Update - 13
রান্না করতে করতে মাথায় আমার শুধু একটা জিনিশই ঘুরছে, আর সেটা হল আজ রাত নিয়ে। ছেলেটা তো বিশাল একটা খাট কিনে আনল আজ, এখন তো ওকে আমি আটকাতে চাইলেও ও থামবে না। এইসব ভাবতে ভাবতে আমার রান্নার কাজ শেষের দিকে চলে আসল। এখন ফ্রিজ থেকে একটা শশা বের করলাম। একটু বড় সাইজ এর বেছে নিলাম। চপিং বোর্ড এর উপর রেখে আমি এক নজরে তাকিয়ে দেখছি এটাকে।
এরপর একটু হাতে ধরতেই মনে পরে গেলো কিছুক্ষন আগের কথা। ছেলেটার মুশলটা হাতে ধরেছিলাম। কিন্তু শশাটা ধরার পর ছোট মনে হচ্ছে। তার মানে ... ... (আমি চমকে উঠলাম আর শসাটা ছেঁড়ে দিয়ে দূরে সরে গেলাম) ... আরমানের ওইটা শশার চেয়েও বড়। আমার মাথায় ওই মুহুরততা ভাসছে।
নিজেকে তারপর কোনরকম সামলে নিলাম। আর দুপুরের খাবার রেডি করে টেবিলে রাখলাম। এরপর আরমানকে ডাক দিতে ওর রুমের সামনে গিয়ে দরজায় নক করলাম...
- নক নক !! আরমান বাবা আছিস ?
- আছি তো আম্মু, আর কোথায় যাবো। তুমি এমন ফরমাল হয়ে গেলে কেন আজকে। নক করে কথা বলছ কেন।
- খেতে আয়। ......... (আমি ওর কথার কোন জবাব দিলাম না)
- কি হল আম্মু ? তোমার কি মন খারাপ ? ( বলেই ও আমার দিকে ছুটে চলে আসল)
- না না বাবা কিছু না। ... ( আমি নিচে তাকিয়ে আছি)
- আমি জানি আম্মু তুমি কি নিয়ে এত চিন্তিত। প্লিজ চিন্তা করও না। আমি তো তোমাকে আগেই বলেছি আমি তোমার প্রেমিক পরে কিন্তু ছেলে আগে। আগে আমি আমার মায়ের কথা মত চলবো তারপর বাকি সব।
এইটা বলে ও আমার মুখ টা উপরে তুলল। কিন্তু ও আমাকে চুমু দিলো না। শুধু ফেল ফেল করে আমার মুখে চোখে ঠোঁটের দিকে দেখছে। আমিও শুধু ওর চোখের চাহনি দেখছি আর আস্তে আস্তে নিজেই ওর ঠোঁটের দিকে ঠোট দিয়ে গিয়ে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে দিয়েছি।
আমি নিজেকে ছারিয়ে দিয়ে বললাম।
- খাবার টেবিলে দিয়েছি। চলে আয়।
- আচ্ছা আম্মু।
- তারাতারি আয় ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।
বলে আমি চলে গেলাম ডাইনিং রুমে। একটু পরে ছেলেও চলে আসল। আমরা একসাথে খাওয়াদাওয়া শেষ করলাম। কিন্তু আমরা তেমন কোন কথা বললাম না। এরপর ও চলে গেলো তার রুমে আর আমি চলে গেলাম আমার রুমে। কিন্তু গিয়ে মনে পরল, আমার রুমের সব আসবাবপত্র তো আরমানের রুমে শিফট করা হয়ে গেসে। আমার তো খেয়ালই ছিল না। কিন্তু আমার তো চেঞ্জ করতে হবে।
আমি আর কোন পথ না পেয়ে আরমানের রুমে গেলাম। গিয়ে দাড়িয়ে আছি আর ছেলেটা খাটের উপর পেটে ল্যাপটপ নিয়ে কি যেন করছে। আমাকে দেখেই ল্যাপটপ ফেলে উঠলো।
- আম্মু কিছু বলবে ?
- না মানে ...... !!!
- কি আম্মু বল।
- মানে আমার তো সব কিছু এখন তোর ঘরে আনা হয়ে গেছে। আমার রুমে তো কিছুই নাই এখন।
- তো ?
- তো !! ... এখন আমার তো কত কিছু লাগবে তোর রুমে বার বার ...... মানে ......!!! ......... ( আমি কথা বলতে বলতে বার বার মুখে আটকে যাচ্ছে )
আমি কথা শেষ করতে পারলাম না । আমার কেন যেন চোখে পানি চলে আসল। আমি একদমি কান্না করছি না, না আমার মন খারাপ। কিন্তু আমার চোখে আপনা আপনি পানি পরতেসে। আর আমি কিছু বলতেও পারতেসি না।
এইটা দেখে আরমান এক লাফ দিয়ে খাট থেকে উঠে এসে আমার চোখের পানি হাত দিয়ে মুছা শুরু করলো। আমার আমাকে শান্তনা দেওয়ার জন্য জরিয়ে ধরল।
আমার চোখের পানি আরও বেড়ে গেলো। আমি কান্নাও করছি না। আমার মন ও খারাপ না। কিন্তু কেন জানি না। আমার চোখের পানি দিয়ে আরমানের টিশার্ট ভিজেই যাচ্ছে। ও আমাকে ছেঁড়ে দিয়ে বলল...
- কি হয়েছে আম্মু ? বল না ...
- তোর রুমে আমি ...... মানে ... বার বার তোর রমে আসতে হবে ... আর ...... তোর সামনে দিয়ে আসব ...... আবার ...... এইটা ওইটা ...... মানে ...... তোর .........
আরমান আমার কথা শেষ করার আগেই আমার ঠোঁটে এক আঙ্গুল দিয়ে চেপে চুপ করিয়ে দিলো।
- সসসসস ......... কিছু বলা লাগবে না। তুমি শান্ত হও। এত স্ট্রেস নিচ্ছ কেন। আসো ......
ও আমাকে জরিয়ে ধরেই পুতুলের মত উঠিয়ে নিয়ে খাটের উপর বসালো। আমি চুপচাপ বাচ্চাদের মত বসে আছি আর আমার চোখের পানিও একটু যেন কমে আসল। আমার এই অশ্রুর উপর যেন কোন নিয়ন্ত্রন নাই। কখন আশে কখন যায় তার খেয়াল খুশি। আমি বিছানায় বসে টের পেলাম খুব নরম তুলতুলে আর বেশ আরাম লাগছে বশার পর। আরমান আমার পাশে বসে আমার হাত ধরল। আর বলল।
- আম্মু আমি জানি তুমি কেন এত স্ট্রেস নিচ্ছ।
- হুম ...... !! ( মাথা নিছু অবস্থায় আস্তে আস্তে মাথা নারলাম)
- তুমি স্বাভাবিক হও। আর আমাকে বল তুমি কি চাও। তুমি যা চাও তাই হবে আম্মু। তুমি প্লিজ এরকম স্ট্রেস নিও না।
- না মানে......... আমি তো ......... মানে ...... মানা করছি না ...... এই তোর রুমে এসে বার বার ...... যদি আসি তখন ...... আমার তো কত বার করে আসতে হবে ......... তুই যখন থাকবি বিরক্ত করবো ...... মানে বলতে চাচ্ছি .........
( আমতা আমতা করে কিভাবে কথা বলছি একদম ২-৩ বছরের বাচ্চাদের মতো ......... আর আরমান আমার দিকে একদম হা করে অবাক হয়ে দেখতেসে)
- তোমাকে কত কিউট লাগছে জানো ? আর তুমি এমন তোর রুম তোর রুম করছ কেন। আজকে থেকে এইটা আমাদের রুম। মানে এইটা আমার রুম আবার এইটা তোমারও রুম। তোমার রুমে তুমি যখন খুশি আসবে যখন খুশি যাবে। যা খুশি তাই করবে তোমার রুমে তুমি।
- হুম ......... ( আমি মাথা নিচু করে আছি)
আরমান আমাকে ধরে আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে বলল।
- আম্মু তুমি স্বাভাবিক হও। আমি তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিঃশ্বাসও নিব না। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি আম্মু।
- হুম...... ।
- আচ্ছা ঠিক আছে। চেঞ্জ করবে ?
- হুম ......... !!!
- আমি তাহলে বাইরে যাই। ...... ( বলেই ও বাইরের দিকে যাওয়া শুরু করবে ঠিক তখনি )
- আরে বাবা যাওয়া লাগবে না। তুই শুয়ে থাক আমি এইখানেই চেঞ্জ করে নিব। তুই একটু অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে রাখিস তাইলেই হবে।
- আচ্ছা আম্মু ঠিক আছে। আমি তাহলে ওই দিকটায় ফিরে কাজ করি তুমি তোমার কাজ কর।
- ওকে বাবা ।
আমি আমার পরার কাপর বের করলাম। আর খাটের দিকে তাকিয়ে দেখলাম আরমান উলটো দিকে ঘুরে শুয়ে আছে। আমি সামনে তাকালাম। আর খেয়াল করলাম ড্রেসিং টেবিল এর আয়নাতে খাট টা পুরো আরমানকে সহ দেখা যায়। আমি চেঞ্জ করতে করতে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম যে ও আমাকে দেখে কিনা। কাপর পরা শেষ করে আমি আরমানকে ডাকলাম।
- বাবা হয়েছে। ঘুরতে পারিশ এখন।
- ওহ আচ্ছা আম্মু। ...... বাহ আম্মু বেশ সুন্দর লাগছে তোমাকে।
- তুই যে সত্যি আমার দিকে তাকালি না । আমি খুব লাকি তোর মতো ছেলে পেয়ে।
- আমি তো তোমাকে বলেই নিয়েছি তাকাব না।
- কিন্তু তুই তো চাইলেই তাকাতে পারতি। আমার হয়ত কিছু বলারও থাকত না।
- জানি আম্মু। কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসি তোমাকে সম্মান করি। তুমি আমার মা। আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটা তুমি।
আমি কিছুই বলতে পারলাম না। আমার গর্বে বুক টা ভরে গেলো। আর ছেলের প্রতি সম্মান আরও বেড়ে গেলো। আরও বেশি যেন আমি ছেলের প্রেমে পরে যাচ্ছি। আমি এবার কিছু না বলে ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম। আর রাতের জন্য স্পেশাল খাবার রান্না করছিলাম। ছেলের পছন্দের ডিশ। রান্না করতে করতে মাঝে মাঝেই ছেলে আমাকে ফোনে মেসেজ দিচ্ছিল। কখনো "I love you" কখনো "miss u" আবার কখনো ছোট ছোট অগুরুত্বপূর্ণ কথা বার্তা। বুঝতে পারছিলাম ছেলেটা শুধু রাতের অপেক্ষায় আছে। মনে মনে আমিও এই অপেক্ষাতেই আছি। আমার শরিরের প্রতিটা কোনায় কোনায় শিহরন জেগে উঠে যখন আমি রাতে কি হবে ভাবতে যাই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভাবতে পারি না।
অবশেষে খাবার রান্না শেষ করে টেবিলে পরিবেশন করলাম। আজ একটু বেশি সুন্দর করে সাজালাম। খুব পরিপাটি করে। আর নিজেও রুমে গিয়ে আবার ছেলেকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে সুন্দর একটা ড্রেস পরে নিলাম। পরা শেষে আরমান আমার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো। আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে আস্তে আস্তে রুম থেকে বের হয়ে জেতে লাগলাম। আমার পাছাটা একটু বেশিই দুলাচ্ছিলাম হাটার সময় কেন যেন। রুমের শেষ মাথায় গিয়ে পিছনে ঘুরলাম আর দেখলাম আরমান হা করে তাকিয়ে আছে। বললাম ......
- খাবার দেওয়া আছে টেবিলে । চলে আয় বাবা ...
- হুম ......
_________________>>>>>
এই আপডেট এর গল্প এই পর্যন্তই। আশা করি আপনাদের ভাল লেগেছে। দয়া করে আপনাদের কেমন লেগেছে রেপ্লাই তে জানাবেন। আপনাদের মতামত ও পরামর্শ আমাকে উৎসাহ দিবে পরবর্তীতে আরও সুন্দর করে লেখার জন্য।
ধন্যবাদ ।