• If you are trying to reset your account password then don't forget to check spam folder in your mailbox. Also Mark it as "not spam" or you won't be able to click on the link.

Adultery যেমন করে চাই তুমি তাই/কামদেব

kumdev

Member
437
397
79
যেমন গল্প চেয়েছিলাম এটা তেমন:areypagle:
আর একটু অপেক্ষা,তারপর যবনিকা পাত।পরের পর্ব পড়ার আগে এই পর্বটা অবশ্যই পড়ে নেবেন।
 
Last edited:

kumdev

Member
437
397
79
21714022.gif
 

Machoman2020

New Member
48
15
8
Very good
 

kumdev

Member
437
397
79
।।৬৭।।


ঘরের এক কোনে টেবিল ল্যাম্পের স্বল্প আলোয় বলদেব সামনে খোলা বই নিয়ে বসে।বস্তুর যে স্থুল সীমাবদ্ধ রূপ আমরা দেখতে পাই তার মূল উপাদান তার চেয়ে আরও সূক্ষ। চোখের সামনে সাজানো অক্ষর অথচ মন হারিয়ে গেছে অন্য জগতে।আম্মুর সঙ্গে তার কিসের সম্পর্ক।আম্মুর
0
অসুস্থতার খবর শোনার পর তার মনে কেন ঝড় উঠেছিল? তার জন্য কেন এত আকুলতা?বিষয়টা নিয়ে ভাবতে থাকে।মানুষে মানুষে এই যে সম্পর্ক ব্যাপারটা অবাক লাগে।একী নিছক স্বার্থের বাধনে আষ্টেপিষ্টে বাধা।আম্মুর সঙ্গে কিসের স্বার্থ?স্বার্থের কথা উঠলে কেবল স্থুল রূপটাই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে।কোনো স্বার্থ সাময়িক আবার কোনোটা দীর্ঘস্থায়ী।স্নেহময়ী জননীর স্নেহ বিতরণে তৃপ্তি।সেও আম্মুর মধ্যে প্রত্যক্ষ করেছিল মাকে। আম্মু আর টুনিঅপা আলাদা।টুনি অপা অতি ক্ষুদ্র স্বার্থের বাহক।জেনিফার ম্যাডামের শারীরী সম্পর্কটা মুখ্য ছিলনা।একটু ভালবাসা তার কথা অনুভব করে এমন একজনের সাহচর্যই ছিল তাকে বিচলিত করেছিল। তার বিয়ের প্রস্তাব ম্যাডামই করেছেন,একী স্বার্থ?ম্যাডাম বলেছিল ভালবাসি বলেই মঙ্গল চাই। যৌনাকাঙ্খ্যাই যদি মূল হতো তাহলে একজন নারী সর্বশক্তি দিয়ে ধর্ষককে বাধা দেবে কেন? আবার সেই নারীই তার কাঙ্খিত পুরুষের সামনে সব কিছু অবাধে মেলে ধরতে সঙ্কোচ হয়না।সম্পর্ক এক জটিল রহস্য।
গুলনার ঘরে ঢুকে দেবকে পড়ার টেবিলে দেখে বিরক্ত হয়।কিছু না বলে বিছানায় উঠে শুয়ে পড়ল।সব সময় বই,বউয়ের কথা মনেই পড়েনা।তাকে বলছিল পরীর মতো দেখতে। যার দেখার তার কোন হুশ নেই।সারাক্ষন বইয়ে মুখ গুজে বসে আছে।নিজের উপরই রাগ হয় সেই ওকে বইয়ের নেশা ধরিয়েছে।গুলনার শুয়ে পড়লেও মাথা উচু করে দেবের কাণ্ডকারখানা দে্খতে থাকে।বইয়ের মধ্যে কি এত রস কে জানে?সত্যি কথা বলতে আগের কথা আলাদা এখন একবার করাতে পারলে শরীরে কেমন এক অশান্তি।কোথায় ছেলেরা করবার জন্য সাধাসাধি করবে অনেক ধরাধরির পর দয়া করে করতে দেবে।এ একেবারে উলটো,একটা মেয়ের পক্ষে লজ্জার না।কিন্তু উপায় কি?বাবু মনে হয় উঠছে।কিছু বলবে না দেখি কি করে?
টেবিল ল্যাম্প নিভিয়ে বিছানার কাছে এসে বলদেব বলল,একি মণ্টি তুমি কখন আসলে?
--এখন আমাকে আপনার চোখে পড়ে না।
--হৃদয়ের ধন চোখে দেখা যায়না অনুভব করতে হয়।
খালি কথার জাগলারি।দেব খাটে উঠে মণ্টিকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায়।কপালে চিবুকে পেটে থর থর করে কাপতে থাকে মণ্টি
UEMiT_SsSRwpu9HZvz0b1sRhfVqR5231Zxr5-zapEs54RqjX5XTAok_i5EPcNznpjqr_vWdCScD1xZgirXA8jF2-oZHIasxy=s0-d-e1-ft
।যোনীতে শুর শুর করে। সারা শরীর লালায় মাখামাখি করে এক সময় ঘুমিয়ে পড়ল।দেখো কেমন ঘুমোচ্ছে রাগে গজ গজ করতে থাকে গুলনার।এইটা কেমন পুরুষ।দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর বিছানায় আধশোয়া হয়ে শুয়ে কাল রাতের কথা ভাবছিল গুলনার এহসান। দুপুরে ঘুমানোর অভ্যাস নেই। দেবের ক্লাস রুটিনের একটা নকল চেয়ে নিয়েছেন। চোখ বুলিয়ে দেখেন আজ চারটে-পয়তাল্লিশে শেষ ক্লাস। পাঁচটার একটু আগে পৌছালে হবে। সকলে বলে দেবের খাওয়ার ব্যাপারে কোন বাছবিচার নেই। কাল রাতের ব্যাপারটা খারাপ লেগেছে তার।জড়িয়ে ধরে ঠোটে কপালে পেটে চুমু খাচ্ছিল গুলনারের মনে হচ্ছিল কখন ঢোকাবে।উদ্গ্রীব অপেক্ষায় মন।এক সময় খেয়াল হয় ভুসভুস করে ঘুমোচ্ছে।হোকনা বিবি মেয়ে তো কতবার বলা যায় আমাকে করো। গুলনারের একটা নেশার মত হয়েছে না করালে সারাদিন অস্বস্তি হয়। অথচ প্রায় তিন বছরের উপর হবে এক ফ্লাটে থেকেছে পাশের ঘরে বিয়ে করা বউ একবার উকি দিয়েও দেখেনি।এক একসময় তারই মনে হতো দেব কেন নিষেধ অমান্য করে তার উপর জোর করছে না।দেব তার কাছে বিস্ময়। নুসরত অফিস থেকে ফিরে কত গল্প করতো দেবকে নিয়ে, গুলনারের মনে হয়েছিল দেব সম্পর্কে নুসরতের একটা দুর্বলতা আছে। পরে তার ভুল ভাঙ্গে। মেয়েটি ভদ্র কি ব্যাপারে বাবার সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বাড়ি ছেড়ে চাকরি করতে এসেছিল। এখন কোথায় আছে কে জানে?মাথার উপর পাখা ঘুরছে ক্লান্তিহীন। বাড়িতে এখন মা ছাড়া কেউ নেই। মামুন হাসপাতালে যায় নাই,ট্যাক্সি নিয়ে বন্ধুদের সংগে আড্ডা দিতে গেছে। কাল চলে যাবে ভেবে মনটা খারাপ লাগে। মা খালি ওর জামা কাপড় গুছায়। গুছানোটা অজুহাত,আসলে মামুনের জামা কাপড় ঘাটতে ভাল লাগে। আব্বু চাপা মানুষ বাইরে থেকে তাকে বোঝা যায় না। সবসময় মুখে নির্বিকার ভাব আটা। মামুন একমাত্র বংশধর। তার প্রতি আব্বুর টান থাকা স্বাভাবিক। গুলনার কি চিরকাল বাপের বাড়িতে থেকে যাবেন? এই ব্যাপারে দেবকে দোষ দেওয়া যায়না। গুলনার জানেন ওকে বললেই বলবে সেইটা ঠিক কথা। চলো আমরা অন্য কোথাও যাই। নিরাপত্তা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই সব অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। নীচে গাড়ির শব্দ পাওয়া গেল,সম্ভবত মুস্তাক ফিরে এসেছে। কলেজে পুচকে পুচকে মেয়েগুলোর আলোচ্য হয়ে উঠেছে দেব। পছন্দ না হলেও গুলনার বোঝেন কারণটা কি? দেব এমনভাবে কথা বলে কথা বলার স্টাইলটাই হৃদয়কে স্পর্শ করে। বয়স ইত্যাদির ব্যবধান লজ্জা সংকোচের পর্দা খসে যায়। নিজেও বুঝেছেন মর্মে মর্মে। একটা অচেনা অজানা মানুষ তাই সহজে আম্মুর এত কাছের হয়ে যেতে পারল। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখেন সাড়ে তিনটে বাজে। এবার তৈরী হওয়া যাক। বিছানা ঘেষটে নামতে গিয়ে পাছায় জ্বালা অনুভব করেন। উঃ রাক্ষসটা এমন কামড়েছে দাত বসিয়ে দিয়েছে।
সালোয়ার কামিজ পরবেন আজ। চুল আচড়ে পিছনে একটা বাঁধন দিলেন। বেশি সাজগোজ তার পছন্দ না। বার কয়েক পেটের উপর হাত বুলিয়ে আয়নার দিকে দেখলেন। দেবের আম্মু বলছিলেন,পরীর মত দেখতে। অবশ্য তার রুপ নিয়ে দেবের কোন মাথা ব্যথা আছে বলে মনে হয় না। সে চেনে কেবল মণ্টিকে। মণ্টির কাছেই তার সব রকমের প্রত্যাশা। মামুন সকাল সকাল আজ বাড়ি ফিরবে বলে গেছে।নার্সিং হোমে গেলেও তাড়াতাড়ি ফিরে আসবেন।
মায়ের ঘরে উকি দিয়ে দেখলেন,ঘুমোচ্ছে। করিমকে বলল,মাকে বলিস অপা কলেজে গেছে। সিড়ি দিয়ে নেমে দেখলেন,মুস্তাক গাড়ির মধ্যেই বসে আছে। তাকে দেখে দরজা খুলে দিল। বেশিক্ষন অপেক্ষা করতে হল না,মিনিট দশেকের মধ্যে নজরে পড়ল সাদা পায়জামা গেরুয়া পাঞ্জাবি কাধে কালো ঝোলা ব্যাগ। ব্যাগটা গুলনারের দেওয়া দেখে চিনতে পারেন।
— কাধে ব্যাগ কেন?
— অফ পিরিয়ডে সময় কাটেনা তাই বই রাখি।
— বই? কি বই?
— দর্শন না মনস্তত্বেরবই,বেশ ভাল লাগছে জানো। মনস্তাত্বিক জ্ঞান থাকলে কমুনিকেট করতে অনেক সুবিধে হয়।
তারপর হেসে বলে,জানো যারা পথে ঘাটে পকেট মারে চুরি করে তাদেরও বেশ মনস্তাত্বিক জ্ঞান আছে।
— তুমি চুরি করবা নাকি?
— তা বলতে পারো। তবে টাকা পয়সা না– ।
মণ্টি মুখ তুলে তাকায়, দেব নীচু হয়ে বলে,তোমার মন।
— শোনো চুরি করতে করতে লোভ বাড়ে অন্যমনের দিকে যদি হাত বাড়াও– ।
কথা শেষ করতে না দিয়ে দেব বলে,চুরি করে কোথায় রাখবো বলো? তোমার মন আমার হৃদয়জুড়ে আছে আর জায়গা থাকলে তো।
নার্সিং হোমে যখন পৌছালো ভিজিটিং আউয়ারস তখনো শুরু হয়নি। নীচে লোকজন অপেক্ষমান। ভীড়ের মধ্যে নুসরতকে দেখে অবাক হয় গুলনার। ও এখানে কেন? কেউ কি আছেন এখানে? তাকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে আসে নুসরত,মণ্টিদি কেমন আছো?
বলদেব অন্য একজনকে দেখে মনে করার চেষ্টা করে ভদ্রলোককে কোথায় দেখেছে, চেনা চেনা মনে হচ্ছে। মনে পড়ে যায় জয়নাল দারোগা, যিনি সুপারিশ করে তাকে পাঠিয়েছিলেন।
— স্যর আপনি এখানে?
জয়নাল অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন। বলদেব বলে,আমি বলদেব। চিনতে পারছেন না?
জয়নাল ভুত দেখার মত চমকে উঠে বলেন,হ্যা হ্যা কেমন আছো? কি করো?
— আমি একটা কলেজে পড়াই।
জয়নাল মনে মনে ভাবেন তার ভুল হচ্ছে নাতো? আমতা আমতা করে বলেন, আপনাকে দারোগাবাড়িতে রিজানুর সাহেবের বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম?
— হ্যা,আমি এখন এখানে থাকি।
— আট-ন বছর আগের কথা। অনেক বদলে গেছে। আপনি অধ্যাপনা করেন?
— জ্বি। বিবাহ করেছি। আগের চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।
— মইদুল খবর দিল ভাবীজান এখানে ভর্তি হয়েছেন।রিজানুরের খবর জানতাম না।
এমন সময় নুসরত এল গুলনারকে নিয়ে,আব্বু মণ্টি-দি ড.রিয়াজের মেয়ে। আমার বন্ধুর মত। একসময় আমরা একসঙ্গে থাকতাম।
গুলনার এবং জয়নাল দারোগা আলাপ করে। দেবের পুরানো অনেক কথা বলেন জয়নাল। ইতিমধ্যে সময় হয়ে গেল,একে একে সবাই উপরে উঠতে লাগল। মুমুতাজ সায়েদও এসে পড়েছে। একেবারে শেষে দেব আর নুসরত উপরে উঠল।
নুসরত জিজ্ঞেস করে,দেব তুমি কেমন আছো? বেশ দেখতে লাগছে তোমাকে।
— প্রশ্ন এবং উত্তর দুটোই আপনি দিয়ে দিলেন। আমার বলার কিছু থাকলো না।
নুসরত হেসে বলে,তোমার সঙ্গে স্যরের দেখা হয়? উনি এখন ঢাকায় আছেন।
বলদেব এক মুহুর্ত ভেবে বলে,উদ্দেশ্য না থাকলে দেখা হয়না তা বলবো না কিন্তু কদাচিৎ। যেমন আজ তোমার স্যরি আপনার সঙ্গে আমার দেখা হওয়া বা আপনার বাবার দেখা হওয়া। আমার জীবনে আপনার বাবার গুরুত্বপুর্ণ একটা ভুমিকা আমি অস্বীকার করতে পারিনা।
জয়নাল দারোগা অত্যাচারী মারকুট্টে বলে শুনে এসেছে। আজ দেবের কাছে বাবার অন্য এক পরিচয় জেনে নিজেকে লজ্জিত বোধ করে নুসরত।
— তুমি এখন অধ্যাপক আমাকে ‘তুমি’ বলতে পারো।
— ধন্যবাদ। অবস্থান মানুষের সম্পর্ককে এভাবে বদলে দেয়।
— একটা কথা তুমি হয়তো জানো না,ম্যাডাম তোমাকে ভালবাসতেন।
— দেখ নুসরত আমার ইচ্ছে করছে কোথাও বসে তোমার সঙ্গে অনেক্ষন কথা বলি। কিন্তু– কিন্তু– ।
— চলো না ওদিকটায় লোকজন কম।
দুজনে নার্সিংহোমের শেষ প্রান্তে স্বল্প পরিসর একটা জায়গায় এসে বসলো। বলদেব শুরু করে, তুমি ভালবাসার কথা তুললে। এই শব্দটা নিয়ে আমার বেশ ধন্দ্ব আছে। প্রেম ভালবাসা অতি পবিত্র এবং চিরস্থায়ী একটা সম্পর্ক এরকম আমরা মনে করি। কিন্তু বাস্তবিকই কি তাই?
— তাই নয় বলছো?
— আমি কিছুই বলতে চাই না,আমি জানতে চাই। ধরো একটি মেয়ে একটি ছেলের প্রেমে পড়ল। তার মনে হল ছেলেটিকে ছাড়া বাঁচবে না। বাড়ির লোকজন তাকে বোঝালো,ছেলেটির আর্থিক অবস্থা শিক্ষা উপার্জন তেমন ভাল নয়। বিকল্প হিসেবে অন্য একটি ছেলেকে উপস্থিত করলো যার শিক্ষা আর্থিক অবস্থা আগের ছেলেটির তুলনায় অনেকগুণ উন্নত। মেয়েটির মনে ধীরে ধীরে সৃষ্টি হল বিরুপতা সে দ্বিতীয় ছেলেটিকে ভালবেসে ফেলল। প্রেমের স্থায়ীত্ব সম্পর্কে এর পর আস্থা রাখা যায় কি?
— দেব তুমি খুব নির্মম। হেসে বলে নুসরত জাহান।
— আবার ভুল করছো,কেউ নৃশংস ঘটনা ঘটালো আর যে সেই ঘটনার বিবরণ দিল তাকে বলবো নির্মমতা? মেয়েটি ছেলেটিকে প্রত্যাখ্যান করলো তার দোষ নেই একে বলে ভাবের ঘোরে চুরি করা। এবার আসি জেনিফার ম্যাডামের কথায়। আগের কথা জানিনা কিন্তু যখন থেকে তার সঙ্গে আমার পরিচয় তাতে আমার মনে হয়েছে,উনি যে কারণেই হোক পুরুষ বিদ্বেষী। তুমি দেখোনি পুরুষ আসামীদের কি প্রচণ্ড অত্যাচার করতেন। জুতো পায়ে পুরুষাঙ্গ পিষ্ঠ করে আমোদ পেতেন। উনি ছিলেন ডোমিনেটিং টাইপ যার ফলে কখনো ক্ষিপ্ত হয়ে আত্ম নিগ্রহও করতেন। এসবের পিছনে কারণ হতাশার জ্বালা।
নুসরতের চোখে মুগ্ধতা।কত জটিল বিষয় কত সহজ করে বলে যাচ্ছে দেব।নিজের মত জোর করে চাপিয়ে দেওয়া নয় কেবল বিষয়টাকে ছবির মত উপস্থিত করা।এবার তোমার বিবেচনা।
গুলনারের খেয়াল হয় দেবকে দেখছেন না,কোথায় গেল? রহিমা বেগমের ঘর থেকে বেরিয়ে এদিক-ওদিক দেখেন।একটু অন্যমনস্ক হয়েছো কি উধাও।স্থির হয়ে এক জায়গায় থাকতে পারেনা।
 
Last edited:
  • Wow
Reactions: Cute pie

kumdev

Member
437
397
79
।।৬৮।।


গুলনার নীচে নেমে এসে মুস্তাককে জিজ্ঞেস করেন,সাহেব এসেছিলেন? মুস্তাক কিছু বলতে পারে না। গুলনার আবার উপরে উঠে এলেন। কোথায় গেল লোকটা? সব সময় তক্কে তক্কে রাখা যায়? সঙ্গেই তো ছিল। ভাবখানা মা তার ছেলে হারিয়েছেন। ওর জন্য রহিমা বেগমকে দেখতে আসা আর বাবু উধাও? কোথায় যেতে পারে? একজন জুনিয়ার ডাক্তার দেখা হতে জিজ্ঞেস করেন,ম্যম আপনি কি স্যরকে খুজছেন?
স্যর মানে আব্বুর কথা বলছেন,গুলনার বলেন,না কাউকে খুজছি না।
আরে ঐদিকে মনে হচ্ছে নুসরত কার সঙ্গে কথা বলছে। একটু এগিয়ে বুঝতে পারলেন কাধ থেকে ঝুলছে কালো ঝোলা ব্যাগ। ছিঃ শেষ পর্যন্ত নুসরতের সঙ্গে? তার আগেই সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। নুসরত জানে দেব বিবাহিত, নিজেকে বাবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে বলেছিল ‘আমরা বন্ধু’ এই কি বন্ধুত্বের নমুনা? কি এত গভীর আলোচনা
হচ্ছে যে তার উপস্থিতি টের পাচ্ছে না? গুলনার একটা দেওয়ালের আড়ালে দাঁড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে দেখা না গেলেও স্পষ্টশোনা যাচ্ছে প্রেমালাপ।
— তুমি জিজ্ঞেস করছো তোমাকে কেমন লাগতো? দেব বলে।
উঃ এতদুর? গুলনার ভাবেন।
– আমি যদি বলি তোমার প্রতি আমি ছিলাম নিস্পৃহ তাহলে হবে সত্যের অপলাপ। তোমার কথা শুনতে আমার ভাল লাগতো। অপেক্ষা করতাম তুমি কখন আমাকে ডেকে বলবে ‘ দেব এই ফাইলটা দিয়ে এসো…আমার জন্য টিফিন নিয়ে এসো। ‘ তোমার কাজ করতে আমার ভাল লাগতো।
সত্যবাদী যুধিষ্ঠির,আমি বিয়ে না করলে চিরকাল তোমাকে ফাইল বইতে হতো। গুলনার ভাবেন।
— আমারও ইচ্ছে করতো তোমার কথা শুনতে। নুসরত বলে।
— কিন্তু সে ইচ্ছে প্রসারিত হয়নি মানে আমার চাকরি শিক্ষাগত যোগ্যতা ইচ্ছেকে প্রসারিত হতে দেয়নি। একই কারণে আমিও ইচ্ছেকে অবদমিত করেছি। মিষ্টির দোকানে সাজানো মিষ্টি দেখে লালাক্ষরণ হলেও যখন বুঝতেপারি পকেটে পয়সা নেই আমরা ইচ্ছেকে প্রশ্রয় দিইনা।
— তুমি বলছো ঐ ঘটনা ঘটেছিল বলে মণ্টিদি তোমাকে গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিল?
বলদেব নিজের মনে হাসল,তারপর আবার শুরু করে,ঐ ঘটনার জন্য জেনিফার আলম অমন প্রস্তাব দিতে সাহসী হয়েছিলেন,আর জেনিফার যদি উদ্যোগী না হতো আমি স্বপ্নেও মণ্টিকে বিবাহের কথা ভাবতাম না। হয়তো অন্য কোন মেয়েকে বিয়ে করতাম বা অবিবাহিত জীবন কেটে যেত। কিন্তু আমি মনে করিনা মণ্টি বাধ্য হয়ে বিবাহ করেছে। ওর অসম্ভব মনের জোর তাছাড়া পিছনে ছিল সামাজিক আর্থিক সাপোর্ট।
গুলনার সজাগ তার প্রসঙ্গে কি বলে দেব?
— নুসরত তুমি কিছু মনে কোরনা একটা কথা বলি। তুমি চেয়েছিলে একটি ফিনিশ পুতুল রঙ চং করা চোখ মুখ আঁকা সুন্দর একটি পুতুল কিন্তু মণ্টির অসম্ভব আত্ম প্রত্যয়ের কথা তোমায় বলেছি। নিজের বউ বলে বলছি না ওকে যতটা জেনেছি,ও একতাল মাটি নিয়ে নিজের মত করে নিজ হাতে গড়ে নিয়েছে পুতুল। মণ্টিকে বাদ দিয়ে আমার অস্তিত্ব কল্পনাও করতে পারিনা। ও আমার অক্সিজেন এক মুহূর্ত ওকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না।
— মণ্টীদিকে না পেলে তুমি আত্মহত্যা করতে?
— তোমার কথার শ্লেষ আমি গায়ে মাখছিনা।
গুলনারের চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। এতো স্তুতি নয়,অকপট স্বীকারোক্তি।
— মানুষ মরণ শীল। ইচ্ছে অনিচ্ছে নিরপেক্ষ,প্রতিদিন আমরা তিল তিল করে এগিয়ে চলেছি অসহায় সেই মৃত্যুর দিকে। কিন্তু ঝড়ের হাত থেকে প্রদীপ শিখার মত চেষ্টা করা উচিত যাতে নিভে না যায়। প্রদীপ শিখা কি জানো? আমাদের মনুষ্যত্ব।শারীরি মৃত্যু না হলেও মনুষ্যত্বের মৃত্যু হতো। একবার পা পিছলে যেতে যেতে বেঁচে গেছি কে আমাকে রক্ষা করেছিল জানো?
— কে মণ্টি?
— না ডাক্তার রিয়াজ আমার শ্বশুর। মণ্টিও তাকে চিনতে পারেনি। তোমরা ড.রিয়াজকে একজন বড় চিকিৎসক হিসেবে জানো আমার কাছে আব্বু একজন বড় মানুষ।
আর আড়ালে থাকা সম্ভব হয় না,চোখে জল মুছে গুলনার যেন হঠাৎ ওদের আবিষ্কার করেন,একী আপনি এখানে? ওদিকে আপনার আম্মু আপনার জন্য হেদিয়ে মরছেন।
বলদেব ভ্রু কুচকে এগিয়ে এসে বলে, একী তোমার চোখে কি হল,এত লাল কেন?
— থাক আর ঢং করতে হবে না। ভেবেছেন এইসব বলে পার পাবেন? আর কবে বুদ্ধি হবে আপনার? সারারাত আপনার জন্য নার্সিং হোম খোলা থাকবে?
আচমকা মণ্টিকে জড়িয়ে ধরে বলদেব বলল,একে বলতো?
নুসরত লজ্জা পায় বলে,কে আবার তোমার বিবি।
--আমার ফ্রেণ্ড ফিলজপফার আবার গাইড।
--কি হচ্ছে কি ছাড়ুন লজ্জা সরম বলে কিছু থাকল না।গুলনার নিজেকে ছাড়িয়ে নিলেন।
দেবকে নিয়ে রহিমা বেগমের কেবিনে নিয়ে আসেন গুলনার।নুসরত অন্যত্র চলে গেল।
দেব ঢুকতে মুমুতাজ বলে,ঐতো বলা মিঞা আসছে।
রহিমা বেগম তাকিয়ে হাসলেন। এতক্ষন কইছিলা বাজান?
— বাইরে,ভিতরে এত ভীড়– ।
— জয়নাল তুমারে চিনতে পারে নাই অথচ ঐ তুমারে পাঠাইছিল। নুসরতরে তো তুমি চিনতা– ।
— চিনতাম,জানতাম না উনি স্যরের মেয়ে।
— আমার সায়েদের লগে কেমুন লাগবো?
সায়েদ বাঁধা দিল,আম্মু ডাক্তার তোমারে কথা কইতে নিষেধ করল তুমি মানবা না?
— এতদিন চুপ কইরা ছিলাম বইলাই সেনা কাণ্ডটা ঘটলো।
সায়েদ ঘর থেকে বেরিয়ে গেল,করো তুমি বক বক।
মুমতাজ মিটমিট করে হাসছিল। বলদেব জিজ্ঞেস করে,কি ভাবীজান আম্মু কি কয় আমারে তো বলেন নাই?
— তুমি তো তবসুমরে দেখছো। ভারী দেমাগ ছিল, ছ্যাকা দিয়া পলাইছে।
বলদেব চুপ করে থাকে,আবার সেই প্রেম। অরূপকে ছেড়ে রূপের প্রতি মোহ? নুসরত কিছু বলেনি তাকে,সে কি জানে না?
এ্যাণ্টিবাইওটিক দিয়ে এখন ভাল আছেন রহিমা বেগম। দিন চারেক পর ছেড়ে দেওয়া হবে। আব্বু বলেছেন ইসিজি রিপোর্ট ভুল ছিল। কাল আসা সম্ভব না,মামুনকে এগিয়ে দিতে বিমান বন্দরে যেতে হবে। মণ্টির খুব প্রিয় মামুন। সেও অপাকে খুব ভালবাসে।
গাড়িতে বসে বলদেব ভাবে যাক ভালয় ভালয় সব মিটলো।পুরান দিনগুলোর কথা মনে পড়ে।আম্মু বলেছিল বলারে পেটে ধরেনি কিন্তু বুকে জায়গা দিয়েছে।বিধাতা কোন ধাতুতে মেয়েদের গড়েছে ভেবে দিশাহারা বোধ করে।
গুলনার জিজ্ঞেস করেন কি ভাবতেছেন?
--কিছু না। দেব হেসে বলল।
--আমারে কওয়া যায়না।
--জানো মণ্টি জাত ধর্ম উচ্চ নিম্ন বিত্ত নির্বিশেষে প্রত্যেক মেয়েদের মধ্যে একটা কুঠুরি থাকে,যেটা ছেলেদের থাকে না।
--সেটা আবার কি?
--সেখানে চাপা থাকে অন্য একটা সত্ত্বা যাকে বলা যায় মাতৃসত্ত্বা।না হলে জানা নাই চেনা নাই রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই আগে কখনো দেখেনি একটা চিঠি নিয়ে হাজির হয়েছিলাম।শুধু মা বলে ডেকেছি।সেদিন থেকে আম্মু আমাকে নিজের ছেলেদের থেকে আলাদাভাবে দেখেনি।
গুলনার অবাক হয়ে দেবকে দেখে।মেয়েদের মধ্যে এই সত্ত্বা যাদের চোখে পড়েনা তারা বিধাতার করুণার পাত্র। দেব কথা শেষ করে মাথাটা মণ্টির কোলে এলিয়ে দিল।গুলনার সামনে মুস্তাকের দিকে তাকিয়ে মাথাটা ঠেলে তুলে দিয়ে নীচু গলায় বললেন,কি হচ্ছে কি উঠেন আমি আপনার বিবি,আম্মু না।
গুলনার অন্যদিকে তাকিয়ে মুখ টিপে হাসেন।
এহসান মঞ্জিলে যখন গাড়ী থামল তখন সন্ধ্যে নেমেছে।
খাবার টেবিলে গল্প হল অনেক রাত অবধি। আম্মু মাঝে মাঝে কেদে ফেলছিলেন। ড.রিয়াজ চুপচাপ একেবারে নির্বিকার।
— ভাগ্যিস বিয়ার আগে আমি বিদেশ গেছিলাম। বিবিকে উদ্দেশ্য করে বলেন ড.রিয়াজ।
— আমি আপনের কাছে কিছু শুনতে চাইনি। নাদিয়া বেগম বিরক্তির সঙ্গে বলেন।
মণ্টি আর মামুন চোখাচুখি করে হাসি বিনিময় করে। করিম কি বুঝলো কে জানে ফিক করে হেসে ফেলে। নাদিয়া বেগম ধমক দেয়,বলদের মত হাসিস ক্যান রে? দূর হ আমার চোখের সামনে থিকা।
করিমএ বেরিয়ে গেল। গুলনার দেবকে দেখেন,বলদ শুনে তার কোন ভাবান্তর হয় কিনা? কেননা মাঝে মধ্যে তিনিও দেবকে বলেন,বলদ। নাদিয়া বেগম পর মুহুর্ত্তে করিমকে ডাকেন, অ্যাই করিম কই গেলি?
— তুমি তারে বাইরে যাইতে কইচো। ড.রিয়াজ বলেন।
করিম ঢুকতে বলেন,চোখে দেখিস না,বলারে ভাত দে।
— আম্মু অরে আর ভাত দিবেন না। গুলনার বলেন।
ড রিয়াজ বললেন,মণ্টি মা তুমি আম্মুরে নিয়া সকাল সকাল যাইও।আ্মারে চেম্বার হইয়া যাইতে হবে।
আব্বুর মুখে মা-ডাক খচ করে মনে বাজে।আগেও অনেকবার শুনেছেন কিন্তু দেবের মুখে কথাগুলো শোনার পর বিষয়টা খেয়াল হল।নারীর মধ্যে মাতৃসত্ত্বা।আড়চোখে দেবকে দেখেন নিশ্চিন্তে খেয়ে চলেছে।আশপাশে কে আছে না আছে সেদিকে হুশ নেই।
 
Last edited:
  • Haha
Reactions: Cute pie

kumdev

Member
437
397
79
।।৬৯।।


গুলনার নাইট ল্যাম্প জ্বেলে আলো নিভিয়ে বিছানায় উঠে বসল।দেব শুয়ে পড়েছে।মনটা ভারাক্রান্ত মামন কাল চলে যাবে।বাড়ী ঘর ছেড়ে একা একা সেই বার্মিংহাম না কোথায়।কতবড় হয়ে গেছে মামন।শৈশবের কথা মনে পড়ল।নার্সিং হোম থেকে আম্মু ফিরল কোলে গুটিসুটি হয়ে চোখবুজে মামন। কোথা থেকে কেন ওকে আনল চোখে মুখে অপার বিস্ময়।সবাই ওকে নিয়ে মেতে আছে তাকে সবাই ভুলে গেল।খুব রাগ হতো।কাছে যেতো না দরজার আড়াল থেকে উকি দিত।একসময় তার খোজ পড়ে,আম্মু ডাকছে।সসংকোচে ঘরে ঢুকে আম্মুর কাছ ঘেষে দাড়াল।আড়চোখে চোখ বন্ধ শিশুটির দিকে তাকায়।আম্মু বলল,এইটা তোমার ভাই। আম্মু কোলে তুলে দিল।নরম তুলতুলে ভালভাবে ধরতে না ধরতেই চিল চিৎকার।আম্মু তাড়াতাড়ি কোল থেকে নিয়ে বলল,অপারে পছন্দ হয় নাই? দুলিয়ে কান্না থামাতে চেষ্টা করে আম্মু।অবাক ব্যাপার আম্মু কোলে নিতেই একেবারে শান্ত।মনে মনে ভাবে বয়ে গেছে ওনারে কোলে নিতে।সেদিনের কথা ভেবে হাসি পেল।সেই মামন গুলনারের কোলে কোলে ঘুরতো অধিকাংশ সময়। কান্না থামাতে গুলনারকেই কোলে নিতে হত।নজরে পড়ল দেবের দিকে।আসবার সময় গাড়িতে কি লেকচার এখন একেবারে শিশুর মত ঘুমায়।সব নারীর মধ্যে মাতৃসত্ত্বা এভাবে আগে কখনো ভাবেনি।নুসরতের অফিসের সেই ডিএম সাহেবা খুব নাকি পীড়ণ করত আসামীদের নুসরতের মুখেই শোনা।চাল চলন পুরুষের মত।তার মধ্যেও কি মাতৃসত্ত্বা আছে?মণ্টি তুমি খুব সুন্দর।সুন্দরী বিবিকে ভুলে কেমন মইষের মত ঘুমায়।গায়ের জামা খুলে বালিশের পাশে রেখে দেবের গায়ে ঠেলা দিয়ে বলল,ঘুমিয়ে পড়েছো?
বলদেব পাশ ফিরে মণ্টির দিকে তাকিয়ে হেসে বলল,ঘুম আসছে না।
--এতক্ষন কি করছিলে?
--মামনের কথা তোমার কথা ভাবছিলাম।
--উফস বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে বলতে ওস্তাদ।
--মিথ্যে তো বানিয়েই বলতে হয়।আমি যা ভাবছিলাম তাই বললাম।তোমার পছন্দের কথা বলতে গেলে আমাকে বানিয়ে বলতে হবে।
--হয়েছে হয়েছে।গাড়ির মধ্যে কোলে শোওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল এখন কি হয়েছে?
চোখ বড় করে তাকিয়ে থাকে দেব তারপর কোমর জড়িয়ে ধরে কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে বলল,জানো মণ্টি রাতে যখন ঘুম আসত না আমার মায়ে গায়ে হাত বুলায়ে দিত।
এর মধ্যে আবার মা।গুলনারের বুক কেপে ওঠে।হাত দিয়ে সারা শরীর বোলাতে থাকে।তলপেটে মুখ ঘষে হাত বোলাতে থাকে দেব।
--কি করছ এভাবে স্থির হয়ে বসা যায়?আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
--অবশ্যই করবে।
--আপনের করতে ইচ্ছা হয়না?লজ্জার মাথা খেয়ে জিজ্ঞেস করল গুলনার।
--অনুমতি দিলেই হয়।হেসে বলল বলদেব।
--আমি আপনার বিবি অনুমতি কিসের যখন ইচ্ছে হবে--।
--বিবি বলে যা ইচ্ছে তাই করা যায়?তার একটা স্বাতন্ত্রবোধ থাকবে না?
--লজ্জা থাকবে না বেহায়ার মত বলবে?
--আচ্ছা ঠিক আছে।তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
এতরাতে আবার কি কথা মনে পড়ল?জিজ্ঞেস করে,কি কথা?
--তুমি আমার সঙ্গে মজা করোনি তো?
গুলনার ভাবার চেষ্টা করে কখন আবার মজা করল?কিসের মজা?
--না মানে তোমার পেটে বাচ্চা আছে সেইটা সত্যি?পেটটা একদম চিপা তাই বললাম।
হায় আল্লা এইটা বলদ না পাগল?বলে কিনা পেটটা চিপা!কোলে নিয়ে ঘুম পাড়াচ্ছি উনি আমার পেটের মধ্যে বাচ্চা সন্ধান করছেন।দুহাতে মাথাটা ধরে বলল,কতদিন হয়েছে?এখনি পেটের মধ্যে লাফালাফি করবে?
---সেটা সম্ভব না।
এই লোকটা ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট অধ্যাপক কলেজে পড়ায় কেউ বিশ্বাস করবে?গুলনারের হাসি পেয়ে যায়।গাড়ির মধ্যে কেমন বিজ্ঞের মত কথা বলছিল।গুলনারের মনে একটা প্রশ্ন এল জিজ্ঞেস করে,আচ্ছা তুমি বলছিলে মেয়েদের মধ্যে সুপ্ত থাকে একটা মাতৃসত্ত্বা।
--এইটা আমার মনে হয়।
--তোমাদের ডিএম সাহেবা জেনিফার ম্যাডাম তার মধ্যেও মাতৃসত্ত্বা আছে আপনার মনে হয়?
--ম্যাডাম খুব সৎ এবং সাহসী।
--যা জিজ্ঞেস করছি সেইটার উত্তর দাও।
--কারো বিচার করতে হলে তাকে সামগ্রিকভাবে বিচার করতে হয়।পুলিশের মধ্যে দুর্নীতি অন্যায় তাকে কিছুটা ক্ষিপ্ত করে তুলেছিল। তার কাজের স্বীকৃতি কেউ দেয়নি।বাড়ির অমতে যাকে ভালবেসে বিয়ে করল সেই স্বামীর কাছে পায়নি ভালবাসা।একটু ভালবাসার জন্য বুকে ছিল হাহাকার।যদি একটু ভালবাসা পেতো তাহলে আমার মনে হয় ম্যাডামের এই চেহারা দেখতে হত না।একটা আলো তীব্র হলে অন্য আলো চোখে পড়েনা।দিনের আলোয় তারাদের দেখা যায় না তার মানে কি তারা নেই? মণ্টি তুমি যখন তুমি খুব রেগে যাও তখন তোমাকে দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে তুমি আমাকে কত ভালবাস ।তার মানে এই নয় তুমি আমাকে ভালবাসো না।বাদ দাও তুমি অনুমতি দিয়েছ--।
গুলনার দু-পা ছড়িয়ে দিল।দেব নীচু হয়ে ভোদার উপর হাত বোলায়।
গুলনারের ঠোটে মিট্মিট করে হাসি মুগ্ধ হয়ে কথা শুনতে শুনতে দেবকে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরল।জিজ্ঞেস করল,আমাকে তোমার কেমন লাগে?
--তোমা ছাড়া আর এ জগতে মোর কেহ নাই কিছু নাই গো !
গুলনার চাপা স্বরে সুর করে গায়,
আমি তোমার বিরহে রহিব বিলীন,
তোমাতে করিব বাস,
দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী, দীর্ঘ বরষ মাস ।
যদি আর কারে ভালোবাস,
যদি আর ফিরে নাহি আস,
তবে তুমি যাহা চাও, তাই যেন....,বলদেব মুখ চেপে ধরে গান থামিয়ে দিয়ে,মণ্টি ভুলেও এসব কথা মনে এনো না।বিশ্বাস-অবিশ্বাস ব্যক্তিগত তবু বলছি,ম্যামের কথায় তোমাকে বিয়ে করেছি যেমন সত্য তেমনি আজ তোমার স্নেহ মমতা ভালবাসা আমার কাছে বটবৃক্ষের ছায়ার মত।তোমাকে ছাড়া নিজেকে ভাবতেই পারিনা।
সেদিন কি যে হল খুব খারাপ ব্যবহার করেছে ভেবে খুব কষ্ট হয়।এই মানুষের সঙ্গে অমন ব্যবহার কেউ করে?
গুলনার উপুড় হয়ে বালিশে মুখ গুজে নিজেকে সামলাবার চেষ্টা করে।বলদেব ধীরে ধীরে মণ্টির শরীর ম্যাসাজ করতে থাকে।পায়জামা নামিয়ে পাছার বলদুটো দুহাতে পিষতে থাকে।সুখে আয়েশে মণ্টির চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে।চিবুক দিয়ে ঘাড়ে পিঠে ঘষতে থাকে।কিচছু বলবে না ওর যা ইচ্ছে করুক মণ্টি ভাবে।আজ কি করবে না?একটা মেয়ে লজ্জার মাথা খেয়ে কতবার বলা যায় করো করো।গুলনার পালটি খেয়ে চিত হল।নীচু হয়ে ভোদার পাশে তিলটা খুটতে থাকে।
oEWhZUtjmeWGdRUeT75p5vV9H3y0-BFNklp3S8fv-P_8LuNys5-bHtgoq_gILVWoqbv2k0M=s0-d-e1-ft

দ্যাখো কেমন ঘাটাঘাটি করছে যেন জম্মে দেখেনি।লজ্জা ঘেন্না কিছু নেই।গুলনারের ধৈর্যচ্যুতি ঘটে বলল,তখন থেকে ঐটা কি করতেছেন ?
বলদেব ভোদার উপর মুখ চেপে ধরল।মুখ তুলে ফিক করে হাসে।গুলনার বলল,হাসির কি হল?
--একটা কথা মনে পড়ল জ্যোতিষের বই তে পড়েছিলাম।
--কি কথা?মাথা তুলে বলল গুলনার।
--এইখানে তিল থাকলে জাতক খুব সেক্সি হয়।
--সেক্সি আপনের পছন্দ নয়?
--এইখানে তো কেউ নেই আপনি বলছো কেন?
--সেক্সি তোমার অপছন্দ?
--তোমার সব আমার পছন্দ।
--খালি ঘাটাঘাটি করবে?করলে করো নাহলে ঘুমোতে দাও।
LoDbbecUh6Qn9jY4rlVohkPxxk8mVHrgnFwnglyuXGT2kubNO0_Tp6fu3XBS9QF-wyOa7ei9c-8RztYaMgM-pCQzZPI30T9jRTgdR7KtHmvOrwmqFsDxUpgbyAxdALA=s0-d-e1-ft

দেব বাড়াটা চেপে ঢুকিয়ে দিতে মন্টি আউচ করে শব্দ করে।বলদেব জিজ্ঞেস করে,ব্যথা পেলে?
--ঘোড়ার মত মুগুর বানিয়েছো।কথা না বলে যা করছো করো।
ব্যথা পেলে করবে না, উফস মণ্টির জন্য ভারী চিন্তা। বলদেব ঠাপ শুরু করল। গুলনার পেটের উপর হাত বোলাতে থাকে।পেটে যাতে চাপ না পড়ে বাচিয়ে বলদেব ঠাপাতে লাগল।অবাক হয়ে ভাবে দিনের পর দিন এক ছাদের তলায় থেকেও মণ্টিকে কখনো মনে হয়নি করাতে এত ভালবাসে।আমার জন্যই কষ্ট সহ্য করেছে।অদ্ভুত এই সম্পর্ক কখন কার সঙ্গে গড়ে ওঠে।বলদেব জিজ্ঞেস করে,মণ্টি কি ভাবছো?
--কাল মামন চলে যাবে। তোমার সারাদিন খুব ধকল গেছে।ভেবেছিলাম আজ আর কিছু করব না।কিন্তু না করালে শরীরে অস্বস্তি হয়।
--সেইটা ঠিক আম্মুর খুব খারাপ লাগবে।শত হলেও নিজের ছেলে।
--কেন আপনি আছেন তো----জোরে-জোরে-উনহু-উনহু-উ-উউ--ই-ই--ই।গুলনার পানী ছেড়ে দিল।
--তোমার হয়েছে?
--আপনি করেন।মিনিট পাচেক পর মণ্টির হাটু বুকে চেপে ধরে বীর্যপাত করে ফেলে।উষ্ণ তরলের স্পর্শ ভোদার মধ্যে অনুভুত হয়।
উঃ শান্তি!গুলনার বাড়াটা মুছিয়ে দিয়ে শুয়ে পড়ল গুলনার । মণ্টিকে জড়িয়ে ধরে বলদেব পাশে শুয়ে পড়ল।অন্ধাকারে বুঝতে পারে মণ্টির চোখে জল চিক চিক করছে।
--মণ্টি তুমি কাদতেছো?
--কেন কাদব না?যেটুক চেয়েছিলাম তার চেয়ে বেশি পেলে কান্না পায়না?
মণ্টিকে বুকে তুলে নিয়ে পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে বলদেব বলল,আমার কপালে এত সুখ আমিও কোনোদিন ভাবিনি।
 
Last edited:
  • Love
Reactions: Cute pie

kumdev

Member
437
397
79
।।৭০।।


যথারীতি সকাল হল অন্যান্য দিনের মত। ছুটির দিন ব্যস্ততা নেই কোনো। কিন্তু এহসান মঞ্জিলের সকাল আলাদা। ঘুম ভেঙ্গেও যেন জড়তা কাটতে চায় না। মামুন আর একবার নিজের জিনিসপত্র দেখে নেয় সব ঠিকঠাক আছে কি না। করিম ঘোরে ফেরে চোরা চোখে ভাইয়ারে দেখে। কবে এ বাড়িতে কাজে লেগেছে সাল হিসেব করতে গেলে সব তালগোল পাকিয়ে যায়। মামুনের অবাক লাগে সবাই এমন করছে কেন,সে তো চিরকালের জন্য যাচ্ছে না। বন্ধুরা মুখে শুভকামনা জানালেও চোখে দেখেছিল ঈর্ষার ঝলক বেশ উপভোগ করেছে মামুন। কিন্তু মাকে নিয়ে হয়েছে সমস্যা। মুখে বলছে সাবধানে থাকিস বাবা চোখের ভাষা আলাদা। আব্বু এই দিক দিয়ে একেবারে ফিট। দেখা হলেই কাগজপত্র ঠিকঠাক আছে তো? মন দিয়া পড়াশুনা করিস।
বাইরে কার ডাকে করিম ছুটে গেল ফিরে এল একটা চিঠি হাতে।
— কিরে কার চিঠি?
— আমি কি করে বলবো পিয়ন বলল কি গুলমাল না কি?
আবার কিসের গোলমাল? ড.রিয়াজ এগিয়ে গিয়ে করিমের হাত থেকে চিঠি নিয়ে দেখে বলেন,হারামজাদা তুই অপার নাম জানিস না?
— মণ্টি। জানবো না কেন?
— ওইটা ডাক নাম,ভাল নাম গুলনার এহসান।
— আমি ঐসব গুলমাল-টাল কইতে পারবো না,চিরকাল অপা কইছি অপাই কমু।
— কিসের চিঠি? নাদিয়া বেগম জিজ্ঞেস করেন। আসল কথা না কইয়া উনি করিমের পিছনে লাগছেন।
গুলনার আসতে ড.রিয়াজ মেয়ের দিকে চিঠি এগিয়ে দিলেন। গুলনার চিঠি খুলে দেখলেন,স্কুল থেকে এসেছে। মঞ্জুর হয়েছে তার পদত্যাগ পত্র। একদিন গিয়ে টাকা পয়সা নিয়ে আসতে বলেছে।
— শেষ পর্যন্ত চাকরী ছেড়ে দিলি? তোর মা এত করে বলেছিল শুনিস নি। আজ কেন মা তোর সুমতি হল?
নাদিয়া বেগম স্বামীর কাছ ঘেষে গিয়ে ফিসফিস করে বলেন,বুড়া হইতে চললেন আপনের কবে বুদ্ধি হইবো? কদিন পর বাচ্চা হইবো,বাচ্চা ফেলাইয়া চাকরি করতে যাইবো নাকি?
ড.রিয়াজ হো-হো করে ঘর কাপিয়ে হেসে উঠলেন।
গুলনার মনে মনে ভাবে অযত্নে লোহা ফেলে রাখতে চাই না।অনেক শিক্ষা হয়েছে।
জয়নাল দারোগার প্রোমোশন হয়ে অবসরের মুখে এখন সিআই হয়েছেন। হোটেলে জানলার ধারে বসে নানাকথা মনে আসছে। বলার ব্যাপারটা এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না। চুরির দায়ে এসেছিল থানায়। বেশ অদ্ভুত অদ্ভুত কথা বলে। লোকটার প্রতি মায়া বশত রাশেদকে বলে কাজ পাইয়ে দিয়েছিলেন। বদলি হয়ে এল নবাবগঞ্জে। অচেনা জায়গা কোথায় থাকবে ভেবে চিঠি লিখে দিলেন রিজানুর রহমানের কাছে। রিজানুর ছিলেন বড়ভাইয়ের মত।বড়ভাই যে বেঁচে নেই খবরটা তখন জানতেন না। জানলে হয়তো চিঠি লিখতেন না। নুসরতের কাছে শুনেছেন,কিভাবে ড.রিয়াজের মেয়ের সঙ্গে বিবাহ হয়। এরেই বলে নসিব। কি সুন্দর স্মার্ট দেখতে হয়েছে এখন। শিক্ষা অনেকটা উর্দির মত। যেই গায়ে দিবা অমনি আলাদা ব্যক্তিত্ব। সইদুল এখন সাব-ইন্সপেকটার,মন লাগায়ে কাজ করতে পারলে ইন্সপেক্টার হতে কতক্ষন। রাশেদ আছে নুসরতের পরিচিত জেনিফার আলম যদি একটু সাপোর্ট দেয় তাহলে কথাই নাই। বিবাহটা ভালয় ভালয় মিটলে হয়। অধ্যাপকরেও নেওতা দেওয়া যাইতে পারে। কারে দিয়া কি হয় কে বলতে পারে।
একটু সকাল সকাল এসে পড়েছে বিমান বন্দরে। মুস্তাক নিয়ে এসেছে নাদিয়া বেগম মণ্টি দেব আর মামুনকে। মামুন আজ ড্রাইভ করে নাই। নাদিয়া বেগমের দুই পাশে বসেছিল মেয়ে আর ছেলে,দেব বসেছিল ড্রাইভারের পাশে। পরে আসছেন ড.রিয়াজ, সঙ্গে করিমেরও আসার কথা। দেরী আছে চেকিংযের সময়।
মামুন নেমে জিজ্ঞেস করে, দুলাভাই কফি খাইবেন নাকি?
— কারে কি জিগাস? তর দুলাভাই খাওনের ব্যাপারে কখনো আপত্তি করচে? গুলনার হেসে বলেন।
নাদিয়া বেগম মেয়েকে ধমক দেন, আমার জামাইরে তুই খাওনের খোটা দিবি না, বইলা রাখলাম।
— কি আপনে কিছু কন না? দেবকে জিজ্ঞেস করেন গুলনার।
— একসাথে সবাই কথা বলতে নেই। দেব বলে।
— বলা তোর স্বামী না? স্বামীর লগে কেউ এইভাবে কথা হয়?
গুলনার কিছু বলেন না। মনে মনে ভাবে দেব যে তার স্বামী না সন্তান সেইটাই এখনো ঠিক করতে পারলেন না। কেউ না থাকলে গাড়ি থেকে নেমে ওকে একটা চুমু দিতেন। পায়চারি করছে দেব। মামুন কফি আনতে গেছে। গাড়ি থেকে নেমে গুলনার দেবের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, আপনে আমার উপর রাগ করছেন?
— কেমন করে রাগ করে সেইটা শিখতে পারলাম না। আমার মায়ে বলতো বলা ক্রোধে বোধ নষ্ট হয়।
গুলনার ভাবেন কেমন সুন্দর করে কথা বলে দেব। মাটি দিয়ে নিজের মত করে গড়ে নিয়েছে। ছিঃ এমন মানুষকে কেউ সন্দেহ করে? নিজের উপর রাগ হয়। নিজের গড়া পুতুলকে মাঝে মাঝে নিজেই চিনতে পারেন না। চারদিকে লোকজন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। একটু দূরে একটা জটলা ক্রমশ ভারী হতে থাকে। কোন ভিআইপি হবে হয়তো। দেব দূরে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে। গায়ে গা লাগিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন গুলনার। মামুন আসছে পিছনে ট্রে হাতে একজন বয়। গাড়িতে মাকে দিয়ে ছেলেটি তাদের কাছে আসে। ট্রের উপর দু-কাপ কফি আর দুটো ফিসফ্রাই। গুলনার কফি নিয়ে বলেন,ফ্রাই দুইটা আপনে নেন।
— না আমি একটা খাবো।
— তার মানে রাগ করছেন? কাদো কাদো ভাবে জিজ্ঞেস করেন গুলনার।স্বামীর লগে একটু মস্করা করতে পারুম না।
মণ্টির মুখের দিকে তাকিয়ে হাসি পেয়ে যায়, দেব বলে,নিতে পারি যদি তুমি হাতে করে খাইয়ে দাও।
— ইস আমার বইয়া গ্যাছে। গুলনার এদিক-ওদিক তাকিয়ে ফিস ফ্রাই তুলে দেবের মুখের কাছে তুলতে দেব এক কামড়ে প্রায় অর্ধেকটা কেটে নিল। আবার মুখ এগিয়ে আনতে গুলনার টুপ করে বাকিটা নিজের মুখে পুরে দিলেন।
একটি মেয়ে এসে বলদেবকে বলল,স্যর আপনাকে ডাকছেন। বলেই দৌড়ে ভীড়ের দিকে চলে গেল। দেব আর গুলনার চোখাচুখি করে।চলুন দেখি কে ডাকছে,গুলনার বলল। দেব এগিয়ে যেতে লাগল,মণ্টি তার পিছু ছাড়েনা।ভীড়ের মাঝে মনে হচ্ছে ড মৌসম। ভীড়ের কাছাকাছি হতে ড.মৌসম বলেন,হাই সোম।
বলদেব হাই বলে হাসল।মনে হচ্ছে ফিরে যাচ্ছে। হঠাৎ ডাকলো কেন?
তারপর ভীড় ছেড়ে কাছে এসে বলেন,তুমি এখানে? উনি তোমার ওয়াইফ? আলাপ করিয়ে দেবে না?
অগত্যা দেব মণ্টির সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিল।
— তোমার বউয়ের সঙ্গে আলাপ করে ভাল লাগলো। রিয়ালি শি ইজ এঞ্জেল। নিজে নিজে খিল খিল করে হেসে উঠলেন। হাসি থামিয়ে বললেন,তোমাদের ভার্সিটি ছেড়ে চলে যাচ্ছি। তোমার কথা আমি ড.আইয়ুবকে বলেছি। তুমি ইচ্ছে করলে ওর আণ্ডারে থিসিস করতে পারো।
কিছুক্ষন তাকিয়ে গুলনারকে দেখলেন। তারপর গুলনারের কাছে গিয়ে বললেন,ম্যাডাম এক মিনিট একটা প্রাইভেট কথা আছে।
ওরা দুজনে একটু দূরে সরে গেল।ভীড়ের একটি মেয়ে এগিয়ে এসে বলদেবকে জিজ্ঞেস করে,স্যার উনি গুলনার বেগম?
বলদেব বুঝতে পারে টিভিতে দেখেছে হয়তো বলল,হ্যা তুমি চেনো?
--চিনি না ওনার গান শুনেছি।ভীড়কে লক্ষ্য করে বলল,কিরে বললাম না।
গুলনারের হাত ধরে মৃদু স্বরে বললেন,চমৎকার মানিয়েছে। আমি বিনি সুতোর বাঁধন দেখতে পাইনি তাই দড়ি দিয়ে বাঁধতে গেছিলাম। অ্যাম সরি। তারপর দেবের দিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে বললেন,বাই সোম। মৌসম আবার ভীড়ে মিশে গেলেন।
গুলনার ভদ্রমহিলার নাম শুনেছিলেন আজ প্রথম দেখলেন। দেবের থেকে কম করে বছর কুড়ির বড় হবেন। দেব এর পাল্লায় পড়েছিল? এতো ওকে চিবিয়ে ছিবড়ে করে দিত। দড়ি দিয়ে বাধতে গেছিল আবার আইলে এমন বাড়ি দিমু জ্বালা জুড়াইয়া যাইবো। দেবের হাত ধরে হ্যাচকা টান দিয়ে গুলনার বলেন,হা করে দেখেন কি? চলেন,আব্বু আইসা পড়ছে।এই রাক্ষুসীর খপ্পরে পড়ছিলেন?
--ভাল করে না জেনে কারো সম্পর্কে মন্তব্য করতে নাই।
--আর একটা কথা বলবেন না।দড়ি দিয়া বাধতে গেছিলাম,মুখ ফুইটা কইতে লজ্জা হয়না।দেবের হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যেতে থাকে।
দূরে দেখা গেল আরেকটা গাড়ি এসেছে। ওরা তাড়াতাড়ি পা চালালো। মামুন ভিতরে যাবার জন্য প্রস্তুত। গুলনার কাছে যেতে জড়িয়ে ধরে মামুন ধরা গলায় বলল,অপা আসি? তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বলে, আমি মামা হইলে সঙ্গে সঙ্গে খবর দিবা।
ভাইকে জড়িয়ে ধরে গুলনার কেদে ফেলে,খুব ফাজিল হইছস?
— অপা ছাড় কি পাগলামি করো? মামুনের চোখ ঝাপসা।
দেব এগিয়ে গিয়ে বলে,শোন মামুন একলা যাচ্ছো একলা ফিরবে,মামী নিয়ে আসবে না। লাজুক হেসে দেবের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে গেলে দেব বাধা দিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল,সময় পেলে আম্মুকে ফোন কোরো। মামুন মায়েরে প্রণাম করে সংরক্ষিত অঞ্চলে ঢুকে গেল।
ফেরার পথে গাড়িতে কেবল গুলনার আর দেব। অপর গাড়িতে ড.রিয়াজ নাদিয়া বেগম আর করিম।নাম শুনেছে অনেকবার আজ স্বচক্ষে দেখল।বেহায়া বড় মুখ করে বলে কিনা দড়ি দিয়া বাধতে গেছিলাম। রহম দিল আল্লা নাইলে দেবরে খাইয়া ফেলাইত।পাশে বসা দেবকে দেখে কেমন নির্বিকার।সামনে মুস্তাক তাই কিছু বলতে পারেনা।
--সারাক্ষন এত কি ভাবেন বলেন তো?
--ভাবছি এতক্ষনে মামুন মাটি ছেড়ে আকাশে।
--ঐ মৌসম নাকি সেওতো আকাশে।
বলদেব মুখ ঘুরিয়ে মণ্টির দিকে তাকিয়ে হাসল।
--হাসেন কেন?
--তোমার অনেক ফ্যান।এখানেও তোমাকে অনেকে চেনে।
গুলনার ভ্রু কুচকে তাকায়।বলদেব বলল,ঐ মেয়েগুলো তোমাকে নিয়ে আলোচনা করছিল।
--আমাকে ডেকে নিয়ে কি বলল আপনের অধ্যাপিকা জানতে ইচ্ছা হয়না?
--প্রাইভেট কথা কেন জানতে চাইব?
কিছুটা যাবার পর গুলনার জিজ্ঞেস করেন, মুস্তাক কফি খেয়েছো।
— জ্বি আমি ভাজা খেয়েছি,কফি খাইতে তিতা লাগে,আমি চা খাই।
— তুমি গাড়ি দাড় করাও।
মুস্তাক ঘাবড়ে গিয়ে গাড়ি থামায়। গুলনার বলেন,নামো কোথাও গিয়া চা খাইয়া আসো। যাও।
— পরে খামুনে– ।
— না অখনই যাইবা। বাধ্য হয়ে মুস্তাককে যেতে হয়। জানলা দিয়ে মুখ বের করে দেখেন গুলনার,মুস্তাক হাটতে হাটতে চায়ের দোকান খুজতে অনেক দূর চলে যাচ্ছে। মণ্টি ইচ্ছে করেই মুস্তাককে চা খেতে পাঠিয়েছেন বলদেব বুঝতে পারেনি।আম্মুর কথা ভাবে কেমন আছে এখন।বাড়ী ফেরার আগে অ
4mb9qj67cZZsPKDfL09TjSBDz1-jnYb0rGZASHeBQafIZoGT1B1xiWR--zBl5-5u5V0Z0aG9_whVtksSa-cbLtr5_GTDSWw9=s0-d-e1-ft
ন্তত একবার দেখা করে আসবে।
মণ্টির অদ্ভুত ব্যবহারে দেব হতচকিত। মুস্তাক চলে যেতেই গুলনার দেবকে বলেন, প্রাইভেট কথা আপনার বিবির সাথে আপনার জানতে ইচ্ছা হয়না?
--তুমি তো বলেই দিয়েছো দড়ি দিয়া বাধতে চায়।

গুলনার হেসে, ‘ওরে আমার বলদারে’ বলে দেবের মাথা নিজের দিকে টেনে এনে ঠোট জোড়া মুখে পুরে নিল যেন শেষ বিন্দু শুষে নেবে।দেবের ভার সামলাতে না পেরে চিত হয়ে পড়ে।


। । সমাপ্ত । ।
 
Last edited:

gopal dey

New Member
89
39
18
অসম্ভ একটা ভালো গল্প পড়লাম এবং গল্প টা আর আসবেনা ভেবে খুব খারাপ লাগলো।
 
  • Like
Reactions: Cute pie

Cute pie

New Member
25
42
13
সমাপ্তি তো দিলেন, মনে হচ্ছে আপনের অনিচ্ছায় ইতি টানলেন। তারপরো আপনের সুন্দর লেখনী ও চরিত্র গুলোর অনুভূতি বেশ স্পর্শ কাতর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, অসাধারণ
 

ranaroy

New Member
20
16
3
দারুণ ভালো। আপনার লেখা আগেও পড়েছি। বেশ লাগে পড়তে।
 
Top