If you are trying to reset your account password then don't forget to check spam folder in your mailbox. Also Mark it as "not spam" or you won't be able to click on the link.
অফিসে রবি কে নিয়ে আমার যে ইগোর সমস্যা হচ্ছিলো সেটা আমাকে ব্যাথা দিচ্ছিল ঠিকই কিন্তু আমার ওপর মনীষার যে কনফিডেন্স ছিল সেটা কমে যাওয়াটাই ভেতরে ভেতরে জ্বালিয়ে পুরিয়ে খাক করে দিচ্ছিল আমাকে।
পরের সপ্তাহে শর্মা প্রোডাক্টের সাথে আমাদের ডিলটা ফাইনাল হয়ে যাওয়ার আনন্দে রবি আমাদের ফিউচার মিডিয়ার সমস্ত এমপ্লয়ীকে নিজের বাড়িতে একটা পার্টিতে নেমন্তন্ন করলো, ব্যাপারটা ভালভাবে সেলিব্রেট করতে।
এমনিতে আমাদের যে কোম্পানি পার্টি হয় তাতে নানা রকম রেস্ট্রিকশান থাকে বলে রবি এবারের পার্টিটা নিজের বাড়িতেই অরগানাইজ করতে চেয়ে ছিল। এতে করে পার্টি দেওয়া হলেও তার সাথে কম্পানির কোনো সম্মন্ধ থাকবেনা আর তাই যে যার ইচ্ছে মতন এনজয়ও করতে পারবে। এনজয় মানে অবশ্য মাতাল হওয়া। কোম্পানি পার্টিতে মাতাল হয়ে যাবার ভয়ে কেউ দু তিন পেগের বেশি নিতে পারেনা। এখানে সেই সব কোম্পানি কোড টোডের কোন বালাই থাকবেনা।
সবাই মিলে ঠিক করলো প্রত্যেকেই তাদের বউ কে আনবে পার্টিতে। এমনিতে আমার আর মনীষার প্রায় সাত আট বছর বিয়ে হলেও মনীষা এর আগে কখনো কোনো কোম্পানি পার্টিতে যায়নি। আমার কয়েকজন ক্লোজ অফিস কলিগ-কে চিনলেও বেশিরভাগ অফিস কলিগকে ও চেনেনা। আমি ঠিক করলাম এবারে ওকে নিয়ে যাব পার্টিতে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আমি মনীষাকে নিয়ে রবির বাড়িতে পার্টি অ্যাটেন্ড করতে গেলাম। গাড়িটাড়ি পার্ক করে মনীষাকে পাশে নিয়ে আমি রবির বিশাল এপার্টমেন্টে ঢুকলাম। দরজাতেই দেখি রবি দাঁড়িয়ে আছে। ও হাঁসি মুখে গ্রিড করলো আমাদের।
- “হাই রাজীব। আমি খুব খুশি হলাম যে তুমি এসেছো”।
আমি রবির দিকে এগিয়ে গিয়ে শেকহ্যান্ড করলাম তারপর ওকে বললাম,
- “ববি এই হল আমার বউ মনীষা, আমার মনে হয় তুমি আগে ওকে দেখেছো”।
- “হ্যাঁ দেখেছি ওকে। তোমাকে আবার দেখতে পেয়ে আমি খুব খুশি হলাম মনীষা”।
এই বলে ও ভীষণ পোলাইটলি মনীষার সাথে শেকহ্যান্ড করলো।
মনীষা হেঁসে বললো - “ধন্যবাদ মিস্টার রায়”।
রবি আমাদের ভেতরে নিয়ে যেতে বললো,
- “রাজীব তোমরা এখন এখানে নিজের মত করে একটু রিলাক্স কর, আমাকে এখন একটু গেটের কাছে থাকতে হবে। আসলে এখনো অনেক গেস্ট আসা বাকি আছে। বাট মনীষা আই উড লাইক টু নো ইউ বেটার, কিন্তু এখন বুঝতেই পারছো আই হ্যাভ ফিউ মিনিটস টু স্পেয়ার”।
রবির এই “আই উড লাইক টু নো ইউ বেটার” বাক্যটা আমার অপছন্দ হলেও মনীষা দেখলাম কিছু মনে করেনি।
রবি একটু হেঁসে গেটের দিকে চলে গেল। ভেতরে দেখলাম আমাদের অফিসের অনেকেই এসে গেছে। আমরা নিজেদের মত এর ওর সাথে গল্পে মেতে উঠলাম।
প্রায় আধ ঘণ্টা পরে হঠাৎ রবি এসে আমাদের ডাকলো – “রাজীব, মনীষা, এসো, তোমাদের আমার এপার্টমেন্টটা একটু ঘুরে দেখাই।"
ওর এপার্টমেন্টটা তিনটি তলা নিয়ে। তলার ফ্লোরে তখন পুরোদমে পার্টি চলছিল। রবি আমাদের নিয়ে ওর দোতলায় গিয়ে উপস্থিত হল।
একটা আশ্চর্য মিষ্টি গন্ধ ওর পুরো দোতলাটা জুড়ে ছড়িয়ে ছিল। দোতলাতে উঠতেই বুঝতে পারলাম সত্যি সত্যি কোন ধনী লোকের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়েছি। রবির দোতলাটা নানা রকমের ঘর সাজানোর বিলিতি এবং অত্যন্ত দামি ডেকরেটিভ আইটেমে সাজানো ছিল।
রবি আমাদের গল্প বলার ঢঙে বলতে লাগলো কি ভাবে ও এই সব দুস্প্রাপ্য দারুন জিনিসগুলো একে একে যোগার করেছে। সত্যি কি সুন্দর করে কথা বলতে পারে ও। গল্প বলার ছলে ও বলে যেতে লাগলো ওই সব জিনিস সংগ্রহ করার বা নিলামে কেনার নানা রকমের মজার কাহিনি। ওর সংগ্রহ করা কয়েকটা আইটেমের হিস্টোরিক্যাল ভ্যালুও ছিল। ও খুব সুন্দর করে বোঝাতে লাগলো সে সব ইতিহাস। ওর কথা বলার ঢঙ এতো সুন্দর ছিল যে একবারের জন্যও আমাদের বোর মনে হয়নি।
দেখানো শেষ হলে ও আমাদের নিয়ে ওর এপ্যার্টমেন্টের তিন তলায় এসে উপস্থিত হল। ওখানে ওর একটা দুর্দান্ত প্রাইভেট বার ছিল। এছাড়া ছিল একটা অত্যন্ত দামি ৭২ ইঞ্চি টেলিভিসন আর গোটা এরিয়াটা মোরা ছিল ‘বোসের’ ৭ ইন ১ হোম থিয়েটার সিস্টেমে। তিন তলার একদিকের দেয়ালটা পুরো কাঁচের। ওখান থেকে পুরো শহরটা দেখা যাচ্ছিল।একটু দূরে একটা হাফ ঘষা কাঁচের পার্টিশান করা দেওয়ালের আড়ালে একটা বিশাল হোয়াইট মার্বেলের পনেরো বাই পনেরোর বাথটব।
পুরো তিনতলাটা ঘুরে ঘুরে দেখার পর আমরা রবির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে একতলায় যেখানটায় পার্টি চলছিল সেখানটায় নেবে এলাম। সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে ভাবছিলাম আগে আমি মুখে না মানলেও ভেতরে ভেতরে রবির বিজনেস অ্যাপ্রোচ নিয়ে মুগ্ধ ছিলাম আর আজকের পর ওর চার্ম আর দুর্দান্ত লাইফ স্টাইল নিয়েও মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
মনীষার আর আমার পার্টিতে মিশে যেতে সময় লাগলোনা। প্রায় একশো কো-ওয়ার্কার, কলিগ আর তাদের বউদের নিয়ে পার্টি ভীষণ জমে গিয়েছিল। আমি আর মনীষা হাতে একটা সফট ড্রিংকের গ্লাস নিয়ে সারা পার্টি ঘুরে বেড়াতে লাগলাম। অফিসের অনেক কলিগ কে মনীষা চিনতোনা, শুধু তাদের নাম শুনেছিল আমার কাছে। তাদের সবাইয়ের সাথে আমি মনীষা কে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলাম, পরিচিত হচ্ছিলাম তাদের বউদের সাথে।
একটু পরেই অনেকে ড্রিংক করা শুরু করলো, যদিও আমরা নিজেদের সফট-ড্রিংক আর ফুড-ড্রিঙ্কেই সীমাবধ্য রাখলাম। আরো প্রায় দু ঘণ্টা পর আ্যপেটাইজার এল। তারপর শুরু হল ডিনার। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ডিনার চলার পর অবশেষে তা শেষ হল আর পার্টি পৌঁছে গেল তার শেষ ধাপে। ডিনারের পর একটু রেস্ট নেওয়া হল, তারপর শুরু হল মিউজিক আর স্লো ড্যান্স।
একটু পরে আমি একবার রেস্ট রুমে গেলাম ফ্রেশ হতে। ফ্রেশ হয়ে ফিরছি এমন সময় দেখি ঘরের এক কোনে রবি মনীষার সাথে কি সব যেন গল্প করছে, আর মনীষা তা শুনে খুব হাঁসছে। ওদের দুজনকে একসঙ্গে হাঁসাহাসি করতে দেখেই মাথা গরম হয়ে গেল আমার। আমি অবশ্য জানতাম মনীষা আমাকে ভীষণ ভালবাসে। ওকে আমি বিশ্বাস করতে পারি।
মনে পড়লো মনীষার পরিবার আমার সাথে মনীষার সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। আমাকে বিয়ে করার জন্য ওর বাবা মা এমনকি পুরো পরিবারের সঙ্গে এক কথায় সম্পর্ক কেটে দিয়েছিল মনীষা। আমাদের গত আট বছরের বিবাহিত জীবনে একবারের জন্যও কখনো মনে হয়নি যে মনীষা আমার সাথে কখনো চিটিং করতে পারে। আসলে আমি রেগে গিয়েছিলাম এই ভেবে যে রবি শেষে আমার স্ত্রীর সঙ্গেও ফ্লার্ট করছে। এভাবে সহকর্মীর স্ত্রীর সাথে ফ্লার্ট করার মানে সেই সহকর্মীর প্রতি রেস্পপেক্ট কম থাকা।
আমি ওদের কিছুই বললাম না কারণ আমার পক্ষে আমার বসকে গিয়ে বলা সম্ভব ছিলনা যে আপনি আমার স্ত্রীর থেকে দূরে থাকুন। আপনার ক্যারেকটার কি তা আমি জানি। তাছাড়া ওরা সেরকম কিছু অপরাধ তো করেনি শুধু একটু হাঁসাহাসি করছিলো।
আমি ভাবলাম আজ বাড়ি ফেরার পর আমাকে মনীষার সাথে রবির ব্যাপারে একটু কথা বলতে হবে। আমি এর আগে মনীষা কে কখনো বলিনি যে রবির ক্যারেকটারটা আসলে ঠিক কি রকম আর সুন্দরী, বিবাহিত এবং একটু ভারী চেহারার মহিলাদের প্রতি ওর মনোভাবটা কেমন। মুস্কিলটা হচ্ছে আমি কিভাবে মনীষার সামনে প্রসঙ্গটা তুলবো। কারণ এরকম প্রসঙ্গ উঠলেই মনীষার মনে হবে যে আমি ওঁকে সন্দেহ করছি।
যাই হোক আমি আর অপেক্ষা করতে পারছিলাম না বাড়ি যাওয়ার জন্য বা ওদের আলাদা করার জন্য। আমি আস্তে আস্তে ওদের সামনে গিয়ে উপস্থিত হলাম আর ওদের সঙ্গে একদম নর্মাল ব্যবহার করলাম। ওরা একবারেই বুঝতে পারেনি যে আমার মনের ভেতর তখন ঠিক কি চলছিল।
আমি ওদের সাথে দু একটা কথা বলার পর মনীষাকে বললাম, মনীষা আমার মনে হয় এবার আমাদের যাওয়া উচিত, কারণ রাত হয়ে যাচ্ছে, আর দাদা বউদি-ই বা কতক্ষণ সামলাবে টাপুর টুপুর কে। রবির কাছ থেকে বিদায় নেবার সময় রবি আমার সাথে শেকহ্যান্ড করলো।
এর পর হঠাৎ মনীষার দুই হাত নিজের হাতে নিয়ে বললো – “তাহলে মনীষা আশা করি আমাদের আবার দেখা হবে”।
মনীষাও রবির চোখের দিকে তাকিয়ে দারুন মিষ্টি করে হেঁসে বললো – “আপনার সাথে কথা বলে আমার ভীষণ ভাল লাগলো, আমাদের নিশ্চই আবার দেখা হবে”।
ওর কথা শুনে আমার বুকের ভেতরটা কেমন যেন করে উঠলো। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্য হল আমার ধনটা জাঙিয়ার ভেতরে একপলকেই কিভাবে যেন শক্ত ইঁটের মত হয়ে উঠলো।
সেদিন বাড়ি ফেরার পর রাতে শোবার সময় মনীষা নিজেই আমার ওপর চড়লো। খুব উত্তেজিত থাকলে এর আগেও মনীষাকে ইনিসিয়েটিভ নিয়ে আমার ওপর চড়তে দেখেছি কিন্তু এদিন যেটা অদ্ভুত লাগলো সেটা হল আমাকে ঠাপানোর সময় মনীষা সারাক্ষণ নিজের চোখ বুঁজে রইলো। ওর মুখ দেখে মনে হল মনে মনে কি যেন একটা ভাবছে ও, অথচ ওর ভারী পাছাটা যন্ত্রের মত আমাকে ঠাপিয়ে চললো।
যাই হোক ওর গুদে মাল পরার পর, আমার মাল গুদে নিয়ে, সাফ না করেই যখন ও আমাকে জড়িয়ে ধরে শুল আমি তখন ভাবলাম যাক আজকে পার্টিতে রবির সাথে মনীষার হাঁসাহাঁসির ঘটনাটা বোধহয় সেরকম কিছু নয়। কিন্তু তা যে নয় সেটা বুঝতে পারলাম পরের দিন সকালে মনীষার সাথে ব্রেকফাস্ট খাওয়ার সময়।
এদিক ওদিক দু একটা সাংসারিক প্রয়োজনের কথাবাত্রা হবার পর মনীষা হঠাৎ বললো,
- "তোমাদের এই রবিকে কিন্তু কালকে আমার বেশ ভালই লাগলো।"
মনীষা হঠাৎ করে রবির প্রসঙ্গ তোলায় আমি কফি খেতে খেতে ওর দিকে অবাক হয়ে তাকালাম।
- “মানে আমি বলছি তুমি ওকে যেরকম ভাবে আমার কাছে বর্ণনা করেছিলে ও কিন্তু সেরকম একবারেই নয়। ওর কথাবাত্রা ব্যবহার ভীষণ ভদ্র আর ফ্রেন্ডলি। তুমি তো ওকে আমার কাছে এক প্রকার প্রায় ভিলেনই বানিয়ে দিয়েছিলে”।
- “রবি”?
- “হ্যাঁ, তোমাদের রবি রায়”।
- “বাবা, তুমি তো মিস্টার রায় বলে ডাকতে, তুমি আবার কবে থেকে ওর ডাকনাম ধরে ডাকতে শুরু করলে? একটু ঠেস দিয়ে আমি জিজ্ঞেস করলাম ওকে”।
- “কালকে ও অনেক গল্প করলো আমার সাথে। নিজের কথাও যেমন অনেক বললো তেমনি আবার তোমার আর আমার সম্বন্ধেও অনেক কিছু জানতে চাইছিল। এমন খোলমেলা ভাবে কথা বলছিলো যেন মনে হচ্ছিল ও কোনো কম্পানির বস নয় যেন একজন সাধারন এমপ্লয়ী”।
আমার একটু কৌতূহল হল, রবি আবার আমাদের সম্পর্কে মনীষাকে কি জিজ্ঞেস করলো? তবে আমি আমার কৌতূহল দমন করলাম।
বললাম – “আরে কালকে ও পার্টি হোস্ট করছিল বলে হয়তো সবার সাথে অতো ভাল ব্যবহার করছিল । অফিসে ওকে দেখলে বুঝতে পারতে। অফিসে ওর একবারে অন্যরুপ”।
মুখে একটা বিস্কুট পুরে চিবতে চিবতে মনীষা আমার দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হেঁসে বললো – “হয়তো”।
- “দেখো মনীষা তুমি ওর হয়ে কাজ করলে বুঝতে পারতে কিরকম ডমিনেটিং আর অ্যাগ্রেসিভ আচরণ ওর”।
- “জানিনা, আমি তো আর ওর সাথে কাজ করিনা, তুমি করো। আমাদের তো আর জানার চান্স নেই যে ওর সাথে আমি কাজ করলে ও আমার সাথে কেমন ব্যবহার করতো”?
আমার দিকে তাকিয়ে আবার একটু মুচকি হেঁসে মনীষা আমাকে বললো।
মনীষার কথা শুনে মনের মধ্যে কেমন যেন একটা যৌন উওেজনা শুরু হল আমার।ভাবলাম মনীষা সত্যিই যদি আমাদের অফিসে রবির সাথে কাজ করতো আর আমি অন্য অফিসে কাজ করতাম, তাহলে?
এরকমটা হলে রবি কি কখনো সুযোগ বুঝে ওর সাথে শোয়ার প্রস্তাব দিত মনীষাকে? কি করতো মনীষা তখন? রবি কে যে ও মনে মনে বেশ পছন্দ করে তা তো আমি জানি। তাহলে কি দোনামোনা করেও শেষ পর্যন্ত ধরা দিত ও রবির কাছে? আমাকে লুকিয়ে নিয়মিত ভাবে শুতে শুরু করতো রবির বিছানায় আর আমি জানতেও পারতামনা।
কিন্তু আমি ওইসব আবোল-তাবোল চিন্তা মন থেকে জোর করে সরিয়ে দিলাম। ভাবলাম মনীষার মনে রবি সম্বন্ধে উচ্চ-ধারনার একটা বিহিত হওয়া দরকার।
বললাম – “মোদ্দা কথাটা হল রবি অফিসে যতই লাফাক আর ঝাঁপাক সেরকম বিশাল কিছু একটা বিজনেস প্রমোসান ও করতে পারেনি”।
মনীষা কাঁধ ঝাকালো আর বললো – “জানিনা, তবে তোমাদের অফিসের মেয়েরা কিন্তু সেরকম মনে করে না। ওরা তো দেখলাম রবি রবি করে একবারে পাগল”।
আমি অবাক হয়ে গেলাম এই দেখে যে মনীষা এখনো রবির হয়ে কথা বলেই চলেছে। ভেবেছিলাম ও চুপ করে যাবে কিন্তু সকালে রবির প্রসঙ্গটা ও তোলার পর থেকে রবির ব্যাপারে কথা যেন ও আর বন্ধ করতে চাইছেইনা। আমি আর কথা বারালাম না, চুপ করে নিজের ব্রেকফার্স্টটা শেষ করার দিকে মন দিলাম। মনীষা বোধহয় বুঝতে পারলো আমি কোন ব্যাপারে একটু বিরক্ত হয়েছি।
- “কি হল রাজীব হঠাৎ চুপ করে গেলে যে”?
- “আসলে একটা জিনিস আমার কাল থেকে মনে খচখচ করছে। কিন্তু আমি বলতে ভয় পাচ্ছি। বললে ব্যাপারটা হয়তো শুনতে একটু অন্যরকম লাগবে তোমার কাছে। আসলে আমি তোমাকে আপসেট করতে চাইনা”।
আমার কথা শুনে মনীষাকে কেমন যেন একটু চিন্তিত মনে হল।
- “কি ব্যাপার রাজীব আমাকে খুলেই বলোনা”?
- “দেখো আমি বলতে পারি তবে তুমি কিন্তু কিছু অন্যরকম মনে করতে পারবেনা। আমার মনে যা আছে তাই তোমাকে বলছি। যদি আমাদের মধ্যে কিছু মতান্তর থাকে তাহলে আমরা ব্যাপারটা কথা বলে ঠিক করে নেব কেমন? ব্যাপারটা রবির সম্বন্ধে”।
- “রবির সম্বন্ধে? কি ব্যাপার বলো”?
- “আমি জানিনা কাল পার্টিতে অন্য মেয়েদের কাছ থেকে তুমি কিছু জানতে পেরেছ কিনা। তবে আমি শুনেছি রবির ক্যারেকটার খুব খারাপ। বিবাহিত, সুন্দরী এবং একটু ভারী চেহারার মেয়েদের প্রতি একটু বিশেষ দুর্বলতা আছে ওর”।
আমার কথা শুনে মনীষা হেঁসে ফেললো।
- "ও এই ব্যাপার। হ্যাঁ আমিও কাল পার্টিতে রবির সম্বন্ধে অনেক গল্প শুনেছি”।
- “মনীষা ব্যাপারটা কিন্তু আমার কাছে খুব মজার লাগছেনা”।
- “কেন? তুমি কি ভাবছো আমার রবির সম্বন্ধে কোন বিশেষ ইন্টারেস্ট আছে”?
মনীষার গলায় কেমন যেন একটু রাগের আভাস পেলাম।
- “না না, তোমার ব্যাপারে আমি চিন্তিত নই মনীষা। আমি তোমাকে বিশ্বাস করি”।
- “তাহলে কি তুমি চাইছো আমি রবির সাথে আর কথা না বলি? কি এটাই চাইছো তো”?
মনে খানিকটা সাহস সঞ্চয় করে আমি বললাম – “হ্যাঁ, মানে তুমি যদি কিছু মনে না কর”।
- “আমি মনে করবো রাজীব…… আমি মনে করবো। আমি মনে করি রবি ভীষণ চার্মিং আর আমি ওর সাথে কথা বলাটা খুব এনজয়ও করেছি। আমি বুঝতে পারছিনা তুমি যদি আমাকে সত্যিই বিশ্বাস করো তাহলে তুমি কি ব্যাপারে এত চিন্তিত। রাজীব তুমি যখন এরকম অদ্ভুত আচরণ করো তখন আমার খুব বাজে লাগে”।
ওর উত্তরে আমি খুব একটা খুশি না হলেও আমি ওর ওপরে খুব একটা জোর করতে পারলাম না।
কারণ এক-তো, ও কোন দোষ করে নি। দুই, এই ব্যাপারটা নিয়ে জোর করলে সেটা খুব বাড়াবাড়ি হয়ে যেত। মনীষার গম্ভির মুখ দেখে মনে হল ও প্রচণ্ড খেপে গেছে আমার ওপর। আমি ওকে বোঝাতে চেষ্টা করলাম আসল ব্যাপারটা কি এবং আমি ওকে কোনো ভাবেই সন্দেহ করিনা। কিন্তু ও কোনো কথা শুনতে চাইলোনা।
বললো – “আমি আর এসব নিয়ে তোমার সাথে কোনো আলোচনা করতে চাইছিনা রাজীব, যদি রবি কখনো এমন কিছু করে যা আমার খারাপ লাগবে তাহলে আমি তৎখনাত তোমাকে জানাবো।"
এমন টোনে মনীষা আমাকে বললো “তোমাকে জানাবো” যে আমি বুঝলাম ও আর এই ব্যাপারে কোন কথাই শুনতে রাজী নয়। সুতরাং আমি আর কথা বাড়ালাম না।
পরের সোমবারে অফিসে একটা স্টাফ মিটিং ছিল।
সোমবার এই ধরনের মিটিং আমার ভীষণ বাজে লাগে। একে-তো সপ্তাহের শুরু বলে সোমবারে অনেক কাজ থাকে, তারপর স্টাফ মিটিং-এ নিজের মার্কেটিং টিমের হয়ে একটা ছোটো খাটো বক্তিতা দিতে হয়। কখনো দরকার হলে মান্থলি রিপোর্টও সাবমিট করতে হয়। সবচেয়ে বাজে লাগে অন্য সব মার্কেটিং টিমের বকর বকর শোনা।
সাধারণত এই সব স্টাফ মিটিং শেষ হতে হতে প্রায় লাঞ্চ আওয়ার হয়ে যায়। তাছাড়া এরকম দিনে মিটিং শেষ হবার পর সাড়া দিনের কাজও শেষ করে বেরতে হয়। ফলে বেরতে বেরতে প্রায় রাত নটা হয়ে যায়। তবে একটা ব্যাপারই রক্ষে যে স্টাফ মিটিং হয় সাধারণত তিন মাসে একবার।
গত সপ্তাহে মনীষার সাথে সামান্য একটা ছোটোখাটো ব্যাপার নিয়ে মনোমালিন্য হওয়ায় এমনিতেই মন মজাজ খারাপ ছিল আমার। অফিসে ঢুকেই যেই শুনলাম রবি আজকে জেনারেল স্টাফ মিটিং ডেকেছে, সঙ্গে সঙ্গে মেজাজটা আরো খিঁচরে গেল। কি আর কোরবো, তাড়াতাড়ি একটু ফ্রেশ হয়ে নিয়ে কনফারেন্স রুমে গিয়ে বসলাম।
একটু পরেই রবি ঢুকে পরলো কনফারেন্স রুমে আর মিটিং চালু করে দিল। “ফিউচার মিডিয়া আজ পর্যন্ত তার হিস্ট্রিতে সবচেয়ে বড় কনট্র্যাক্ট পেতে চলেছে শর্মা প্রোডাক্টের হাত ধরে। আমাদের সমস্ত মার্কেটিং টিমকে একযোগে হাতে হাত মিলিয়ে নেমে পরতে হবে এই প্রকল্পকে, এই কনট্র্যাক্টকে, সফল করতে”………… ইত্যাদি ইত্যাদি বলতে শুরু করলো।
মিটিং প্রায় দশ মিনিট চলার পর হঠাৎ আমাদের মার্কেটিং টিমের ঋতিকা এসে উপস্থিত হল। একটা কথা বলা হয়নি, এই ঋতিকা মেয়েটিকে আমিই ঢুকিয়েছি ফিউচার মিডিয়ায়। আমার কলিগ শেখরের রেফারেন্সে এসেছিলো বলে ওকে একবারে ঢুকিয়ে নিয়েছি আমাদের টিমে। ওর স্বামী একটা জুটমিলে কাজ করতো। হঠাৎ করে জুটমিলটা স্ট্রাইকে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওর চাকরি চলে যায়।
ঋতিকা এখন ওর বর আর ওর পাঁচ বছরের একটা বাচ্ছাকে নিয়ে খুব মুস্কিলে পরেছে। ওর স্বামীটা নাকি অনেক চেষ্টা করেও আর কোনো ভাল চাকরি জোগাড় করতে না পেরে ফ্রাসট্রেটেড হয়ে মদ খাওয়া শুরু করেছে।মেয়েটা কিন্তু ভীষণ স্মার্ট। কে বলবে এক বাচ্চার মা। আমাকে ভীষণ রেস্পেক্ট করে ও। ওর সাথে আমার একটা প্লেটোনিক সম্পর্ক আছে। চাইলে হয়তো শারীরিক সম্পর্কও হয়ে যেত বিশেষ করে ও এখন যেরকম অর্থনৈতিক কষ্টে আছে। কিন্তু আমি মনীষাকে ছাড়া আর কারো সাথে শোবার কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনা বলে আমাদের সম্পর্কটাকে অতি সাবধানে প্লেটোনিকই রেখেছি।
যাই হোক যে কথা বলছিলাম। এই ধরনের স্টাফ মিটিংএ আমরা কেউ দেরি করে আসিনা। ঋতিকা মিটিংএ দেরি করে ঢোকাতে সবাই ভাবলো রবি হয়তো কিছু বলবে ওকে দেরি করে আসার জন্য।
সবাইকে আশ্চর্য করে রবি নিজের স্পিচ থামিয়ে বললো – “হাই ঋতিকা, এসো এসো, তোমাকে আজ দারুন লাগছে দেখতে”।
ঋতিকা লজ্জায় মাথা নিচু করে কাউর দিকে না তাকিয়ে বললো – “সরি স্যার, আই এম লেট”।
ব্যাপারটা দেখে আমার মনে হল অফিসে যে রিউমারটা উড়ে বেড়াচ্ছে সেটা একবারে সঠিক। মিটিং চলাকালীন থেকে থেকেই ওদের পরস্পরের দিকে তাকানো থেকে যে কেউ বলে দেবে ওদের মধ্যে নিশ্চই কিছু একটা চলছে।
ঋতিকা আমার মার্কেটিং টিমের মেম্বার। আমি ঠিক করলাম ব্যাপারটা নিয়ে রবির সাথে কথা বলবো। একজন বিবাহিত স্টাফ কে জড়িয়ে অফিসে এরকম একটা রিউমার ছড়ানো ভালো কথা নয়। আর তাছাড়া এভাবে চললে ঋতিকা কে আমাদের টিমে রাখাও মুস্কিল হয়ে পরবে। কারণ টিম মিটিংএ কেউ যদি কোনো কারণে রবির সমালোচনা করে আর ও যদি রবিকে গিয়ে সব লাগিয়ে দেয় তাহলেতো খুবই মুস্কিল।
শেখরের দিকে চোখ পরলো আমার। ঋতিকা আর রবির থেকে থেকেই একে অপরের দিকে তাকানো দেখে ওর তো হাঁসি চাপাই দুস্কর হয়ে উঠেছে। যাই হোক আমি মিটিং-এ মন দেবার চেষ্টা করলাম। শর্মা প্রোডাক্টের কনট্র্যাক্টটা রবি কিভাবে পেয়েছে আর কিরকম ব্লাইন্ডলি একসেপ্ট করেছে সেটা জানার পর, রবির মুখে লংটার্ম রিলেশনশিপ, উইন উইন সিচুয়েশন, কোম্পানি বিজনেস সিকিউরিটি ইত্যাদি বড় বড় কথা শোনা প্রায় অসহ্য হয়ে উঠছিল।
যাই হোক অনেক কষ্টে কয়েক ঘণ্টা কাটানোর পর অবশেষে লাঞ্চ আওয়ার এলো আর আমিও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। মিটিংএ ডিসিশন হয়ে গেল শর্মা প্রোডাক্টের সাথে কনট্র্যাক্টটা আমরা নিচ্ছি, ওদের সাথে ফাইনাল নেগসিয়েশন হবে বৃহস্পতি আর শুক্রবার, সোমবার কনট্র্যাক্ট সাইন হবে, আমাদের কয়েকজন সিনিয়র মার্কেটিং হেড কে নিয়ে বানানো টিম মুম্বাই উড়ে যাবে শর্মা প্রোডাক্টের হেড অফিসে ওদের সাথে কনট্র্যাক্ট সাইন করতে।
মিটিং শেষ হবার পর আমি সোজা বাথরুমের দিকে গেলাম। বাথ রুমের ইউরিনারে নিজেকে হালকা করে প্যান্টের জিপার টানছি এমন সময় আমার পাশে বেসিনের ওপর লাগানো আয়নাতে দেখতে পেলাম রবি ঢুকছে বাথরুমে। ওর হাতে একগাদা ফাইল ভর্তি। রবি ফাইলগুলো বেসিনের পাশে একটা জায়গায় রেখে মুখ ধুতে ধুতে আমাকে জিজ্ঞেস করলো – “আরে রাজীব, সব ঠিক ঠাক তো”?
– “হ্যাঁ রবি, আমি ঠিক আছি”
– “আচ্ছা রাজীব একটা কথা বলো”; রবি রুমালে নিজের মুখ মুছতে মুছতে বললো।
- “কি”?
- “আমাদের এই শর্মা প্রোডাক্টের সাথে এগ্রিমেন্টের সময় যে প্রপোসালটা আমরা ওদের কে দেব, সেই পেপারগুলোর প্রেজেন্টেসানের ব্যাপারে তোমার কোনো ভালো আইডিয়া আছে।
- “মানে”?
- “মানে আমাদের কোম্পানির প্রোফাইলের কথাটাই যদি ধর। ওগুলো প্রফেসনালি বানাতে পারলে তবেইনা আমাদের কম্পানির ইমপ্রেসানটা ভালো হবে ওদের কাছে, তুমি কি বলো”?
- “হ্যাঁ রবি, তুমি ঠিক বলছো, তবে ও ব্যাপারে আমি এখনো সেরকম কিছু ভেবে উঠতে পারিনি”।
- “আমি ভাবছিলাম যদি কোনো অ্যাডভার্টাইসমেন্ট ওয়ার্ল্ডের প্রফেশনাল লোককে দিয়ে আমাদের কোম্পানি প্রোফাইলটা বানাতে পারি”।
- “হ্যাঁ, সে তো ভালই হয়”
_ ”আমি এও ভাবছিলাম যদি কোন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার জোগাড় করে আমাদের সার্ভিস ওরিয়ন্টেড কিছু ফটোগ্রাফ অ্যাড করতে পারি আমাদের প্রোফাইলে তো ব্যাপারটা দারুন হয়।
- “বাঃ তোমার এই আইডিয়াটা বেশ ভাল রবি”।
- “রাজীব আমি চাইছি কভার পেজে যদি কোন সেক্সি একটা মহিলা মডেলের ছবি দিয়ে দেওয়া যায়, মানে আজকাল তো সুন্দরী মেয়েদের ছবি ছাড়া কোন অ্যাডভার্টাইসমেন্ট কমপ্লিটই হয়না”।
- "হ্যাঁ, সে তো ঠিক"।
- “চলো রবি”। আমি নিজের প্যান্টের চেন টেনে রবি-কে বাথরুম থেকে বেরতে বললাম।
আসলে আমার হয়ে যাবার পরও ওর জন্যে অপেক্ষা করছিলাম আমি। আমার পেছন পেছন লাঞ্চরুমের দিকে যেতে যেতে রবি বললো – “রাজীব তুমি আমার সাথে আজ লাঞ্চ করে নাও, তোমার সাথে দু একটা ব্যাপার একটু ডিশকাস করার আছে আমার।"
একটু পরেই লাঞ্চরুমের টেবিলে ওর সাথে খেতে বসতে হল আমাকে। খেতে খেতে হঠাৎ রবি খানিকটা ফিসফিস করে আমাকে একটা গোপন খবর দেয়ার মতো ভঙ্গি করে বললো – “রাজীব আমি ডিসিশান নিয়ে ফেলেছি আমাদের কোম্পানি প্রোফাইলের ফ্রন্টপেজে এবং ভেতরে মনীষা কে মডেল করে কয়েকটা ফটো দেওয়ার। আমি এর জন্য একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার ইউজ করতে চাই। মানে মনীষার ওই ফটোগুলো তোলার জন্য”।
ওর কথা শুনে চমকে উঠলাম আমি। বলে কি ও?
- “মনীষা…… হঠাৎ………?"
- “দেখো রাজীব তোমার বউ মনীষা খুব সুন্দরী আর অ্যাট্রাকটিভ। ওকে আমাদের কম্পানির প্রোফাইলের ফ্রন্টপেজে দারুন মানাবে। সেদিন পার্টিতে ওকে দেখেই আমার মাথায় এসে গিয়েছিল এই আইডিয়াটা”।
সঙ্গে সঙ্গে আমার মাথার ব্রেন কাজ করতে শুরু করলো। ধান্দাটা যে ওর ভাল নয় সেতো বোঝাই যাচ্ছে।
- “রবি আমার মনে হয় মনীষা রাজী হবে না। দেখো ও তো একটা সাধারণ গ্রহবধু, এসব কাজের সেরকম কোন অভিজ্ঞতা ওর আগে থেকে নেই। তাই আমার মনে হয় ও এসব পারবেনা।"
- “রাজীব আমরা তো কোনো নামি মডেল অ্যাফোর্ড করতে পারবোনা। আমি আসলে চাইছিলাম নতুন কাউকে যাতে করে আমাদের শুধু প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারের খরচা-টা দিলেই হয়ে যায়। আমার একটা বন্ধু আছে যে একজন নামকরা প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। ওর নিজের একটা স্টুডিয়োও আছে। ওর সাথে মনীষার ব্যাপারে অলরেডি কথা বলে নিয়েছি আমি, ও একটু কমসম কোরে কোরেদেবে বলেছে”।
- “কিন্তু রবি, মনীষা কি রাজী হবে”?
- “হ্যাঁ ও তো রাজী, সেদিন পার্টিতেই তো ওকে বললাম আমার আইডিয়াটা”।
রবির কথা শুনে আমি একটু অবাক হয়ে গেলাম। রবিও বোধহয় বুঝতে পারলো আমি অবাক হয়েছি।
- “কেন মনীষা তোমায় বলেনি রাজীব”?
- “না কই ও তো বলেনি”।
- “আশ্চর্য, ও যে আমাকে বললো ওর ছোটোবেলা থেকেই নাকি ফ্যাশান মডেল হবার খুব ইচ্ছে ছিল। মনীষা-তো আমাকে একরকম প্রায় হ্যাঁ বলেই দিয়েছে, বলেছে আমি ফাইনাল ডিসিশন নিয়ে নিলে ও শুধু তোমার পারমিশনটুকু নিয়ে নেবে”।
আমি এবার কি বলবো ঠিক বুঝতে পারছিলামনা। মনীষার যে ছোটবেলা থেকে ফ্যাশন মডেল হবার ইচ্ছে ছিল তাই তো কোন দিন আমাকে খুলে বলেনি ও।
এই বলে রবি মুখ ধুতে চলে গেল। আমি মনে মনে ভাবছিলাম কি ভাবে মনীষা আমাকে না জানিয়েই ওকে হ্যাঁ বলে দিল। তার মানে মনীষা পার্টির পরের দিন ব্রেকফার্স্টের সময়ই কথাটা তুলতো। তাই সেদিন রবির প্রশংসা করে কথা শুরু করেছিল ও। কিন্তু রবির ব্যাপার নিয়ে আমার সাথে ওর খিটিমিটি লেগে যাওয়ায় ও আর আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেনি। ভাবছিলাম রবি সত্যি কি স্মার্ট, সেদিন পার্টিতে আমি যখন বাথরুমে গিয়েছিলাম, তখন ওই অল্প সময়ের মধ্যেই ও মনীষাকে ইমপ্রেস করে ওকে রাজী করিয়ে নিয়েছে।
আচ্ছা রবি কি তাহলে কোনোভাবে মনীষার কাছে আসার চেষ্টা করছে? এমনিতে মনীষার সাথে দু একটা অফিস পার্টিফার্টি ছাড়া ওরতো দেখা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আর কোন মহিলার সাথে কথা বলা গেলে তবেই তো তাকে ইমপ্রেস করা যাবে। তার মানে মনে হয় এই মডেলিং এর ছুতোয় রবি কোন ভাবে মনীষার কাছে আসার চেষ্টা করছে।
সেদিন রাতে গাড়ি ড্রাইভ করে বাড়ি ফেরার সময় নানা রকমের উদ্ভট চিন্তা আমার মাথায় আসছিলো। এই রবি বোকাচোঁদাটা নিজেকে ভাবে কি? মনীষা আমার বিয়ে করা বউ। আমাকে আগে কোন কিছু না বলে ও কিভাবে মনীষাকে এই প্রস্তাব দিতে পারে। যত ভাবছিলাম তত মাথা গরম হচ্ছিল আমার। আমি যেন মানসচক্ষে দেখতে পাচ্ছিলাম মনীষা প্রায় অর্ধউলঙ্গ অবস্থায় নানা রকম উত্তেজক পোজ দিচ্ছে আর রবি একটা ক্যামেরা নিয়ে নানা রকম অ্যাঙ্গেলে মনীষার প্রচুর ছবি নিচ্ছে। রাগে মাথাটা যেন ফেটে যাবে মনে হচ্ছিল আমার। যাই হোক কোনক্রমে মন থেকে ওই সব উদ্ভট চিন্তা সরিয়ে আমি বাড়ি পৌছলাম।
রাতে খাওয়া দাওয়ার পর মনীষাকে রবির প্রস্তাবের কথাটা বললাম। আমি ভেবে নিয়েছিলাম মনীষা হয়তো আবার রবির প্রসঙ্গ তোলায় আমার ওপর রেগে যাবে।
কিন্তু মনীষা আশ্চর্য রকমের শান্তভাবে আমাকে জিজ্ঞেস করলো - “ওর প্রস্তাব শুনে তোমার কি মনে হল রাজীব”?
আমিও ঠিক ওর মত শান্ত ভাবে ওকে বললাম – “আমার মনে হয়েছে এটা একটা ভীষণ বাজে প্রস্তাব”।
- “যাই বল তোমাদের অফিসে এতো সুন্দরী মেয়ে থাকতেও রবি যে শুধু আমাকে তোমাদের ওই কোম্পানি প্রোফাইলটার কভার পেজের জন্য সিলেক্ট করছে, এই ব্যাপারটা কিন্তু বেশ ফ্লাটারিং”।
- “হ্যাঁ কিন্তু তুমি এসব কি ভাবে করবে? মনীষা, আমি মনে করি দু'সন্তানের জননী একজন গৃহবধুর সংসার ফেলে এই সব মডেলিং টডেলিং এর ব্যাপারে একদম রাজী হওয়া উচিত নয়”।
- “ধুর, সেদিন আমি রবি কে শুধু বলে ছিলাম যদি রাজীবর পারমিশন পাই তবেই ভেবে দেখবো। আমার আর ওসব মডেলিং ফডেলিং করার ইচ্ছে নেই, ছোটো বেলায় মানুষ কত কি ভাবে, এই হব সেই হব, সব কি সব সময় হওয়া যায় নাকি, ছাড়োতো”।
- “দেখো মনীষা তোমার কিন্তু রবিকে সেই দিনই মুখের ওপর না বলে দেওয়া উচিত ছিল”।
- “দিতামই তো কিন্তু ভাবলাম দেখিইনা একবার বলে তোমার পারমিশনের ব্যাপারটা, একটা মেয়ের তো জানতেও তো ইচ্ছে করে তার বর তার ইচ্ছের কতটা মর্যাদা দেয়”।
- “কি বলছো তুমি মনীষা, কিসের মর্যাদা, তুমি কি বুঝতে পারছোনা এসব করে রবি তোমার কাছে আসার চেষ্টা করছে”।
- “আমার মনে হয়না রাজীব। রবির মতন ধনী সুপুরুষ বিজনেস ম্যাগনেটের আমার মত একটা সাধারন মেয়েকে এতটা পছন্দ হবার চান্স খুবই কম।
তারপর হঠাৎ আমার বিরক্ত মুখের দিকে তাকিয়ে কি যেন একটা ভেবে মনীষা বলে উঠলো – “অবশ্য হতেও পারে রবির মত ধনী লোকেদের অনেক শয্যাসঙ্গিনী থাকে”।
আচমকা সুর বদলে মনীষার গলায় এবার কৌতুকের রেশ।
মনীষার কথা শুনেই আমার ধনটা তড়াক এক লাফে খাড়া হয়ে উঠলো। কি রকম যেন ভেতর ভেতর কাঁপতে শুরু করলাম আমি। মনীষা আমার মুখ দেখেই বুঝে নিল ব্যাপারটা কি।
একটু মুচকি হেঁসে আমাকে বললো – “তাহলে লাইটটা নেভাই এবার, মনে হচ্ছে এখুনি আমার রেপ শুরু হবে।"
লাইটটা নিভিয়েই আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার বুকে মুখ গুঁজে দিল মনীষা। তারপর আমার বুকের লোমে মুখ ঘসতে ঘসতে দুস্টুমি ভরা গলায় বললো – “রাজীব তোমার কি মনে হয় রবির আমাকে পছন্দ হয়ে গেছে”।
- “কি জানি হয়তো?”
এবার একটু আদুরে স্বরে ও আমাকে জিজ্ঞেস করলো – “কেন আমার মধ্যে এমন কি আছে যে ওর মত হ্যান্ডসাম সুপুরুষের এত পছন্দ হবে এই দু বাচ্চার মা টাকে”?
মনীষা হঠাৎ ওর একটা হাত আমার লুঙ্গির মধ্যে ঢুকিয়ে আমার ধনটা খামচে ধরে চটকাতে শুরু করলো। আমি এতক্ষণে ওর দুস্টুমিটা বুঝতে পারলাম। ওর সাথে খেলাটা খেলতে রাজীও হয়ে গেলাম।
- “মানে তোমার মত যে মেয়েদের বুক আর পাছা বড় আর ভারী”।
মনীষা এবার আমাকে আস্তে আস্তে নিজের বুকের ওপর টেনে তুলতে লাগলো।
আমাকে ওর বুকের ওপর পুরোপুরি ভাবে তোলার পর ও নিজের নাইটির তলাটা গুটিয়ে গুটিয়ে নিজের কোমরের ওপর তুলতে তুলতে আমার কানে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলো – “তোমার কি মনে হয় আমার মাই গুলো রবির মনে ধরেছে”?
নিজের শক্ত হয়ে যাওয়া ধনটা মনীষার ভিজে গুদের মুখে সেট করতে করতে আমি ফিসফিস করে বললাম, - “শুধু রবি কেন তোমার মতন ওরকম সেক্সি মাই পেলে সবাই তার দখল নিতে চাইবে”।
মনীষা এবার নিজের পা দুটো আমার কোমরের ওপরে তুলে দিয়ে লক করে দিল আমার কোমর। তারপর ওর একহাত আলতো করে আমার চুলের মুটি চেপে ধরলো আর অন্য হাত আমার পাছার মাংস খামচে ধরলো।
- “কিন্তু রবি তো জানে যে আমি দু বাচ্চার মা। ওতো জানে আমার মাই আমার বাচ্চাগুলোর এঁটো মাই”।
- “অনেকেই বাচ্ছাদের এঁটো মাই ভীষণ পছন্দ করে”।
- “কিন্তু দুধ খাওয়ানো মাই তো কুমারী মেয়েদের মত টাইট থাকেনা, একটু থলথলে হয়ে যায়। তোমার কি মনে হয় রবির আমার মত একটু থলথলে দুধ খাওয়ানো মাইই পছন্দ”।
- “দুধ খাওয়ানো মাই হলে নিপিলগুলো অনেক ডেভলপ্ট আর এবড়ো খেবড়ো থাকে। কুমারী মেয়েদের সেটা থাকেনা। অনেকেই মেয়েদের ডেভলপ্ট আর এবড়ো খেবড়ো নিপিল পছন্দ করে”।
- “কি জানি আমার কিছুতেই বিশ্বাস হয়না ওর মত ধনী মানুষ আমার মত চটকানো, ধামসান্, দুবার বাচ্ছা করা মাগি এত পছন্দ করবে।"
- “তুমি জানোনা অনেকেই একটু থসথসে, খাওয়া, আর বাচ্ছা বের করা মাগি ভীষণ পছন্দ করে।"
এই বলে আমি এক ধাক্কায় মনীষার গুদে আমূল গেঁথে দিলাম আমার পুরুষাঙ্গটা। মনীষা উফ বলে আরামে কেঁপে উঠলো।
- “আচ্ছা তোমার কি সত্যি সত্যি মনে হয় আমি রবির প্রস্তাবে রাজী হলে ও আমার কাছাকাছি আসার চেষ্টা করতো আর সুযোগ পেলে আমাকে ওর বিছানায় নিয়ে গিয়ে তুলতো, আমাকে খেতো।"
আমি পাগলের মত মনীষা কে খুঁড়তে খুঁড়তে বললাম – “হ্যাঁ”।
মনীষা চোখ বুঁজে আমার গাঁথন উপভোগ করতে করতে, প্রায় আমার মতই হাঁফাতে হাঁফাতে বললো – “ধরে নাও আমি যদি কোনভাবে ওর প্রস্তাবে রাজী হই তাহলে কি ও আমাকে দু একবার খেয়েই ছেড়ে দেবে না তোমাকে সরিয়ে পাকাপাকি ভাবে আমার ওপর চড়ে বসতে চাইবে। তোমার কি মনে হয়”?
আমি একমনে মনীষা-কে খুঁড়তে খুঁড়তে কোন ক্রমে বললাম – “জানিনা, তুমি কি সত্যি সত্যি চাও রবির বুকের তলায় শুতে”?
মনীষা হিসহিসে গলায় একটু হাঁসলো। তারপর বললো – “তোমার বুকের তলায়-তো এত দিন ধরে শুলাম, রবির বুকের তলায় শুতে কেমন লাগে সেটা দেখেতে আমার মন তো একটু চাইতেই পারে, নাকি? তবে একটা মুস্কিল আছে জানো, আমি রবির বুকের তলায় শুলে, তোমার বুকের তলায় শুয়ে যে দুটোকে বার করলাম তাদের কি হবে। পারবে তুমি ওদের দায়ীত্ব একা সামলাতে।"
স্পীডটা একটু কমিয়ে মনীষাকে একটু রগড়ে রগড়ে গাঁথন দিতে দিতে বললাম বিদেশে তো মায়েরা জামা পালটানোর মত বাবা পালটায় তাতে কি ছেলে মেয়েরা মানুষ হয়না।
- “তাহলে আশা আছে বলছো", মনীষা খিকখিক করে হেঁসে উঠলো।
- “ইইইইইই…… আশা…… অন্য পুরুষের দিকে তাকালে তোমার চোখ দুটো গেলে দেব হতচ্ছাড়া শাঁকচুন্নি কোথাকার”, এই বলে ওর হাত দুটোকে শক্ত করে চেপে ধরে, ওর গালে নিজের মুখ ঘসতে ঘসতে, ওকে ধাক্কা মেরে মেরে… ধাক্কা মেরে মেরে, ওর ভেতর ঢালতে লাগলাম আমার চটচটে কামরস।
মনীষাকে বুকের তলায় চেপে ধরে ওর গুদের ভেতরে আমার পুরো বীর্যটা ঢালার পরও ওকে ছাড়লাম না আমি। অনেকক্ষণ পর্যন্ত ওর নরম গালে আর গলায় মুখ ঘসতে লাগলাম।
প্রায় পনেরো মিনিট পর যখন ওর ওপর থেকে নাবলাম, মনীষা নিজের নাইটি ঠিক করতে করতে আমাকে বললো – “বাপরে এই রবির ওপর কি ভীষণ রাগ তোমার। ওর নাম শুনতেই এরকম জ্বলে ওঠ তুমি তা তো আগে জানতামনা। আজ তুমি প্রায় তিরিশ মিনিট ধরে একটানা চুঁদলে আমাকে। তুমি এর আগে আর কোন দিন এতক্ষণ ধরে দিতে পারনি। মাঝে মাঝেই রবির নাম করে এই খেলাটা এবার থেকে খেলতে হবে দেখছি”।
হি হি করে হাঁসতে হাঁসতে আমি বললাম – “দেখো রবি যদি কোন ভাবে জানতে পারে যে ওর নাম করে আমরা রোজ রোজ আমাদের বিছানা গরম করছি তাহলে কালই ও তোমাকে জোর করে তুলে নিয়ে যাবে ওর কাছে।"
মনীষাও হাঁসতে হাঁসতে বললো – “ইস বেচারা জানবেওনা ওর নাম করে রোজ রাতে কত কত ফুর্তি করবো আমরা এবার থেকে ।"
মনীষার কথা শুনে এবার আমরা দুজনেই একসাথে হেঁসে উঠলাম।
সেই সপ্তাহের শুক্রবার অফিস যাওয়ার আগে মনীষা আমাকে বোললো, “শোনো তুমি আজকে কিন্তু অফিসে বেশি দেরি কোরনা। কারণ আজকে তোমাদের অফিসের মিস্টার দেসাই এর বাড়ির পার্টিতে যেতে হবে। আমার মনে পড়লো আমাদের অফিসের সিনিয়ার অ্যাকাউন্ট্যানট মিস্টার দেসাই ক'দিন আগে আমাকে ওর বাড়িতে ওর জন্মদিনের পার্টিতে ইনভাইট করেছিলেন। অবশ্য শুধু আমাকে নয় উনি আমাদের অফিসের প্রায় সবাইকেই নেমন্তন্ন করেছিলেন। ওনার বউ মিসেস দেসাই আবার প্রত্যেকটি এমপ্লয়ীর বাড়িতে ফোন করে করে তাদের স্ত্রী-দের আলাদা আলাদা ভাবে নেমন্তন্ন করেছেন।
আমি মনীষাকে জিজ্ঞেস করলাম কখন যাব আমরা পার্টিতে?
মনীষা বললো – “মিসেস দেসাই বলেছেন পার্টি ছটা থেকে শুরু হবে, আমি ভাবছি সাতটা নাগাদ যাব। তুমি কিন্তু পাঁচটার মধ্যে অফিস থেকে চলে এসো”।
– “দেখো পাঁচটায় বাড়ি ফিরতে হলে আমাকে চারটেতে অফিস থেকে বেরতে হবে, তার থেকে তুমি সাজুগুজু করে আমার অফিসে চলে এসো, তাহলে আমরা একসঙ্গে অফিস থেকে বেরিয়ে মিস্টার দেসাই এর বাড়ি চলে যেতে পারবো”।
– মনীষা বললো, “ঠিক আছে তাই হবে”।
সেদিন আমি সকাল থেকে ফটাফট আমার হাতের কাজ গুলোকে শেষ করে নিতে লাগলাম। কিন্তু একটা ঝামেলার ইস্যু কিছুতেই শেষ করতে পারছিলামনা। সাড়ে চারটে নাগাদ বুঝলাম কাজটা অত সহজে শেষ হবার নয়। আমি সঙ্গে সঙ্গে মনীষাকে ফোন করে ব্যাপারটা বললাম।
- “আমি জানি মনীষা কিন্তু কাজটা এত ইম্পরট্যান্ট যে এটা শেষ না করে আমি বেরতে পারবোনা”।
- “তাহলে কি আজ আর যাওয়া হবেনা”?, মনীষা একটু গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলো।
- “না না তা কেন, তুমি এক কাজ করো মনীষা, আমি যদি ঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে না পারি তাহলে তুমি পার্টিতে ডাইরেক্ট চলে যাও। আমি কাজ শেষ হলেই অফিস থেকে ওখানে চলে যাব”।
- “না আমি তোমাকে ছাড়া ওখানে যেতে চাইনা। আচ্ছা আমি একটা কাজ করছি, আমি বাচ্চাটাকে একটু বুকের দুধ খাইয়ে সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তোমাদের অফিসে চলে আসছি।তোমাদের রিশেপসানেই বসে অপেক্ষা করবো, তোমার কাজ হয়ে গেলে একসাথেই ওখান থেকে বেরবো”।
- “ঠিক আছে আমি চেষ্টা করছি কাজটা সাড়ে ছটার মধ্যে শেষ করার”।
মনীষা কোন উত্তর দিলনা শুধু ফোনটা কেটে দিল। বুঝলাম ভীষণ বিরক্ত হয়ে রয়েছে ও মনে মনে।
কাজটা শেষ করতে করতে আমার প্রায় সাতটা বেজে গেল। আমাদের অফিস ঠিক পাঁচটাতে বন্ধ হয়ে যায়। এখন অফিস একবারেই ফাঁকা। এতক্ষণে মনীষা নিশ্চয়ই এসে গেছে। বুঝতে পারছিলাম ও একা একা রিশেপসানে বসে বসে বোর হচ্ছে আর মন মনে আমার মুণ্ডুপাত করছে।
আমি তাড়াতাড়ি কম্পিউটার বন্ধ করে আমাদের অফিসের রিশেপসানের দিকে এগোলাম। রিশেপসানে গিয়ে দেখি পুরো রিশেপসানটা ফাঁকা শুধু রবি ওখানে বসে বসে মনীষার সাথে গল্প করছে। কি নিয়ে যেন একটা গভীর আলোচনায় মত্ত ওরা। ব্যাপারটা দেখা মাত্র আমার পেটের ভেতরে কিরকম যেন একটা ঘোঁট পাকিয়ে উঠলো। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলালাম আমি। এখন যদি ওখানে গিয়ে আমি কোনভাবে আমার অসন্তুষ্টি ওদের কাছে প্রকাশ করে ফেলি তাহলে মুস্কিল।
এক, তো রবি আমার কলিগ নয় আমার বস ।
দুই, মনীষাও খেপে যাবে আমার ওপর, বলবে আমি জেলাশ। আমি নিজেকে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক করে ওদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। মনীষা আমাকে দেখেই সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো – “তোমার হয়ে গেছে রাজীব?”
রবি বললো, “ও, রাজীব আর তুমি বোধহয় এখান থেকে ডাইরেক্ট পার্টিতে যাবে, তাই না”?
মনীষা বললো – “হ্যাঁ, আসলে ও এত দেরি করে ফেললো, এখান থেকে ডাইরেক্ট না গেলে আজ আর পার্টিতে যাওয়া হত না”।
আমি রবির দিকে তাকিয়ে একটু হেঁসে মনীষা কে ইশারা করে বললাম, “মনীষা চলো এবার বেরোনো যাক, আমাদের অনেক দেরি হয়ে গেছে”।
কিন্তু বাইরে বেরিয়েই থমকে যেতে হল আমাদের, কারণ বাইরে অসম্ভব জোর বৃষ্টি পড়ছিল। আমার গাড়িটা আমাদের অফিস বিল্ডিং এর থেকে অনেকটা দূরে একটা পার্কিং লটে রাখা ছিল। অফিসের সামনের পার্কিং লটটা শুধু এই বিল্ডিং এর বিভিন্ন অফিসের ডাইরেক্টরদের জন্য রিজার্ভ করে রাখা। এমনিতে মিনিট পাঁচেক লাগে আমার গাড়ির কাছে পৌঁছতে। কিন্তু যা জোর বৃষ্টি পড়ছিল তাতে করে ওইটুকু দূরত্ব যেতে যেতে ভিজে চুপ্সে যাব আমি। তাছাড়া পার্কিং লটে ঢোকার মুখটাতে ভীষণ জল জমেছে, সেটার মধ্যে দিয়ে যেতে হলে হাঁটু পর্যন্ত ভিজে যাবে আমার।
কি করবো তাই ভাবছিলাম এমন সময় রবির গলা পেলাম পেছনে।
- “বাপরে এতো ভীষণ বৃষ্টি পড়ছে, তোমরা যাবে কি করে? রাজীব তুমি এক কাজ কর, তুমি বরং একটু অপেক্ষা কর বৃষ্টিটা ছাড়ার জন্য। বৃষ্টিটা একটু কমে এলে তবে তুমি গাড়িটা বের করার চেষ্টা করো, না হলে এমন কাক ভেজা ভিজে যাবে যে আর পার্টিতে যাওয়ার মতন অবস্থা থাকবেনা। তবে বৃষ্টি কমে গেলেও ওখানে যা জল জমে আছে তাতে মনে হচ্ছে প্যান্ট না ভিজিয়ে তোমার ওখানে যাওয়া মুস্কিল”।
মনীষা করুন মুখে বললো – “আজ এতো বাধা পড়ছে যে মনে হচ্ছে আজ আর পার্টিতে যাওয়া হবে না”।
মনীষার করুন মুখ দেখে আমার খুব মায়া হল, বেচারি কখন থেকে সেজে গুজে রেডি হয়ে বসে রয়েছে, আমি আজ অফিসে দেরি না করলে ওকে এরকম অবস্থার মধ্যে পড়তে হতনা, আমরা এতক্ষণে মিস্টার দেসাই এর পার্টিতে পৌঁছে যেতাম।
হঠাৎ রবি বললো – “রাজীব তুমি যদি কিছু মনে না কর তাহলে আমি মনীষাকে নিয়ে মিস্টার দেসাই এর পার্টিতে চলে যাচ্ছি, তুমি বৃষ্টি থামলে গাড়িটা দেখ বার করতে পারো কিনা”?
মনীষা-কে রবির সাথে ছাড়ার একদম ইচ্ছে ছিলনা আমার কিন্তু ওর করুন মুখের কথা চিন্তা করে আমাকে রাজী হয়ে যেতে হল। মনীষাও দেখলাম না করলো না। বৃষ্টির তেজ একটু কম হতেই মনীষা আর রবি এক দৌড়ে বিল্ডিং এর সামনের পার্কিং লটে রাখা রবির গাড়িতে উঠে পড়লো।
গাড়ি স্টার্ট করার পর রবি আমাকে জানলা দিয়ে বললো, “রাজীব তুমি চিন্তা করোনা, আমি মনীষাকে সাবধানে ঠিক মিস্টার দেসাই এর বাড়িতে পৌঁছে দেব”।
মনীষা জানলা দিয়ে আমাকে হাত নাড়লো আর ওদের গাড়িটা হুস করে জল ছিটিয়ে বেরিয়ে গেল। মনীষা আর রবি বেরিয়ে যাবার পরেই মনে কু ডাকতে শুরু করলো আমার।
রবির মত লুজক্যারেক্টারের সাথে মনীষাকে ছাড়ার একদম ইচ্ছে ছিলনা আমার কিন্তু সিচুয়েশনটা এমন ছিল যে না বলতে পারলাম না আমি। প্রায় মিনিট পনেরো পর বৃষ্টিটা একটু ধরে আসতেই আমি পার্কিং লটের দিকে দৌড় মারলাম। পার্কিং লটের সামনে যথারীতি অনেকটা জল জমা হয়ে আছে। কিন্তু দেখলাম জায়গাটা ঢালু বলেই বোধহয় বেশ কয়েকটা ইঁট এমন ভাবে ওখানে ফেলা আছে যে সাবধানে জলটা পার হওয়া যায়।
আমি কোনোক্রমে গাড়িতে ঢুকেই গাড়ি স্টার্ট দিলাম। গাড়ি বাইপাসে পড়তেই স্পীড তুললাম আমি। ভীষণ দুশ্চিন্তা হচ্ছিল মনীষাকে নিয়ে। মিনিট দশেক গাড়ি চালাবার পরে একবার রিয়ার ভিউ মিররে চোখ গেল, মনে হল আমার গাড়ির বেশ কয়েকটা গাড়ির পেছনে যেন রবির গাড়ি আসছে। এ কি করে সম্ভব? ওরাতো অনেক্ষন আগে বেরিয়েছে। ওদের তো এতক্ষণে মিস্টার দেসাইয়ের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া উচিত।
গাড়িটা ভীষণ আস্তে আস্তে আসছিল। ঠিক বুঝতে পারছিলাম না ওটা রবির-ই গাড়ি কিনা। একটু পরেই গাড়িটা বাইপাশ থেকে বাঁ দিকের একটা সরু গলিতে নেমে গেল।
“স্টেরঞ্জ”, মনে মনে ভাবলাম আমি।
আমি গাড়ির গতি আরো বাড়িয়ে দিলাম। কিন্তু মনটা খচখচ করছিল। রবির কি এতো সাহস হবে যে মনীষাকে গাড়িতে সিডিউস করার চেষ্টা করবে? কে জানে কি করছে ওরা গাড়িতে? কত দুরেই বা আছে ওরা? নানা রকম দুশ্চিন্তা আমার মনে ভিড় করে আসতে লাগলো।
প্রায় মিনিট তিরিশেক গাড়ি চালানোর পর মিস্টার দেসাই এর বাড়ি এসে উপস্থিত হলাম। বৃষ্টি ততক্ষণে থেমে গিয়েছিল। মিস্টার দেসাইয়ের বিরাট বাগান বাড়িটা লোকে গিজগিজ করছিল। আমি বাড়ির পাশে যে ফাঁকা জায়গাটাতে সবাই গাড়ি পার্ক করে রেখে ছিল সেখানেই আমার গাড়িটা পার্ক করলাম।
কিন্তু মনটা খিঁচরে গেল যখন লক্ষ করলাম রবির গাড়ি ওখানে নেই। মানে রবি আর মনীষারা এখনো এখানে পৌছয়নি। ওরা তো আমার অনেক আগে বেরিয়েছিল, তাহলে গেল কোথায় ওরা? তাহলে কি রবি মনীষাকে পার্টিতে ড্রপ করে অন্য কোথাও চলে গেছে, সেই জন্যই পার্কিং প্লেসে ওর গাড়ি নেই? আমি পার্টির ভেতরে মনীষাকে খুঁজতে শুরু করলাম। প্রচুর মহিলা ও পুরুষ বিশাল বাড়িটার চার দিকে যে যার নিজের মত করে জটলা পাকাচ্ছে।
পুরো বাগান বাড়িটা তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম। বহু লোকের সঙ্গে দেখা হল কিন্তু মনীষা কোথাও নেই। এদিকে যেখানেই মনীষাকে খুঁজতে যাচ্ছি সেখানেই চেনা লোকেদের সাথে অন্তত মিনিট দুয়েক কথা বলতে হচ্ছে ভদ্রতা-বসতো। এই সব করতে করতে আরো প্রায় মিনিট কুড়ি পার হয়ে গেল, এদিকে মনীষার দেখা নেই। ওরা যদি কোনো কারণে রাস্তায় ফেঁসেও যায় তাহলেও এতো দেরি করার কথা নয় ওদের।
রবির প্রতি রাগে টগবগ করে ফুটতে শুরু করলাম আমি। হারামজাদাটা এমন ভাবে মনীষাকে লিফট দেবার কথা বললো যে আমি নাও করতে পারলাম না। এখন নিজের মনে নিজেকেই দোষারোপ করতে আরাম্ভ করলাম আমি। কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলামনা। চুপচাপ অপেক্ষা করা ছাড়া আমার আর কোন উপাই ছিলনা। সবচেয়ে চিন্তা হচ্ছিল এই কারণে যে আমি মনীষাকে ওর সেল ফোনে অনেকবার ফোন করেও কোনো উত্তর পাচ্ছিলামনা।
প্রত্যেকবারেই মনীষার সেল ফোনে রিং হয়ে যেতে লাগলো। প্রায় আট ন'বার রিং করলাম আমি ওর ফোনে কিন্তু প্রত্যেকবারই একই ব্যাপার হল। রবির ফোনেও বার চারেক ফোন করলাম আমি, কিন্তু সেখানেও ফোন লাগলোনা, ওর ফোন আনরিচেবল হয়ে আছে। আমি মিস্টার দেসাই এর বাড়ির গেটের কাছটাতে এসে দাঁড়ালাম। হাঁ করে গেটের বাইরের দিকে তাকিয়ে রইলাম, কিন্তু ওদের দেখা নেই।
এমন সময় গেটের কাছে নিলিমাকে দেখলাম। নিলিমা মনীষাকে চেনে। আগে দেখেছি পার্টিতে দেখা হলে ওরা খুব গল্প করতো। নিলিমা আমাদের অফিসের আ্যাকাউন্টসে আছে। ওকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম ও মনীষাকে দেখেছে কিনা। নিলিমার উত্তর আমাকে একদিকে আশ্বস্ত করলেও আমার মন থেকে দুশ্চিন্তার বোঝাটাকে কমাতে পারলোনা। ও বললো ও একটু আগেই মনীষাকে রবির সাথে বাগানের এক কোনে কথা বলতে দেখেছে। যাক তাহলে ওরা পার্টিতে অন্তত পৌঁচেছে।
কিন্তু মনীষা রবির সাথে কি এমন গল্পে মসগুল যে ওর সেল ফোনে এতবার রিং হওয়া সত্বেও ওর খেয়াল পরলো না। নাঃ, মনীষার সঙ্গে রবির ব্যাপারে কথা আমায় বলতেই হবে।
মনীষাকে এবার স্পস্ট বলে দেব আমি যে ও যেন দয়া করে এবার থেকে রবিকে এড়িয়ে চলে, কারণ আমি ওকে আজকাল একদম সহ্য করতে পারছিনা। তাতে মনীষার রাগ হয় হোক।
আবার বাড়ির ভেতর দিকটাতে ঢুকলাম আমি। নিশার হাজব্যান্ড রাকেশ কে দেখতে পেলাম একটা জটলাতে। ওকে জিজ্ঞেস করতেই ও বললো ও মনীষাকে রবির সাথে একটু আগে দেখেছে। ওর কাছে জেনে নিলাম বাগানের কোন দিকটাতে দেখেছে ও রবি আর মনীষাকে।
মিস্টার দেসাই এর বাগান বাড়িটা বিশাল জায়গা জুড়ে অবস্থিত। কাউকে একচান্সে এখানে খুঁজে পাওয়া খুব মুস্কিল, বিশেষ করে আজ যখন পার্টিতে এত লোকের সমাগম হয়েছে। কিন্তু বাগানে যওয়ার আগেই পেয়ে গেলাম আমার আরো এক অফিস কলিগকে। ওকে রবির সম্মন্ধে জিজ্ঞেস করতে ও বললো ও রবি কে মিনিট দশেক আগে একবার গেট দিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখেছে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম রবির সাথে আর কেউ ছিল কিনা। কলিগ বললো হ্যাঁ একটা খুব সুন্দরী শাড়ি পরা এক ভদ্রমহিলা ছিলেন রবির সাথে। বুকটা ধক করে উঠলো আমার। তাহলে কি মনীষা রবির সাথে পার্টি থেকে অন্য কোথাও বেরিয়ে গেছে।
মনীষা আমার সাথে এরকম করতে পারে স্বপ্নেও ভাবতে পারছিলামনা আমি। আমাদের এতো বছরের বিবাহিত জীবনে মনীষা এমন কোন কাজ কোনদিন করেনি যাতে করে আমার ওর ওপর কোনরকম সন্দেহ হতে পারে। আর তাছাড়া বৃষ্টি কমে গেছে বেশ কিছুক্ষণ আগে, মনীষা নিশ্চই বুঝবে কিছুক্ষণের মধ্যে আমি পার্টিতে চলে আসবো। ওর মনে কোনোভাবে রবির সাথে কোনো নিরালা জায়গায় যাবার ইচ্ছে হলেও আমি এসে পরবো বলে ও এতটা দুঃসাহস দেখাবেনা।
শরীরটা কেমন যেন করতে শুরু করলো আমার। পা দুটো যেন জোর হারিয়েছে বলে মনে হল। কোথাও একটু শুতে পারলে বেশ হত মনে মনে ভাবলাম আমি। শেষে একটা গার্ডেন চেয়ার ফাঁকা পেয়ে সেখানে বসে পড়লাম। চোখ বন্ধ করে বেশ কিছুক্ষণ বসে একটু রেস্ট নিতে লাগলাম।
কি কারণে মনীষার এত দেরি হচ্ছে তা অনেক ভেবেও বার করতে পারলাম না আমি।শেষে বুঝতে পারলাম মনীষা না ফেরা পর্যন্ত আমি কিছুতেই জানতে পারবোনা কি হয়েছিল। একটা ব্যাপারে আমি নিশ্চিত যে ওদের রাস্তাতে কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি কারণ অন্তত তিনজন একটু আগে ওদের পার্টিতে দেখেছে। নিজেকে একটু সামলে নেবার পর পার্টির যে দিকটাতে বুফে চলছিল সেই দিকে গেলাম আমি। একটা প্লেটে একটু চিকেন পাকৌড়া নিয়ে একটু খাবার চেষ্টা করলাম কিন্তু খেতে পারলাম না। মনে হচ্ছিল যেন ওয়াক উঠে আসছে। শেষে প্লেটটা নামিয়ে রাখলাম।
- “তুমি আসাতে আমি খুব খুশি হয়েছি রাজীব, মনীষা কোথায়, ওর সাথে কিছুক্ষণ আগে অবশ্য একবার দেখা হয়েছে আমার”।
পেছনে ঘুরে দেখলাম মিস্টার দেসাই আমার ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়ে আছেন।
- “আমি ঠিক জানিনা ও এখন কোথায়, আমার অফিসে একটু দেরি হয়েছিল বলে ও একলা চলে এসেছে। আমি আসার পর-তো ওকে অনেক খুঁজলাম কিন্তু কিছুতেই ওকে পাচ্ছিনা”।
- “তুমি ওকে মোবাইলে ফোন করে নিলেনা কেন, তাহলেই তো ওকে খুঁজে পেয়ে যেতে”।
আমি মিস্টার দেসাই কে বলতে চাইলামনা যে আমি মনীষাকে আমার মোবাইল থেকে ফোন করেছিলাম কিন্তু ও ফোন তোলে নি।
- “আসলে আমি আমার মোবাইলটা তাড়াতাড়িতে অফিসে ফেলে এসেছি সেই জন্য ফোন করতে পারিনি”।
আমার কথা শুনে মিস্টার দেসাই নিজের পকেট থেকে নিজের মোবাইলটা বের করে আমার হাতে দিয়ে বললেন – “নাও আমারটা দিয়ে ফোন করে নাও”।
আমি বুঝতে পারছিলাম না যে মনীষা আমার নাম্বার থেকে ফোন না তুললেও অন্য নাম্বার থেকে পাওয়া কল তুলবে কিনা। যাই হোক আমি মনীষার নাম্বার ডায়াল করলাম। মুখে প্রকাশ না করলেও আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম যে মনীষা কলটা রিসিভ করে কিনা। আমি অবশ্য জানতামনা মনীষা কলটা রিসিভ করলে আমি ওকে ঠিক কি বলবো। আমি জানতাম না ও কোথায় কি অব্স্থায় আছে, আমি জানতামনা যে মনীষা কলটা আদৌ রিসিভ করবে কিনা?
আমাকে আশ্চর্য করে মনীষা তৃতীয় রিং হতেই কলটা রিসিভ করলো।
- “আমি তো যেখানটাতে বুফে হচ্ছে সেখানে দাঁড়িয়ে আছি, তুমি কোথায়? আমি তো তোমাকে তো অনেকক্ষণ ধরে খুঁজছি কিন্তু কিছুতেই তোমাকে দেখতে পাচ্ছিনা”।
হঠাৎ আমার চোখ গেল মিস্টার দেসাইের বাগানের একবারে কোণের একটা জায়গায়।ওখানে দেখি একটা আম গাছের ফাঁক থেকে মনীষা একটা মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে ডাকছে। ওকে দেখতে পেয়েই যেন আমার বুকের ওপর থেকে একটা বিশাল ভার নেমে গেল।
আমি মিস্টার দেসাই কে ধন্যবাদ দিয়ে, ওনাকে ওনার ফোন ফিরিয়ে দিলাম, তারপর মনীষার দিকে হেঁটে গেলাম। ওখানে গিয়ে দেখলাম আম গাছটার পেছনে খুব সুন্দর একটা বসার বেঞ্ছ রয়েছে। জায়গাটা বেশ নিরিবিলি।
ওখানে নিশা ছাড়াও আরো দুজন মহিলা রয়েছে, ওরা ওখানে বসে বসে গল্প করছিল।আমি মনে মনে ভীষণ খুশি হলাম এই দেখে যে ওখানে রবি নেই। আম গাছটার পেছনে যে এত সুন্দর একটা বসার বেঞ্চ আছে তা একটু দূর থেকে বোঝা শক্ত। সেই জন্যই বোধহয় আমি এখানটা দিয়ে মনীষার খোঁজে ঘুরে গেলেও ওদের কে গল্প করতে দেখতে পাইনি।
- “ইস তুমি নিশ্চই খুব চিন্তা করছিলে আমার জন্য”, মনীষা বললো।
- “হ্যাঁ ভীষণ চিন্তা হচ্ছিল তোমাদের জন্য”।
আমি ইচ্ছে করেই তোমার না বলে তোমাদের বললাম।
- “আর বোলনা রবির গাড়িতে কি একটা যেন প্রবলেম হয়েছিল, বার বার স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। অনেক কষ্টে আমরা এখানে পৌঁছলাম”।
- “তুমি আমাকে ফোন করলে না কেন, আমি আসবার পথে তোমাকে আমার গাড়িতে তুলে নিতাম”।
আমার কথা শুনে মনীষা যেন একটু অস্বস্তিতে পরে গেল।
ও বললো,
- “আর বোলোনা…. ফোন করতে গিয়ে দেখি মোবাইলের ব্যাটারিটা একদম শেষ। ফোন অন করলেই অফ হয়ে যাচ্ছে। এখানে পৌঁছেও একবার চেষ্টা করলাম তোমাকে ফোন করতে কিন্তু ফোন অফ হয়ে গেল। শেষে মিস্টার দেশাই এর সাথে দেখা করে ওঁর একটা ঘর থেকে আমার ফোনটাতে মিনিট পনেরো চার্জ দিয়ে নিলাম । তারপর তোমাকে ফোন করতে যাব এমন সময় নিশার সাথে দেখা। ব্যাস ভুলেই গেলাম তোমাকে ফোন করার কথা। ওর সাথে এখানে চলে এসে গল্প জুড়ে দিয়েছিলাম। সত্যি আমি আজকাল ভীষণ ভুলো হয়ে যাচ্ছি, আমার অবশ্যই উচিত ছিল চার্জ দেবার পর তোমাকে একটা ফোন করার চেষ্টা করা। ফোনে কাউকে না পেলে সবাইয়ের-ই চিন্তা হয়। এই নিশা এমন সব গল্প জুড়লো যে ভুলেই গেছিলাম তোমার কথা। হঠাৎ দেখি একটা ফোন এসেছে। তুলে বুঝলাম ওটা তুমি”।
- “আমি পার্টিতে এসে দেখি রবির গাড়ি পার্কিং প্লেসে নেই। তখনই বুঝলাম নিশ্চই কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে। তোমরা তো আমার অনেক আগে অফিস থেকে বেরিয়েছ। তোমাদের তো অনেক আগে এখানে পৌঁছানোর কথা ছিল”।
- “তোমাকে বললাম না রবির গাড়িতে একটু প্রবলেম হচ্ছিল। আমাকে নাবিয়ে দিয়ে রবি একটু মেকানিকের খোঁজে গেল। ওকে তো নিউ-আলিপুরে বাড়ি ফিরতে হবে আজ রাতে। এই ভাবে থেকে থেকেই স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেলে তো গাড়ি চালানোই ভীষণ মুস্কিল, আর বেশি রাত হয়ে গেলে মেকানিকও পাওয়া যাবেনা। ওই জন্যই ও তড়িঘড়ি করে বেরোলো। এখন বুঝতে পারছো কেন তুমি রবির গাড়ি পার্কিং প্লেসে দেখতে পাওনি”।
আমি বললাম ঠিক আছে অনেক গল্পটল্প হয়েছে, এখন চলো তাড়াতাড়ি কিছু খেয়ে নিই। আমার কথা শুনে নিশারাও বললো - “হ্যাঁ চলুন রাজীবদা আমাদেরও খুব খিদে পেয়ে গেছে”।
মনীষার দেরি হবার আসল ঘটনাটা জানার পর আমার নিজেকে ভীষণ হালকা আর ফুরফুরে লাগছিল। কিন্তু মনীষাকে কেমন যেন অন্যমনস্ক দেখলাম। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করাতে ও বললো ওর অল্প একটু মাথা ধরেছে। অবশ্য বুফেতে গিয়ে খাওয়া দাওয়া শুরু করতে আর নিশার সেই ইরোটিক জোক শুনতে শুনতে একটু পরেই মনীষা আমাদের সাথে হাঁসাহাঁসিতে মেতে উঠলো।
যাই হোক পার্টি ভালোয় ভালোয় মিটে যাবার পর আমরা বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। ফেরার পথে গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে আমার এক এক করে মনে পরতে লাগলো পার্টিতে যখন মনীষাকে দেখতে পাচ্ছিলাম না তখন আমার নিজেকে কিরকম হেল্পলেস লাগছিলো। সবচেয়ে অস্বস্তি লাগছিলো তখন, যখন আমি শুনলাম যে রবি যখন পার্টি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল তখন রবির সাথে একজন সুন্দরী শাড়ি পরা মহিলাও ছিল। মনটা খচখচ করে উঠলো আমার।
নিজেই নিজেকে মনে মনে প্রশ্ন করলাম রবির সাথে শাড়ি পরা ওই সুন্দরী মহিলাটি কি মনীষা ছিল? ওকি সত্যিই রবির সাথে কোথাও গিয়েছিল পার্টি থেকে আর আমি আসার একটু আগে রবি ওকে পার্টিতে ফিরিয়ে দিয়ে গিয়েছিল। কে জানে আসল ব্যাপারটা কি? আমার মনের মধ্যে কি চলছিলো মনীষা সেটা বুঝতে পারছিলনা, ও একমনে পার্টিতে কে কি বললো সেই নিয়ে কনটিনিউাস বকে যাচ্ছিলো, যার একটা কথাও আমার কানে ঢুকছিলনা।
রাতে বাড়ি ফিরে হাত মুখ ধোবার পর কাজের মাসিটাকে জিজ্ঞেস করে জানলাম টাপুর আজ রাতে বউদির কাছে পড়াশুনো করার পর ওদের কাছেই শুয়ে পরেছে। মাসি কে খেতে দিয়ে আধা ঘুমন্ত টুপুর কে নিয়ে বিছানায় এল মনীষা। বাচ্ছাটাকে কোলে নিয়ে ব্লাউজ খুলে মাই দিতে শুরু করলো ও। আমার মনে হল মনের খচখচানিটা দূর করার এই হল মোক্ষম সময় । খুব সাবধানে ওর সাথে কথা শুরু করলাম আমি।
- “মনীষা আমি পার্টিতে আসার আগে কিছু ইনটারেস্টিং হয়ে ছিল নাকি? তুমি কি করলে অতক্ষণ”?
- “সেরকম কিছু হয়নি। আমি মিস্টার দেসাই এর সাথে একবার দেখা করলাম, তারপর ওঁর ঘরে মোবাইলে চার্জ দিতে দিতে নিশা আর লতিকার সাথে দেখা হল। তারপর ওদের সাথে গল্প করছিলাম”।
- “আচ্ছা তোমাকে মিস্টার দেসাই এর বাড়ি ড্রপ করার পর রবি কি পার্টিতে খুব অল্প সময় ছিল”?
- “তুমি এক কথা বার বার জিজ্ঞেস করছো কেন বলোতো? তোমাকে তো তখনই বললাম যে রবির গাড়ির একটু প্রবলেম হচ্ছিলো, ও আমাকে পার্টিতে ড্রপ করে একটু বেরিয়ে ছিল, যদি কাছাকাছি কোনো মেকানিক বা গ্যারেজ পায় তার জন্য”।
আমি জানতাম এর পরে যে কথাটা আমি বলতে যাচ্ছি সেটা শুনলে মনীষা রেগে আগুন হয়ে যেতে পারে, কিন্তু বলবো-না বলবো-না করেও বলেই ফেললাম সেই কথাটা, যেটা আজ বিকেল থেকেই আমাকে কুরে কুরে খাচ্ছিল।
- “বাবা…… রবি তোমাকে একলা পেয়েও তোমার সাথে ফ্ল্যার্ট না করে পার্টি থেকে বেরিয়ে গেল যে বড়? আমি তো ভাবছিলাম পার্টিতে গিয়ে দেখবো তোমরা দুজনে এককোণে দাঁড়িয়ে গুজুর গুজুর ফুসুর ফুসুর করছো”।
কথাটা জিজ্ঞেস করেই বুঝলাম মারাত্মক ভুল হয়ে গেছে। রবি মনীষার ব্যাপারে কোনো বাড়তি ইন্টারেস্ট দেখিয়ে ছিল কিনা সেটা জানতে গিয়ে আমি মনীষাকে অকারণে ঠেস দিয়ে ফেললাম।
আমাকে আশ্চর্য করে মনীষা রেগে না গিয়ে তাড়াতাড়ি বললো – “তোমাকে তো তখন বললাম ও কেন তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গিয়েছিল”।
মনীষার উত্তরটা অদ্ভুত লাগলো আমার। মনীষার রেগে না যাওয়ার ব্যাপারটাও কি রকম যেন সন্দেহজনক মনে হল। ওর মুখের ভাবে কিন্তু অপরাধ বোধের কোনো গ্লানি ছিলনা, ছিল কি রকম যেন একটা স্যাড লুক।
আমি একটু মজা করার ছলে, গলায় একটু কৌতুক মিশিয়ে জিজ্ঞেস করলাম – “তুমি সত্যি বলছো তো”?
মনীষা আমার দিকে চেয়ে একটু হাঁসলো তারপর বললো – “রাজীব তুমি যতই ঠাট্টা ইয়ার্কির ভান করোনা কেন আমি জানি আমি রবির গাড়িতে ওঠার পর থেকেই তোমার মনে ভয় ঢুকেছে যে রবি আমাকে ওর গাড়িতে বা পার্টিতে একা পেয়ে সিডিউস করতে পারে। কি আমি ঠিক বলছিতো”?
মনীষা মুখে একটু বিদ্রূপের ভাব এনে কথাগুলো বললেও আমার মনে হল ওর মুখের সেই স্যাড লুকটা চাপা দেওয়ার জন্যই ও একটু মজা করে আমাকে পালটা ঠেস দিতে চাইলো। ওর মনের ভেতরে নিশ্চই কোনো না কোনো একটা অস্বস্তি আছে বিষয়টা নিয়ে।
আমি মনীষার মুখের দিকে তাকিয়ে ওর এক্সপ্রেসানটা বোঝার চেষ্টা করছিলাম। মনীষা বুঝতে পারলো আমি ওকে পড়ার চেষ্টা করছি।
ও একটু সিরিয়াস হয়ে গিয়ে বললো – “রাজীব তুমি আমাকে একটু খোলাখুলি বলবে আজ বিকেল থেকে কোন কথাটা তোমাকে ভেতর ভেতর কুরে কুরে খাচ্ছে।”
এবার আমি একটু অস্বস্তিতে পরে গেলাম ওর প্রশ্ন শুনে। নিজেকে সামলে নিতে গিয়ে বলে ফেললাম – “হ্যাঁ ইস্যু তো একটা আছেই, কিন্তু মনীষা আমার ব্যাপারটা তোমাকে খুলে বলতে খুব লজ্জা লাগছে”।
- “রাজীব আমাকে জানতেই হবে, কি এমন কথা যে তুমি ভেতর ভেতর এত চিন্তিত হয়ে পড়েছো অথচ আমাকে লজ্জায় বলতে পারছোনা? তোমাকে বলতেই হবে রাজীব। লজ্জ্যা লাগছে, অস্বস্তি লাগছে, এই ধরনের কথা বলে তুমি পালাতে পারবেনা আমার থেকে”।
- “ঠিক আছে মনীষা আমি তোমাকে বলবো কিন্তু তোমাকে প্রমিস করতে হবে যে আমার কথা শুনে তুমি রেগে যেতে পারবেনা”।
- “আমি ওরকম প্রমিস তোমাকে করতে পারবোনা রাজীব। ওরকম প্রমিস করার আগে আমাকে জানতে হবে ইস্যুটা আসলে ঠিক কি”?
শেষে আমাকে সব খুলেই বলতে হল ওকে। কি ভাবে আমি পার্টিতে ওকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না, তারপরে অনেকে বললো ওকে সবাই ববির সঙ্গে গল্প করতে দেখেছে। এক জন এও বললো যে রবি এইমাত্র বেরিয়ে গেল আর ওর সাথে একটি খুব সুন্দরী মহিলাও ছিল। আমি ওকে এও খুলে বললাম যে কি ভাবে পার্টিতে ওকে দেখতে না পেয়ে ভীষণ প্যানিক্ড লেগেছিল আমার। হঠাৎ করে কি রকম অসুস্থ হয়ে পরেছিলাম আমি।
সব কিছুরই পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিতে হল ওর কাছে। তারপর একটু চুপ করে অপেক্ষা করলাম কখন ও রাগে ফেটে পরে। কিন্তু ও প্রথমটাতে কিছু বললো না। শুধু টুপুরের মুখ থেকে নিজের বাঁ মাইয়ের বোঁটাটা বের করে ডান মাই এর বোঁটাটা আলতো করে পুরে দিল ওর মুখে। হঠাৎ একপলকের জন্য আবার সেই স্যাড লুকটা ফিরে এল ওর মুখে। আমি ঠিক মত বোঝার আগেই সেটা মিলিয়ে গেল।
- “তুমি ভেবেছিলে আমি রবির সাথে পার্টি থেকে কোথাও চলে গেছি, তাই তো”?
মনীষার গলায় কিন্তু রাগ ছিলনা যেটা ছিল সেটা হলো অধৈর্য্য ভাব।
- “রাজীব আমি তো তোমাকে আগেও অনেকবার বলেছি, রবি আমার কাছে কেউ নয়। ওর কোন মুল্য নেই আমার কাছে। আমার সবচেয়ে যেটা খারাপ লাগছে সেটা হল তুমি কি করে ভেবে নিলে যে এত বছর ঘর করার পর, আমার মত মেয়ে, একবার মাত্র রবির গাড়িতে চেপেই এমন বিবশ হয়ে যাবে যে ওর হাত ধরে নিজের স্বামীকে ছেড়ে পার্টি থেকে অন্য কথাও চলে যাবে । আমি বিশ্বাসই করতে পারছিনা রাজীব যে তুমি আমাকে এই ভাবে এতটা অবিশ্বাস করতে পারো”।
ব্যাপারটা হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে আমি বললাম – “তুমি ঠিকই বলছো মনীষা, আমি তোমাকে এতটা অবিশ্বাস কি ভাবে করতে শুরু করলাম আমার কিছুতেই মাথায় আসছেনা”।
- “তুমি কি এই ব্যাপারে রবিকে কিছু বলেছো নাকি”?
মনীষা আমাকে জিজ্ঞেস করলো।
- “না না কিছু বলিনি। সেদিন যখন তুমি বললে যে রবির ব্যাপারে আমি জেলাস ফিল করছি তখন ভাবলাম আমি যদি রবিকে এসব ব্যাপারে কিছু বলি তাহলে তুমি ভাববে যে আমি তোমাকে অবিশ্বাস করছি। দেখো আমি রবিকে তোমার ব্যাপারে কিছু বলতে চাইনা, আমি শুধু চাই রবি তোমার থেকে একটু দূরে দুরে থাকুক”।
মনে একটু সাহস এনে মনীষাকে বললাম আমি।
- “তাহলে তুমি রবিকে গিয়ে নিজেই কেন বলছোনা যে ওর উচিত আমার কাছ থেকে দূরে থাকা, শুধু শুধু তুমি আমাকে কেন অবিশ্বাস করছো?
- “মনীষা তুমি তো জানো যে এসব বললে ও আমার একবারে পেছনে লেগে যাবে”।
- “বুঝলাম, সত্যি এখন আমার মনে হচ্ছে আমারও কিছু দোষ ছিল ব্যাপারটায়। আমি তো জানতাম যে তুমি রবিকে একবারে পছন্দ করোনা। বিশেষ করে আমার সাথে ওকে কথা বলতে দেখলে তুমি ভেতর ভেতর ভীষণ রেগে যাও। আমার আসলে ওর গাড়িতে চড়াটাই উচিত হয়নি। ব্যাপারটা কি জানো, আমি আসলে চাইছিলামনা রবির মুখের ওপর একবারে না বলতে, কারণ তাহলে ওই সামান্য ব্যাপারটা নিয়ে একটা সিন তৈরি হয়ে যেত। তখন ভাবলাম যেহেতু ও আমাদের নিজে থেকে যেচে সাহায্য করতে চাইছে সেহেতু ওকে মুখের ওপর না বলাটা বোধহয় ঠিক হবেনা। কিন্তু এখন বুঝছি আমার উচিত ছিল তোমার ফিলিংসের ব্যাপারে আরো সতর্ক হওয়া।"
আমি মনে মনে ঠিক করে নিলাম এর পর থেকে কোনো অকেসানে যদি রবিকে মনীষার সাথে ফ্ল্যার্ট করতে দেখি তাহলে আমাকে একবার ওর সাথে কথা বলতেই হবে। আমি ওকে সোজাসুজি বলবো ও যেন মনীষার থেকে দূরে থাকে কারণ ওর স্বামী হিসেবে আমি ব্যাপারটা পছন্দ করছিনা। এতে করে যদি আমাকে ফিউচার মিডিয়ার চাকরি ছাড়তে হয় তো তাই সই।