- 6,471
- 12,061
- 143
চতুর্থ অধ্যায়ঃ দিবস রজনীর গল্প
জলপরীর আগমন
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ শেষ। বসন্তের বাতাসে খুশির আমেজ। আজ বাসন্তি পুজোর দশমী। গত কয়েকদিন ধরে মা বেশি খুশি, বাবাও বেশ খুশি, পরী বাড়ি আসছে। বুকের ভেতরে এক কোনে অভি নিজের খুশি দমন করে রেখেছে, ভেতরে খই ফুটলেও সেটা জাহির করার ক্ষমতা নেই। খুশিতে বুক ফেটে গেলেও জানানোর অধিকার নেই অভির। শেষ পর্যন্ত সেই দিন এসে গেল, পরী সবসময়ের জন্য ওর কাছে, ওর পাশে থাকবে।
গত সপ্তাহে ওর জন্মদিন ছিল, কিন্তু কোন চমক ছিল না যেটা অভি ভেবেছিল। হ্যাঁ অরুনা মাঝ রাতে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিল আর দুপুরে পরী ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল। কোন চমক না পাওয়াটাই যেন সব থেকে বড় চমক ছিল অভির জন্য।
কলেজ শেষ, এপ্রিলের পুরো মাস টাই ফাইনাল পরীক্ষার পড়ার জন্য ছুটি। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ফাইনাল পরীক্ষা শুরু। পড়াশুনা বেশ জোর কদমে চলছে। বাবা মা অফিসে বেড়িয়ে যাবার পরে, অরুনা আর পুবালি ওর বাড়িতে আসে পড়ার জন্য। একসাথে পড়ার মজা আলাদা, কিছুটা গল্প কিছু পড়া কিছু আড্ডা মারা। অরুনার অভির সাথে যে নিকট সম্পর্ক বাবা মায়ের তাতে কোন আপত্তি নেই কেননা অরুনার বাবা, ব্যানারজি কাকু বাবার বন্ধু। বাবা মা এই ভ্রান্তি তে আছেন যে অরুনা, তালুকদার বাড়ির বউমা হয়ে আসছে। এই কথা অভি আর অরুনা দুজনেই ভাল ভাবে জানে এবং এখুনি সেই ভ্রান্তি ভাঙ্গার জন্য কেউই তৈরি নয়। অরুনা সমুদ্রনিলকে ভালবাসে আর অভি পরীকে। ওদের দুজনের বাড়ির কেউই জানে না সেই কথা।
মা স্কুলে বেড়িয়ে যাবার আগে অভিকে জানিয়ে যায় যে বিকেলে মায়ের সাথে পরী আসছে তাই অভি যেন বিকেল বেলা বাড়িতেই থাকে। অরুনার আর পুবালির সাথে যেন কোথাও বেড়িয়ে না যায়। না বললেও হত, অভি মনে মনে বলল। মা বেড়িয়ে যেতেই তিন জনে হেসে কুটপুটি।
অরুনা অভির দিকে চোখ টিপে বলে, "কিরে আজ শুচি দি আসছে, শেষমেশ কুত্তাটা তার কুত্তি পেয়েই গেল কি বল।"
অরুনা পরীকে শুচিদি বলে ডাকতো কেননা পরী অরুনার চেয়ে চার বছরের বড়। অরুনা প্রথমে বলেছিল যে অভির বউকে ও নাম ধরেই ডাকবে কিন্তু যেহেতু পরী ওর চেয়ে বড় তাই সন্মান বলে একটা কথা আছে আর সেই জন্য অরুনা শুচিদি বলে ডাকে।
অরুনা, "কি করবি আজ রাতে?"
অভি, "তোর কি মাথা খারাপ নাকি রে? এক ছাদের নিচে থেকে আমি কি খাল খুঁড়ে কুমির আনব? বাবা মা টের পেয়ে গেলে আমাদের দুজনকে আস্ত রাখবে না।"
অরুনা, "হুম সেটা বুঝলুম। আমাদের বাবা মাও যে ভ্রান্তিতে আছে সেটা এখুনি ভাঙ্গার দরকার নেই রে। আমিও বাবাকে বলতে ভয় পাচ্ছি সমুদ্রনিলের কথা, জানিনা বললে কি হবে।"
পুবালি যথারীতি চুপচাপ মেয়ে, ওদের কথা শুনে শুধু হাসি ছাড়া আর কিছু বিশেষ কথাবার্তা বলে না।
অভি ওকে জিজ্ঞেস করল, "তোর নাকের ব্যাথা কি রকম আছে রে?"
পুবালি, "আছে ওই একরকম। তবে মাঝে মাঝে কপালের মাঝখান টা বেশ ব্যাথা করে।"
অরুনা ওর মাথায় টোকা মেরে হেসে বলে, "এই মেয়ে যতদিন না কারুর সাথে ঠিক করে মিশবে ততদিন ওর মাথার ব্যাথা সারবে না।"
আড্ডায় মেতে ওঠে অভি আর অরুনা, সেই দেখে পুবালি একটু রেগে যায়। পুবালি ওদের বলে, "তোরা যদি আড্ডা মারিস তাহলে আমাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আয়।"
অরুনা নাক কুঁচকে বলে, "আরে বাবা একটু মজাও করতে দিবি না। দেখ আজ শুচিদি আসছে আর সেইজন্য ও কত খুশি।"
সেদিন আর পড়াশুনা হল না, সারাদিন ধরে আড্ডা মেরে টি.ভি দেখে কাটিয়ে দিল। অভি অরুনাকে থেকে যেতে বলেছিল যতক্ষণ না পরী আসে। অরুনা বলে যে পরীর সাথে এই রকম ভাবে দেখা করবে না, ও পরীর সাথে বাইরে কোথাও দেখা করতে চায়।
বিকেলে অরুনা আর পুবালি চলে যাবার পরে, অভি নিজে চা বানিয়ে টি.ভি র ঘরে বসে মা আর পরীর জন্য অপেক্ষা করে। কলিং বেল বাজতেই অভি দৌড়ে নিচে নেমে যায়। দরজা খুলে দেখে যে মা আর পরী দাঁড়িয়ে।
বুদ্ধিমতী পরী মায়ের সামনে মনের খুশি লুকিয়ে মাথা নিচু করে হেসে অভিকে অভিবাদন জানায়, "কেমন আছো অভিমুন্যু? পড়াশুনা ঠিকঠাক চলছে ত?"
মাথা নত করে অভিবাদন জানায় অভি, বুকের মধ্যে খুশির বান ডেকেছে, কিন্তু মায়ের সামনে ঠিক করে প্রকাশ করা যাচ্ছে না, দুজনেই দুজনার মনের অবস্থা বুঝে নিয়ে মুখ টিপে হাসে। সিঁড়ি দিয়ে চড়ার সময়ে অভি পরীর দিকে তাকায়। পরীর প্রিয় পোশাক, শাড়ি, শাড়ি ছেড়ে পরী যেন আর কিছু পড়তে জানে না। আকাশী রঙের শাড়িতে পরীকে বেশ সুন্দরী দেখাচ্ছে। সিঁড়ি চড়ার সময়ে অভি লক্ষ্য করল যে পরীর পায়ে রুপোর নুপুর, হাঁটার সময়ে মৃদু ছনছন আওয়াজ করছে আর সেই আওয়াজ যেন অভির বুকে এসে মাতিয়ে তুলছে। পরী মাঝে মাঝে পেছনে তাকায় আর মুখ টিপে হাসে, বুঝতে পারে যে অভি ওর দিকে দেখে পাগলের মতন হয়ে যাচ্ছে, এত কাছ থেকেও যে পরীকে জড়িয়ে ধরতে পারছেনা। মাঝে মাঝে অভির চোখ দেখে লজ্জা করছে কেননা অভি ওর চলন আর ওর কোমরের দোলা দেখে পাগল হয়ে যাচ্ছে। নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে পরী লজ্জা টাকে কোনরকমে বুকের ভেতরে লুকিয়ে নেয়।
অভি ওর ব্যাগ আর সুটকেস পরীর ঘরের মধ্যে নিয়ে যায়, পরী ওর পেছন পেছন ঘরের মধ্যে ঢুকে পরে। ঘরে ঢুকেই পরী হাত বাড়িয়ে অভিকে কাছে ডাকে। অভির মুখে হাসি যেন আর ধরে না। পরী প্রায় অভিকে জড়িয়ে ধরতে যাবে এমন সময়ে মা ডাক দেয়, "অভি শোন, দুধ আনতে একটু বাজার যা। পরী রাতে দুধ খাবে।"
অভি দাঁত দাঁত চিপে পরীর দিকে তাকায়, মাথা নাড়িয়ে ইশারা করে যে, কি ভুল সময়ে মা ডাক দিলেন।
পরীর কানে কানে এসে বলে, "তোমার দুধের কি দরকার শুনি তোমার নিজের থাকতে..."
লজ্জায় পরীর কান নাক লাল হয়ে যায়। আলতো করে অভিকে এক থাপ্পর মেরে বলে, "একদম শয়তানি করবে না। ছোটো মার কথা শুনে তাড়াতাড়ি বাজার যাও নাহলে কিন্তু আমি চিৎকার করে ছোটমাকে বলে দেব যে তুমি আমাকে খেপাচ্ছো।"
অভি আরও খেপিয়ে তোলে পরীকে, "কি বলবে ছোটো মাকে?"
পরী যেন আরও রেগে যায় ওর কথা শুনে, "বের হও ঘর থেকে আমি জাপা কাপড় বদলাবো।"
অভি ওকে খেপাতে ছাড়ে না, "আমার জন্য তৈরি হয়ে থেক কিন্তু।"
শেষমেশ পরী থাকতে না পেরে চেঁচিয়ে ওঠে, "ছোটো মা, অভি বাজার যাচ্ছে না আমাকে খেপাচ্ছে..."
অভির দিকে ভুরু নাচিয়ে ইশারা করে, বেশ হয়েছে, ঠিক হয়েছে।
মা ওদিকে চেঁচিয়ে অভিকে বললেন, "কি রে মেয়েটা এই এসেছে আর তুই ওর পেছনে লেগেছিস। তাড়াতাড়ি বাজার যা।"
অভি বাজারে বেড়িয়ে গেল, একরকম যেন হাওয়ায় উড়ছে অভি। বাজার থেকে দুধ কিনে একরকম দৌড়তে দৌড়তে বাড়ি ফিরল।
বাড়িতে ঢুকে দেখে পরী জামা কাপড় বদলে নিয়েছে। অভি হাপাতে হাপাতে বাড়িতে ঢুকে মাকে দুধের প্যাকেট দিয়ে পরীর দিকে তাকায়। গায়ে একটা হালকা গোলাপি রঙের নাইট গাউন, ফর্সা ত্বকের সাথে বেশ মানিয়েছে। মা পরীর জন্য আগে থেকেই কিনে রেখেছিল। পরীকে বেশ তরতাজা দেখাচ্ছিল, রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে মায়ের সাথে চা বানাচ্ছিল। রান্না ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে পরীর রুপ সুধা পান করে অভি। একবার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে, চোয়াল শক্ত করে নিজেকে সামলে নেয় আর মনে মনে হাসে, কি সুন্দরী দেখাচ্ছে একবার নিরিবিলিতে পেলে হয়। পরী মাঝে মাঝে কাঁধের ওপর দিয়ে অভির দিকে তাকায় আর হাসে। বুঝতে কষ্ট হয় না যে নির্লজ্জের মতন অভি ওর যৌবন পান করছে। অভির চোখ দেখে নাকের ডগা লাল হয়ে ওঠে, মায়ের চোখ লুকিয়ে ঠোঁট কামড়ে সামলে নেয়।
মা অভির দিকে তাকিয়ে বললেন, "এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস? তোর ঘরে যা গিয়ে পড়াশুনা কর। কিছুদিন পরে পরীক্ষা আর তোর কোন হুঁশ জ্ঞান নেই নাকি। খাওয়ার সময়ে গল্প করা যাবে। চা হয়ে গেলে পরী তোকে দিয়ে আসবে খানে।"
মায়ের কথা শুনে অভি একটু মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে পরে। পরী ওর মুখে দেখে বুঝতে পারে ওর মনের অবস্থা।
পরী, "তুমি পড়তে যাও আমি কিছু পরে চা দিয়ে আসব।"
অভি, "না আমার চা এখুনি চাই তারপরে আমি পড়তে যাব।"
মা বললেন, "ঠিক আছে বসার ঘরে গিয়ে বস চা দিচ্ছি।"
বসার ঘরে গিয়ে টি.ভি চালিয়ে বসল অভি, কিন্তু টি.ভির কিছুই ভাল লাগছে না। টি.ভি প্রোগ্রামের জায়গায় বারে বারে পরীর মুখ ভেসে আসছে। কিছু পরে পরী ওর জন্য চা নিয়ে বসার ঘরে ঢোকে। একটু ঝুঁকে চা দিতে গিয়ে অভির চোখের সামনে ওর বক্ষ বিভাজন অনাবৃত হয়ে পরে। অভির নির্লজ্জ দৃষ্টি পরীর বক্ষ বিভাজনে কেন্দ্রীভূত। পরী ওর চোখের চাহনি দেখে মাথা নাড়ায়, কি নির্লজ্জের মতন তাকিয়ে আছে।
চায়ের কাপে চুমুক দিয়েই চেঁচিয়ে ওঠে অভি, "চায়ে এক ফোঁটা চিনি হয় নি।"
মা ওদিকে রান্না ঘর থেকে বলেন যে চায়ে চিনি দিয়েছেন।
পরীও থেমে থাকে না, "একদম মিথ্যে কথা বলবে না, চায়ে আমি নিজে চিনি দিয়েছি।"
অভি পরীর দিকে চায়ের কাপ বাড়িয়ে দিয়ে বলে, "এক চুমুক দিয়ে দেখ বুঝতে পারবে কত চিনি দিয়েছ।"
পরী অভির মুখ দেখে বুঝতে পারে যে অভি কি চায়। লাজুক হেসে অভির হাত থেকে চায়ের কাপ নিয়ে চায়ে চুমুক দেয়। ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি মাখিয়ে চায়ের কাপ অভিকে ধরিয়ে দিয়ে নিচু সুরে বলে, "এবারে চিনি হয়েছে। এখন পড়তে যাও।"
পরীর ঠোঁটের সেই দুষ্টু মিষ্টি হাসি অভির হৃদয় তোলপাড় করে তোলে, এক অধভুত অনুভুতির পরশ মাখিয়ে চলে যায়। সামনে বই খোলা কিন্তু অভির পড়ায় মন নেই, খোলা বইয়ের পাতায় শুধু পরীর কাজল কালো চোখ আর ঠোঁটের দুষ্টু মিষ্টি হাসি ভেসে আসে। পায়ের নিচে মেঝে আর তার নিচেই পরী এই কথা চিন্তা করে যেন অভির মন চঞ্চল হয়ে ওঠে। চুলের এক গুচ্ছ বারে বারে পরীর বাঁ গালের ওপরে এসে চুমু খায় আর বাঁ হাতের আঙ্গুল দিয়ে পরী সেই চুলের গুচ্ছ সরিয়ে দেয় গালের ওপর থেকে, সেই মনোরম দৃশ্য বারে বারে অভির বইয়ের পাতার ওপরে ভেসে আসে আর ওর পড়াশুনা শিখেয় ওঠে। এত কাছে থাকা সত্তেও পরীকে নিজের মতন করে জড়িয়ে ধরতে পারছে না, ওর গায়ের মিষ্টি গন্ধ বুকের মধ্যে নিতে পারছে না। প্রেমের এই ব্যাথা যেন অভিকে কুরে কুরে খেয়ে ফেলে।
রাতে খাবার টেবিলেও বিশেষ কথা বার্তা হয় না, পরী ওর সামনে বসে তাও দুজনের মধ্যে অনেক দুরত্ত। দুজনের বুকের মধ্যে উত্তাল তরঙ্গ দোলা খায় কিন্তু ওদের এবার থেকে অনেক অনেক বেশি সাবধান হয়ে পা ফেলতে হবে। বাবা মা দুজনেই এক ভ্রান্তির মধ্যে আছেন যে অভি অরুনাকে ভালবাসে আর সেই ভ্রান্তি টাকে ঢাল বানিয়ে রাখতে হবে যতদিন না ঠিকঠাক ভাবে অভি নিজের পায়ে দাঁড়ায় আর তার কঠিন বাবা মায়ের সম্মুখিন হতে পারে।
রাতের খাওয়ার পরে অভি তিন তলায় নিজের ঘরে চলে যায়। এপ্রিল মাসে, কোলকাতায় একটু গরম পড়তে শুরু করেছে। শুতে যাবার আগে জামা কাপড় ছেড়ে শুধু একটা হাফ প্যান্ট পরে হাত মুখ ধুয়ে নিল। বিকেলে পড়া হয়নি, কিছু বাকি আছে সেটা ভাবছে রাতে শেষ করে নেবে। বই খুলে টেবিলে বসে পড়ল, কিন্তু কিছুক্ষণ পরে আবার পরীর লাল ঠোঁটের মিষ্টি হাসি ওকে পাগল করে দিল।
বেশ কিছুক্ষণ পরে মাথার মধ্যে এক ঝিমুনি ভাব চলে আসে। বাইরে ঘন কালো রাত, আসে পাশের বেশির ভাগ বাড়ির আলো বন্ধ হয়ে গেছে। রাত সাড়ে বারোটা বাজে, জানালা দিয়ে বাইরের রাতের আকাশের দিকে তাকাল, আকাশে বাঁকা চাঁদ, ঠিক যেন পরীর হাসি। টিউব লাইট নিভিয়ে দিয়ে টেবিলে ল্যাম্প জ্বালিয়ে নিল অভি। ল্যাম্পের মৃদু হলদে আলো যেন ঘরের মধ্যে এক স্বপ্নরাজ্য বানিয়ে তোলে।
এমন সময়ে পরী চুপিচুপি ওর ঘরের মধ্যে ঢুকে অভির গলার দুপাস থেকে হাত বাড়িয়ে খালি বুকের ওপরে রাখে, আর সেই মিষ্টি পরশে অভির স্বপ্নের শৃঙ্খলা ভেঙ্গে যায়। নাকে ভেসে আসে পরীর গায়ের মিষ্টি গন্ধ, জুঁই ফুলের সুবাস। চোখ বন্ধ করে বুক ভরে পরীর আঘ্রান বুকে টেনে নেয়, ঘাড়ের পেছনে পরীর নরম উষ্ণ বুকের স্পর্শে ধিরে ধিরে অভির শিরা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভির মাথার ওপরে পরী মৃদু গাল ঘষতে শুরু করে। পরীর অনাবৃত উপরি বক্ষ অভির ঘাড়ে ঘষা খেয়ে আগুনের ফুল্কি বের হয়ে যায় যেন। পরী অভির তপ্ত ত্বকের অনুভুতি বুকের ওপরে অনুভব করে মৃদু কেঁপে ওঠে। অভি পরীর হাত হাতে নিয়ে ঠোঁটের কাছে এনে চুমু খায়। দু জনে অনেকক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকে একে অপরকে। প্রেমের নিস্তব্ধতা বেশ মধুর মনে হয় ওদের।
মৃদুকনে পরী ওর কানে কানে বলে, "আই মিসড ইউ!"
ঘোরান চেয়ার ঘুরিয়ে পাতলা কোমর দুহাতে জড়িয়ে পরীকে কাছে টেনে নেয় অভি। কাঁধের ওপরে হাত রেখে মাথার চুল আঁকড়ে ধরে অভির মাথা নিজের নরম বুকের ওপরে চেপে ধরে। অভি ওকে আরও নিবিড় করে নিজের কাছে টেনে নেয়। পরীর গোল নরম পেট অভির নগ্ন বুকের ওপরে পিষে যায়, চিবুক চেপে ধরে কোমল বুকের খাঁজে। মাথা উঁচু করে অভি ওর গভীর আবেগ মাখানো চোখের দিকে তাকায়। সারা শরীরের শক্তি দিয়ে পিষে দেয় পরীর নরম শরীর, যেন পারলে পরীকে নিজের ভেতরে করে নেবে। ঠোঁটে লেগে থাকে এক অনির্বচনীয় মিষ্টি হাসি, আধ খোলা ঠোঁটের মাঝে মুক্ত বসান দাঁতের পাটি উঁকি মারে। পরী ওর দিকে তাকিয়ে থাকে আর অভির তপ্ত হাতের পরশে নিজেকে সমর্পণ করে দেয়। সারা মুখে পরীর উষ্ণ নিস্বাসের ঢেউ খেলে বেড়ায়। নিস্বাসের ফলে, পরীর বুক আর পেট কেঁপে ওঠে আর অভির বুকের ওপরে যেন ঢেউ খেলে যায়।
অভি ফিসফিস করে পরীকে জানায়, "তুমি যখনই আমাকে এই রকম ভাবে জড়িয়ে ধরো তখনি আমি পাগল হয়ে যাই তোমার জন্য।"
পরী ফিসফিস করে উত্তর দেয়, "রতনে রতন চেনে আর শূয়রে চেনে কচু।"
বলেই হেসে ফেলে।
অভি, "মানে আমি স্বর্ণকার তাই ত?"
পরী, "না তুমি আমার ছোট্ট শূয়র ছানা।"
অভি, "আর তাঁর মানে তুমি একটা কচু।"
দুজনেই হেসে ফেলে। পরী চোখের দিকে তাকিয়ে দেখে যে অভির চোখের চশমা পালটে গেছে।
পরী, "তোমার আগের চশমার কি হল? এটা দেখি নতুন।"
অভি দুষ্টুমি করে পরীর বুকে নাক ঘষে বলে, "তোমার জন্য ত আমার নতুন চশমা নিতে হল।"
পরী একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, "আমার জন্য? মানে, আমি কি করলাম?"
অভি, "বাঃ রে যেন তুমি কিছু জানো না। সেই রাতের ঘটনার পরে তুমি অরুনাকে ফোন করে সব বলে দিলে। আর সেইদিন কলেজে আমার চশমা গিয়ে পড়ল মেঝেতে।"
পরী উৎসুক হয়ে অভিকে জিজ্ঞেস করে, "কলেজে কি হয়েছিল?"
অভি, "সে অনেক কথা।"
পরী, "বল আমাকে তাহলে।"
অভি, "হুম, তুমি সকাল সকাল অরুনাকে ফোন করে সব জানিয়ে দিলে। আমি কলেজে পৌঁছলাম, দেখি অরুনা খুব চুপচাপ। একদম আমার সাথে কথা বলছে না, গম্ভির মুখ করে মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকাচ্ছে। লাস্ট পিরিওড পর্যন্ত আমার সাথে কোন কথা বলল না, আমি খুব মর্মাহত হলাম ওর ব্যাবহার দেখে। শেষ পর্যন্ত থাকতে না পেরে আমি পুবালিকে জিজ্ঞেস করলাম যে অরুনার কি হয়েছে, কেন ও আমার সাথে কথা বলছে না। পুবালি মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দিল ওর কাছে কোন খবর নেই, আমি চুপ। লাস্ট পিরিওড শেষ। পুবালি আমাকে চুপ করে বসে থাকতে বলল, আমিও চুপ করে বসে থাকি নিরুপায় হয়ে। অরুনা বারে বারে আমার দিকে কটমট করে তাকায় আর চোখ দেখে মনে হয় যেন এই আমাকে গিলে ফেলবে। ক্লাস থেকে সবাই বেড়িয়ে গেল, ক্লাসে শুধু আমরা তিন জন বসে। অরুনা আমার দিকে তাকাল, সিট ছেড়ে উঠে আমার দিকে এগিয়ে এল। আমার বুকের ধুকপুকানি শত গুন বেড়ে গেছে।"
"পুবালিকে বলল ক্লাসের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিতে। পুবালি কিছু না বুঝতে পেরে হতবাক হয়ে অরুনার দিকে তাকিয়ে থাকে, অরুনা চেঁচিয়ে ওকে দরজা বন্ধ করতে বলে। ওর গলায় ওই বাঘিনীর মতন আওয়াজ শুনে আমার ত হয়ে গেছে আত্মারাম খাঁচা ছাড়া। আমার সামনে ক্ষিপ্ত বাঘিনীর মতন দাঁড়িয়ে অরুনা, আমাকে কড়া গলায় বলল উঠে দাঁড়াতে। আমি নিরুপায় হয়ে ওর সামনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। কিছু না বলেই আমার গালে সপাটে এক চড় কষিয়ে দিল অরুনা। চড় খেয়ে আমার গাল লাল হয়ে যায়, কান মাথা গরম হয়ে যায়। নাকের ওপর থেকে চশমা মাটিতে পরে কাচ ভেঙ্গে যায়। আমি গালে হাত বলাতে থাকি, গাল খুব জ্বালা করছিল। আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি যে অরুনা আমাকে অত জোরে চড় মারতে পারে।"
"রাগে ওর ঠোঁট কাঁপতে শুরু করে, দুচোখ রাগে চিকচিক করতে শুরু করে। তারপরে আমার দিকে চেঁচিয়ে বলে, কি করে তুই ভুলে যাস শুচিদির কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলিস? শূয়র, কুকুর, তুই একটা নোংরা ছোটো লোক। তোকে আমি এতদিন ধরে অনুশুয়ার কাছ থেকে আগলে রাখলাম আর তুই কিনা শেষ পর্যন্ত দুই নিচ মেয়েছেলের কবলে গিয়ে পড়লি? তোর একবারের জন্যেও শুচিদির কথা মনে পড়লনা? তোর বুকের মধ্যে হৃদয় বলতে কিছু আছে না সেটাও নেই? শুধু মেয়েদের সাথে বিছানায় শুতে পারলে যেন তোর প্রানে শান্তি হয় তাই না? সব পুরুষ মানুষ এক তাই আমার ধারনা ছিল, কিন্তু তোকে দেখে একবারের জন্যেও মনে হয়েছিল যে আমি ভুল। কিন্তু তুই কুকুর আমার সেই বিশ্বাস ভেঙ্গে দিলি।"
"পুবালি কিছুই বুঝতে পারছিল না কি ঘটেছে। ও হতবাক হয়ে আমাদের দুজনকে দেখে যাচ্ছে। আমার মুখে কোন কথা নেই, আমি কি উত্তর দেব অরুনাকে, আমি পাপ করেছিলাম আর তার শাস্তি আমাকে পেতেই হত। অরুনা আমাকে বলল, তুই একবারের জন্যেও শুচিদির কথা ভাবিসনি, শুচিদির বুক ফেটে যেতে পারে সে কথাও তুই ভাবিসনি।"
"আমি মেঝের দিকে তাকিয়ে, দু চোখ দিয়ে টসটস করে জল গরাচ্ছে আমার। আমি চোখ বন্ধ করে মনে মনে মা ধারিত্রিকে প্রার্থনা করে চলেছি যে মা ধারিত্রি দ্বিধা হও, আমাকে নিজের কোলে টেনে নাও। অরুনা আমার চিবুকে আঙ্গুল স্পর্শ করে আমার মাথা উঠিয়ে দেয়। আমার চোখের জল দেখে রাগ কিছুটা কমে যায় ওর। আমাকে চোখ খুলে ওর দিকে তাকাতে বলে।"
"আমি জল ভরা চোখ নিয়ে ওর দিকে তাকাই। আমাকে বলল, তুই একটা মস্ত বড় কুকুর, কিন্তু খুব ভাল কুকুর যে শেষ পর্যন্ত শুচিদির মান রেখেছে, আর সেই জন্যেই আমি তোর ওপরে রাগ করেও করে থাকতে পারলাম না রে। কুত্তা, তুই ত সব পয়সা ওই নিচ মেয়েছেলেদের পেছনে খরচ করে দিয়েছিস, আমি জানি তোর কাছে চশমা ঠিক করার মতন পয়সা নেই। আমার সাথে লালবাজার চল, ওখানে অনেক চশমার দোকান আছে।ওর কথা অমান্য করার সাধ্য আমার ছিল না আর আমার নতুন চশমা হল। বাড়িতে মা জিজ্ঞেস করলেন যে আমার চশমা কি হল, আমি জানালাম যে কলেজে পড়ে ভেঙ্গে গেছে তাই নতুন বানানো হয়েছে।"
পরী অভির সব কথা শুনে চুপ করে থাকে। দুজনেই অনেকক্ষণ চুপ। কিছু পরে পরী বলল, "আমি অরুনার সাথে দেখা করতে চাই, কবে দেখা করাচ্ছ?"
অভি, "আরে বাবা, আজ সারাদিন অরুনা আর পুবালি আমার বাড়িতেই ছিল। আমি ওকে বলেছিলাম থেকে যেতে যাতে তোমার সাথে দেখা হয়, কিন্তু ও আমাকে বলল যে ও তোমার সাথে বাইরে কোথাও দেখা করতে চায় যাতে তোমাদের দেখা হওয়া স্মরণীয় হয়ে থাকে।"
পরী মৃদু মাথা নাড়াল, কানের সোনার দুল নড়ে উঠল আর মৃদু হলদে আলোয় ঝকমক করে উঠলো। পরী, "কি চিন্তা করছে অরুনা?"
অভি পরীর বুকে নাক ঘষে, "আমি কি করে জানব বলো।"
অভি ঠোঁট ছোটো গোল আকার করে গরম নিঃশ্বাস ছাড়ে পরীর বুকের খাঁজের ওপরে। উষ্ণ নিঃশ্বাস পরীর বুকে কম্পন জাগিয়ে তোলে, অভির শক্ত বাহু পাশে পরী কেঁপে ওঠে। ও মাথা নিচু করে অভির কপালে কপাল ঠেকিয়ে কপোত কুজনের সুরে বলে, "আমাকে কি দাঁড় করিয়েই রেখে দেবে?"
অভি ওকে আরও জোরে চেপে বলে, "না সোনা, আমি কেন তোমাকে দাঁড় করিয়ে রাখব। আমি তোমার এ বাড়ি তোমার, তুমি যেখানে খুশি বসতে পারো।"
পরী, "তুমি যদি আমাকে না ছাড়ো তাহলে আমি বিছানায় বসে তোমার সাথে গল্প করব কি করে?"
অভি, "বিছানায় কেন হানি, আমার কোলে বস।"
পরী ঠোঁটে দুষ্টু মিষ্টি হাসি মাখিয়ে বলে, "আর আমি যদি তোমার কোলে বসি তাহলে তুমি আমার কি করবে?"
অভি, "আমি কি করব, কিছুই করব না।"
পরী, "তুমি বলতে চাও যে তুমি কিছু করবে না আর আমি তোমাকে বিশ্বাস করে নেব?"
অভি, "হ্যাঁ বিশ্বাস করে নাও, যদি না চাও বিশ্বাস করতে তাহলেও আমার কিছু করার নেই।"
অভি ওর বাহুপাসের বাঁধন আলগা করে। পরী একটু সরে অভির কোলের ওপরে বসে পরে, দুপা ডান দিকে করে আর বাঁ হাতের ওপরে পিঠ দিয়ে। অভি বাঁ হাত ওর পিঠের ওপরে দিয়ে ওর ভার নেয় আর ডান হাতে পরীর পাতলা কোমর জড়িয়ে ধরে। পরী ডান হাতে অভির গলা জড়িয়ে ধরে থাকে আর বাঁ হাত দিয়ে ওর কাঁধে আলতো করে রেখে দিয়ে আরাম করে অভির কোলে বসে। অভির অনাবৃত জানুর ওপরে পরীর পাতলা কাপরে আচ্ছাদিত কোমল নিতম্ব, মৃদু চাপে দুজনেই যেন সাগরে ভেসে যায়। অভির বাঁ হাতের অবাধ্য আঙ্গুল পরী ডান বক্ষের কোমল ঢিবির ওপরে মৃদু মৃদু চাপ দেয়। পরী গভীর চোখে অভির দিকে তাকায়, মৃদু উত্তেজনায় নাকের ডগা লাল হয়ে ওঠে।
মাথ উঁচু করে মিষ্টি লাল ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিয়ে আসে অভি। পরী চোখ বন্ধ করে নিয়ে ঠোঁট খুলে অভির ঠোঁট জোড়ার ওপরে গভীর এক চুম্বন এঁকে দেয়। অভি ওর ওষ্ঠ ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে আলতো করে চুষতে শুরু করে, পরী অভির অধর ঠোঁটের মাঝে নিয়ে মৃদু চাপ দেয়। ঠোঁটে ঠোঁটে আগুন জ্বলে ওঠে। অভির বাহুপাশ আরো দৃঢ় করে ধরে পরীর কোমর, পরীর কোমল বুক পিষে যায় অভির অনাবৃত বুকের ওপরে। প্রবল অনুরাগে দুজনের শরীর থেকে প্রেমের স্ফুলিঙ্গ নির্গত হয়। বাঁ হাতে অভির কাঁধ চেপে ধরে ঠোঁট জোড়া আর পিষে দেয় অভির ঠোঁটের ওপরে। মুখ অল্প খুলে অভির মুখের ভেতর থেকে হাওয়া চুষে নেয়। অভির মুখের ভেতর শুকিয়ে যায়, আর অভি জিব ঢুকিয়ে দেয় পরীর ঠোঁটের ভেতরে। জিবের ডগা পরীর মাড়ির ওপরে আলতো করে বুলিয়ে দেয়। সেই অধভুত অনুভুতির স্পর্শে পরীর শরীর শক্ত হয়ে ওঠে। নিঃশ্বাস ধিরে ধিরে উত্তপ্ত হয়। বুকের মাঝে যেন হাপর টানছে কেউ।
অভি আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে পরীকে কোলের ওপরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে দেয়। পরীর নরম বুক চেপটে যায় অভির নগ্ন বুকের ওপরে। অভির মনে হয় যেন কেউ ওর বুকের ওপরে তপ্ত মাখনের প্রলেপ লাগিয়ে দিয়েছে। অবাধ্য ডান হাতের আঙ্গুল পরীর উন্নত বুকের নিচে চেপে ধরে। পরী অনুভব করে অভির আঙ্গুল ওর বুকের ঠিক নিচে ধিরে ধিরে ওর বুকের কাছে এগিয়ে চলেছে। আসন্ন উত্তেজনায় ডান কাঁধের ওপরে নখ বসিয়ে দেয় পরী। চুম্বনে চুম্বনে প্রেমাবেগে উত্তপ্ত কপোত কপোতী যেন ঠোঁটের যুদ্ধে লিপ্ত হয়, কে কাকে বেশি ভাল করে চুমু খেতে পারে তার পরীক্ষা শুরু হয় যেন। কেউ কারুর ঠোঁট ছেড়ে দিতে নারাজ।
ঠোঁটের খেলা বেশ কিছুক্ষণ চলার পরে পরী চোখ খুলে ওর দিকে তাকায়, দুজনের বুকের মাঝে উত্তেজনায় শ্বাস ফুলে ওঠে। অভির কান প্রচণ্ড আবেগে লাল হয়ে যায়। প্রবল আকাঙ্খায় পরীর সারা শরীর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরী আধবোজা চোখে অভির চোখের দিকে তাকায়।
কোনোক্রমে অভি শ্বাস নিতে নিতে ফিস ফিস করে বলে, "আমি তোমাকে অনেক অনেক মিস করেছি, হানি।"
পরী মৃদুকনে উত্তর দেয়, "আমিও সোনা, তোমাকে অনেক মিস করেছি।"
অভি ওর মুখের ওপরে মৃদু উষ্ণ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে, "সোনা আমার ভেতরের আগুন টের পাচ্ছ কি?"
পরীর গালে প্রেমের লালিমা লেগে, মৃদু মাথা নাড়ায় পরী, হ্যাঁ, ও অভির উত্তপ্ত কঠিন আগুনের পরশ নিজের নিচে অনুভব করতে পারছে, নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে মনের উচ্ছাস দমন করে নেয়।
ডান হাত পরীর হাতুর নিচে দিয়ে নিয়ে গিয়ে পরীকে পাজাকোলা করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় অভি। পরী ওর কাঁধে মুখ লুকিয়ে নেয়। অভি ওকে কোলে উঠিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়। পরীর নরম আঙ্গুল অভির নগ্ন বুকের ওপরে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে, আগুনের ফুল্কি নির্গত হয়ে আঙ্গুলের ছোঁয়ায়। দুজনের চোখ নিশ্চুপ হয়ে কথা বলে, একে ওপরের মনের অবস্থা জানিয়ে দেয়, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যেন এক প্রেমাবেগের সেতু বন্ধন তৈরি হয়।
অভি ওর কোমরের দুপাসে হাত রেখে ঝুঁকে পরে পরীর মুখের ওপরে, আরও একবার ওই লাল মিষ্টি ঠোঁটে চুমু দেবার জন্য। পরী দুষ্টুমি করে গড়িয়ে বিছানার আরেক পাশে চলে যায় আর পেটের ওপরে শুয়ে পরে বুকের ওপরে বালিস চেপে ধরে। সারা মুখের ওপরে চুল ছড়িয়ে পরে, মনে হয় যেন মেঘে চাঁদ ঢেকে গেছে। ওর মিষ্টি হাসি যেন অভিকে উত্তক্ত করে তোলে।
পরী, "আমি জানতাম যে তুমি আবার আমার সাথে দুষ্টুমি শুরু করবে।"
প্রেমচ্ছাসের ফলে শ্বাস বর্ধিত হয় পরীর, পিঠে ধিরে ধিরে ওঠা নামা করতে থাকে। অভি ওর দিকে তাকায়, উঁচু হয়ে ওঠা কাঁধ, বেকে নেমে আসে পাতলা কোমরে আর তারপরে বেকে ফুলে যায় পুরুষ্টু নিতম্বে ঠিক যেন সারা শরীর সাগরের এক মস্ত ঢেউ। অভি পরীর দিকে চার হাত পায়ে এগিয়ে যায়, পরী বাঁ হাতের আঙ্গুল মেলে ধরে অভির মুখের ওপরে আর ঠেলে দেয় অভিকে। অভি পরীর হাতের তালুতে ঠোঁট চেপে ধরে।
পরী ফিসফিস করে বলে, "অভি, হানি, আর আমাকে উত্তক্ত কোরো না, আমার আবেগ আর জাগিয়ে তুলো না, প্লিস।"
অভি বলে, "কেন বেবি? আমি যে বিগত তিন মাস ধরে অভুক্ত, আমার ভেতরে রক্ত টগবগ করে ফুটছে তাঁর সাথে তোমার রক্তও ফুঠছে। কেন দুরে সরে থাক, প্লিস কাছে এসে আমাকে বুকে টেনে নাও।"
পরী, "আমি তোমার অবস্থা বুঝতে পেরেছি হানি, কিন্তু..."
অভি।, "কিন্তু কি... বেবি? তুমি আমাকে তিন মাস ধরে অপেক্ষা করিয়ে রাখলে আর আজ এতদিন পরে মিলিত হচ্ছি আর তুমি কিনা বলছ দুরে সরে থাকতে?"
অভি পরীর ওপরে শুয়ে বিছানার সাথে চেপে ধরে। পরী ওর বুকের ওপরে হাত রেখে নিজেকে কিঞ্চিত বাঁচানোর চেষ্টা করে। অভির শক্তির কাছে না পেরে, অভিকে জড়িয়ে ধরে উলটে যায়। অভি নিচে আর পরী ওর বুকের ওপরে। অভি পরীর কোমর শক্ত করে ধরে থাকে, উত্তপ্ত শলাকা পরীর কাপরে ঢাকা তলপেটের নিচে ধাক্কা মারে। পরীর শরীর গরম হয়ে ওঠে অভির কঠিন শলাকার ধাক্কায়। দাতে দাঁত পিষে নিজেকে প্রানপন সামলে নেয় পরী। অভির বাহুপাস থেকে এক ঝটকায় নিজেকে মুক্ত করে বিছানা ছেড়ে উঠে পরে।
পাশে বসে অভির বুকে হাত রেখে বলে, "অভি, আমাকে পেতে হলে তোমাকে অপেক্ষা করতে হবে। তোমার পড়াশুনায় ক্ষতি হোক সেটা আমি চাই না। আমি তোমার পড়াশুনা বাধা হতে আসিনি সোনা। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তুমি আমাকে ছুঁতে পর্যন্ত পারবে না। পরীক্ষা শেষ হয়ে যাক তাঁর পরে তোমার সব স্বপ্ন আমি পূরণ করে দেব।"
হেরে যায় অভি, মৃদু মাথা নাড়িয়ে হেসে বলে, "মেনকা বিশ্বামিত্রের ধ্যান ভঙ্গ করেছিল, আর আমি ত এক ছোটো মানুষ মাত্র, আমি কি করে নিজেকে ঠিক রাখবো।"
পরী ওর মুখের ওপরে ঝুঁকে নাকে নাক ঘষে বলে, "অভি আজ থেকে আমি আর মেনকা নয়, আমি তোমার মা ধরিত্রি।"
আলতো করে কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে মাথার নিচে বালিস টেনে অভিকে চোখ বন্ধ করতে আদেশ দেয়। অগত্যা অভি চোখ বন্ধ করে নেয়, পরী ওর চুলে হাত বুলিয়ে ঘুম পারিয়ে দিয়ে নিচে নেমে যায়।
জলপরীর আগমন
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ শেষ। বসন্তের বাতাসে খুশির আমেজ। আজ বাসন্তি পুজোর দশমী। গত কয়েকদিন ধরে মা বেশি খুশি, বাবাও বেশ খুশি, পরী বাড়ি আসছে। বুকের ভেতরে এক কোনে অভি নিজের খুশি দমন করে রেখেছে, ভেতরে খই ফুটলেও সেটা জাহির করার ক্ষমতা নেই। খুশিতে বুক ফেটে গেলেও জানানোর অধিকার নেই অভির। শেষ পর্যন্ত সেই দিন এসে গেল, পরী সবসময়ের জন্য ওর কাছে, ওর পাশে থাকবে।
গত সপ্তাহে ওর জন্মদিন ছিল, কিন্তু কোন চমক ছিল না যেটা অভি ভেবেছিল। হ্যাঁ অরুনা মাঝ রাতে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিল আর দুপুরে পরী ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল। কোন চমক না পাওয়াটাই যেন সব থেকে বড় চমক ছিল অভির জন্য।
কলেজ শেষ, এপ্রিলের পুরো মাস টাই ফাইনাল পরীক্ষার পড়ার জন্য ছুটি। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ফাইনাল পরীক্ষা শুরু। পড়াশুনা বেশ জোর কদমে চলছে। বাবা মা অফিসে বেড়িয়ে যাবার পরে, অরুনা আর পুবালি ওর বাড়িতে আসে পড়ার জন্য। একসাথে পড়ার মজা আলাদা, কিছুটা গল্প কিছু পড়া কিছু আড্ডা মারা। অরুনার অভির সাথে যে নিকট সম্পর্ক বাবা মায়ের তাতে কোন আপত্তি নেই কেননা অরুনার বাবা, ব্যানারজি কাকু বাবার বন্ধু। বাবা মা এই ভ্রান্তি তে আছেন যে অরুনা, তালুকদার বাড়ির বউমা হয়ে আসছে। এই কথা অভি আর অরুনা দুজনেই ভাল ভাবে জানে এবং এখুনি সেই ভ্রান্তি ভাঙ্গার জন্য কেউই তৈরি নয়। অরুনা সমুদ্রনিলকে ভালবাসে আর অভি পরীকে। ওদের দুজনের বাড়ির কেউই জানে না সেই কথা।
মা স্কুলে বেড়িয়ে যাবার আগে অভিকে জানিয়ে যায় যে বিকেলে মায়ের সাথে পরী আসছে তাই অভি যেন বিকেল বেলা বাড়িতেই থাকে। অরুনার আর পুবালির সাথে যেন কোথাও বেড়িয়ে না যায়। না বললেও হত, অভি মনে মনে বলল। মা বেড়িয়ে যেতেই তিন জনে হেসে কুটপুটি।
অরুনা অভির দিকে চোখ টিপে বলে, "কিরে আজ শুচি দি আসছে, শেষমেশ কুত্তাটা তার কুত্তি পেয়েই গেল কি বল।"
অরুনা পরীকে শুচিদি বলে ডাকতো কেননা পরী অরুনার চেয়ে চার বছরের বড়। অরুনা প্রথমে বলেছিল যে অভির বউকে ও নাম ধরেই ডাকবে কিন্তু যেহেতু পরী ওর চেয়ে বড় তাই সন্মান বলে একটা কথা আছে আর সেই জন্য অরুনা শুচিদি বলে ডাকে।
অরুনা, "কি করবি আজ রাতে?"
অভি, "তোর কি মাথা খারাপ নাকি রে? এক ছাদের নিচে থেকে আমি কি খাল খুঁড়ে কুমির আনব? বাবা মা টের পেয়ে গেলে আমাদের দুজনকে আস্ত রাখবে না।"
অরুনা, "হুম সেটা বুঝলুম। আমাদের বাবা মাও যে ভ্রান্তিতে আছে সেটা এখুনি ভাঙ্গার দরকার নেই রে। আমিও বাবাকে বলতে ভয় পাচ্ছি সমুদ্রনিলের কথা, জানিনা বললে কি হবে।"
পুবালি যথারীতি চুপচাপ মেয়ে, ওদের কথা শুনে শুধু হাসি ছাড়া আর কিছু বিশেষ কথাবার্তা বলে না।
অভি ওকে জিজ্ঞেস করল, "তোর নাকের ব্যাথা কি রকম আছে রে?"
পুবালি, "আছে ওই একরকম। তবে মাঝে মাঝে কপালের মাঝখান টা বেশ ব্যাথা করে।"
অরুনা ওর মাথায় টোকা মেরে হেসে বলে, "এই মেয়ে যতদিন না কারুর সাথে ঠিক করে মিশবে ততদিন ওর মাথার ব্যাথা সারবে না।"
আড্ডায় মেতে ওঠে অভি আর অরুনা, সেই দেখে পুবালি একটু রেগে যায়। পুবালি ওদের বলে, "তোরা যদি আড্ডা মারিস তাহলে আমাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আয়।"
অরুনা নাক কুঁচকে বলে, "আরে বাবা একটু মজাও করতে দিবি না। দেখ আজ শুচিদি আসছে আর সেইজন্য ও কত খুশি।"
সেদিন আর পড়াশুনা হল না, সারাদিন ধরে আড্ডা মেরে টি.ভি দেখে কাটিয়ে দিল। অভি অরুনাকে থেকে যেতে বলেছিল যতক্ষণ না পরী আসে। অরুনা বলে যে পরীর সাথে এই রকম ভাবে দেখা করবে না, ও পরীর সাথে বাইরে কোথাও দেখা করতে চায়।
বিকেলে অরুনা আর পুবালি চলে যাবার পরে, অভি নিজে চা বানিয়ে টি.ভি র ঘরে বসে মা আর পরীর জন্য অপেক্ষা করে। কলিং বেল বাজতেই অভি দৌড়ে নিচে নেমে যায়। দরজা খুলে দেখে যে মা আর পরী দাঁড়িয়ে।
বুদ্ধিমতী পরী মায়ের সামনে মনের খুশি লুকিয়ে মাথা নিচু করে হেসে অভিকে অভিবাদন জানায়, "কেমন আছো অভিমুন্যু? পড়াশুনা ঠিকঠাক চলছে ত?"
মাথা নত করে অভিবাদন জানায় অভি, বুকের মধ্যে খুশির বান ডেকেছে, কিন্তু মায়ের সামনে ঠিক করে প্রকাশ করা যাচ্ছে না, দুজনেই দুজনার মনের অবস্থা বুঝে নিয়ে মুখ টিপে হাসে। সিঁড়ি দিয়ে চড়ার সময়ে অভি পরীর দিকে তাকায়। পরীর প্রিয় পোশাক, শাড়ি, শাড়ি ছেড়ে পরী যেন আর কিছু পড়তে জানে না। আকাশী রঙের শাড়িতে পরীকে বেশ সুন্দরী দেখাচ্ছে। সিঁড়ি চড়ার সময়ে অভি লক্ষ্য করল যে পরীর পায়ে রুপোর নুপুর, হাঁটার সময়ে মৃদু ছনছন আওয়াজ করছে আর সেই আওয়াজ যেন অভির বুকে এসে মাতিয়ে তুলছে। পরী মাঝে মাঝে পেছনে তাকায় আর মুখ টিপে হাসে, বুঝতে পারে যে অভি ওর দিকে দেখে পাগলের মতন হয়ে যাচ্ছে, এত কাছ থেকেও যে পরীকে জড়িয়ে ধরতে পারছেনা। মাঝে মাঝে অভির চোখ দেখে লজ্জা করছে কেননা অভি ওর চলন আর ওর কোমরের দোলা দেখে পাগল হয়ে যাচ্ছে। নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে পরী লজ্জা টাকে কোনরকমে বুকের ভেতরে লুকিয়ে নেয়।
অভি ওর ব্যাগ আর সুটকেস পরীর ঘরের মধ্যে নিয়ে যায়, পরী ওর পেছন পেছন ঘরের মধ্যে ঢুকে পরে। ঘরে ঢুকেই পরী হাত বাড়িয়ে অভিকে কাছে ডাকে। অভির মুখে হাসি যেন আর ধরে না। পরী প্রায় অভিকে জড়িয়ে ধরতে যাবে এমন সময়ে মা ডাক দেয়, "অভি শোন, দুধ আনতে একটু বাজার যা। পরী রাতে দুধ খাবে।"
অভি দাঁত দাঁত চিপে পরীর দিকে তাকায়, মাথা নাড়িয়ে ইশারা করে যে, কি ভুল সময়ে মা ডাক দিলেন।
পরীর কানে কানে এসে বলে, "তোমার দুধের কি দরকার শুনি তোমার নিজের থাকতে..."
লজ্জায় পরীর কান নাক লাল হয়ে যায়। আলতো করে অভিকে এক থাপ্পর মেরে বলে, "একদম শয়তানি করবে না। ছোটো মার কথা শুনে তাড়াতাড়ি বাজার যাও নাহলে কিন্তু আমি চিৎকার করে ছোটমাকে বলে দেব যে তুমি আমাকে খেপাচ্ছো।"
অভি আরও খেপিয়ে তোলে পরীকে, "কি বলবে ছোটো মাকে?"
পরী যেন আরও রেগে যায় ওর কথা শুনে, "বের হও ঘর থেকে আমি জাপা কাপড় বদলাবো।"
অভি ওকে খেপাতে ছাড়ে না, "আমার জন্য তৈরি হয়ে থেক কিন্তু।"
শেষমেশ পরী থাকতে না পেরে চেঁচিয়ে ওঠে, "ছোটো মা, অভি বাজার যাচ্ছে না আমাকে খেপাচ্ছে..."
অভির দিকে ভুরু নাচিয়ে ইশারা করে, বেশ হয়েছে, ঠিক হয়েছে।
মা ওদিকে চেঁচিয়ে অভিকে বললেন, "কি রে মেয়েটা এই এসেছে আর তুই ওর পেছনে লেগেছিস। তাড়াতাড়ি বাজার যা।"
অভি বাজারে বেড়িয়ে গেল, একরকম যেন হাওয়ায় উড়ছে অভি। বাজার থেকে দুধ কিনে একরকম দৌড়তে দৌড়তে বাড়ি ফিরল।
বাড়িতে ঢুকে দেখে পরী জামা কাপড় বদলে নিয়েছে। অভি হাপাতে হাপাতে বাড়িতে ঢুকে মাকে দুধের প্যাকেট দিয়ে পরীর দিকে তাকায়। গায়ে একটা হালকা গোলাপি রঙের নাইট গাউন, ফর্সা ত্বকের সাথে বেশ মানিয়েছে। মা পরীর জন্য আগে থেকেই কিনে রেখেছিল। পরীকে বেশ তরতাজা দেখাচ্ছিল, রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে মায়ের সাথে চা বানাচ্ছিল। রান্না ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে পরীর রুপ সুধা পান করে অভি। একবার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে, চোয়াল শক্ত করে নিজেকে সামলে নেয় আর মনে মনে হাসে, কি সুন্দরী দেখাচ্ছে একবার নিরিবিলিতে পেলে হয়। পরী মাঝে মাঝে কাঁধের ওপর দিয়ে অভির দিকে তাকায় আর হাসে। বুঝতে কষ্ট হয় না যে নির্লজ্জের মতন অভি ওর যৌবন পান করছে। অভির চোখ দেখে নাকের ডগা লাল হয়ে ওঠে, মায়ের চোখ লুকিয়ে ঠোঁট কামড়ে সামলে নেয়।
মা অভির দিকে তাকিয়ে বললেন, "এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস? তোর ঘরে যা গিয়ে পড়াশুনা কর। কিছুদিন পরে পরীক্ষা আর তোর কোন হুঁশ জ্ঞান নেই নাকি। খাওয়ার সময়ে গল্প করা যাবে। চা হয়ে গেলে পরী তোকে দিয়ে আসবে খানে।"
মায়ের কথা শুনে অভি একটু মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে পরে। পরী ওর মুখে দেখে বুঝতে পারে ওর মনের অবস্থা।
পরী, "তুমি পড়তে যাও আমি কিছু পরে চা দিয়ে আসব।"
অভি, "না আমার চা এখুনি চাই তারপরে আমি পড়তে যাব।"
মা বললেন, "ঠিক আছে বসার ঘরে গিয়ে বস চা দিচ্ছি।"
বসার ঘরে গিয়ে টি.ভি চালিয়ে বসল অভি, কিন্তু টি.ভির কিছুই ভাল লাগছে না। টি.ভি প্রোগ্রামের জায়গায় বারে বারে পরীর মুখ ভেসে আসছে। কিছু পরে পরী ওর জন্য চা নিয়ে বসার ঘরে ঢোকে। একটু ঝুঁকে চা দিতে গিয়ে অভির চোখের সামনে ওর বক্ষ বিভাজন অনাবৃত হয়ে পরে। অভির নির্লজ্জ দৃষ্টি পরীর বক্ষ বিভাজনে কেন্দ্রীভূত। পরী ওর চোখের চাহনি দেখে মাথা নাড়ায়, কি নির্লজ্জের মতন তাকিয়ে আছে।
চায়ের কাপে চুমুক দিয়েই চেঁচিয়ে ওঠে অভি, "চায়ে এক ফোঁটা চিনি হয় নি।"
মা ওদিকে রান্না ঘর থেকে বলেন যে চায়ে চিনি দিয়েছেন।
পরীও থেমে থাকে না, "একদম মিথ্যে কথা বলবে না, চায়ে আমি নিজে চিনি দিয়েছি।"
অভি পরীর দিকে চায়ের কাপ বাড়িয়ে দিয়ে বলে, "এক চুমুক দিয়ে দেখ বুঝতে পারবে কত চিনি দিয়েছ।"
পরী অভির মুখ দেখে বুঝতে পারে যে অভি কি চায়। লাজুক হেসে অভির হাত থেকে চায়ের কাপ নিয়ে চায়ে চুমুক দেয়। ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি মাখিয়ে চায়ের কাপ অভিকে ধরিয়ে দিয়ে নিচু সুরে বলে, "এবারে চিনি হয়েছে। এখন পড়তে যাও।"
পরীর ঠোঁটের সেই দুষ্টু মিষ্টি হাসি অভির হৃদয় তোলপাড় করে তোলে, এক অধভুত অনুভুতির পরশ মাখিয়ে চলে যায়। সামনে বই খোলা কিন্তু অভির পড়ায় মন নেই, খোলা বইয়ের পাতায় শুধু পরীর কাজল কালো চোখ আর ঠোঁটের দুষ্টু মিষ্টি হাসি ভেসে আসে। পায়ের নিচে মেঝে আর তার নিচেই পরী এই কথা চিন্তা করে যেন অভির মন চঞ্চল হয়ে ওঠে। চুলের এক গুচ্ছ বারে বারে পরীর বাঁ গালের ওপরে এসে চুমু খায় আর বাঁ হাতের আঙ্গুল দিয়ে পরী সেই চুলের গুচ্ছ সরিয়ে দেয় গালের ওপর থেকে, সেই মনোরম দৃশ্য বারে বারে অভির বইয়ের পাতার ওপরে ভেসে আসে আর ওর পড়াশুনা শিখেয় ওঠে। এত কাছে থাকা সত্তেও পরীকে নিজের মতন করে জড়িয়ে ধরতে পারছে না, ওর গায়ের মিষ্টি গন্ধ বুকের মধ্যে নিতে পারছে না। প্রেমের এই ব্যাথা যেন অভিকে কুরে কুরে খেয়ে ফেলে।
রাতে খাবার টেবিলেও বিশেষ কথা বার্তা হয় না, পরী ওর সামনে বসে তাও দুজনের মধ্যে অনেক দুরত্ত। দুজনের বুকের মধ্যে উত্তাল তরঙ্গ দোলা খায় কিন্তু ওদের এবার থেকে অনেক অনেক বেশি সাবধান হয়ে পা ফেলতে হবে। বাবা মা দুজনেই এক ভ্রান্তির মধ্যে আছেন যে অভি অরুনাকে ভালবাসে আর সেই ভ্রান্তি টাকে ঢাল বানিয়ে রাখতে হবে যতদিন না ঠিকঠাক ভাবে অভি নিজের পায়ে দাঁড়ায় আর তার কঠিন বাবা মায়ের সম্মুখিন হতে পারে।
রাতের খাওয়ার পরে অভি তিন তলায় নিজের ঘরে চলে যায়। এপ্রিল মাসে, কোলকাতায় একটু গরম পড়তে শুরু করেছে। শুতে যাবার আগে জামা কাপড় ছেড়ে শুধু একটা হাফ প্যান্ট পরে হাত মুখ ধুয়ে নিল। বিকেলে পড়া হয়নি, কিছু বাকি আছে সেটা ভাবছে রাতে শেষ করে নেবে। বই খুলে টেবিলে বসে পড়ল, কিন্তু কিছুক্ষণ পরে আবার পরীর লাল ঠোঁটের মিষ্টি হাসি ওকে পাগল করে দিল।
বেশ কিছুক্ষণ পরে মাথার মধ্যে এক ঝিমুনি ভাব চলে আসে। বাইরে ঘন কালো রাত, আসে পাশের বেশির ভাগ বাড়ির আলো বন্ধ হয়ে গেছে। রাত সাড়ে বারোটা বাজে, জানালা দিয়ে বাইরের রাতের আকাশের দিকে তাকাল, আকাশে বাঁকা চাঁদ, ঠিক যেন পরীর হাসি। টিউব লাইট নিভিয়ে দিয়ে টেবিলে ল্যাম্প জ্বালিয়ে নিল অভি। ল্যাম্পের মৃদু হলদে আলো যেন ঘরের মধ্যে এক স্বপ্নরাজ্য বানিয়ে তোলে।
এমন সময়ে পরী চুপিচুপি ওর ঘরের মধ্যে ঢুকে অভির গলার দুপাস থেকে হাত বাড়িয়ে খালি বুকের ওপরে রাখে, আর সেই মিষ্টি পরশে অভির স্বপ্নের শৃঙ্খলা ভেঙ্গে যায়। নাকে ভেসে আসে পরীর গায়ের মিষ্টি গন্ধ, জুঁই ফুলের সুবাস। চোখ বন্ধ করে বুক ভরে পরীর আঘ্রান বুকে টেনে নেয়, ঘাড়ের পেছনে পরীর নরম উষ্ণ বুকের স্পর্শে ধিরে ধিরে অভির শিরা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভির মাথার ওপরে পরী মৃদু গাল ঘষতে শুরু করে। পরীর অনাবৃত উপরি বক্ষ অভির ঘাড়ে ঘষা খেয়ে আগুনের ফুল্কি বের হয়ে যায় যেন। পরী অভির তপ্ত ত্বকের অনুভুতি বুকের ওপরে অনুভব করে মৃদু কেঁপে ওঠে। অভি পরীর হাত হাতে নিয়ে ঠোঁটের কাছে এনে চুমু খায়। দু জনে অনেকক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকে একে অপরকে। প্রেমের নিস্তব্ধতা বেশ মধুর মনে হয় ওদের।
মৃদুকনে পরী ওর কানে কানে বলে, "আই মিসড ইউ!"
ঘোরান চেয়ার ঘুরিয়ে পাতলা কোমর দুহাতে জড়িয়ে পরীকে কাছে টেনে নেয় অভি। কাঁধের ওপরে হাত রেখে মাথার চুল আঁকড়ে ধরে অভির মাথা নিজের নরম বুকের ওপরে চেপে ধরে। অভি ওকে আরও নিবিড় করে নিজের কাছে টেনে নেয়। পরীর গোল নরম পেট অভির নগ্ন বুকের ওপরে পিষে যায়, চিবুক চেপে ধরে কোমল বুকের খাঁজে। মাথা উঁচু করে অভি ওর গভীর আবেগ মাখানো চোখের দিকে তাকায়। সারা শরীরের শক্তি দিয়ে পিষে দেয় পরীর নরম শরীর, যেন পারলে পরীকে নিজের ভেতরে করে নেবে। ঠোঁটে লেগে থাকে এক অনির্বচনীয় মিষ্টি হাসি, আধ খোলা ঠোঁটের মাঝে মুক্ত বসান দাঁতের পাটি উঁকি মারে। পরী ওর দিকে তাকিয়ে থাকে আর অভির তপ্ত হাতের পরশে নিজেকে সমর্পণ করে দেয়। সারা মুখে পরীর উষ্ণ নিস্বাসের ঢেউ খেলে বেড়ায়। নিস্বাসের ফলে, পরীর বুক আর পেট কেঁপে ওঠে আর অভির বুকের ওপরে যেন ঢেউ খেলে যায়।
অভি ফিসফিস করে পরীকে জানায়, "তুমি যখনই আমাকে এই রকম ভাবে জড়িয়ে ধরো তখনি আমি পাগল হয়ে যাই তোমার জন্য।"
পরী ফিসফিস করে উত্তর দেয়, "রতনে রতন চেনে আর শূয়রে চেনে কচু।"
বলেই হেসে ফেলে।
অভি, "মানে আমি স্বর্ণকার তাই ত?"
পরী, "না তুমি আমার ছোট্ট শূয়র ছানা।"
অভি, "আর তাঁর মানে তুমি একটা কচু।"
দুজনেই হেসে ফেলে। পরী চোখের দিকে তাকিয়ে দেখে যে অভির চোখের চশমা পালটে গেছে।
পরী, "তোমার আগের চশমার কি হল? এটা দেখি নতুন।"
অভি দুষ্টুমি করে পরীর বুকে নাক ঘষে বলে, "তোমার জন্য ত আমার নতুন চশমা নিতে হল।"
পরী একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, "আমার জন্য? মানে, আমি কি করলাম?"
অভি, "বাঃ রে যেন তুমি কিছু জানো না। সেই রাতের ঘটনার পরে তুমি অরুনাকে ফোন করে সব বলে দিলে। আর সেইদিন কলেজে আমার চশমা গিয়ে পড়ল মেঝেতে।"
পরী উৎসুক হয়ে অভিকে জিজ্ঞেস করে, "কলেজে কি হয়েছিল?"
অভি, "সে অনেক কথা।"
পরী, "বল আমাকে তাহলে।"
অভি, "হুম, তুমি সকাল সকাল অরুনাকে ফোন করে সব জানিয়ে দিলে। আমি কলেজে পৌঁছলাম, দেখি অরুনা খুব চুপচাপ। একদম আমার সাথে কথা বলছে না, গম্ভির মুখ করে মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকাচ্ছে। লাস্ট পিরিওড পর্যন্ত আমার সাথে কোন কথা বলল না, আমি খুব মর্মাহত হলাম ওর ব্যাবহার দেখে। শেষ পর্যন্ত থাকতে না পেরে আমি পুবালিকে জিজ্ঞেস করলাম যে অরুনার কি হয়েছে, কেন ও আমার সাথে কথা বলছে না। পুবালি মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দিল ওর কাছে কোন খবর নেই, আমি চুপ। লাস্ট পিরিওড শেষ। পুবালি আমাকে চুপ করে বসে থাকতে বলল, আমিও চুপ করে বসে থাকি নিরুপায় হয়ে। অরুনা বারে বারে আমার দিকে কটমট করে তাকায় আর চোখ দেখে মনে হয় যেন এই আমাকে গিলে ফেলবে। ক্লাস থেকে সবাই বেড়িয়ে গেল, ক্লাসে শুধু আমরা তিন জন বসে। অরুনা আমার দিকে তাকাল, সিট ছেড়ে উঠে আমার দিকে এগিয়ে এল। আমার বুকের ধুকপুকানি শত গুন বেড়ে গেছে।"
"পুবালিকে বলল ক্লাসের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিতে। পুবালি কিছু না বুঝতে পেরে হতবাক হয়ে অরুনার দিকে তাকিয়ে থাকে, অরুনা চেঁচিয়ে ওকে দরজা বন্ধ করতে বলে। ওর গলায় ওই বাঘিনীর মতন আওয়াজ শুনে আমার ত হয়ে গেছে আত্মারাম খাঁচা ছাড়া। আমার সামনে ক্ষিপ্ত বাঘিনীর মতন দাঁড়িয়ে অরুনা, আমাকে কড়া গলায় বলল উঠে দাঁড়াতে। আমি নিরুপায় হয়ে ওর সামনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। কিছু না বলেই আমার গালে সপাটে এক চড় কষিয়ে দিল অরুনা। চড় খেয়ে আমার গাল লাল হয়ে যায়, কান মাথা গরম হয়ে যায়। নাকের ওপর থেকে চশমা মাটিতে পরে কাচ ভেঙ্গে যায়। আমি গালে হাত বলাতে থাকি, গাল খুব জ্বালা করছিল। আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি যে অরুনা আমাকে অত জোরে চড় মারতে পারে।"
"রাগে ওর ঠোঁট কাঁপতে শুরু করে, দুচোখ রাগে চিকচিক করতে শুরু করে। তারপরে আমার দিকে চেঁচিয়ে বলে, কি করে তুই ভুলে যাস শুচিদির কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলিস? শূয়র, কুকুর, তুই একটা নোংরা ছোটো লোক। তোকে আমি এতদিন ধরে অনুশুয়ার কাছ থেকে আগলে রাখলাম আর তুই কিনা শেষ পর্যন্ত দুই নিচ মেয়েছেলের কবলে গিয়ে পড়লি? তোর একবারের জন্যেও শুচিদির কথা মনে পড়লনা? তোর বুকের মধ্যে হৃদয় বলতে কিছু আছে না সেটাও নেই? শুধু মেয়েদের সাথে বিছানায় শুতে পারলে যেন তোর প্রানে শান্তি হয় তাই না? সব পুরুষ মানুষ এক তাই আমার ধারনা ছিল, কিন্তু তোকে দেখে একবারের জন্যেও মনে হয়েছিল যে আমি ভুল। কিন্তু তুই কুকুর আমার সেই বিশ্বাস ভেঙ্গে দিলি।"
"পুবালি কিছুই বুঝতে পারছিল না কি ঘটেছে। ও হতবাক হয়ে আমাদের দুজনকে দেখে যাচ্ছে। আমার মুখে কোন কথা নেই, আমি কি উত্তর দেব অরুনাকে, আমি পাপ করেছিলাম আর তার শাস্তি আমাকে পেতেই হত। অরুনা আমাকে বলল, তুই একবারের জন্যেও শুচিদির কথা ভাবিসনি, শুচিদির বুক ফেটে যেতে পারে সে কথাও তুই ভাবিসনি।"
"আমি মেঝের দিকে তাকিয়ে, দু চোখ দিয়ে টসটস করে জল গরাচ্ছে আমার। আমি চোখ বন্ধ করে মনে মনে মা ধারিত্রিকে প্রার্থনা করে চলেছি যে মা ধারিত্রি দ্বিধা হও, আমাকে নিজের কোলে টেনে নাও। অরুনা আমার চিবুকে আঙ্গুল স্পর্শ করে আমার মাথা উঠিয়ে দেয়। আমার চোখের জল দেখে রাগ কিছুটা কমে যায় ওর। আমাকে চোখ খুলে ওর দিকে তাকাতে বলে।"
"আমি জল ভরা চোখ নিয়ে ওর দিকে তাকাই। আমাকে বলল, তুই একটা মস্ত বড় কুকুর, কিন্তু খুব ভাল কুকুর যে শেষ পর্যন্ত শুচিদির মান রেখেছে, আর সেই জন্যেই আমি তোর ওপরে রাগ করেও করে থাকতে পারলাম না রে। কুত্তা, তুই ত সব পয়সা ওই নিচ মেয়েছেলেদের পেছনে খরচ করে দিয়েছিস, আমি জানি তোর কাছে চশমা ঠিক করার মতন পয়সা নেই। আমার সাথে লালবাজার চল, ওখানে অনেক চশমার দোকান আছে।ওর কথা অমান্য করার সাধ্য আমার ছিল না আর আমার নতুন চশমা হল। বাড়িতে মা জিজ্ঞেস করলেন যে আমার চশমা কি হল, আমি জানালাম যে কলেজে পড়ে ভেঙ্গে গেছে তাই নতুন বানানো হয়েছে।"
পরী অভির সব কথা শুনে চুপ করে থাকে। দুজনেই অনেকক্ষণ চুপ। কিছু পরে পরী বলল, "আমি অরুনার সাথে দেখা করতে চাই, কবে দেখা করাচ্ছ?"
অভি, "আরে বাবা, আজ সারাদিন অরুনা আর পুবালি আমার বাড়িতেই ছিল। আমি ওকে বলেছিলাম থেকে যেতে যাতে তোমার সাথে দেখা হয়, কিন্তু ও আমাকে বলল যে ও তোমার সাথে বাইরে কোথাও দেখা করতে চায় যাতে তোমাদের দেখা হওয়া স্মরণীয় হয়ে থাকে।"
পরী মৃদু মাথা নাড়াল, কানের সোনার দুল নড়ে উঠল আর মৃদু হলদে আলোয় ঝকমক করে উঠলো। পরী, "কি চিন্তা করছে অরুনা?"
অভি পরীর বুকে নাক ঘষে, "আমি কি করে জানব বলো।"
অভি ঠোঁট ছোটো গোল আকার করে গরম নিঃশ্বাস ছাড়ে পরীর বুকের খাঁজের ওপরে। উষ্ণ নিঃশ্বাস পরীর বুকে কম্পন জাগিয়ে তোলে, অভির শক্ত বাহু পাশে পরী কেঁপে ওঠে। ও মাথা নিচু করে অভির কপালে কপাল ঠেকিয়ে কপোত কুজনের সুরে বলে, "আমাকে কি দাঁড় করিয়েই রেখে দেবে?"
অভি ওকে আরও জোরে চেপে বলে, "না সোনা, আমি কেন তোমাকে দাঁড় করিয়ে রাখব। আমি তোমার এ বাড়ি তোমার, তুমি যেখানে খুশি বসতে পারো।"
পরী, "তুমি যদি আমাকে না ছাড়ো তাহলে আমি বিছানায় বসে তোমার সাথে গল্প করব কি করে?"
অভি, "বিছানায় কেন হানি, আমার কোলে বস।"
পরী ঠোঁটে দুষ্টু মিষ্টি হাসি মাখিয়ে বলে, "আর আমি যদি তোমার কোলে বসি তাহলে তুমি আমার কি করবে?"
অভি, "আমি কি করব, কিছুই করব না।"
পরী, "তুমি বলতে চাও যে তুমি কিছু করবে না আর আমি তোমাকে বিশ্বাস করে নেব?"
অভি, "হ্যাঁ বিশ্বাস করে নাও, যদি না চাও বিশ্বাস করতে তাহলেও আমার কিছু করার নেই।"
অভি ওর বাহুপাসের বাঁধন আলগা করে। পরী একটু সরে অভির কোলের ওপরে বসে পরে, দুপা ডান দিকে করে আর বাঁ হাতের ওপরে পিঠ দিয়ে। অভি বাঁ হাত ওর পিঠের ওপরে দিয়ে ওর ভার নেয় আর ডান হাতে পরীর পাতলা কোমর জড়িয়ে ধরে। পরী ডান হাতে অভির গলা জড়িয়ে ধরে থাকে আর বাঁ হাত দিয়ে ওর কাঁধে আলতো করে রেখে দিয়ে আরাম করে অভির কোলে বসে। অভির অনাবৃত জানুর ওপরে পরীর পাতলা কাপরে আচ্ছাদিত কোমল নিতম্ব, মৃদু চাপে দুজনেই যেন সাগরে ভেসে যায়। অভির বাঁ হাতের অবাধ্য আঙ্গুল পরী ডান বক্ষের কোমল ঢিবির ওপরে মৃদু মৃদু চাপ দেয়। পরী গভীর চোখে অভির দিকে তাকায়, মৃদু উত্তেজনায় নাকের ডগা লাল হয়ে ওঠে।
মাথ উঁচু করে মিষ্টি লাল ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিয়ে আসে অভি। পরী চোখ বন্ধ করে নিয়ে ঠোঁট খুলে অভির ঠোঁট জোড়ার ওপরে গভীর এক চুম্বন এঁকে দেয়। অভি ওর ওষ্ঠ ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে আলতো করে চুষতে শুরু করে, পরী অভির অধর ঠোঁটের মাঝে নিয়ে মৃদু চাপ দেয়। ঠোঁটে ঠোঁটে আগুন জ্বলে ওঠে। অভির বাহুপাশ আরো দৃঢ় করে ধরে পরীর কোমর, পরীর কোমল বুক পিষে যায় অভির অনাবৃত বুকের ওপরে। প্রবল অনুরাগে দুজনের শরীর থেকে প্রেমের স্ফুলিঙ্গ নির্গত হয়। বাঁ হাতে অভির কাঁধ চেপে ধরে ঠোঁট জোড়া আর পিষে দেয় অভির ঠোঁটের ওপরে। মুখ অল্প খুলে অভির মুখের ভেতর থেকে হাওয়া চুষে নেয়। অভির মুখের ভেতর শুকিয়ে যায়, আর অভি জিব ঢুকিয়ে দেয় পরীর ঠোঁটের ভেতরে। জিবের ডগা পরীর মাড়ির ওপরে আলতো করে বুলিয়ে দেয়। সেই অধভুত অনুভুতির স্পর্শে পরীর শরীর শক্ত হয়ে ওঠে। নিঃশ্বাস ধিরে ধিরে উত্তপ্ত হয়। বুকের মাঝে যেন হাপর টানছে কেউ।
অভি আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে পরীকে কোলের ওপরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে দেয়। পরীর নরম বুক চেপটে যায় অভির নগ্ন বুকের ওপরে। অভির মনে হয় যেন কেউ ওর বুকের ওপরে তপ্ত মাখনের প্রলেপ লাগিয়ে দিয়েছে। অবাধ্য ডান হাতের আঙ্গুল পরীর উন্নত বুকের নিচে চেপে ধরে। পরী অনুভব করে অভির আঙ্গুল ওর বুকের ঠিক নিচে ধিরে ধিরে ওর বুকের কাছে এগিয়ে চলেছে। আসন্ন উত্তেজনায় ডান কাঁধের ওপরে নখ বসিয়ে দেয় পরী। চুম্বনে চুম্বনে প্রেমাবেগে উত্তপ্ত কপোত কপোতী যেন ঠোঁটের যুদ্ধে লিপ্ত হয়, কে কাকে বেশি ভাল করে চুমু খেতে পারে তার পরীক্ষা শুরু হয় যেন। কেউ কারুর ঠোঁট ছেড়ে দিতে নারাজ।
ঠোঁটের খেলা বেশ কিছুক্ষণ চলার পরে পরী চোখ খুলে ওর দিকে তাকায়, দুজনের বুকের মাঝে উত্তেজনায় শ্বাস ফুলে ওঠে। অভির কান প্রচণ্ড আবেগে লাল হয়ে যায়। প্রবল আকাঙ্খায় পরীর সারা শরীর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরী আধবোজা চোখে অভির চোখের দিকে তাকায়।
কোনোক্রমে অভি শ্বাস নিতে নিতে ফিস ফিস করে বলে, "আমি তোমাকে অনেক অনেক মিস করেছি, হানি।"
পরী মৃদুকনে উত্তর দেয়, "আমিও সোনা, তোমাকে অনেক মিস করেছি।"
অভি ওর মুখের ওপরে মৃদু উষ্ণ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে, "সোনা আমার ভেতরের আগুন টের পাচ্ছ কি?"
পরীর গালে প্রেমের লালিমা লেগে, মৃদু মাথা নাড়ায় পরী, হ্যাঁ, ও অভির উত্তপ্ত কঠিন আগুনের পরশ নিজের নিচে অনুভব করতে পারছে, নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে মনের উচ্ছাস দমন করে নেয়।
ডান হাত পরীর হাতুর নিচে দিয়ে নিয়ে গিয়ে পরীকে পাজাকোলা করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় অভি। পরী ওর কাঁধে মুখ লুকিয়ে নেয়। অভি ওকে কোলে উঠিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়। পরীর নরম আঙ্গুল অভির নগ্ন বুকের ওপরে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে, আগুনের ফুল্কি নির্গত হয়ে আঙ্গুলের ছোঁয়ায়। দুজনের চোখ নিশ্চুপ হয়ে কথা বলে, একে ওপরের মনের অবস্থা জানিয়ে দেয়, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যেন এক প্রেমাবেগের সেতু বন্ধন তৈরি হয়।
অভি ওর কোমরের দুপাসে হাত রেখে ঝুঁকে পরে পরীর মুখের ওপরে, আরও একবার ওই লাল মিষ্টি ঠোঁটে চুমু দেবার জন্য। পরী দুষ্টুমি করে গড়িয়ে বিছানার আরেক পাশে চলে যায় আর পেটের ওপরে শুয়ে পরে বুকের ওপরে বালিস চেপে ধরে। সারা মুখের ওপরে চুল ছড়িয়ে পরে, মনে হয় যেন মেঘে চাঁদ ঢেকে গেছে। ওর মিষ্টি হাসি যেন অভিকে উত্তক্ত করে তোলে।
পরী, "আমি জানতাম যে তুমি আবার আমার সাথে দুষ্টুমি শুরু করবে।"
প্রেমচ্ছাসের ফলে শ্বাস বর্ধিত হয় পরীর, পিঠে ধিরে ধিরে ওঠা নামা করতে থাকে। অভি ওর দিকে তাকায়, উঁচু হয়ে ওঠা কাঁধ, বেকে নেমে আসে পাতলা কোমরে আর তারপরে বেকে ফুলে যায় পুরুষ্টু নিতম্বে ঠিক যেন সারা শরীর সাগরের এক মস্ত ঢেউ। অভি পরীর দিকে চার হাত পায়ে এগিয়ে যায়, পরী বাঁ হাতের আঙ্গুল মেলে ধরে অভির মুখের ওপরে আর ঠেলে দেয় অভিকে। অভি পরীর হাতের তালুতে ঠোঁট চেপে ধরে।
পরী ফিসফিস করে বলে, "অভি, হানি, আর আমাকে উত্তক্ত কোরো না, আমার আবেগ আর জাগিয়ে তুলো না, প্লিস।"
অভি বলে, "কেন বেবি? আমি যে বিগত তিন মাস ধরে অভুক্ত, আমার ভেতরে রক্ত টগবগ করে ফুটছে তাঁর সাথে তোমার রক্তও ফুঠছে। কেন দুরে সরে থাক, প্লিস কাছে এসে আমাকে বুকে টেনে নাও।"
পরী, "আমি তোমার অবস্থা বুঝতে পেরেছি হানি, কিন্তু..."
অভি।, "কিন্তু কি... বেবি? তুমি আমাকে তিন মাস ধরে অপেক্ষা করিয়ে রাখলে আর আজ এতদিন পরে মিলিত হচ্ছি আর তুমি কিনা বলছ দুরে সরে থাকতে?"
অভি পরীর ওপরে শুয়ে বিছানার সাথে চেপে ধরে। পরী ওর বুকের ওপরে হাত রেখে নিজেকে কিঞ্চিত বাঁচানোর চেষ্টা করে। অভির শক্তির কাছে না পেরে, অভিকে জড়িয়ে ধরে উলটে যায়। অভি নিচে আর পরী ওর বুকের ওপরে। অভি পরীর কোমর শক্ত করে ধরে থাকে, উত্তপ্ত শলাকা পরীর কাপরে ঢাকা তলপেটের নিচে ধাক্কা মারে। পরীর শরীর গরম হয়ে ওঠে অভির কঠিন শলাকার ধাক্কায়। দাতে দাঁত পিষে নিজেকে প্রানপন সামলে নেয় পরী। অভির বাহুপাস থেকে এক ঝটকায় নিজেকে মুক্ত করে বিছানা ছেড়ে উঠে পরে।
পাশে বসে অভির বুকে হাত রেখে বলে, "অভি, আমাকে পেতে হলে তোমাকে অপেক্ষা করতে হবে। তোমার পড়াশুনায় ক্ষতি হোক সেটা আমি চাই না। আমি তোমার পড়াশুনা বাধা হতে আসিনি সোনা। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তুমি আমাকে ছুঁতে পর্যন্ত পারবে না। পরীক্ষা শেষ হয়ে যাক তাঁর পরে তোমার সব স্বপ্ন আমি পূরণ করে দেব।"
হেরে যায় অভি, মৃদু মাথা নাড়িয়ে হেসে বলে, "মেনকা বিশ্বামিত্রের ধ্যান ভঙ্গ করেছিল, আর আমি ত এক ছোটো মানুষ মাত্র, আমি কি করে নিজেকে ঠিক রাখবো।"
পরী ওর মুখের ওপরে ঝুঁকে নাকে নাক ঘষে বলে, "অভি আজ থেকে আমি আর মেনকা নয়, আমি তোমার মা ধরিত্রি।"
আলতো করে কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে মাথার নিচে বালিস টেনে অভিকে চোখ বন্ধ করতে আদেশ দেয়। অগত্যা অভি চোখ বন্ধ করে নেয়, পরী ওর চুলে হাত বুলিয়ে ঘুম পারিয়ে দিয়ে নিচে নেমে যায়।