুত দেখেছেন জগবন্ধু বাবু ? জগবন্ধু বাবু হেসে বললেন : না তা দেখিনি. তবে অচিন্ত বাবু নাকি দেখেছেন. অনিমেষ বাবু অচিন্ত বাবুকে নিয়ে আর জগবন্ধু বাবুকে নিয়ে ভেতরে গিয়ে বসলেন. তারপর তার সহকারীকে তিন কাপ চা আনতে পাঠিয়ে বললেন : বলুন স্যার..... আপনি কি দেখেছিলেন? অচিন্ত বাবু হেসে জবাব দিলেন : তোমরা আজকালকার দিনের ছেলে তাই ভুত টুট মানোনা. আমার নাতিও এসব মানেনা. কিন্তু আমি বিশ্বাস করি. তাহলে বলি শোনো........... এই বলে তিনি তার স্কুল বয়সের একটা ঘটনা বলতে লাগলেন. তাদের স্কুলের আসার পথে একটা শশান ছিল, একবার সেখান দিয়ে ফেরার পথে নাকি কেউ তার পিছু নেয় আর অনেকদূর পর্যন্ত পেছনে আসে, শেষে প্রাণ বাঁচাতে তিনি দৌড় লাগান. অনিমেষ বাবু এটা শুনে হেসে বললেন : স্যার, কিছু মনে করবেননা.... এইরকম ঘটনা আমি অন্তত দশটা গল্পে শুনেছি আর ওটা যে ভুত ছিল তার কি প্রমান? হতে পারে ওটা কোনো বাজে লোক ছিল, আপনাকে বাচ্চা পেয়ে কিডন্যাপ করার তালে ছিল বা লুঠ করার তালে ছিল. এই কথাটা শুনে অচিন্ত বাবু বললেন : তোমার কথাটা আমার মনেও পরে এসেছিলো. তখন হয়তো আমি ভয়ের চোটে তাকে ভুত ভেবেছিলাম, হয়তো সেটা চোর ছিল কিন্তু আমার দ্বিতীয় ঘটনাটা যখন ঘটে তখন আমি বুঝেছিলাম ভুত সত্যি আছে. ততক্ষনে চা এসে গেছিলো. সবাই চা খেতে লাগলো. অনিমেষ বাবু চায়ে চুমুক দিয়ে বললেন : বেশতো... তাহলে ওটাও হয়ে যাক. শুনি কি ঘটেছিলো? অচিন্ত বাবু প্রৌঢ় মানুষ, তিনি বুঝে গেলেন অনিমেষ ব্যাপারটাকে এখনো মজার চোখে দেখছে তাও তিনি হেসে বললেন : বেশ..... শোনো তাহলে ...... আমি তখন সবে চাকরি পেয়েছি. আমার ফিরতে প্রতিদিনই বেশ রাত হতো. তখন তো এখনকার মতো যান বাহনের এতো সুবিধা ছিল না, তাই কখনো ঠিক সময় ফিরতাম আবার কখনো দেরি হয়ে যেত. কিন্তু সেদিন একটু বেশিই রাত হয়ে গেছিলো কারণ সেদিন খুব গাড়ি ঘোড়ার অসুবিধা ছিল. তাই ফিরতে ফিরতে রাত দশটা হয়ে যায়. ওই সময় গ্রামের দশটা.... বুঝতেই পারছো....চারিদিক নিস্তব্ধ, ঘুটঘুটে অন্ধকার কারণ তখনো আলো আসেনি সেই ভাবে. খুব ভালো করে পা ফেলে এগিয়ে চলেছি... এমন সময় শুরু হলো বৃষ্টি. আকাশটা অনেক্ষন ধরেই গুড়ুম গুড়ুম করছিলো তার ফলাফল এবার আমি পেলাম. শুরু হলো ভয়ানক বৃষ্টি. তার সাথে বজ্রপাত. ছাতাও আনিনি সঙ্গে তাই নিজেকে বাঁচাতে আমি ছুট লাগলাম. কোথায় যাচ্ছি খেয়াল নেই শুধুই ছুটছি. এতো জোরে বৃষ্টি হচ্ছে যে সামনে কি আছে পরিষ্কার বুঝতেও পারছিনা. একসময় কিসের সাথে আমি ধাক্কা খেলাম. একটু চোট লাগলো. উঠে হাত বাড়িয়ে দেখি একটা বাড়ির দেয়াল. একটা আস্তানা খুঁজে পেয়ে মনে একটু শান্তি পেলাম. আমি বাড়ির বাইরে ছাওয়াতে দাঁড়িয়ে রইলাম. আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি তার পাশেই একটা জানলা. দেখলাম জানলার পাল্লাটা খোলা. একটু কৌতূহল হতে আমি ওই জানলায় চোখ রাখলাম. ভেতরটাও অন্ধকার. শুধু বিদ্যুতের চমকে ভেতরটা দেখা যাচ্ছে. আমি দেখলাম ভেতরে একটা দালান. হটাৎ বিদ্যুতের চমকে দেখলাম একটা বাচ্চা ওই দালানে দাঁড়িয়ে আছে. আমি ভাবলাম এই বাড়ির ছেলে হয়তো. তারপর দেখলাম কৈ.... কেউ নেইতো. তাহলে কি আমার চোখের ভুল? তারপর আবার যেই বিজলি চমকালো তখনি দেখি ওই বাচ্চাটা একদম ওই জানালাটার সামনে !! আমি অবাক হয়ে গেলাম. দালান থেকে এতো তাড়াতাড়ি এই জানলার সামনে এলো কিকরে? তবুও তখন আমার কম বয়স. বাচ্চাটাকে জিজ্ঞেস করলাম : তোমার নাম কি? দেখি কিছুই বলেনা শুধু চেয়ে থাকে. আমি আবার হেসে জিজ্ঞেস করলাম : কি বলবেনা? আসলে খুব বৃষ্টি হচ্ছেতো তাই......... আমার কথা শেষ করতে না দিয়েই বাচ্চাটা বলে উঠলো : চলে যাও..... এখন থেকে যত তাড়াতাড়ি পারো চলে যাও, নইলে ও তোমায় দেখে ফেলবে. পালাও. আমি ভাবলাম বাচ্চা মানুষ তাই ভুলভাল বলছে. আমি ওকে বললাম : কে দেখে ফেলবে আমায়? তখনি শুনতে পেলাম ভেতর থেকে বীভৎস গলায় হাসির শব্দ. শুধু হাসি নয় তার সঙ্গে কিসব বলে চলেছে !!! বাচ্চাটা বললো : পালাও..... ও আসছে আমিও যাই. ওমা !!!দেখি বাচ্চাটা আর নেই. আমার কি সন্দেহ হতে আমি একটু দূরে গিয়ে বাড়িটার দিকে চাইলাম. তখনি বিদ্যুতের আলো চমকালো আর আমিও বুঝতে পারলাম কোথায় এসে পড়েছি. বৃষ্টি, বিদ্যুৎ উপেক্ষা করে ছুট লাগালাম . কোনোরকমে বাড়ি এসে পৌঁছেছিলাম সেদিন. এবার? এটার কি ব্যাখ্যা দেবে অনিমেষ? অনিমেষ বাবুর হাসি পাচ্ছিলো. কিন্তু তার সামনে বয়স্ক মানুষ বসে আছে তাই তার সম্মান রাখতে হাসি চেপে বললেন : হা.... বুঝলাম. তা বাচ্চাটা যে তার কোনো পরিবারের লোকের সাথে মিলে মজা করেনি সেটা কিকরে বুজছেন? হয়তো আপনাকে দেখতে পেয়ে তারা একটু মজা করেছে. আপনাকে ভয় দেখিয়েছে? অচিন্ত বাবু অনিমেষকে একবার ভালো করে দেখে নিয়ে বললো : ও..... তার মানে এটাও তোমার তুচ্ছ একটা গল্প মনে হলো? অনিমেষ অচিন্ত বাবুর হাতে হাত দিয়ে বললো : এমা.... ছি ছি.. কি বলছেন? আমি বলছি আপনার সাথে যেটা হয়েছে সেটা একদম পরিষ্কার কিন্তু ওটা যে ভুতই ছিল সেটা কিকরে মেনে নি? যাকগে..... ছাড়ুন ঐসব কথা. আমরা বরং অন্যরকম কিছু আলোচনা করি. আসলে এই ভুত ব্যাপারটা আমার ঠিক হজম হয়না হি... হি. কিছুক্ষন গল্প করার পর অচিন্ত বাবু আর জগবন্ধু বাবু উঠে পড়লেন. ততক্ষনে রুগী আসতে শুরু করে দিয়েছে. জগবন্ধু বাবু আর অচিন্ত বাবু বেরিয়ে একি দিকে যেতে লাগলেন. অচিন্ত বাবু বললেন : অনিমেষ আমার একটা কোথাও বিশ্বাস করেনি. ওকে দোষ দিইনা আসলে আজকালকার ছেলে ছোকরারা ওসব এড়িয়ে চলতে চায়. জগবন্ধু বাবু বললেন : যা বলেছেন.... আমার ছেলেটাও শহুরে হাওয়া খেয়ে ওসব মানতেই চায়না. বলে যতসব পুরানো কুসংস্কার. কিন্তু স্যার, এই ঘটনাটা আমাদের বলেননি তো আপনি. অচিন্ত বাবু জগবন্ধু বাবুকে বললেন : জগৎ..... এইসব নিয়ে বেশি আলোচনা করতে চাইনা আমি. এই কথা গুলো মনে পড়লেই কেমন যেন গায়ে কাঁটা দেয়. তাছাড়া....... এই বলে উনি হাঁটা থামিয়ে জগবন্ধু বাবুর দিকে চাইলেন এবং তারপর বললেন : একটা কথা ওখানে বলিনি. বলাটা উচিত মনে হয়নি. তুমি জানো আমি কোন বাড়ির কথা বলেছিলাম? জগবন্ধু বাবু তার দিকে চেয়ে আছেন দেখে উনি হেসে বললেন : হা.... ঠিকই ভাবছো, অঞ্জনদের পৈতৃক বাড়ির কোথাই বলছি. যেখানে অনিমেষ তার পরিবার নিয়ে উঠেছে. এই কথাটা ওখানে বলা ঠিক মনে করলাম না. যে বাড়িতে ওরা থাকছে সেই বাড়ির সম্পর্কে এইসব শুনতে কার ভালো লাগবে বলো, তাছাড়া যদি ও আমায় ভুল বোঝে তাই আর বললাম না. তারপর উনি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন : আশা করি সব ঠিকই হবে. কোনো ঝামেলা না হলেই ভালো. এই বলে অচিন্ত বাবু এগিয়ে গেলেন. আর জগবন্ধু বাবু একটা ঢোক গিলে দুই হাত মাথায় ঠেকালো তারপর ঠাকুরের নাম নিতে নিতে এগিয়ে চললেন.

দুপুর 1টা বাজে. বুবাই স্নান সেরে নিজের ঘরে গল্পের বই পড়ছে. পাশের ঘরে ওর মা খাটে বসে ছোট ভাইকে দুধ খাওয়াচ্ছে আর টিভি দেখছে. বাচ্চাটা মায়ের ম্যাক্সির কাপড়টা ধরে আছে আর দুধ খাচ্ছে. স্নিগ্ধা হাসলো একটু. বুবাইটাও ছোটবেলায় এইভাবেই তার শাড়ীর আঁচল ধরে থাকতো, ছাড়তেই চাইতো না. দুধ খেতে খেতে ঘুমিয়ে পরলো বাচ্চাটা. স্নিগ্ধা খুব সাবধানে ওকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে নিজেকে ঠিক করে নিলো. তারপর দেয়ালের ঘড়ির দিকে দেখলো. একটা বেজে দশ. বুবাই গল্পের শেষ পাতাটা পড়ে উঠে পরলো. অনেক্ষন এক নাগাড়ে বসে গল্প পড়ছে. ও বাইরে বারান্দায় এলো. বুবাই দেখলো ওরা মা বাইরে ওর বাবার সাথে ফোনে কথা বলছে. বুবাই মায়ের ঘরে গেলো ভাইকে দেখতে. ছোট্ট ভাইটা জিভ বার করে ঘুমোচ্ছে. কি সুন্দর লাগচ্ছে. বুবাই ঘর থেকে বেরিয়ে দেখলো মায়ের কথা বলা হয়ে গেছে. এখন সে বারান্দার থামে হেলান দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখছে. বুবাই মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষন বাইরেটা দেখলো. ঐদিকটাতে আমগাছটা দেখা যায়. বুবাই মাকে জড়িয়ে ধরে মায়ের পেটে মুখ লোকালো. মাকে এইভাবেই জড়িয়ে ধরতে সন্তানের কোনো কারণের দরকার হয়না. মাকে সে প্রায় এইভাবে জড়িয়ে ধরে. ওর মাও ওর গালে চুমু খায়. মায়ের আদর পাওয়ার জন্য সে এটা প্রায়ই করে থাকে. বুবাইয়ের মাথায় স্নিগ্ধা হাত বুলিয়ে বললো : সোনার খিদে পেয়েছে? একটু পরেই মালতি মাসি খেতে ডাকবে. এই বলে সে বুবাইয়ের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বাইরে দেখতে লাগলো. কি সুন্দর না জায়গাটা? ছেলেকে জিজ্ঞেস করলো স্নিগ্ধা. বুবাই মাথা নাড়িয়ে হা বললো. বুবাই মুখ তুলে দেখলো মা বাইরে চেয়ে আছে আর ওই লকেটটা হাতে নিয়ে ওই নীল মনিটাতে হাত বোলাচ্ছে. বুবাইয়ের খুব হিসু পেয়েছিলো তাই সে মাকে ছেড়ে নীচে নামতে লাগলো. সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে সে কল ঘরে ঢুকে গেলো. বাথরুম করে বেরিয়ে আসতেই মালতির সাথে দেখা হলো তার. মালতি মাসিকে তার বেশ ভালো লাগে. মালতি বুবাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো : যাও... মাকে গিয়ে বলো আমি খাবার নিয়ে ওপরে যাচ্ছি. বুবাই ছুট্টে উপরে ঘরে উঠে গেলো. বুবাই দেখলো মা ঘরে নেই. সে জানলা দিয়ে দেখলো মা বারান্দার দক্ষিণ দিকটায় দাঁড়িয়ে আছে. সে ঘর থেকে বেরিয়ে মায়ের কাছে গেলো আর বললো : মা.... মালতি মাসি খাবার নিয়ে আসছে. কিন্তু একি? কথাটা কি মায়ের কানে গেলোনা? মা? মাসি খাবার নিয়ে আসছে. বুবাই দেখলো ওর মা বাইরে তাকিয়ে আছে. কি যেন ভাবছে আর মায়ের মুখে একটা হালকা হাসি. সে সেই একি ভাবে গলার লকেটটায় হাত বোলাচ্ছে. বুবাই আরো একবার মাকে ডেকে অসফল হলো, তখন সে গিয়ে মায়ের হাত ধরে মা মা করে ডাকতে লাগলো. ছেলের হাত ধরে মা মা ডাকতেই স্নিগ্ধা যেন সম্বিৎ ফিরে পেলো.

স্নিগ্ধা : হা? কি.... কি হয়েছে বুবাই? ডাকছিস কেন?

বুবাই : মা.... মাসি বললো তোমায় বলতে যে সে এক্ষুনি খাবার নিয়ে আসছে.

স্নিগ্ধা : ওহ.... আচ্ছা আচ্ছা....

বুবাই : কি ভাবছিলে মা?

স্নিগ্ধা :আমি? কৈ কিছুনাতো সোনা.

বুবাই : তোমায় কতবার ডাকলাম তুমি কিছু বলছিলেই না.

স্নিগ্ধা : ওহ.... তাই? ছাড় ওসব.... ঐতো মালতি এসে গেছে.

মালতি খাবার নিয়ে ওপরে এসে ওদের ঘরে ঢুকে টেবিলে খাবার রেখে চলে গেলো. মাছের ঝোল আর ভাত সাথে স্যালাড. বুবাই ছোট, এখনও কাঁটা বাছতে পারেনা তাই ওর মা ওকে খাইয়ে দিচ্ছে. খাওয়া হয়ে গেলে স্নিগ্ধা বাসন গুলো নিয়ে নীচে গেলো সাথে বুবাইও গেলো. সে কল তলায় হাত ধুয়ে আবার ওপরে চলে এলো. ওপরে এসে বুবাই শুনতে পেলো তিনতলা থেকে একটা দরজা খোলা বা বন্ধ হবার আওয়াজ এলো . তারমানে তিনতলায় কেউ আছে. কৌতূহল বশত বুবাই ওপরে উঠতে লাগলো. সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় দেখলো তপন নীচে নামছে. দুজনের দেখা হতেই তপন হেসে বললো : কি অর্ণব বাবু.... তুমি কি আঁকলে সেটা তো দেখলেই না. বুবাই হেসে বললো : এখনও পুরো শেষ হয়নি. আজ শেষ করে তোমাকে দেখাবো. তপন হেসে বললো : আচ্ছা... দেখিও কিন্তু. একদিন তোমার সাথে বসে খুব গল্প করবো. আমি ভালো ভালো গল্প জানি তোমাকে বলবো. এখন যাই. বুবাই বললো : আচ্ছা..... ঠিক আছে. তপন বুবাইয়ের গাল টিপে বললো : সোনা ছেলে. এখন আসি পরে আবার কথা হবে. আর হ্যা.... তিনতলায় তোমাকে যেতে হবেনা. বুবাই বললো : কেন? তপন মুখ কুঁচকে বললো : খুব নোংরা, ধুলো তাছাড়া বড়ো বড়ো মাকড়শা ইঁদুর তোমায় যদি কামড়ে দেয়? তাই বলছিলাম. ছাদে যাও কিন্তু ওখানে যাবার দরকার নেই. বুবাই ঘাড় নেড়ে বললো : আচ্ছা যাবোনা. তপন হেসে নীচে নামতে লাগলো. হটাৎ তার সাথে স্নিগ্ধার সামনাসামনি দেখা হয়ে গেলো. বুবাই দেখলো ওর মা তপনের দিকে এক পলক তাকিয়ে চোখ নামিয়ে ওর পাশ দিয়ে ওপরে উঠতে লাগলো . বুবাই দেখলো ওর মা ওপরে উঠতে উঠতে পেছন ফিরে তপনকে দেখতে লাগলো. তপনও ওর মায়ের দিকে চেয়ে. তারপর একটা হাসি দিয়ে সে নেমে গেলো. স্নিগ্ধাও ছেলেকে নিয়ে ঘরে চলে এলো. ঘরে এসে স্নিগ্ধা তার শশুরমশাইকে ফোন করলো এবং তার সঙ্গে কথা বললো একটু পরে শাশুড়িমাও স্নিগ্ধার সঙ্গে কথা বললো. শেষে বড়ো নাতির সঙ্গেও তারা কথা বললো. এরপর ফোন রেখে স্নিগ্ধা টিভি দেখতে লাগলো. বুবাই ভাবলো এই ফাঁকে তার আঁকাটা শেষ করে ফেলা যাক. পাশের ঘর থেকে তার আঁকার খাতা, রং পেন্সিল নিয়ে মায়ের ঘরে এসে মাকে বললো সে ছাদে যাচ্ছে. স্নিগ্ধা বললো : ঠিকাছে.... যা কিন্তু ছাদের ধারে যাবিনা. পুরোনো বাড়ি কোনো বিশ্বাস নেই. বুবাই মাকে আচ্ছা বলে ছাদে চলে গেলো. ছাদে ওঠার সময় সে একবার তিনতলার বারান্দাটা একবার ঘুরে নিলো. বুবাই দেখলো সবকটা ঘরে তালা দেওয়া, একটা ঘর খোলা. সেটায় সব পুরোনো জিনিস, ভাঙা টেবিল চেয়ার ইত্যাদি রাখা. তবে বাকি সবকটা ঘরের তালা জং ধরা কিন্তু একটা বন্ধ ঘরের তালা অতটা পুরোনো নয়. অন্যগুলোর তুলনায় বেশ নতুন. বুবাই সেই ঘরটার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সেটা একবার দেখেই আবার ছাদের উদ্দেশে পা বাড়ালো. ছাদের দরজা খোলাই থাকে. ছাদে উঠে সে আঁকার খাতা আর পেন্সিল মাটিতে রেখে ঘুরে ঘুরে ছাদটা দেখতে লাগলো. আসে পাশে সবুজ আর সবুজ. তিনটে নারকোল গাছ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে পুকুরটার ধারে. সে ভাবলো মায়ের সাথে একবার ওই পুকুরপারটা ঘুরে আসবে একদিন. বুবাই ফিরে এসে ওই আম গাছের ছায়ায় বসে আঁকার খাতা খুলে রং পেন্সিল দিয়ে নিজের আঁকার অবশিষ্ট অংশ পূরণ করতে লাগলো. আজকে সে আঁকাটা শেষ করেই কালকে ওই পুকুর পরের ছবি আঁকা শুরু করবে. বুবাই নীল রং দিয়ে খাতায় আকাশের জায়গাটা পূরণ করতে ব্যাস্ত হটাৎ পেছন থেকে একটা আওয়াজে সে চমকে উঠলো

কি আঁকছো বন্ধু?

বুবাই :কে! বলে চমকে পেছন ফিরে দেখলো তার কালকের পরিচিত বন্ধু রাজু কখন জানি পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে. বুবাই বললো : ওহ..... তুমি. কিন্তু তুমি কখন এলে? আমিতো তোমায় আসতে দেখিনি. রাজু হেসে বললো : হি...হি. . তোমার সামনে দিয়েই তো এলাম তুমি আমায় দেখতে পাওনি কারণ তুমি আঁকতে ব্যাস্ত ছিলে. বুবাই একটু অবাক হলো. তার সামনেই খোলা দরজা. কেউ ঢুকলে তার চোখে পড়তেই হবে. সে কি এতোই আঁকায় ডুবে ছিল যে কখন রাজু এলো সেটা দেখতেও পায়নি? হবে হয়তো.
রাজু ওর পাশে বসে পরলো. তারপর বুবাইয়ের আঁকা দেখে বললো : বাহ্.... তুমি তো খুব সুন্দর আঁকো. আমিও আঁকতাম. বুবাই ওর দিকে চেয়ে বললো : আঁকতে? এখন আঁকোনা? রাজু মুচকি হেসে বললো : না.... এখন আর আঁকিনা. এখন আর পারিনা. বুবাই আকাশের রংটা পূর্ণ করে রাজুকে দেখালো. রাজু ওর হাত থেকেই আঁকাটা দেখলো. নিজের হাতে নিলোনা. তারপর বললো : বা..... খুব সুন্দর হয়েছে. আচ্ছা... তুমি আমার একটা ছবি আঁকবে? বুবাই বললো কেন আঁকবো না, নিশ্চই আঁকবো. তুমি তো আমার বন্ধু. কিন্তু আজ নয় কাল. আজ তোমার গল্পটা শুনি. তুমি কালকে বলেছিলে আজকে আমায় বাকিটা বলবে. বলো এবার. রাজু হেসে বুবাইকে বললো : বেশ.... তবে বলছি শোনো. তবে একটা কথা বন্ধু, আমার গল্প শুনে তোমার একটু রকম লাগতে পারে. আমি এমন কিছু বলবো যেটা শুনতে তোমার অদ্ভুত লাগবে, কারণ যা ঘটেছিলো সেটা আমার কাছেও অদ্ভুত ছিল যদিও এখন আমি সব বুঝেছি তাই বলছিলাম আরকি? বুবাই হেসে চোখ বড়ো বড়ো করে বললো : বলো বলো.... আমি শুনতে চাই. আমি নতুন কিছু জানতে চাই. কি হয়েছিল তোমাদের সাথে যে তোমরা এই বাড়ি ছেড়ে দিলে. এখন অন্য জায়গায় থাকো? রাজু আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো : আমিও মায়ের সাথে রোজ এই ছাদে আসতাম. সন্ধে বেলায় আমি আর মা ছাদে হাটতাম. মা কাপড় তুলতে আসতো আর আমি আর ভাই ছাদে খেলা করতাম. ছোট ভাইটাকেও নিয়ে আসতাম মাঝে মাঝে. সব ঠিক চলছিল কিন্তু আমি জানতাম না এইসবার মাঝেই কখন যেন সব বদলাতে শুরু করেছিল. বুবাই বললো : উমমম... এই ভাবে নয়..... শুরু থেকে বলো, কাল যেখানে শেষ করলে ওখান থেকে বলো. রাজু বললো : আচ্ছা আচ্ছা বলছি. শোনো তাহলে. মা পরেরদিন থেকেই শুধু দাদুর নয়, পুরো বাড়ির রান্নার দায়িত্ব নিয়ে নিলো. লাবনী ভালো রাঁধতো কিন্তু মায়ের মতো নয়. আমার মনে আছে.... মায়ের হাতের রান্না খেয়ে দাদুর চোখের জল এসে গেছিলো যেন অনেকদিন পর সুস্বাদু খাবার এর স্বাদ তিনি পেলেন. মা লাবনীর পরিবর্তে নিজেই দাদুর সেবার দায়িত্ব নিলেন. তবে লাবনীকে দেখে আমার মনে হয়েছিল এই ব্যাপারটা তার যেন পছন্দ হয়নি. বাবা কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়লেন. একদিকে পারিবারিক ব্যাবসা আরেকদিকে সম্পত্তি নিয়ে আইনি আলোচনা আর উকিলের সঙ্গে কথাবার্তা. সব মিলিয়ে বাবা আসার দুদিনের মধ্যেই কাজে ডুবে গেছিলেন. আমার আর ভাইয়ের তখন গরমের ছুটি. তাই আমরা এদিক ওদিক খেলা করে বেড়াই. মা ভাইয়ের আর দাদুর খেয়াল রাখে আর রান্না করে. মা যেন এই বাড়িরও গৃহিনী হয়ে উঠলো. তবে সব কিছু পাল্টে গেছিলো পরে. সব কিছু ওলোট পালট হয়ে গেছিলো. আর এর শুরু হয়েছিল সেদিন যেদিন মায়ের হাতে ওইটা এলো. আমি কোনোদিন ভুলবোনা ওই দিনটা. সেদিন ছিল বুধবার. আমি ভাই দাদুর সঙ্গে বসে গল্প করছি. একটু পরে মা দাদুর সকালের খাবার নিয়ে এল. দাদুকে তুলে বসিয়ে মা নিজের হাতে তাকে খাইয়ে দিতে লাগলো. দাদু মায়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন : মা, তোমার হাতের রান্না খুব খেতে ইচ্ছে করতো কিন্তু তখনতো ডাকতে পারিনি. এই যাবার সময় তোমার হাতের খাবার খেতে পাচ্ছি এটাই আমার কাছে বড়ো প্রাপ্তি. মা বললো : ছি বাবা.... ঐসব কথা একদম বলবেন না. আপনার কিচ্ছু হবেনা. আমরা সবাই আছি আপনার সাথে. আপনি শুধু বিশ্রাম করুন দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে. মা দাদুকে খাইয়ে দিতে লাগলো. বাবা সেদিন সকাল সকাল বেরিয়ে গেছেন. এমন সময় পর্দা সরিয়ে ঘরে ঢুকলো জেঠু. তিনি এসে দাদুর দিকে তাকিয়ে একটু চোখ কুঁচকে তাকিয়ে আবার মুখে হাসি এনে বললেন : বাবা আপনি খাচ্ছেন.... বাহ্ দেখেও ভালো লাগছে. এই বলে তিনি দাদুর কাছে বিছানায় গিয়ে দাঁড়ালেন. দাদু বললেন : সুজিত..... বৌমার জন্যই সব কিছু হলো. আমি তোকে বলেছিলাম না..... আমার কোনো ভুল হয়নি বৌমা বাছতে. সত্যি মা তোমার হাতে জাদু আছে. জেঠু বললেন : ঠিক বলেছেন বাবা.... রঞ্জনের বৌ বাছতে তুমি কোনো ভুল করোনি. সব দিক থেকে যোগ্য তোমার বৌমা. আমি দেখলাম এই কথা গুলো বলার সময় জেঠু একদৃষ্টিতে মায়ের দিকে চেয়ে আছেন. মা হেসে জেঠুকে বললো : দাদা আমি আপনার খাবার নিয়ে এক্ষুনি আসছি. আপনি ঘরে গিয়ে বসুন. জেঠু হেসে বেরিয়ে গেলেন. দাদুর খাওয়া হয়ে গেলে মা তাকে শুইয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেলো ঘর থেকে. দাদু আমাদের সঙ্গে গল্প করতে লাগলেন. কিছুক্ষন পরে আমি ছোট ভাইকে দেখতে ঘরে যাচ্ছিলাম তখন দেখলাম মা খাবার নিয়ে তিনতলায় উঠে গেলো. মানে জেঠুকে খাবার দিতে গেলো. আমি ঘরে এসে দেখলাম ভাই ঘুমোচ্ছে. আমি ঘর থেকে বেরিয়ে উপরে ছাদে আসছিলাম তখনি তিনতলায় মায়ের আর জেঠুর গলা পেলাম. আমি জেঠুর ঘরের জানলার সামনে এসে দেখি জেঠু আর মা কথা বলছে. সঙ্গে লাবনী মাসিও দাঁড়িয়ে. উনি জেঠুরও খেয়াল রাখেন . জেঠু লাবনী মাসির কাছে মায়ের প্রশংসা করছেন. মাকে দেখলাম লজ্জা পেয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে. জেঠু হটাত মাকে বললেন : অনুপমা তুমি এই বাড়ির বৌমা. তোমার সঙ্গে তো এতদিন পর সাক্ষাৎ হলো তাই তোমায় কিছু দিতে পারিনি কিন্তু আমার ভাইয়ের বৌ হিসেবে তোমায় কিছু দেওয়া উচিত আমার. মা বললেন : না না দাদা আমার কিছু চায়না............ মায়ের কথা শেষ হতে না দিয়ে জেঠু আলমারির দিকে এগিয়ে গিয়ে বললেন : না অনুপমা....এটা আমার অনেকদিনের ইচ্ছা তোমায় কিছু দেওয়া. আমায় এইটুকু করতে দাও তুমি. মা আর কিছু বললো না. জেঠু আলমারি থেকে একটা লাল কাপড় বার করলেন. সেটা নিয়ে মায়ের কাছে এগিয়ে গিয়ে তার ভেতর থেকে একটা লকেট বার করে সেটা মায়ের হাতে দিয়ে বললেন : এটা আমি বেশ কয়েক বছর আগে তোমার জন্য কিনিয়ে রেখে ছিলাম এই ভেবে যে যেদিন তোমার সাথে দেখা হবে তোমায় উপহার দেবো. বিয়েতেতো আর কিছু দিতে পারিনি তাই এটা দিয়েই তোমায় আশীর্বাদ করবো. কিন্তু আমার কেন জানি মনে হলো ওই লাল কাপড়টাই আমি কালকে কল্যাণকে দিতে দেখেছিলাম জেঠুকে. মা ওই লকেটটা নিয়ে জেঠুর পা ছুঁয়ে প্রণাম করলো. জেঠু মায়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন : ভালো থাকো অনুপমা... আশা করি এইভাবেই তুমি আমার আর বাবার খেয়াল রাখবে. মা হেসে বললো : আপনি কোনো চিন্তা করবেননা দাদা....এটা আমার কর্তব্য. এবার আসি দাদা. মা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো. মা যখন পেছন ফিরে ঘর থেকে বেরোচ্ছিল তখন দেখলাম জেঠু আর লাবনীর মধ্যে চোখাচুখি হলো আর দুজনেই মুচকি হাসলো. তখন কি আর বুঝেছিলাম কি বিপদ আসতে চলেছে.


 
392
498
79
Update 07
.
.
বুবাই রাজুকে জিজ্ঞেস করলো কি বিপদ হয়েছিল? রাজু একটু ভাবলো তারপর বললো শোনো তাহলে. এখন আমি যা বলবো তা তোমার কাছে একদম নতুন কিছু হবে. তবে আমি যতটা পারি গুছিয়ে বলবো.

(এবার যে ঘটনাটি বলা হবে সেটি একটি ছোট বাচ্চার মুখ দিয়ে বেরোলেও বিশেষ মুহূর্ত গুলোর বর্ণনা লেখক প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য তাদের ভাষায় লিখেছেন )

রাজু বলা শুরু করলো :
সেদিন জেঠুর ঘর থেকে মা বেরোনোর পরে আমি ছাদে চলে গেছিলাম. কিছুক্ষন ঘোরাঘুরি করার পরে যখন সিঁড়ি দিয়ে নামছি তিনতলার ওই ঘরটায় যে ঘরটা তুমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলে ওই ঘরটা থেকে হাসির শব্দ শুনতে পেলাম. ওই ঘরটা জেঠুর ঘর. আমি এগিয়ে গেলাম ওই ঘরে. জানলা দিয়ে দেখি লাবনী আর কল্যাণ জেঠুর সাথে গল্প করছে. লাবনী হটাত আমায় দেখতে পেয়ে গেলো আর জেঠুকে বললো : গুরু...... না মানে দাদা দেখুন অনুপমার ছেলে এসেছে. তারপর আমাকে ভেতরে ডাকলেন জেঠু. এসো সোনা ভেতরে এসো. আমি এগিয়ে গেলাম. বাবা জেঠুর কাছে যেতেই বুঝলাম কি লম্বা জেঠামনি. আমাকে কোলে তুলে আমার গাল টিপে লাবনীকে বললেন : লাবনী..... দেখেছিস কি সুন্দর দেখতে হয়েছে আমার ভাইয়ের ছেলেকে. একদম মায়ের মুখ. যেমন সুন্দরী ওর মা ছেলেও তেমন সুন্দর দেখতে হয়েছে. তারপর আবার আমার গাল টিপে বললেন জেঠু : তোমাদেরকে দেখার জন্য কবে থেকে অপেক্ষা করে বসে আছি. তোমরা আসোনি কেন? তুমি তোমার ভাই, তোমার বাবা আর তোমার সুন্দর মাকে দেখার জন্য কবে থেকে অপেক্ষা করছি. আমি হাসলাম. লাবনী হেসে বললো : সত্যি দাদা. অনেকদিন অপেক্ষা করতে হলো ওদের আসার. তবে আর চিন্তা ওর মা যখন আমাদের বাড়িতে এসে গেছে তখন আর দুঃখ কি. কথাটার মানে তখন বুঝিনি. আজ বুঝি. যাইহোক...... আমি জেঠুর কোল থেকে নেমে ঘরে চলে আসি. এসে দেখি মা ভাইকে দুধ খাওয়াচ্ছে. এই মেজো ভাই গল্পের বই পড়ছে. সেদিন রাতে খাওয়া দেয়া শেষ করার পর আমি আর ভাই বারান্দায় খেলছি. মা বাবার সাথে কথা বলছে. আমি দেখলাম লাবনী তিনতলা থেকে নীচে নেমে গেলো. হয়তো জেঠুর ঘরে গেছিলো. মা আমাদের ঘরে ডাকলো শোবার জন্য. আমরা বেশ তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়তাম. বাবা নীচে বিছানা পেতে শুয়ে পড়লেন. আমি আর দুই ভাই মায়ের সাথে খাটে. আমরা তোমাদের ওই ঘরটায় ছিলাম যেটাতে তোমার বাবা মার ঘর. মা জানলা খুলেই ঘুমায়. ওই বারান্দার পাশের জানলাটা খোলা ছিল. সেটা দিয়ে বেশ হাওয়া ঢুকছিল আর চাঁদের হালকা আলোও. রাত তখন কটা বাজে জানিনা, হটাৎ কিসের জন্য যেন আমার ঘুমটা ভেঙে গেলো. আমি চোখ খুলে দেখি মায়ের চুড়ির শব্দ. আর মা কিসব যেন বলছে. জানলা দিয়ে আলো ঢুকছিল তাতেই আমি দেখলাম মা খুব নড়াচড়া করছে. কিসব বলছে. মা নিজের হাত দিয়ে গলার কাছে কি যেন ধরে আছে আর সেটায় হাত বোলাচ্ছে. মা পা দুটো একে অপরের সাথে ঘসছে. মায়ের চোখ বন্ধ কিন্তু মুখ দিয়ে কিসব বলে চলেছে . তারপর মা পাশ ফিরে শুলো. আমারো ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসছিলো. তাই ওতো কিছু না ভেবে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম. পরের দিন সকালে উঠে দেখি ভাইরা ঘুমোচ্ছে. মা নেই. বোধহয় কল ঘরে গেছে. বাবা সকাল সকাল শহরে চলে যান. তাই বোধহয় বেরিয়ে গেছেন. আমি উঠে নীচে নামতে লাগলাম. দালানে এসে দেখি অদ্ভুত কান্ড. জেঠু দাঁড়িয়ে. আমায় দেখতে পাননি উনি. আমি দেখলাম জেঠু কলঘরের একটা দরজার কাছে গিয়ে সেই দরজায় হাত রাখলো তারপর নিজের মনেই কিসব বলতে লাগলো. তারপরেই ওই দরজা লক্ষ্য করে ফুঁ দিলো. তিনবার. আমি কিছুই বুঝলাম না. আমি দেখলাম জেঠু দরজার সামনে দিয়ে সরে গিয়ে পেছনের ভাঙা পাঁচিল ডিঙিয়ে কলঘরের বাইরের দিকটায় চলে গেলেন. তিনি চলে যেতেই আমি তাড়াতাড়ি বাথরুম করে বেরিয়ে ওই ভাঙা পাঁচিল এর কাছটায় গেলাম. আমি সাহস করে আর লাফ দিতে পারলাম না. চলে এলাম. তখনি দরজা খোলার শব্দ হলো. আমি এগিয়ে আসতেই দেখি মা কলঘর দিয়ে বেরিয়ে এলো. মা ওই বাথরুমটাতেই ঢুকে ছিল যেটার সামনে একটু আগে জেঠু দাঁড়িয়ে ছিলেন আর কিসব করছিলেন. আমি মায়ের কাছে এগিয়ে যাবো ভাবছি হটাৎ দেখি মা নিজের মনেই হেসে উঠলো আর গামছা দিতে তার লম্বা চুল মুছতে লাগলো. আমি তখনি প্রথম লক্ষ্য করলাম মায়ের গলায় ঝুলছে জেঠুর দেওয়া সেই লকেট. শাড়ীটা ভিজে মায়ের গায়ে লেপ্টে ছিল তারমানে মায়ের স্নান হয়ে গেছিলো. মা গামছা দিয়ে চুল মুছতে মুছতে ওপরে যেতে লাগলো. এরপর আরেকটু সময় পার হলো. আমি আর ভাই বারান্দায় দৌড়ো দৌড়ি করে খেলা করছি. মা আমাদের বকা দিয়ে দাদুর ঘরে গেলো. এখন মা নিজেই দাদুকে খাইয়ে দেন. একটা আশ্চর্য জিনিস লক্ষ্য করলাম মায়ের হাতের খাবার খেয়ে দাদুকে যেন আগের থেকে ভালো লাগছিলো. মনে হচ্ছিলো অবস্থার উন্নতি হচ্ছে. মা দাদুকে খাওয়ানো শেষ করে নিজেই লাবনীর সঙ্গে তিনতলায় চলে গেলো. অর্থাৎ জেঠুকে খাবার দিতে . আমি আর ভাই একতলায় নেমে দালানে ছোট একটা বল নিয়ে খেলতে লাগলাম. তখন আমাদের ছুটির সময় তাই আমরা দুই ভাই খেলে নয় গল্পের বই পড়ে সময় কাটাই. বল খেলতে খেলতে একসময় হয়তো আমি একটু জোরেই বলটা ছুড়ে ছিলাম. বলটা ভাইয়ের ওপর দিয়ে একতলার একটা ঘরে ঢুকে গেলো. ভাই ছুট্টে গেলো বলটা আনতে. আমি বাইরে দাঁড়িয়ে আছি এমন সময় আমি শুনলাম ভাই আমায় ডাকছে. আমিও ভেতরে গেলাম. দেখি ভাই যে ঘরে ঢুকেছে সেখানে পুরোনো সব আসবাব পত্র রাখা. ও বললো বলটা খাটের নীচে ঢুকে গেছে, ওখানে নানারকম জিনিসে ভর্তি আর অন্ধকারও. ওখানে ঢুকতে ওর ভয় করছে. ও ছোট তাই আমিই ঢুকবো বলে স্থির করলাম. আমি খাটিয়ার নীচে ঢুকলাম. কিন্তু বল খুঁজেই পাচ্ছিনা. আমার হাতে একসময় বলটা ঠেকলো. আমি ওটা নিয়ে হাতে নিতেই আরো একটা জিনিস আমার হাতে ঠেকলো. একটা কাপড়ের ঝোলা. আমার কি মনে হতে আমি ওটাও বাইরে নিয়ে এলাম. বাইরে এনে দেখি ওটা একটা লাল কাপড়ের পুটলি. খুব পুরোনো আর বেশ কয়েকটা গিঁট বাঁধা. আমি খুলতে যাবো এমন সময় কার যেন পায়ের শব্দ পেলাম. আমি চালাকি করে ওটা আবার ভেতরে ঢুকিয়ে দিলাম আর দরজা দিয়ে বেরোতে গেলাম. তখনি একজনের সাথে ধাক্কা খেলাম. দেখি কল্যাণ. সে আমাদের এই ঘরে দেখে অবাক. আমি লক্ষ্য করলাম আমাদের এখানে দেখে তার মুখে একটা রাগ ফুটে উঠলো কিন্তু সে সেটা সামলে নিয়ে হেসে বললো : আরে.... বাবুরা... তোমরা এই ঘরে কেন? আমি বললাম বল ঢুকে এসেছিলো. ও বললো : আচ্ছা.... আচ্ছা.... কিন্তু বাবারা তোমরা এই ঘরে ঢুকনা হা. আমি কেন জিজ্ঞেস করতে সে বললো : আসলে দেখতেই পাচ্ছ খুব নোংরা ঘরটা, তাছাড়া নানারকম পোকা মাকড়, ইঁদুর আরশোলা থাকতে পারে যদি তোমাদের কামড়ে দেয়. এই শুনে ভাই ভয় পেয়ে গেলো আর আমাকে ধাক্কা দিতে লাগলো বাইরে যাওয়ার জন্য. আমি আর ভাই বাইরে আসতেই কল্যাণ ঘরটা তালা মেরে দিলো. আমার কেমন জানি লাগলো ব্যাপারটা. সকালে জেঠু ঐরকম আবার এখন কল্যাণের তাড়াহুড়া করে ঘর বন্ধ করে দেওয়া. ভাই আমাকে বললো ও মায়ের কাছে যাবে. আমরা ওপরে চলে এলাম. দেখলাম মা আর লাবনী বারান্দায় গল্প করছে. মাকে দেখে ভাই দৌড়ে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরলো. মা ভাইকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করে বললো : কি হয়েছে সোনা? ও আমাদের একটু আগের ঘটে যাওয়া সব কিছু বললো. মা ওই কথা শুনে আমাকে হালকা বকা দিলো. বললো : ও ছোট কিন্তু তুই তো বড়ো হচ্ছিস. ওরম নোংরা জায়গায় একটা বল এর জন্য গেলি কেন. ইশ.... জামায় নোংরা গুলো লাগিয়ে এসেছে. আয় জামা পাল্টে নে. লাবনী দেখলাম ভাইয়ের ওই কথা শুনে বললো : বৌদি আমি বরং নীচে যাই হ্যা... আর জামাটা আমাকে দিয়ে দিন আমি ধুয়ে দেবো. মায়ের কথায় জামাটা খুলে লাবনীকে দিয়ে দিলাম. ও জামাটা নিয়ে বেরিয়ে গেলো. মা ভাইকে নিয়ে ঘরে চলে গেলো. আমি বারান্দা দিয়ে নীচে তাকিয়ে দেখলাম লাবনী নীচে নেমে কল্যাণের ঘরের দিকে চলে গেলো. আমি ঘরে এসে জামা আরেকটা জামা পড়ে নিলাম. আমরা দুই ভাই সকালেই স্নান সেরে স্কুলে যেতাম. কিন্তু যেহেতু এখন ছুটি তাই আমরা সারাদিন খেলা আর দুস্টুমি করে বেড়াই আর দুপুরে স্নান করতে যাই. আমি নিজে স্নান করতে পারি কিন্তু ভাই এখনও ছোট তাই মা ওকে স্নান করিয়ে দেয়. মা আমাকে ছোট ভাইয়ের সাথে ঘরে থাকতে বলে মেজো ভাইকে নিয়ে স্নান করাতে চলেছে গেলো. আমি বারান্দায় বল নিয়ে খেলছি. নিচেই কলঘর. ঐতো... দেখতে পাচ্ছি মা ভাইকে. মা ভাইকে মগে জল নিয়ে ভাইয়ের মাথায় ঢালছে ভাই দুস্টুমি করছে. মা হাসছে. হটাৎ আমার পিঠে একটা হাত. আমি ঘুরে দেখি জেঠু. জেঠু আমায় দেখে হেসে বললেন : কি দেখছো বাইরে? এইবলে তিনিও নীচে তাকালেন আর তাকাতেই আমি দেখলাম ওনার চোখ মুখের ভঙ্গি কেমন যেন বদলে গেলো. সে একদৃষ্টিতে নীচে তাকিয়ে আছে. ওদিকে মা ঝুঁকে ভাইকে স্নান করাচ্ছিল. মা সামনের দিকে ঝুঁকে ছিল আর মায়ের শরীর আঁচলটা কখন কাঁধ থেকে সরে গিয়ে মায়ের ব্লউসেটা বেরিয়ে পড়েছে সেটা সে লক্ষই করেনি সে ভাইকে স্নান করাতে করাতে হাসছে আর ভাইকে আদর করছে. মা আমাদের তিন ভাইকেই খুব আদর করে খুব ভালোবাসে. কিন্তু জেঠু ঐভাবে মাকে দেখছেন কেন? জেঠুর পরনে ছিল ধুতি আর গেঞ্জি. আমি দেখলাম তিনি গেঞ্জিটা খুলে ফেললেন আর সেটা কাঁধে রেখে তার লোম ভর্তি বুকে হাত বোলাতে বোলাতে নীচে দেখতে লাগলেন. জেঠুর চোখ দুটো লাল হয়ে গেলো. তার চোয়াল শক্ত. আমার কেমন যেন লাগছে. আমি জেঠুকে ডাকলাম. কিন্তু তিনি যেন শুনতেই পেলেননা. তিনি আমার সামনে থেকে থেকে সরে গিয়ে আরো এগিয়ে বারান্দায় যেখান দিয়ে আরো ভালোভাবে কলঘরটা দেখা যায় সেখানে গিয়ে দাঁড়িয়ে ঝুঁকে দেখতে লাগলেন. একটু পরে দেখলাম মা ভাইকে কোলে নিয়ে বেরিয়ে আসছে. সেটা দেখে জেঠুও বারান্দায় থেকে সরে গিয়ে ওপরে নিজের ঘরে যেতে লাগলেন. আমার মনে হলো উনি যখন হাঁটছিলেন ওনার ধুতির সামনের দিকটা কেমন যেন উঁচু হয়ে ছিল. আমি বুঝলাম না. এরপর মা ভাইকে নিয়ে ওপরে উঠে এলো আর আমি গেলাম স্নান করতে. দুপুরে খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে মা একটু ঘুমিয়ে নেয়. সেদিনও মা আর আমার দুই ভাই মায়ের পাশে ঘুমিয়ে পরলো. মা আমাকেও জোর করে শুইয়ে দিয়েছিলো. কিন্তু আমি ছিলাম খুব ছট ফটে. তাই আমি জেগে রইলাম. ওরা ঘুমিয়ে পড়তেই আমি আসতে করে বেরিয়ে এলাম আঁকার খাতা নিয়ে তোমার মতোই. আমিও ভাবলাম ছাদে গিয়ে একটা ছবি আঁকবো. আমি ছাদে উঠছি এমন সময় একটা কান্না জড়ানো শব্দ শুনতে পেলাম. ভুল হয়ে গেছে ছেড়ে দিন বাবাজি. তারপরেই একটা হুঙ্কার ছেড়ে দেবো তোকে তোর জন্য আজ আমার এতদিনের পরিকল্পনা ভণ্ডুল হতে যাচ্ছিলো. আর তোকে ছেড়ে দেবো? কে বলেছিলো দরজা খোলা রেখে বেরিয়ে যেতে? আমি ভয় পেলাম তাই চুপচাপ ছাদে উঠেছে গেলাম. আমি ভেবে ছিলাম কল্যাণের কোনো ভুলে জেঠু তাকে বকছেন. আমি ছবিটা আঁকতে বসলাম. আমার মা আমি আমার ভাইয়েরা আর বাবার একসাথে দাঁড়িয়ে একটা ছবি. সেটা আজও আঁকা শেষ হলোনা. আজও অসমাপ্ত. এই বলে রাজু একটু থামলো. তারপর কি যেন ভাবলো. শেষে আবার বলতে শুরু করলো : আমি কিছুটা ছবি এঁকে নীচে নেমে এলাম. খুব শান্ত ভাবেই দিন শেষ হলো. নেমে এলো রাত. বাবা সন্ধের মধ্যে ফিরে এসেছিলেন. রাত্রে খাওয়া শেষ করে বাবা গেলেন দাদুর সাথে দেখা করতে. দাদুর সঙ্গে কিছু সময় কাটিয়ে বাবা ঘরে এলেন. মা তখন বিছানা পাতছে. বাবা মাকে বললেন যে তিনি 6 দিনের জন্য কলকাতার বাইরে যাবেন. ব্যাবসার জন্য. বাবার কথা শুনে আমি ভাই বাবাকে জড়িয়ে ধরে বললাম : বাবা... আপনি এতদিন থাকবেননা... আমরা আপনাকে ছাড়া কি করে থাকবো? বাবা হেসে আমাদের আদর করে মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন : আরে চিন্তা করছিস কেন? এখানে তো সবাই আছে. দাদু জেঠু বাড়ির লোক. চিন্তা কিসের? মা বললেন : কিন্তু.........? মাকে থামিয়ে বাবা বললেন : কোনো চিন্তা নেই. আমি তো আগেও এরকম বাইরে গেছি. তখন তো তোমাকেই সব সামলাতে হতো. আর এখানে তো কত লোক. চিন্তা করোনা. আমি 6 দিনের দিনই ফিরে আসবো. চলো শুয়ে পড়ি. বাবা আমাদের মাথায় আবার হাত বুলিয়ে শুয়ে পড়লেন. মা আমাদের নিয়ে শুয়ে পড়লেন. আমি একদিকের ধারে আর মা আরেক ধারে, মাঝে দুই ভাই. মায়ের দিকের জানলাটা খোলা. আমরা আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়লাম. কি শান্ত পরিবেশ. বাইরে ঝিঁঝি পোকার আওয়াজ. মাঝে মাঝে শেয়ালের ডাক. এইসব শুনতে শুনতে কখন জানি ঘুমিয়ে পড়লাম . কতক্ষন ঘুমিয়েছি জানিনা হটাৎ ঘুমটা ভেঙে গেলো. আমার ঘুমটা একটু পাতলা, একটুতেই ভেঙে যেত. আমি ঘুম ভেঙে দেখি মায়ের আওয়াজ আসছে. আমি মায়ের দিকে ফিরলাম. দেখি মা কালকের মতোই নড়াচড়া করছে. তার ঠোঁটে হালকা হাসি. মা মাথার বালিশটা দু হাতে চেপে ধরে আছে. মায়ের শাড়ীর আঁচল খসে পড়েছে. ব্লাউস বেরিয়ে এসেছে. খুব জোরে জোরে নিঃস্বাস নিচ্ছে মা. তারপর দেখি মায়ের শাড়ী সায়া হাঁটু পর্যন্ত তোলা. পা দুটো হাঁটু পর্যন্ত বেরিয়ে এসেছে. মা কিসব বলে চলেছে. আমি কান পেতে শুনলাম. মা বলছে : উফফফফ..... এসব কি হচ্ছে.... আমি.. আমি.... পারছিনা... কে আপনি? যাবেন না.... যাবেন না... কোথায় যাচ্ছেন? . .... আমায় এইভাবে ছেড়ে যাবেন না..... আমি পারছিনা..... একি !!! দাদা আপনি !! তারমানে কালকে ওটা আপনি ছিলেন !! এমা.... না না... ছাড়ুন ছাড়ুন.... উফফফ কি সুখ.... এটা ঠিক নয়.... এটা ঠিক নয়.....উঃ আঃ.....আস্তে... আস্তে কি সুখ.


আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না. মা দেখলাম কালকের মতো লকেটটা খামচে ধরে হাসছে. মা নিজের পায়ে পা ঘসছে. মায়ের পায়ে নুপুর ছিল. সেই নুপুরের শব্দ সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে. মায়ের শাড়ী নীচে ঝুলছে. তার অপরের অঙ্গে শুধু ব্লাউস. মায়ের পেট বেরিয়ে পড়েছে. মা বলছে :দাদা দাদা আস্তে আস্তে করুন..... হ্যা এইভাবে.... এ কি করছি আমি . দাদা আমি একি করছি? উফফফফ পাপি আমি. আমাকে শাস্তি দিন. আঃ উঃ মাগো কি সুখ. মাকে ওরকম দেখে আমার ভয় লাগলো. আমি মাকে ডাকতে লাগলাম মা মা করে. একটু পরেই মায়ের ঘুম ভেঙে গেলো. মা ধড়ফড় করে উঠে বসলো. আমি মাকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে? মা বললো : কৈ? কিছু হয়নি তো..... ঘুমিয়ে পর. এইবলে নিজেকে ঠিক ঠাক করে মা শুয়ে পরলো. আমি আবার শুয়ে পড়লাম. আমার চোখটা গেলো জানালায় আর আমার বুকটা ধক করে উঠলো. আমি স্পষ্ট দেখলাম কেউ একজন জানলা দিয়ে সরে গেলো.

পরের দিন সকালে বাবা আমাদের আদর করে দাদুর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন. মা আমি আর ভাইও গেলাম বাবার সাথে. গিয়ে দেখি জেঠুও ঐঘরে বসে. আমি মায়ের পেছনে ছিলাম. ঘরে ঢোকার মুখে মা হটাৎ কি দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পরলো. আমি দেখি জেঠুকে দেখে মা দাঁড়িয়ে আছে. তারপর মাথা নিচু করে ঘরে ঢুকলো মা. বাবা গিয়ে দাদুর পা ছুঁয়ে প্রণাম করলেন আর বললেন তিনি কয়েকদিনের জন্য বাইরে যাচ্ছেন. জেঠু জিজ্ঞেস করলেন : কতদিনের জন্য বাইরে যাচ্ছিস? বাবা উত্তর দিলেন 6 দিন. এটা শুনেই আমি দেখলাম জেঠুর মুখে একটা হাসির ঝলক খেলে গেলো. তার চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো. প্রচন্ড খুশির খবর শুনলে মানুষের মুখে যে ভাব ফুটে ওঠে সেই রকম একটা ভাব. তবে সেটা সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে স্বাভাবিক ভাবে জেঠু বাবাকে বললেন : সাবধানে যা. এখানের কোনো চিন্তা করিসনা. (তারপরে মায়ের দিকে তাকিয়ে): আমি আছি তো ওদের দেখভাল করার জন্য. বাবা খুশি হয়ে জেঠুকে প্রণাম করলেন. বাবার প্রণাম করার সেই মুহূর্তে দেখলাম জেঠু একবারও বাবার দিকে না তাকিয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে ছিল. মা দাদুর পাশে দাঁড়িয়ে ছিল. মাও আড়চোখে কয়েকবার জেঠুকে দেখলো. তারপর লজ্জায় মুখ নামিয়ে নিলো. বাবা উঠে দাঁড়াতেই জেঠু বাবার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো. বাবা মাথা জেঠুর কাঁধের কাছেই শেষ. আর স্বাস্থ্যের দিক দিয়েও জেঠু অনেক স্বাস্থবান. আমরা দাদুর ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম. আমি বাবা ভাই মা আর পেছন পেছন জেঠুও বেরিয়ে এলেন. তিনিও আমার ভাইকে কোলে নিয়ে আমাদের সাথে নিচ অব্দি এলেন. বাবা বেরিয়ে যাবার আগে আমার মাথায় হাত রেখে আদর করে বলে গেছিলেন : রাজু.... তুমি বড়ো ভাই, তাই ছোট ভাইদের খেয়াল রাখবে আর মায়ের কথা শুনবে. ঠিক আছে? আমি মাথা নেড়ে জবাব দিয়েছিলাম : হ্যা বাবা আমি ভাইদের খুব খেয়াল রাখবো. ওদের কোনো বিপদ হতে দেবোনা. আমার উত্তরে বাবা খুশি হয়ে আমার মাথায় চুমু খেয়ে চলে গেছিলেন. আমি বাবাকে সেই শেষ দেখেছিলাম.

বুবাই হটাৎ রাজুকে থামিয়ে জিজ্ঞেস করলো : সেই শেষ দেখেছিলে মানে? তোমার বাবার কি কিছু হয়েছিল? এই কথা শুনে রাজু মুচকি হেসে উঠলো. তারপর বলল : সেটা পরে বলছি. আগে বাকিটা শোনো. বাবা চলে যেতে আমরা ঘরে ঢুকে এলাম. মেজো ভাই জেঠুর কোলে চড়ে তার সাথে গল্প করছিলো. মা ওপরে চলে গেলো. আমি মায়ের পেছন পেছন উঠছিলাম হটাৎ দেখলাম কল্যাণ জেঠুর সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে গেলো. আমার কি মনে হতে আমি আর ওপরে না উঠে সিঁড়ির পাশে দাঁড়িয়ে রইলাম. লুকিয়ে দেখলাম কল্যাণ কাচুমাচু মুখ করে জেঠুর কাছে এগিয়ে এলো. জেঠু ভাইকে কোলে নিয়ে আদর করছিলো. ছোট্ট 5 বছরের বাচ্চা তখন ভাই. কল্যাণ এসে বললো : আর কোনোদিন এরকম হবেনা. ক্ষমা করে দিন. জেঠু হেসে বললেন : থাক.... আমি তোদের ক্ষমা করে দিয়েছি. আজ আমি খুব খুশি. তারপর ভাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন : এর বাবা আজ 6 দিনের জন্য কাজে বেরিয়ে গেলো. এটা শুনে কল্যাণেরও চোখ মুখ আনন্দে ভোরে উঠলো. সে বললো : বাহ্..... এতো সোনায় সোহাগা বাবাজি. আপনার এতদিনের মনের আশা পূরণ হওয়ার পথে আর বাঁধা নেই. জেঠু বললেন : তা ঠিক বলেছিস. আমার ভাইয়ের ছেলেটাকে কি মিষ্টি দেখতে হয়েছে না.... কি বলিস কল্যাণ? কল্যাণ এগিয়ে এসে ভাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো : তা ঠিক বলেছেন. তিনটেরই মুখ মায়ের মতন. জেঠু ভাইকে চুমু খেয়ে বললেন : একদম ঠিক বলেছিস. একদম অনুপমার মুখ বসানো. কল্যাণ বিশ্রী হাসি হেসে বললো : আপনি ভাববেন না..... আপনারটাও এমন সুন্দর দেখতে হবে. জেঠু বললেন : শোন......আজকেই ওই ওষুধটা নিয়ে আসবি আর লাবনীকে বলবি ওর খাবারে............কল্যাণ জেঠুকে থামিয়ে বললো : আপনি কিচ্ছু ভাববেন না..... আমি কালকেই ওটা নিয়ে এসেছি. লাবনীকে বলাই আছে. আজকেই সব মিশিয়ে দেবে. আপনি কোনো চিন্তা করবেননা. আপনি শুধু এর মায়ের সাথে.... হা.. হা... হা.. হা.

ভাই হটাৎ জিজ্ঞেস করলো : তোমরা হাসছো কেন? এটা শুনে ওরা আরো হেসে উঠলো. তখনি মা ওপর থেকে হাঁক দিলো. জেঠু ভাইকে নামিয়ে দিলো. ভাই দৌড়ে ওপরে উঠে গেলো. আমি লুকিয়ে ছিলাম বলে ও আমায় দেখতে পেলোনা. আমি শুনলাম জেঠু বলছে : বাচ্চাদের মন কি পবিত্র হয় বল? বলে তোমরা হাসছো কেন? কল্যাণ বললো : বেচারা জানেই না আমরা ওর জননীকে নিয়েই আলোচনা করছিলাম. ও জানেনা আর জানতেও পারবেনা কি ব্যাপার. শুধু জানবো আমি লাবনী আপনি আর ওর মা. জেঠু বললো : এই সুযোগ এসেছে যখন তখন আবার এই বাড়িতে সেই দিন ফিরে আসবে. সেই অসম্পূর্ণ কাজ যা সুজাতার সাথে হয়ে ওঠেনি তা এবার সম্পন্ন হবে অনুপমার মাধ্যমে.

আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না ওদের কথাবার্তা. শুধু কেন জানি খারাপ অনুভূতি হচ্ছিলো. আমি ওপরে উঠে এলাম. মা তখন ছোট ভাইকে দুধ দিচ্ছে. মেজো মায়ের গলা জড়িয়ে আদর খাচ্ছে. আমি ওদের দেখে আবার বাইরে বারান্দার চেয়ারে বসে গল্পের বই পড়তে লাগলাম. একটু পরে দেখি মা ছোট ভাইকে কোলে নিয়ে বেরিয়ে এলো. পেছনে মায়ের শাড়ীর আঁচল ধরে মেজো. মা বারান্দাটা এদিক থেকে ওদিক হাঁটতে হাঁটতে ভাইকে ঘুম পাড়াতে লাগলো. আমি আবার বইতে মনোযোগ দিলাম. যখন আমি আবার মাথা তুললাম দেখি মা ভাইকে কোলে নিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে. ব্যাপারটা স্বাভাবিক কিন্তু একটা ব্যাপার আমার কেমন যেন লাগলো. আমি দেখলাম মা একদৃষ্টিতে নীচে তাকিয়ে আছে. আর জোরে জোরে নিঃস্বাস নিচ্ছে. আমার কি মনে হতে আমিও এগিয়ে গিয়ে বারান্দার রেলিং এর ধারে এসেছে নীচে তাকালাম. দেখলাম জেঠু. তিনি পুরো দালানটা ঘুরে ঘুরে ব্যায়াম করছেন. এ দৃশ্য আমি আগেও দেখেছি. তাই এটা আমার কাছে নতুন কিছু নয়. কিন্তু মা তাহলে ঐভাবে চেয়ে আছে কেন? জেঠু খালি গায়ে শুধু ধুতি পরে খোলা হাতে ব্যায়াম করছেন. কি লম্বা চওড়া শরীর জেঠুর. কিন্তু আমাদের বাবা এনার কোনো ধাঁচ পাননি. দালানের একটা দিকে বড়ো বড়ো ইট পাথর এসব পড়ে থাকে. এবার দেখলাম তিনি দু হাতে দুটো বড়ো বড়ো পাথর নিয়ে হাত ভাঁজ করে হাতের ব্যায়াম করতে লাগলেন. বাব্বা কি হাতের জোর. আমি মাকে বলতেই যাচ্ছিলাম জেঠুর হাতে কি জোর তাইনা মা? কিন্তু সেটা বলতে যেই মায়ের দিকে মুখ ঘোরালাম আমি দেখলাম মা একদৃষ্টিতে জেঠুর ওই ব্যায়াম করা দেখছে আর কেমন করে যেন জেঠুর দিকে চেয়ে আছে. এই দৃষ্টির মানে আমি বুঝলাম না. মা ভাইকে এক হাতে ধরে আরেকটা হাত ঘরের কাছে, গলায় বোলাতে লাগলো তারপর ওই লকেটটা ধরে ওই নীল মনিটার ওপর আঙ্গুল ঘষতে ঘষতে চেয়ে রইলো জেঠুর দিকে. হটাৎ দেখি মা লজ্জায় চোখ সরিয়ে নিলো. নীচে তাকিয়ে দেখি জেঠু ওপরেই চেয়ে আছে মায়ের দিকটায়. মা আর তাকালোনা ভাইকে নিয়ে ঘরে চলে গেলো. আমি দেখলাম জেঠু পাথর দুটো ফেলে দিয়ে মুচকি হেসে কল ঘরে ঢুকে গেলেন. আমি আবার চেয়ারে বসে বই পড়তে লাগলাম. এরপর দুপুরে ভাইকে স্নান করানোর সময় আমি আবার দেখলাম অদ্ভুত ব্যাপার. মা ভাইকে স্নান করাচ্ছিল. আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম. ভাই দুস্টুমি করছে. মা হাসছে. হটাৎ মায়ের দৃষ্টি চলে গেলো উপরের দিকে. আমি দেখলাম মা উপরের দিকে মানে আমাদের দোতলার ওপরে চেয়ে আছে. মানে তিনতলায়. কিন্তু তিনতলায় মা বার বার কি দেখছে? বুঝতে পারলাম না. মা দেখলাম ভাইকে স্নান করানো ছেড়ে ওপরেই চেয়ে আছে আর তারপরই হটাৎ কাকে দেখে যেন হেসে উঠলো মা. আমি কিজানি মনে হতে দৌড়ে তিনতলায় গেলাম. দেখি জেঠু বারান্দায় দাঁড়িয়ে. তার মুখেও হাসি. কিন্তু তার একটা হাত নিজের দুই পায়ের মাঝে. খুব জোরে জোরে নড়ছে. কি করছেন বুঝতে না পেরে চলে এলাম. দুপুরে খাবার পর মা একটু ঘুমায়. কিন্তু সেদিন ঘুমানোর সময় মাকে দেখলাম মা শুয়ে শুয়ে খালি কেমন নড়াচড়া করছে. আমি মাকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে মা? মা যদিও মুখে বললো কিছু হয়নি সোনা. কিন্তু আমার মাকে দেখে মনে হলো মায়ের কিছুতো হয়েছে. একটু পরে মা বিছানায় থেকে উঠে নীচে নেমে বাইরে গেলো. বলে গেলো কলঘর থেকে আসছি. বেশ কিছুক্ষন কেটে গেলো. আমারো ঘুম আসছিলোনা. একটু পরে আমিও বাইরে বেরোলাম. বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরের হাওয়া খাচ্ছি. খুব হাওয়া দিচ্ছে. হটাত নীচে কলঘরে চোখ চলে গেলো. দেখলাম জেঠু সেদিনের মতোই একটা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সেই দরজাটায় কান পেতে কি যেন শুনছেন. আমি স্পষ্ট দেখলাম ওনার মুখে হাসির ঝলক. উনি একহাত নিজের ধুতির ভেতর ঢুকিয়ে কি যেন করছেন আর কান পেতে কি শুনছেন. এরপর হটাৎ করেই উনি দরজার কাছ থেকে সরে গেলেন আর দৌড়ে কলঘরের আরেকটা বাথরুমে ঢুকে গেলেন. তখনি দেখলাম মা সেই দরজা খুলে বেরোলো. তার মুখে একটা কেমন হাসি. চোখ বুজে একবার উপরের দিকে মুখ তুলে হেসে উঠলো মা. তারপর উপরে আসতে লাগলো. আমি চুপচাপ গিয়ে ভাইয়ের পাশে শুয়ে পড়লাম. একটু পরে মা এসে আমার পাশে শুয়ে পরলো. সন্ধেবেলায় আমি আর ভাই দাদুর ঘরে বসে আছি. মা দাদুকে খাইয়ে দিচ্ছে. হটাৎ জেঠু ঘরে ঢুকলেন. পেছন পেছন লাবনী আর কল্যাণ. জেঠু মাকে দেখে বললেন : ওহ তুমি এখানেই আছো.... ভালোয় হলো. তারপর দাদুর দিকে চেয়ে বললেন : বাবা.... কল্যাণ আর লাবনী দুজন কদিনের জন্য নিজেদের বাড়ি যাবে. ওদের কাকার নাকি খুব শরীর খারাপ. এইশুনে মা বললো : ওমা.... সেকি ! তাহলে তো যাওয়া উচিত. দাদুও বললেন : হা..... তোমরা যাও যাও.... তার সাথে দেখা করে এসো. লাবনী কাচুমাচু মুখ করে বললো : না মানে বৌদি একা হয়ে যাবেন.... মানে ওনার একা সব সামলাতে কোনো অসুবিধা......... লাবনীর কথা শেষ করতে না দিয়েই মা বললো : তুমি কোনো চিন্তা করোনা লাবনী. আমি সব সামলে নেবো. কোনো অসুবিধা হবেনা. তোমরা নিশ্চিন্তে যাও. এটা শুনে ওরা দুজন দাদুকে প্রণাম করে জেঠুকে প্রণাম করে বেরিয়ে গেলো. তার আগে জেঠুর সঙ্গে ওদের ইশারায় কি যেন কথা হলো আমি বুঝলাম না. ওরা বেরিয়ে গেলে জেঠু মাকে বললেন : অনুপমা...... তুমি কোনো চিন্তা করোনা আমি আছিতো. মা হেসে লজ্জা পেয়ে বললো : দাদা.... আমার কোনো অসুবিধা হবেনা. নিজের লোকেদের জন্য কাজ করতে কি কারোর অসুবিধা হয়. এই কথা শুনে দাদু মায়ের মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করলেন. ওদিকে জেঠুও বললেন : সত্যি বলেছো অনুপমা..... নিজের মানুষের সেবা করার আনন্দই আলাদা. এক আলাদাই সুখ আছে তাতে. এই কথা জেঠু মায়ের দিকে চেয়ে বললেন. মাকেও দেখলাম জেঠুর দিকে চেয়ে আছে. এরপর জেঠু নিজের ঘরে চলে গেলেন. যাবার আগে আরেকবার মুখ ফিরিয়ে মায়ের দিকে চাইলেন. মা আর জেঠুর আবার চোখাচুখি হলো. মা কেমন করে যেন জেঠুর শরীরটা দেখে নিলো তারপর আবার চোখ নামিয়ে নিলো. জেঠুও ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো. আমি বুঝতে পারিনি সেদিন কি ভয়ানক সময়ের সূচনা হতে চলেছিল এবার. যা সব কিছু বদলে দিয়েছিলো. স্বাভাবিকতার পাতলা বাঁধন ভেঙে অস্বাবিকতার কঠিন দেয়াল গড়ে উঠেছিল. শুরু হতে চলেছিল নতুন অধ্যায়ের.



....................চলবে....................

 
  • Like
Reactions: Dhrubo Tara

sabnam888

Active Member
820
412
79
''শেষ নাই যে শেষ কথা কে বলবে. . .'' - তাই বুঝি এটি অ-শেষ হয়েই রইলো ? - তবে এই খন্ডাংশ পড়েই বলতে বাধ্য হলেম - '' আমারে তুমি অ শে ষ করেছ , এমনি লীলা তব ...'' । সালাম ।
 
Top