• If you are trying to reset your account password then don't forget to check spam folder in your mailbox. Also Mark it as "not spam" or you won't be able to click on the link.

Adultery আগুণের পরশমণি : কামদেব

kumdev

Member
436
397
79


ষট্ত্রিংশতি পরিচ্ছেদ





দরজার পাশে বোর্ডে লেখা Dr Manjulika Roy,Ph.D
Principal
নীচে একটা টুলে বসে রামধারী।ক্লাসে যাবার সময় জিজ্ঞেস করেছিল ম্যাডাম তখন ক্লাসে ছিলেন।ক্লাস শেষ করে ফেরার সময় ইলিনা জিজ্ঞেস করতে রামধারী দাঁড়িয়ে সেলাম করে বলল,ম্যাডাম আছে।রামধারী অনেক দিনের পুরানো তার বাবার বয়সী।ইলিনার অস্বস্তি হয়। দরজা একটু ফাক করে ইলিনা বলল,মে আয় কাম ম্যাম?
ড.রায় চোখ তুলে তাকিয়ে ইশারায় আসতে বললেন।ইলিনা ভিতরে ঢুকতে বললেন,বসুন।
ইলিনা বসতে ড.রায় বললেন,এনি প্রব্লেম মিস ব্রাউন?
ইলিনা ব্যাগ হতে আমুর ছবি সাটানো ফর্ম বের করে এগিয়ে দিয়ে বলল,ম্যাম এগুলো এ্যাটেস্টড করতে হবে।
ড.রায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ফর্মটা দেখলেন।ফর্মে সাটানো একজন হ্যাণ্ডসাম ইয়াং বয়ের ছবির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,হু ইজ হি?
ইলিনা লাজুক গলায় বলল,আমার হাজব্যাণ্ড।
বিস্ময়ে ড.রায় চোখ ছানাবড়া বললেন,আর উ ম্যারেড?কবে বিয়ে করলেন?
ফিফ্থ নভেম্বার।মাটিরদিকে তাকিয়ে ইলিনা বলল।
চার্মিং ফেস।ভেরি গুড মেয়েদের একজন পুরুষ সঙ্গী দরকার। মি.সোম কি করেন?
এই ভয়টা পাচ্ছিল ইলিনা।এরকম প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে ভেবেছিল।মৃদু গলায় বলল,তেমন কিছু না।
ড.রায়ের মুখে হাসি ফুটল বললেন,লাভ ম্যারেজ?
ইলিনা মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।
লাভ মেকস দা ইমপসিবল পসিবল।দার্শনিকের মত কথাটা বলে ড.রায় ইলিনার দিকে তাকিয়ে বললেন,কেমন লাগছে কনজুগ্যাল লাইফ?আর ইউ সটীশফাইয়েড?ড.রায় স্বাক্ষর করতে থাকেন।
ইলিনা কিছুটা বিরক্ত হয়।একটা সই করাতে এসে এত কথা ভাল লাগেনা।ইঙ্গিতটা বুঝতে পেরে ইলিনা বলল,আমরা একসঙ্গে থাকিনা,আলাদা থাকি।ম
ড.রায় বিস্মিত চোখ তুলে তাকালেন।তার হাজব্যাণ্ড একবেলা কাছে না পেলে অস্থির হয়ে ওঠে।বিয়ের পর আলাদা থাকে বিশ্বাস করতে চায়না মন।ফর্মটা এগিয়ে দিয়ে বললেন,অফিস থেকে সিল মারিয়ে নেবেন।
থ্যঙ্ক ইউ ম্যাম বলে উঠতে যাচ্ছিল ইলিনা।
এক মিনিট।বসতে বললেন ধড.রায়।
ইলিনা আবার বসে পড়ল।আবার কি বলবেন অনুমান করার চেষ্টা করে।
মিস ব্রাউন স্যরি মিসেস সোম কিছু মনে করবেন না,একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
আবার কি জিজ্ঞেস করবেন।এখন মনে হচ্ছে অন্য কোথাও এ্যাটেস্ট করালে ভালো হতো।ঠোটে হাসি ফুটিয়ে তাকালো।
এইযে আপনারা আলাদা থাকেন মি.সোম আপত্তি করেননি?
আনু সাধারণের চেয়ে অন্যরকম।তারও মনে খটকা ছিল কিন্তু সেদিন ডিক টাচ করে বুঝেছে পাচ-ছয় ইঞ্চির মত হবে,ইরেকটেড হলে আরো বড় হবে।ইলিনা বলল,উনিই বলেছেন পাস করার পর আমরা একসঙ্গে থাকবো।
ইজ ইট?ভদ্রলোককে দেখার খুব লোভ হচ্ছে।
ওর ডিক দেখলে তুমি পাগল হয়ে যাবে।ইলিনা মুখে বলল,একদিন ওকে এনে আপনার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেব।
অনেক ধন্যবাদ।
ম্যাম আপনার কাছে আমার অনুরোধ,বিয়ের ব্যাপারটা আপনি কাউকে এখনই বলবেন না।
ড.রায় হেসে বললেন,ওকে ইউ ক্যান রেস্ট এ্যাসিওর।
প্রিন্সিপালের ঘর থেকে বেরিয়ে ইলিনা স্বস্তির শ্বাস ফেলে।পরমুহূর্তে আরেকটা চিন্তা মনের মধ্যে বিজকুড়ি কাটতে থাকে।আনু পাস করতে পারবে তো?ম্যাম নিশ্চয়ই খোজ নেবেন।পাস না করলে বেশ লজ্জার হবে।আনু নিয়মিত পড়ছে।একটা ব্যাপার খারাপ লাগে।পড়াশুনার প্রশস্ত সময় সকাল এবং সন্ধ্যে,সেই সময়টা ব্যস্ত থাকে দোকানে।দুপুরবেলা পড়ার সময় নয়।এখন মনে হচ্ছে ম্যামকে এ্যাটেস্ট না করালেই ভাল হতো।ঘড়ি দেখল ঘণ্টা পড়ার সময় হয়ে গেছে।এই পিরিয়ডে তার ক্লাস আছে।
প্রথমটা অত সিরিয়াস্লি নেয়নি আরণ্যক।যতদিন যাচ্চে ব্যাপারটা উপেক্ষা করতে পারেনা।বিয়ের বাধন কি এর চেয়ে জোরালো।সারাক্ষণ লিনা তার মন দখল করে বসে আছে।কলেজের অধ্যাপিকা তুলনায় সে অতি তুচ্ছ অথচ তাকেই বেছে নিল,অবাক লেগেছিল।তার মনেও সুপ্তভাবে ইচ্ছেটা না থাকলে আরণ্যক সম্মত হতোনা।মনে মনে আশঙ্কাওখ ছিল মোহভঙ্গ হলে পুরানো বস্ত্রের মত ত্যাগ করবে নাতো?
পিএসসির ফর্ম ফিলাপ করাবার পর বুঝেছে আশঙ্কা অমূলক।অসম্ভব মনের জোর মহিলার সন্তানের মত আগলে রাখে।লিনাই সব করে যাচ্ছে তাকে কিছুই করতে হচ্ছে না।অথচ বিনিময়ে কোনো চাহিদা নেই।আরণ্যকও এখন লিনাকে বউয়ের মত মনে করে।
রবীন্দ্রসঙ্গীত আরণ্যকের পছন্দ,এই গানটা আগে অনেক শুনেছে কখনো এভাবে ভাবেনি।লিনা বুকে চেপে ধরেছিল মনে হয়েছিল আগুণের পরশমণির স্পর্শে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ছিল এক অনাস্বাদিত অনুভূতি।লিনা যেন আগুণের পরশমণি।তার মনের সুপ্ত আকাঙ্খ্যাকে জাগিয়ে দিয়েছে।সেই সঙ্গে ওকে দেখার জন্য মনে ছটফটানি।চালতাবাগানে নেমে বাসায় ফেরে সেজন্য দেখা হয় না।এই রাস্তা দিয়ে ফিরলে দেখা হতো।
আচ্ছা ভাই অপু সরকারের বাড়ী কোথায় বলতে পারবেন?এক ভদ্রলোক এসে জিজ্ঞেস করল।
আরণ্যকের লোকটিকে চেনা চেনা মনে হল বলল,অপুদাকে তো এখন বাসায় পাবেন না।
জানি অফিসে গেছে।আমি একটা জিনিস ওর বাসায় পৌছে দেব।
সোজা গিয়ে বা-দিকে টার্ণ নিয়ে কিছুটা গিয়ে দেখবেন একটা হলুদ দোতলা বাড়ী।একতলায় অপুদা থাকে।
ধন্যবাদ ভাই।
যাক বেশী খুজতে হলনা,মথুরেশ ভাবল।অপু নেই তো কি হয়েছে ওর বউ থাকলেই হবে।সেদিন নামটা জানা হয়নি।বলেছিল আসুন আলাপ করা যাবে।যেতে বলেছিল তাই যাচ্ছে। দেখা যাক আলাপ কতদূর গড়ায়।মথুরেশ ঘামতে থাকে।মাঝে মাঝেই ভদ্রমহিলার কথা মনে হতো।আসব-আসব করে আসা হয়নি। দেরী হয়ে গেছে বলে আজ অফিস যায়নি।মনে হল একবার ঢু মেরে দেখাই যাক না কি হয়। যদি পাত্তা না দেয় বাসায় ফিরে যাবে। রাস্তায় লোকজন কেউ নেই।রুমাল বের করে ঘাম মুছলো।ঐতো সামনে হলদে রঙের দোতলা বাড়ী।আশপাশ তাকিয়ে দেখল কাউকে নজরে পড়ল না।এগিয়ে গিয়ে দেখল দরজার পাশে দেওয়ালে ঝুলছে লেটার বক্স।তাতে লেখা অপূর্ব সরকার মিতা সরকার।মনে মনে উচ্চারণ করে মিতা সরকার।এতক্ষণে নামটা জানা গেল।মিতা ভেরি সুইট নেম।বন্ধ দরজার পাশে একটা গার্বেজ বালতী।মথুরেশ কলিং বেলে চাপ দেবে কিনা ভাবতে না ভাবতেই দরজা খুলে গেল,সামনে দাড়িয় মহিলা।মথুরেশ অবাক এই তো সেই মিতা সরকার।মহিলা ময়লার বালতীটা তুলে জিজ্ঞেস করল,কাউরে খুজতেচেন?
মথুরেশ হাসি টেনে বলল,মিসেস সরকার স্কুলে আপনার সঙ্গে দেখা হয়েছিল।আপনি বলেছিলেন বাসায় আসুন আলাপ করা যাবে--।
মহিলা সন্দিগ্ধ চোখে মথুরেশের আপাদ-মস্তক দেখে।
চিনতে পেরেছেন?
আসেন ভিতরে আসেন।মহিলা দরজা ঘেষে দাড়াতে মথুরেশ ভিতরে ঢুকে গেল।মহিলা মুখ বাড়িয়ে রাস্তা দেখে দরজা বন্ধ করে দিল।

যাক মিসেস সরকার চিনতে পেরেছেন ভেবে মথুরেশ স্বস্তি বোধ করে।মহিলা একটা ঘরে নিয়ে গেল।ঘরে বিশাল খাট পাতা একপাশে এক জোড়া সোফা।সোফা দেখিয়ে বসতে বলে বলল,সে তো অনেকদিন আগের কথা এতদিনে সময় হল?
না মানে রোজই আসব-আসব ভাবি--।
যাক আসছো ভালই হইচে আমারও শরিলডা ম্যাজ-ম্যাজ করতিছে।দাদা-বৌদি দুজনেই অফিসে গেছে বাড়ী একেবারে ফাকা।আমার নাম রেবতী তুমি আমারে রেবু বলে ডাকবা।বসো চা খাবে তো?
চা মন্দ হয়না।
বসো চা নিয়ে আসতেছি।রেবতেী ময়লার বালতী নিয়ে চলে গেল।
দাদা-বৌদি অফিসে তার মানে অপু সরকার আর তার বৌ দুজনেই চাকরি করে।তাহলে রেবু কে?রেবু কি কাজের লোক?কাজের লোক হলেও রেবুর ফিগারটা ভালই।বিশেষ করে ওর পাছার গড়ণ মথুরেশের ভাল লেগেছে।তাকে তুমি-তুমি করছে। এসব ব্যাপারে অত ভাবলে চলেনা।ওতো বিয়ের পাত্রী খুজতে আসেনি।
পার্টি অফিসে লোকজন বেশী নেই কমরেড সন্তোষ মাইতি আর গোবিন্দ কথা বলছে।সন্তোষ মাইতি খুটিয়ে খুটিয় জিজ্ঞেস করছেন আর গোবিন্দ যতটা জেনেছে বলে যায়।হুউম রনো দুপুরবেলা দোকানে থাকেনা।এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ায়।দোকান ফেলে এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ানো চলতে দেওয়া যায়না।কিছু বলিনা বলে যা-না তাই করবে।কালাকেও তোয়াক্কা করেনা। পার্টি করিস না তাহলে সব ব্যাপারে তোর যাওয়ার কি দরকার।ড়ওকে পরিস্কার বলে দিতে হবে।
পার্টি অফিসে লোকজন আসতে থাকে।সন্তোষ গোবেকে বলল,তুই এখন যা।কাউকে কিছু বলতে যাস না।যা করার আমি দেখছি।
রেবতী চা নিয়ে এক কাপ এগিয়ে দিয়ে আরেক কাপ নিয়ে খাটে উঠে হাটু অবধি কাপড় তুলে বসল।মথুরেশ চায়ে চুমুক দিয়ে বুঝতে পারে কবেশ সুগন্ধি চা। চায়ে চুমুক দিতে দিতে ভাবে কি কথা বলবে?হঠাৎ নজর পড়ে রেবু এমনভাবে বসেছে দুই উরু সন্ধিতে গুপ্তাঙ্গ শাড়ীর ফাক দিয়ে দেখা যাচ্ছে।দেখা যাচ্ছে মানে বালে ঢাকা।মথুরেশের কাপড়ের নীচে চড়াই পাখির চিড়িক-চিড়িক নাচ শুরু হয়ে যায়।রেবুর কোনোা হুশ নেই।
মথুরেশ চা খেতে খেতে আড় চোখে আর ভাবে সোনাটা বেরিয়ে আছে রেবু কি বুঝতে পারছে না?
আচ্ছা তোমার কি ঐ একটাই ছেলে?রেবতী জিজ্ঞেস করল।
হ্যা ঐ একটাই ছেলে।
রেবতী বিরক্ত হয়।ধ্যামনাটা এখানে এসেছে কেন?কোনো কথা বলেনা কিছু জিজ্ঞেস হা-হু করে জবাব দেয়।রেবতী বলল,তুমি আজ এসেছো কেন?
তুমি বলেছিলে একদিন আসতে আলাপ করা যাবে।
এই কি আলাপের ছিরি!কথা নেই বার্তা নেই ঘটের মত বসে আছো।
তুমি সেভ করোনা?আলটপকা মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায়।
বোকাচোদার ঠিক নজরে পড়েছে রেবতী ভাবে।বলল,সেভ করতি ভয় করে যদি কেটেকুটে যায়।মাঝে মাঝে কেইচি দিয়ে ছেটে দিই।
অনেক লোশন বেরিয়েছে মাখিয়ে কিছুক্ষণ পর তোয়ালে দিয়ে মুছে দিলেই পরিষ্কার।
লোশন কেনার টাকা কে দেবে তোমার বাপ। শালা বাল নিয়ে পড়েছে আর কথা খুজে পেলনা।এরকম ম্যান্দা মারা পুরুষ রেবতীর পছন্দ হয়না।জিজ্ঞেস করল তুমি বাল কামাও?
মথুরেশ লজ্জায় লাল হয়।রেবতী খাট থেকে লাফিয়ে নেমে বলল,দেখি দেখি লোশন দিয়ে কেমন সাফ করেছো?বলেই মথুরেশ বাধা দেবার আগেই ধুতি তুলে বাড়াটা মুঠো করে ধরে রেবতী বলল,উরিব্বাস এতো দাড়িয়ে েগেছে।ইঞ্চি চারেক বাড়াটা ধরে খেচতে শুরু করল।মথুরেশ রেবুর কাধ খামচে ধরে সোফায় এলিয়ে পড়ল।মিনিট পাচেক যেতে না যেতেই পিচিক-পিচিক বীর্য ছিটকে বেরোতে থাকে।
রেবতী হাত মুছে বলল,দাও পঞ্চাশটা টাকা ছাড়ো।
টাকা কেন?আমি তো কিছু করিনি।হাপাতে হাপাতে মথুরেশ বলল।
মেঝে পরিষ্কার করবে কে?টাকা ছাড়ো।
অগত্যা মথুরেশ পকেট থেকে পার্স বের করে একটা পঞ্চাশ টাকার নোট এগিয়ে দিল।
 

kumdev

Member
436
397
79



সপ্ত ত্রিংশতি পরিচ্ছেদ



হোটেলে ঢুকতেই বদ্যিনাথ এগিয়ে এসে বলল,রনো আজ কিন্তু নগদে খেতে হবে।
একপাশে চেয়ার নিয়ে বসতে বসতে আরণ্যক ভাবে এরমধ্যেই খাতা বন্ধ হয়ে গেছে।সন্তোষ মাইতি বেশ করিৎকর্মা।এই সব নেতার জন্য পার্টির পার্টির এই দুরাবস্থা।দু-বেলা খাওয়া আর রাতে থাকার বিনিময়ে দোকান সামলাতো।অন্য সময় কোথায় যাই কি করি তুমি কে হরিদাস তোমাকে বলতে হবে।আরণ্যক সোম কাউকে দাসখত লিখে দেয়নি।না খেয়ে মরে যাবে তবু কারো গোলামী করতে পারবে না।
সারা দুপুর দোকানে থাকলে পড়বে কখন?পরীক্ষায় বসবে না লিনাকে এখনই বলার দরকার নেই।কয়েকদিন পর আপনিই বুঝতে পারবে।যেখানেই যাক লিনাকে কোনোদিন ভুলতে পারবে না।বাঙালী মায়ের হৃদয় মমতায় ভরা শুনেছে কিন্তু ওতো ঠিক বাঙালী নয় তবু স্নেহ মমতা কারো চেয়ে কম নয়।খাওয়ার পর হাত-মুখ ধুয়ে পয়সা মিটিয়ে হোটেল থেকে বাইরে এসে দাড়ালো।মনে মনে হিসেব করে তার কাছে শ-চারেক মত টাকা আছে।এই টাকা শেষ হবার আগেই কিছু একটা ব্যবস্থা করতে হবে।
কিরে রনো তুই এখানে?ধুমকেতুর মত উদয় হল গোবিন্দ।
তুই কাজে যাস নি?
নারে আজ একটা দরকারে কামাই করতে হল।
গোবেটা তাকে ফলো করছে নাতো আরণ্যক ভাবে,বলল যাক দেখা হয়েছে ভাল হয়েছেে।এই মহল্লা ছেড়ে চললুম পিকলুদের বলে দিস।
গোবিন্দ একটু ইতস্তত করে বলল,তোকে একটা কথা বলব?
আরণ্যক অবাক চোখে তাকায় ও আবার কি বলবে?
ফালতু ঝামেলা করে কি হবে বল।সন্তোষদার সঙ্গে কথা বলে মিটমাট করে নে,দ্যাখ এতদিন আমরা এক পাড়ায় একসঙ্গে বড় হয়েছি--।
দাড়া দাড়া কিসের ঝামেলা--ভাব করছিস তুই কিছু জানিস না।
না তা নয়।দুপুরবেলা বেরোবার কি দরকার বল?
কখন বেরবো কোথায় যাব তোর সন্তোষ মাইতি ঠিক করবে?
রনোর চোখের দিকে তাকিয়ে গোবিন্দ ভয় পেয়ে যায়।শালা যা গোয়ার গোবিন্দ কি করে বসে।নরম সুরে বলে,ঠিক আছে তুই যা ভাল বুঝিস আমি আসি।
আরণ্যক বিটি রোডের দিকে হাটতে থাকে।
কোথায় যাচ্ছে কে জানে।আরণ্যকের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে গোবিন্দ ভাবতে থাকে।নক্সাল আমলের কথা মনে পড়ল।তাকে প্রায় তুলে নিয়ে যাচ্ছিল কোথা থেকে এসে ঝাপিয়ে পড়ে সেদিন বাচিয়েছিল।নিজেকে কেমন অপরাধী মনে হয়।
ঘণ্টা পড়তেই ইলিনা ব্রাউন ক্লাস থেকে বেরিয়ে এল ।এটাই আজ তার শেষ ক্লাস ছিল।স্টাফরুমে এসে ব্যাগ গোছাচ্ছে এমসি বললেন,কি ব্যাপার মিস ব্রাউন আপনাকে দেখলাম প্রিন্সিপালের ঘরে গেছিলেন?
নজরে পড়েছে ইলিনা বলল,উনি ডেকেছিলেন।ছোটোখাটো মিথ্যেতে দোষ নেই।সেতো কোনো অপরাধ গোপন করছেনা।
হঠাৎ কি ব্যাপার?
তেমন কিছুনা।জানতে চাইলেন কোথায় থাকি,সঙ্গে আর কে কে থাকে এইসব।
উরিব্বাস ম্যাডাম আবার সবার খোজ খবর নেওয়া শুরু করল নাকি?
বিসি বলল,মিস ব্রাউন এবার একটা বিয়ে করে ফেলুন।এরকম একা একা ভাল লাগে নাকি?
আচ্ছা বাসনাদি বিয়ে করে আপনি খুব ভাল আছেন?পালটা বলল ইলিনা।
বিসি সবার দিকে চোখ বুলিয়ে নিয়ে বলল,মানে?
মানে আমি জানতে চাইছি বিয়ে করে কেমন লাগছে?আপনাদের অভিজ্ঞতা থেকে জেনে নিই।
বিসি আমতা আমতা করে বলল,অভিজ্ঞতা কি বলব তবে মিঠেকড়া বলতে পারেন।
সবাই হো-হো হাসিতে ভেঙ্গে পড়ে।
আচ্ছা ভেবে দেখব,আসি।
ইলিনা বেরিয়ে পড়ল।বিয়ে কিনা জানিনা তবে আনুর সংস্পর্শে এসে মনে অনেক জোর অনুভব করে ইলিনা।
বাস স্টপেজে লোকজন নেই তাহলে একটু আগে বাস গেছে মনে হয়।যাতায়াতে ঘণ্টা দুয়েকের মত সময় নষ্ট।রাস্তার ওপারে ফ্লাট হচ্ছে দেখে মনে হল এখানে থাকলে অর্থ এবং সময়--দুয়েরই সাশ্রয় হতো।বাসের দেখা নেই।কি ভেবে রাস্তা পেরিয়ে ওপারে চলে এল।
ছাতা মাথায় একটি লোক দূরে দাঁড়িয়ে কাজ দেখছে।লোকটিকে জিজ্ঞেস করলে সব জানা যাবে।ইলিনা কাছে গিয়ে বলল,আচ্ছা ফ্লাটের দাম কি রকম পড়বে?
লোকটি অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে থাকে।
সব বুক হয়ে গেছে?
আপনি বাংলা বলতে পারেন?
বাংলায় থাকি বাংলা বলব না?
আপনি কোথায় থাকেন?
নর্থ ক্যালকাটা।
ওখান থেকে এখানে ফ্লাট খুজছেন?
এখানে একটা কলেজে পড়াই।
আপনি প্রফেসার?ফ্লাট আপনি পেয়ে যাবেন।রাস্তার ধারে ওই একতলা বাড়ীটা দেখছেন ওটাও ফ্লাট হবে।
ভদ্রলোক বেশী কথা বলে।ইলিনা বলল,এটা কি সব বুক হয়ে গেছে?
না তা নয়।আপনি এই কার্ডটা রাখুন এতে দাদার নাম ফোন নম্বর দেওয়া আছে।আপনি দাদার সঙ্গে কথা বলবেন।
ইলিনা কার্ডটি হাতে নিয়ে চোখ বোলায়।
শুনুন ম্যাডাম ফোনে বলবেন আমি প্রফেসর বলছি তাহলেই দাদা চিনতে পারবেন।
ইলিনা রাস্তা পেরিয়ে বাস স্টপেজে এসে দাড়ালো।
পশ্চিমদিগন্তে ঢলে পড়েছে সূর্য।আলো কমে এসেছে।অনেকটা পথ হেটে এল আরণ্যক।পছন্দের দোকান তেমন চোখে পড়েনি।একটা বই খাতার দোকানে একজন বসে আছে।আরণ্যক এগিয়ে গিয়ে কথা বলল,লোকটি দোকানের কর্মচারী।মালিক আসবে সন্ধ্যেবেলা।খদ্দেরের তেমন ভীড় নেই।একজন লোক আছে আরেকজন নেবে মনে হয়না।আরণ্যক হাটতে থাকে।সন্ধ্যে হয়ে এল।কয়েকটা দোকানে জিজ্ঞেস করেছে কারো লোকের দরকার নেই।এভাবে কি কাজ পাওয়া যায়।হাল ছাড়লে চলবে না।সামনে একটা মোবাইলের দোকান।এক্টু ইতস্তত করে এগিয়ে গেল।দোকানে কাউকে নজরে পড়ল না।একটু ভিতরে ঢুকে ভাবে কেউ তো ছিল,দোকান ফেলে গেল কোথায়?আরণ্যকের গা ছম ছম করে।এখানে থাকা ঠিক হবে না। শেষে কি প্যাচে জড়িয়ে পড়ে।সামনে টেবিলে একটা মোবাইল পড়ে তাতে ভিডিও চলছে।এক বিদেশিনী মহিলা দাঁড়িয়ে একেবারে নিরাবরণ, সামনে বসা একটি ছেলের মুখটা নিজের যোনীতে চেপে ধরেছে। লিনার মত দেখতে অবশ্য লিনা এমন অসভ্য নয়। বুঝতে অসুবিধে হয় না কেউ দেখতে দেখতে উঠে গেছে।থাকা ঠিক হবে না ভেবে ঘুরে দাড়াতে যাবে ভিতর থেকে মধ্য বয়সী একজন লোক বেরিয়ে এসে বললেন,কি চাই?আমি একটু বাথরুমে গেছিলাম।
আরণ্যক দেখল মোবাইলটা টেবিলের উপর উপুড় করে রাখা। আরণ্যক বলল,কিছু চাইনা।আপনি দোকানের মালিক?
আমি কানাই ধর,এই দোকান আমার।মালিককে কি দরকার?
আমি একটা কাজ খুজছি যদি কোনো কাজ পাওয়া যায় মানে--।
কানাই ধর অবাক হয়ে আপাদ মস্তক দেখতে থাকেন।সুন্দর চেহারা দেখে ভদ্রঘরের মনে হল।একটা কাজের লোক হলে মন্দ হয়না।
আগে কোথাও কাজ করেছো?কানাই ধর জিজ্ঞেস করল।
একটা বইয়ের দোকানে কাজ করতাম।
আগের দোকানের কাজ ছেড়ে দিলে কেন?
একজন মোবাইলে ব্যালান্স ভরতে এসেছে কানাই ধর তাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।পঞ্চাশের উপর বয়স কানাই ধরের এই বয়সেও এইসব ছবি দেখার বাতিক।আরণ্যক ভাবে কি বলবে?
খদ্দের মিটিয়ে কানাইবাবু বললেন,তোমার নামটা জানা হয়নি।তুমি বলছি কিছু মনে করোনি তো?
ঠিক আছে বয়জ্যেষ্ঠ্য আপনি তুমিই বলবেন।আমার নাম আরণ্যক সোম।
বিরাট নাম--।
সবাই আমাকে রনো বলে ডাকে।আরণ্যক হেসে বলল।
দেখো একজন লোক আমার দরকার।কিছু মনে কোরোনা তোমাকে আমি চিনিনা তুমিও আমাকে চেনোনা--তোমাকে অবিশ্বাস করছি না।দোকানে নানা কাজে খদ্দের আসে তুমি আগে কখনো এসব কাজ করোনি।সে আমি আস্তে আস্তে শিখিয়ে নেবো।তার আগে পাচ জনে যাকে চেনে জানে যেমন এম এল এ বা কাউন্সিলর কাউকে দিয়ে লিখিয়ে আনতে হবে সে তোমাকে চেনে।
আরণ্যক ভাবে তার জানা লোকজন সবই সন্তোষ মাইতির জানা শোনা।
কি এমন কেউ চেনা জানা নেই?
ঠিক আছে আমি তাহলে পরে আসবো।
বেশী দেরী কোরোনা কিন্তু।
যাক একটা সুরাহা হল।দোকান থেকে রাস্তায় নেমে উল্টোদিকে একটা চায়ের দোকান নজরে পড়তে ভাবল এক কাপ চা খাওয়া যাক।
কানাইবাবু লোকটার ব্যবহার খারাপ নয়।চেনেন না একটা পরিচয় পত্র চাইতেই পারে।মোবাইলে নোংরা ছবি দেখছিলেন।মানুষের হাতে যখন কাজ না থাকে যৌনতার চিন্তা মাথায় আসে।গোবিন্দর কাছ থেকে এতক্ষণে হয়তো ওরা সব খবর পেয়ে গেছে। চায়ে চুমুক দিয়ে ভাবে মানুষের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই।এক সময় বসতো বইয়ের দোকান এবার মোবাইলের দোকান।কানাইবাবু বলেছেন শিখিয়ে নেবেন।চা শেষ করে প্যসা দেবার জন্য পকেটে হাত ঢুকিয়ে চমকে উঠল।এইরে চাবিটা ফেরত দেওয়া হয়নি।ম্যডামের কাছে আরেকটা চাবি আছে তা হলেও?
 

kumdev

Member
436
397
79

অষ্টত্রিংশতি পরিচ্ছেদ




জানলার ধারে বসেছে ইলিনা,বাস ছুটে চলেছে।বাসায় গিয়ে দেখবে দোকানে চলে গেছে। আর বড়জোর মাস খানেকের মত আছে।পরীক্ষাটা মিটলে স্বস্তি,রেজাল্ট কি হবে গড নোজ।প্রিন্সিপাল ম্যাম নিশ্চয়ই খবর নেবেন,কি হল?ইলিনার চিন্তা বেড়ে গেল। জীবনে একজন পুরুষসঙ্গী দরকার। প্রিন্সিপাল ম্যামের কথাটা মনে হতে শরীরে শিহরণ খেলে যায়।জানি না কবে থেকে স্বামী-স্ত্রী এক বিছানায় শোবার সুযোগ হবে।বাসনাদি বিয়ের কথা বলছিলেন,ওরা জানেনা সে বিবাহিত। ইলিনার চোখ ছলছল করে।ডলিবোস তার সমবয়সী প্রায়, বিয়ের পর সিমলা গেছিল।ওখানে বরফ পড়ার কথা শুনেছে। শীত তো প্রায় দোর গোড়ায়।ভোরের বাতাসে হিমেল স্পর্শ পাওয়া যায়।
কণ্ডাক্টর বালিঘাট-বালিঘাট হাকতে পাশে বসা মহিলা উঠে দাড়াল।মনে হয় উনি এখানে নামবে।মহিলা চলে যেতে সামনে দাড়ানো মহিলা বসে পড়ল।ইলিনা আড় চোখে দেখলো মহিলার কানের নীচে ঘাড়ে কাকড়া বিছের ছবির ট্যাটু।একটা কথা ভেবে মনে মনে হাসে। কদিন আগে ডিবির সঙ্গে পার্লারে গিয়ে ঝোকের মাথায় ইলিনাও এক জায়গায় ANU লিখিয়েছে অবশ্য কেউ দেখতে পাবে না।ডলি বোস চুল সেট করাতে ব্যস্ত ছিল।আইবির এই কাণ্ড সেও জানে না।বাথরুমে গেলে ইলিনা করুন চোখে দেখে আনু লেখার উপর মোলায়েম হাত বোলায়।
দোকান বন্ধ দেখে পিকলু অবাক হয়।রনোটা গেল কোথায়?ঐতো প্রভাত আর গোবিন্দ আসছে।ওরা আসতে প্রভাত বলল,পিকলু শুনেছিস সব?
অবাক চোখে পিকলু জিজ্ঞেস করল,কি ব্যাপারে?
কিরে গোবে বল?
গোবিন্দকে পছন্দ নয় তবু পিকলু ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো।
গোবিন্দর মুখে সকালের ঘটনা শুনে পিকলুর মুখে কথা নেই।এত কাণ্ড হয়ে গেছে সে কিছুই জানেনা।রনো নেই ভাবতেও পারে না।
রনো কোথায় গেছে কিছু জানিস?পিকলু জিজ্ঞেস করল।
জিজ্ঞেস করেছিলাম কোথায় যাবি বলল পেটের তো একটা ব্যবস্থা করতে হবে।গোবিন্দ সংক্ষেপে বলল।
পেটের জন্য এই পাড়া ছেড়ে রনো চলে গেছে শুনে পিকলুর চোখ ঝাপসা হয়ে এল।সন্তোষদার উপর রাগ হয়।এমন তরতাজা সাহসী যুবক পেটের জন্য কোথায় ঘুরছে কে জানে।বিশু মান্তুকে আসতে দেখে ভাবে ওরা কি জানে ব্যাপারটা।
বিশু এসে বলল,আজ দোকান খোলেনি?
কে খুলবে?তুই কিছু শুনিস নি?
আচ্ছা গোবে কি হয়েছিল বলতো?বিশু জিজ্ঞেস করল।
কি আবার?দাদার বলেছিল দুপুরে দোকানে থাকতে হবে,কোথাও গেলে বলে যেতে হবে কোথায় যাচ্ছো।রনোটাও টেটিয়া বলে কিনা সকাল-বিকেল দোকান খুলে খদ্দের সামলানো আমার দায়িত্ব বিনিময়ে দু-বেলা আপনি খাই খরচ দেন।অন্য সময় আমি কি করি কোথায় যাই সেই কৈফিয়ত কাউকে দিতে যাব না।আমি দোকানের কর্মচারী কিন্তু আমার ব্যক্তিসত্বা কাউকে বিকিয়ে দিইনি।
এতে দোষের কি হল?রনো ভুল কি বলেছে?পিকলু বলল।
দুপুরে কোথায় যায় মান্তু তুই কিছু জানিস?বিশু বলল।
দুপুরে তোসে অফিসে থাকি রনো কোথায় যায় কি করে জানব--।
কোথায় যায় দাদাকে বলে যেতে পারতোত।গোবিন্দ বলল।
কেন দাদাকে বলে যেতে হবে কেন?পিকলু বলে,যদি বুঝতাম কোন অনৈতিক কাজ কিছু করেছে তাহলে অন্যকথা।রনোর উপর এটা জুলুম বলব।
দ্যাখ পিকআলু দাদা যা করেিছে এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার গোবের কথা শুনে মনে হল, পার্টির কোনো বিষয় নয়।এখানে আমরা কি করতে পারি তুই বল?
মান্তু বলল,মতাদর্শগত কোনো ব্যাপার হলে চুপ করে থাকার প্রশ্নই আসে না।
হ্যা রনোকে আমিও বলেছিলাম দাদার সঙ্গে বিষয়টা নিয়ে আলোচনায় বসতে--।
গোবিন্দ কথা শেষ করার আগেই বিশু বলল,রনো কি বলল?
কি বলবে আবার,ওর যা মাথা গরম আমি আর চাপাচাপি করিনি।
পিকলু বুঝতে পারে এদের বলে কিছু লাভ নেই।নিজের মনে বলে,সাহাবাবুর বাড়ীতে ছিল দাদা বুঝিয়ে-সুজিয়ে নিজের দোকানে নিয়ে এল।এবার নিজের দোকান থেকেই বে-ঘর করে দিল।
সত্যি রনোর জন্য খুব খারাপ লাগছে।আগে বাড়ী ছাড়ল এবার পাড়া ছাড়া হয়ে গেল।মান্তু বলল।
রাস্তায় অফিস ফেরতা মানুষের ভীড়,সারাদিনের কাজের শেষে বাড়ী ফিরছে।আশপাশের দোকান থেকে আলো উক পলকপচে পড়ছে কেবল বইয়ের দোকানের ঝাপ বন্ধ।ওরা কথা বলতে বলতে পার্টি অফিসের দিকে চলে গেল।
ইলিনা ব্রাউন দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখল কেউ নেই।থাকার কথাও নয়।বেলা কম হয়নি দোকান খুলতে হবে।এত চাপ একটু যদি পড়াশুনার সময় পেতো তাহলে অনু সিওর কিছু করে দেখাতো।আজ দেখা হবার সম্ভাবনা নেই।বাজারের রাস্তা দিয়ে এলে এক পলক দেখা হত।পোশাক বদলে রান্না ঘরে গেল ইলিনা ব্রাউন।চায়ের জল চাপিয়ে কালকের কাজগুলো মনে মনে ভেবে নেয়।কলেজ যাবে না বলে এসেছে,কলকাতায় ফর্ম -জমা দিতে যাবে।এক কাপ চা নিয়ে ব্যালকনিতে বসে চায়ে চুমুক দিতে থাকে।
পার্টি অফিসে দল বেধে ঢুকতে দেখে কমরেড সন্তোষ মাইতি বলল,কি ব্যাপার কমরেড দলবেধে একেবারে পার্টি অফিসে?
র-র-রনো আজ দো-দ-দ-কান খোঅরেছিসলেনি।তোতলা শিবু বলল।
হু-উ-ম একটা নতুন লোক খুজতে হবে।
কেন রনো বসবে না?পিকলু জিজ্ঞেস করল।
সন্তোষ মাইতি ঘাড় ঘুরিয়ে পিকলুকে এক নজর দেখে ভাবেন,বিষয়টা ওদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে হালকাভাবে দেখা ঠিক হবেনা।রক্ষণাত্মক অবস্থান নিয়ে বললেন,রনো কেন বসবে না সেটা রনোকে জিজ্ঞেস করো।
কিরে গোবে তোর কিছু বলার নেই?গোবিন্দকে জিজ্ঞেস করে পিকলু।
আমি কি বলব?আমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল বলল,এ পাড়া ছেড়ে চললাম।
কেন চলে যাচ্ছে কিছু বলেনি?
বলেছে ত অনেক কথা,সব আমার মনেও নেই।তোরা তো জানিস ওর কেমন মাথা গরম--।
পিকলু বুঝতে পারে গোবে আসল চেপে কথা ঘোরাতে চাইছে।
শুনুন কমরেড সবাইকে একটা কথা বলতে চাই--সন্তোষ মাইতি বললেন,এটা পার্টির আভ্যন্তরীন বিষয় নয়।রনো আমাদের পার্টির কেউ নয়।আমি চাইনা পার্টি অফিসে এই নিয়ে কোনো আলোচনা হোক।
ফোন বাজতে ইলিনা দেখল স্ক্রিনে সুপমা।এতদিন পরে কি ব্যপার?কানে লাগিয়ে বললো,হ্যালো?
কিরে তোর খবর কি?সুপমাকে মনে আছে?
আমি সহজে কিছু ভুলি না তুইও তো আর ফোন করিস না।
সংসারে এত ঝামেলা সামলাতে হয়,বিয়ে করিস নি তুই বুঝবি না।
বুঝবো না কেন,তোর ছেলে কেমন আছে?
আর বলিস না এত দুষ্টু হয়েছে কি বলব--।
বাচ্চারা ঐরকম দুরন্ত হয়,বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে,তারপর বল এতদিন পরে কি মনে করে?
তুই কি বিয়ে থা করবি না পণ করেছিস?
বিয়ে করব না তাতো বলিনি।বলেছিলাম মনের মত কাউকে নাপেলে বিয়ে করব না।
সংসারে ভাল-মন্দ সবই থাকে,একেবারে মনের মত সব হয়না।তুই কি কাউকে পেলি?
মনে হচ্ছে পেয়েছি।
কি করে সে,ব্যবসা না চাকরি?
কিছুই করেনা আপাতত তবে ইউপিএসসি পরীক্ষা দেবে।
সে কিরে কিছুই করেনা?তুই ওর সঙ্গে কিছু করিস নি তো?
ইলিনা মনে মনে হাসে।কলিং বেলের শব্দ হতে ভাবে এখন আবার কে এল। বলল,মনে হচ্ছে কেউ এসেছে এখন রাখছি পরে কথা বলব।
ইলিনা ফোন রেখে ভাবে, কাল কলেজ যাচ্ছি না ফর্ম জমা দিতে যাবো।আনুর সঙ্গে কাল দেখা হবে। ওকে এক পলক দেখার জন্য
মনটা ভীষণ আকুলি বিকুলি করছে।
দরজা খুলে চমকে ওঠে,এতো ওয়াটার ইন্সটেড অফ ক্লাউডস।এর মধ্যে দোকান বন্ধ করে এসেছে? অবাক হয়ে বলল,কি হল বেল বাজাচ্ছো কেন?তোমার কাছে চাবি নেই?
আরণ্যক চাবি এগিয়ে দিয়ে বলল,এই নেও চাবি।
ইলিনা ভ্রু কুচকে এক পলক দেখে বলল,আগে ভিতরে এসো।
লিনার কথা উপেক্ষা করে সে সাধ্য নেই।সেজন্য আসতে চায়নি।আরণ্যক ভিতরে ঢুকতে দরজা বন্ধ করে পিছন ফিরে ইলিনা জিজ্ঞেস করল,কাল পড়তে আসবে না?
মাটির দিকে তাকিয়ে আরণ্যক বলল,আমি পরীক্ষা দেবনা।
কিছু একটা হয়েছে ইলিনা অনুমান করার চেষ্টা করে কি হতে পারে। লক্ষ্য করে ভিজে বেড়ালের মত দাড়িয়ে আছে।জিজ্ঞেস করল,সিদ্ধান্ত বদলের কারণটা জানতে পারি?
আমি পাড়া ছেড়ে অনেক দূর চলে যাচ্ছি।
বউ ফেলে চলে যাচ্ছো,চমৎকার! একটু এক বন্ধুর সাথে ফোনে কথা হচ্ছিল--।
আরণ্যক চোখ তুলে বলল,মেয়ে বন্ধুু?
ইলিনা হাসিটা গিলে নিয়ে বলল,ভার্সিটিতে হস্টেলে আমার রুমমেট ছিল।বীরু সামন্তের ভাগ্নী,কেন?
এমনি বললাম।
আজই কলেজে প্রিন্সিপাল ম্যামকে বললাম আমার হাজব্যাণ্ড ইউপিএসসিতে বসছে।লজ্জায় তাদের মুখ দেখাতে পারব না।
আরণ্যকের অস্বস্তি হয় তার জন্য লিনাকে লজ্জিত হবে।অসহায়ভাবে বলল,কি করব সন্তোষ মাইতি আমাকে কাজ ছাড়তে বাধ্য করেছে।
এতো ব্লেসিং ইন ডিসগাইজ।এবার দিনরাত এককরে পড়বে।যাও পড়তে বোসো আমার অনেককাজ কাজ আছে।ইলিনা রান্না ঘরে চলে গেল।আরণ্যক কি করবে দাড়িয়ে ভাবতে থাকে।
 
Top