• If you are trying to reset your account password then don't forget to check spam folder in your mailbox. Also Mark it as "not spam" or you won't be able to click on the link.

Thriller বজ্রাঘাত

soukoli

Member
389
58
29
৩৭।।

কাজল থাকতেই তাড়াতাড়ি করে স্নান সেরে নিয়েছিল পৃথা, অর্নব আজকে আর ঠান্ডা জলে স্নান করতে দেয়নি ওকে, বারবার করে গিজারের জলে স্নান করতে বলে দিয়েছিল, করেও ছিল ও, অন্যথা করেনি অর্নবের কথার, শুনেছিল… আর শুনবে নাই বা কেন… আজ সকালটা যে বড়ই মধুর করে শুরু হয়েছে তার… ঘুম ভেঙেছে নববধূর মত সারা শরীরে আদর মেখে…

কাজল বেরিয়ে যেতেই আর সময় নষ্ট করে নি পৃথা, তৈরী হতে থেকেছে অফিস যাবার জন্য… আয়নার সামনে দাড়িয়ে তম্বী দেহের ওপরে শাড়ীর প্লিটটাকে ঠিক করতে অর্নবের উদ্দেশ্যে মুখ না তুলেই বলে ওঠে, ‘এই, আমার ফোনটা একটু অন করে দাও না গো… সেই কাল আসার সময় বন্ধ করে দিয়েছিলাম, তারপর ভুলেই গিয়েছি অন করতে, চার্জেও বসাই নি, কে জানে চার্জ আছে কি না…’

অর্নব এক মনে চুপ করে বিছানায় বসে পৃথার শাড়ী পরা দেখছিল… সুঠাম শরীরটায় কি অদ্ভুত ভাবে পেঁচিয়ে ধরেছে গাঢ় সবুজ রঙের শাড়ীটা… ফর্সা দেহে গাঢ় সবুজ রঙটা খুব ভালো মানিয়েছে… তারিয়ে তারিয়ে পৃথার তারুণ্যে ভরা শরীরটাকে চোখ দিয়ে উপভোগ করছিল অর্নব… মনে পড়ে যাচ্ছিল এই কিছু ঘন্টা আগেও ওই নরম শরীরটাকে নিজের দেহের নীচে নিয়ে নিষ্পেশিত করেছে মনের সুখে… শাড়ী পরার সময় পৃথা কখনো পাশের দিকে ফিরে দাঁড়াচ্ছে, আবার কখনও পেছন ফিরে, অথবা সাজের প্রয়োজনে তারই সামনে… তাই বিছানায় বসেই সে পৃথার দেহের প্রতিটা ভঙ্গিমার রূপ মনের ফ্রেমে আটকিয়ে নিচ্ছিল অপলক চোখে…

হিলহিলে চেহারাটাকে শাড়ীটা সাপের মত পেঁচিয়ে ধরে রেখেছে যেন… আর ওই ভাবে টাইট করে শাড়ী পরার কারণে শাড়ীর ওপর দিয়েই দেহের প্রতিটা চড়াই উৎরাই স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে… কল্পনার কোন অবকাশই রাখে নি কোথাও… স্ফিত উত্তল নিতম্ব, সঠিক পরিমাপের বুক, আর সেই সাথে গাঢ় রঙের সাথে ফর্সা চামড়ার অদ্ভুত কন্ট্রাস্ট… চোখ সরানোই যেন সম্ভব নয় এই দেহের ওপর থেকে… শাড়ীর কুঁচিটা নাভীর ঠিক নীচে, দুই পাশ থেকে শাড়ীর পাড়টা একটু তেরচা হয়ে কোনাকুনি হারিয়ে গিয়েছে সেই গভীর নাভীর তলা দিয়ে, শাড়ীর কুঁচির মধ্যে… প্লিট করে রাখা আঁচলের তলা থেকে উঁকি দিচ্ছে ব্লাউজের মধ্যে আবধ্য সুগোল একটা স্তনের পার্শদিক… ব্লাউজটার পীঠের দিকে খুব বেশী কাটা না হলেও, পীঠের তিলটা এমন জায়গায় পড়েছে, যে ওটার ফলে যেন আরো বেশি করে লোভনীয় হয়ে উঠেছে ফর্সা মসৃণ গোটা পীঠটাই…

‘কোই… মোবাইলটা অন করলে? নাকি হাঁ করে আমাকেই শুধু গিলে যাবে?’ ট্যারা চোখে অর্নব যেখানটায় বসে থাকতে পারে, সেই দিকটার দিকে আন্দাজ করে তাকিয়ে বলে পৃথা…

‘অ্যা… হ্যা… এই তো… দিচ্ছি অন করে…’ পৃথার তাড়া খেয়ে তাড়াতাড়ি করে বিছানার থেকে নেমে দাঁড়ায় অর্নব… ‘কোথায় রেখেছ তোমার মোবাইলটা?’ প্রশ্ন করে সে…

শাড়ীর আঁচলটাকে কোমর থেকে পেঁচিয়ে ঘুরিয়ে গুঁজে দেয় কোমরের মধ্যে… আয়নায় শেষ বারের মত ভালো করে নিজের সাজটা দেখে নিতে নিতে বলে, ‘দেখই না… মনে হয় ব্যাগের মধ্যেই রয়েছে, কালকে তো আর ফেরার পরে বেরও করি নি…’

‘তোমার ব্যাগের মধ্যে?… হাত দেবো?’ ইতস্থত করে অর্নব।

কথাটা শুনে মুখ তোলে পৃথা… বক্র ভুরুতে কপট রাগ ফুটিয়ে বলে ওঠে, ‘বাব্বা, আমার ব্যাগে হাত দেবে, তাতেও বাবুর এত কুন্ঠা… অন্য কোন পেত্নীর ব্যাগ বললে এক্ষুনি ছুটে গিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিতো…’

কাঁচুমাচু মুখ করে জবাব দেয় অর্নব, ‘মেয়েদের ব্যাগ বলেই ইতস্থত করছিলাম… এখানে অন্যের ব্যাগের কথা কোথা থেকে এলো?’

‘জানি জানি… সুযোগ পেলেই আর একটা পেত্নীকে চাইবে তখন… চিনি না আবার?’ ছদ্ম রাগ সরায় না মুখ থেকে পৃথা… মজা লাগে অর্নবের পেছনে লাগতে…

‘মোটেই না… আমাকে কি সেই রকম মনে হয় নাকি তোমার?’ অর্নবের গলার স্বরটা ভেসে আসে ড্রইংরুমের থেকে…

সেটা শুনে গলা তুলে পৃথা বলে ওঠে, ‘সেটা তো আমি এসে পড়েছি বলে আর হলো না, নয়তো কোন পেত্নীকে ফ্ল্যাটটা ভাড়া দিতে, আর তারপর তার ঘাড়ে চেপে বসতে…’

এবার আর কোন জবাব আসে না ও ঘর থেকে… তাতে পৃথা এবার সত্যিই ক্ষেঁপে যায়, উত্তর না পেয়ে… ‘কি হলো? মনের মত কথা বললাম বলে কি চুপ করে গেলে?’ বলে ওঠে সে।

তাও কোন উত্তর নেই… তা দেখে এবার নিজেই এগিয়ে যায় ড্রইংরুমের দিকে… দরজা পেরোতেই চোখে পড়ে ঘরের মাঝে তার ফোনটাকে শূণ্যে ভাসতে… অন্য কেউ হলে নির্ঘাত আঁতকে উঠতো… ভাবতেই ফিক করে হেসে ফেলে পৃথা, ভেতরে জমা বিরক্তিটা উধাও হয়ে যায় সেই সাথে…

পৃথাকে বেডরুম থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে বলে ওঠে অর্নব, ‘তুমি একবার বাড়িতে ফোন করো তো!’

হটাৎ করে অর্নবের গলার স্বর সিরিয়াস হয়ে যেতে ভুরু কুঁচকে যায় পৃথার, উদ্বিগ্ন গলায় প্রশ্ন করে, ‘কেন গো? এনিথিং রং?’

‘বুঝতে পারছি না… প্রায় গোটা চল্লিশেক মিসড্‌ কল… তোমার বাপীর… একবার ফোন করো তো…’ ফোনটা পৃথার দিকে বাড়িয়ে দিতে দিতে বলে অর্নব।

তাড়াতাড়ি করে ফোনটা হাতে তুলে নেয় পৃথা, কল লিস্টএ দেখে সত্যিই চল্লিশটা মিসড্‌ কল দেখাচ্ছে… ভয় পেয়ে যায় সে… ত্রস্ত চোখে তাকায় অর্নবের পানে… ভীত গলায় জিজ্ঞাসা করে, ‘এতবার ফোন করেছে বাপী… কোন বিপদ হলো না তো?’

‘সেই জন্যই তো বলছি, আগে টেনশন না করে ফোনটা করো… দেখো কেন এত বার ফোন করেছে…’ আস্বস্থ করার চেষ্টা করে অর্নব পৃথাকে।

‘বড্ডো ভুল হয়ে গেছে গো… আমি সাধারণতঃ ফোন কখনো বন্ধ করি না, কালকেই বন্ধ করে দিয়েছিলাম… কি হলো বলো তো…’ বাবার নাম্বার ডায়াল করতে করতে বলে পৃথা, গলার স্বরে উদ্বেগ মিশে থাকে…

ফোনের মধ্যে বীপ…বীপ… শব্দ শোনা যায়, কল লাগে না কিছুতেই… আরো টেনশনে পড়ে যায় পৃথা… বার বার করে ট্রাই করে ফোন লাগাবার… যত সময় গড়ায়, ততই যেন মলিন হয়ে ওঠে তার মুখ।

হটাৎ করেই কল লেগে যায়… রিং হয় ফোনের ওই প্রান্তে… তাড়াতাড়ি করে পৃথা বলে ওঠে, ‘হ্যালো বাপী?’

ওপাশ থেকে উত্তর আসে, ‘নারে… আমি ছোটকা বলছি…’

‘ও তুমি? আমি আসলে বাপীর মিসড্‌ কল দেখে রিং ব্যাক করলাম… কেমন আছো ছোটকা? তোমার সাথে কতদিন কথা হয়নি… ভালো আছো তো? তাও তো বাপী মায়ের সাথে রোজ কথা হয় আমার, তোমার সাথে তো কথাই হয় না… করতে পারো তো ফোন মাঝে মাঝে… ইশ… ভুলেই গেছ তিতিরকে, না?’ অভিমান ঝরে পৃথার গলার স্বরে।

‘না রে… সেটা নয়… আসলে বুঝিস তো, আমি একটু অন্য ধরণের মানুষ, ওই সব লোকলৌকিকতা ঠিক আসে না আমার… যাক, তোর শরীর কেমন আছে… বৌদির কাছে শুনেছিলাম তোর নাকি জ্বর হয়েছিল… এখন ভালো আছিস তো?’ প্রশ্ন করেন পৃথার ছোট কাকা।

‘হ্যা গো… এক দম ফিট এখন… এই তো অফিসের জন্য রেডি হচ্ছিলাম…’ উত্তর দেয় পৃথা, মনে মনে বলে তোমার জামাই আমাকে এত যত্নে রেখেছে, সেখানে আমি ফিট না থেকে পারি? ভাবতেই হাসি খেলে যায় ঠোঁটে, লালের আভা লাগে গালের ওপরে… মনে পড়ে যায় ভোরের আদর…

ভাবতে ভাবতেই ফিরে মনে পড়ে যায় পৃথার… ঠোঁটের ওপর থেকে লেগে থাকা স্মিত হাসিটা মুছে যায় তার… ‘আচ্ছা ছোটকা, তোমার কাছে বাপীর ফোনটা কেন? আর বাপীই বা এতবার ফোন করেছিল কেন গো?’ উদ্বিগ্ন গলায় প্রশ্ন করে সে।

‘হ্যা… মানে তোকে বলার জন্যই ফোন করেছিলাম… আসলে কি হয়েছে জানিস…’ বলতে বলতে চুপ করে যান পৃথার ছোট কাকা…

তাকে এই ভাবে কথার মাঝে চুপ করে যেতে মনের মধ্যে একটা শঙ্কা চেপে বসে যেন… বুকের মধ্যেটায় ধকধক করে ওঠে তার… হাতের মুঠোয় মোবাইলটাকে আঁকড়ে ধরে জিজ্ঞাসা করে, ‘কি হয়েছে ছোটকা… চুপ করে গেলে কেন?’

সাথে সাথে উত্তর আসে না কোন… বোঝাই যায় একটু ইতস্তত করছে পৃথার কাকা উত্তর দিতে গিয়ে… তারপর ধীর কন্ঠে বলেন, ‘আসলে ফোনটা কাল আমিই তোকে করেছিলাম… বড়দাকে গতকাল রাতে নার্সিংহোমে ভর্তি করতে হয়েছে…’

কথাটা শুনেই শেষ করতে দেয় না পৃথা, চেঁচিয়ে ওঠে প্রায় ফোনের মধ্যেই… ‘কী? বা… বাপীর কি হয়েছে বললে? নার্সিংহোম… কেন?’ থরথর করে কেঁপে ওঠে পৃথার শরীরটা অজানা ভয়ে…

‘না, না, এত ব্যস্ত হোস না… এখন ঠিক আছে… আসলে…’ বোঝাতে যান উনি।

প্রায় ছিনিয়ে নেয় কথাটা কাকার মুখ থেকে পৃথা… কাঁদো কাঁদো গলায় বলে সে, ‘কি হয়েছে আমার বাপীর… বলো না গো ছোটকা… আমার বাপী কি নেই?…’ বলতে বলতে হাউহাউ করে কেঁদে ওঠে সে…

পৃথাকে এই ভাবে ভেঙে পড়তে দেখে তাড়াতাড়ি করে এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে অর্নব… টেনে নেয় তাকে নিজের বুকের মধ্যে… হাত রাখে পীঠের ওপরে… পৃথা মুখ তুলে তাকায় অর্নবের না দেখা মুখের পানে… চোখ ভর্তি জল টলটল করে তার… অর্নবের বুকের মধ্যে ফোঁপায় সে…

কানে আসে তার ছোটকাকার কন্ঠস্বর… ‘দূর বোকা মেয়ে… এত ভেঙে পড়ছিস কেন? আমি কি তাই বললাম… আগে থাকতে বাজে বাজে কথা ভেবে বসিস… আরে এখন তো আর বিপদ নেই… ঠিক আছে বড়দা…’

এক হাত দিয়ে মোবাইলটাকে কানে ধরে অন্য হাত দিয়ে খামচে ধরে অর্নবের হাত… ভাঙা গলায় প্রশ্ন করে পৃথা, ‘ঠিক বলছো ছোটকা… বাপী ঠিক আছে… কিচ্ছু হয় নি তো বাপীর… তুমি ঠিক বলছো তো?’ প্রশ্ন করার ফাঁকে মুখ তুলে তাকায় সে, যেন মনের মানুষটার কাছ থেকেও আস্বস্থ হতে চাইছে… যেন ওই মানুষটাই ঠিক বলতে পারবে যে ভয়টা তার অমূলক কিনা…

‘হ্যা রে তিতির, বললাম তো… তোর বাপী এখন ঠিক আছে… তবে হ্যা, এখনও ICCUতে আছে, তবে আগের বিপদটা আর নেই…’ আস্বস্থ করার চেষ্টা করেন ভদ্রলোক।

‘কি… কি হয়েছিল বাপীর?’ অর্নবের হাত ছেড়ে চোখ মুছতে মুছতে প্রশ্ন করে পৃথা, প্রথম দিকের ঝটকাটা খানিকটা সে কাটিয়ে ওঠে বাপী ভালো আছে শুনে…

‘একটা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট মত হয়েছিল কাল রাতে… আমরা সাথে সাথেই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে বড়দাকে নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছিলাম, তাই এই যাত্রায় তেমন কোন খারাপ কিছু ঘটে যায় নি…’ বলেন পৃথার ছোটকাকা… তারপর একটু থেমে প্রশ্ন করেন উনি, ‘তুই কি একবার আসতে পারবি? না, না, তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই… জানি এক্ষুনি আসা সম্ভবও নয়, টিকিটই বা পাবি কি করে, তবে পারলে দেখ যদি আসতে পারিস… তোর কথা বলছিল খুব…’

তার কথা বলছিল শুনে ফের বুকের ভেতরটা টনটন করে ওঠে পৃথার… বলে সে, ‘আমি দেখছি ছোটকা… দেখছি আমি… যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি আসছি… তুমি বাপীর সাথে থেকো, হ্যা… দেখো বাপী কে… আমি আসছি…’ তারপরই হটাৎ করে মনে পড়ে যেতে জিজ্ঞাসা করে, ‘ছোটকা, মা… মা কেমন আছে গো… মা ঠিক আছে তো?’

‘হ্যা রে মা, বৌদি ঠিক আছে… বাড়িতেই আছে, আর তাছাড়া তোর কাম্মাও তো রয়েছে বৌদির সাথে, তুই ভাবিস না কিছু…’ আস্বস্থ করেন ফের পৃথাকে… ‘তাহলে ছাড়ি তিতির… তুই সাবধানে আসিস… আর আসার ঠিক হলে একবার আমাকে ফোন করে দিস, কেমন?’

‘আ…আচ্ছা ছোটকা… আমি দেখছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি আসছি… তুমি একটু বাপীকে দেখো, কেমন?’ বলতে বলতে চিন্তায় পাংশুটে হয়ে যায় তার মুখ… শোনে ওপাশ থেকে তার ছোটকাকার ফোন কেটে দেবার আওয়াজ।

ফোনটাকে হাতের মুঠোয় ধরে রেখে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে অর্নবের বুকের মধ্যে মাথা রেখে… চোখ দিয়ে সরু ধারায় জল গড়ায়… অন্য হাতে খামচে ধরে রাখে অর্নবের হাতটাকে… অর্নব হাতের আলিঙ্গনে ধরে রাখে পৃথাকে নিজের বুকের সাথে সাঁটিয়ে… যেন তার ভেতরের প্রাণশক্তিটাকে ঢেলে দেবার চেষ্টা করে পৃথার বুকের মধ্যে…

‘হ্যা গো… বাপী ঠিক আছে… তাই না গো?’ ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করে পৃথা, প্রশ্নের মধ্যেও যেন একটা অজানা আশঙ্কা মিশে থাকে তার…

‘কিচ্ছু হবে না তোমার বাপীর… দেখো… একদম ভালো আছেন উনি… তুমি কিচ্ছুটি চিন্তা করো না…’ আশ্বাস দেয় অর্নব পৃথার মাথার চুলে চুমু খেয়ে… তারপর পৃথাকে ধরে সোফার ওপরে বসিয়ে দিয়ে বলে, ‘তুমি অফিসে একটা ফোন করো… বলো আজই তুমি বাড়ি যাচ্ছ… তোমার বাপীর ব্যাপারটা খুলে বলো… বলে ছুটি নাও বেশ কয়’একদিনের…’

ভেজা চোখে মুখ তুলে তাকায় পৃথা… ‘কি করে? কি করে যাবো আমি?’ অসহায়এর মত প্রশ্ন করে সে…

পৃথার মাথাটা টেনে নেয় নেয় অর্নব নিজের কোলের ওপরে… বলে, ‘আমি আছি তো… চিন্তা করছো কেন… তুমি অফিসে ফোন করে বলে দাও শুধু যে আজকেই তুমি বাড়ি চলে যাচ্ছ…’

‘কিন্তু কি করে অর্নব? আমি যে সেই রকম কিছু জানি না এখানকার… কোথায় টিকিট কাটবো, কিসে যাবো…’ হতাশ গলায় বলে পৃথা।

‘আমি আছি তো!’ পৃথার কাঁধে হাতের চাপ দিয়ে ভরসা দেয় অর্নব, ‘তুমি অফিসে শুধু ফোনটা করো, আমি এদিকটা দেখছি… এত ভেঙে পড়ো না…’

‘অর্নব…’ ধরা গলায় ডাক দেয় পৃথা…

‘বলো না সোনা… কি হয়েছে?’ হাত রাখে মাথার ওপরে পৃথার…

‘বাপী…’ আর কিছু বলতে পারে না সে, গলা বুজে যায় আবেগে…

পৃথার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে অর্নব… দুহাতে জড়িয়ে ধরে বলে, ‘কেন এখনই এই সব আজে বাজে চিন্তা করছো বলো তো… তোমার বাপীর কিছু হতেই পারে না… গিয়ে দেখবে সব ঠিক আছে…’

‘তুমি যাবে না আমার সাথে?’ শূন্যের পানে হাত বাড়ায় পৃথা… খামচে ধরে অর্নবের কাঁধটাকে…

‘তোমার আগে যাবার ব্যবস্থাটা করি, তারপর আমার কথা…’ বলতে বলতে ফের উঠে দাঁড়ায় সে… ‘তুমি ফোনটা করো, আমি আসছি…’

‘আমায় ছেড়ে যেও না গো… আমার কাছেই থাকো না…’ কাতর মুখে তাকায় পৃথা… খানিক আগের করা মুখের সব মেকাপ ততক্ষনে একেবারে ঘেঁটে গিয়েছে চোখের জলে… চোখ মুখ শুকিয়ে গিয়েছে এই কয়’এক মুহুর্তেই উদ্বিগ্নতায়…

‘আমি আছি তো সোনা… আমি আছি… ঘরেই আছি…’ আস্বস্থ করে অর্নব তার প্রিয়াকে…

আর কথা বাড়ায় না পৃথা, মোবাইলটা তুলে ডায়াল করতে থাকে অফিসের নাম্বারে… অর্নবও ওর থেকে সরে গিয়ে এগিয়ে যায় টেবিলের দিকে, যেখানে ওর মোবাইলটা রাখা আছে, ডায়াল করে প্রণবকে…



৩৮।।

বাগডোগরা এয়ারপোর্ট থেকে পৃথা একটা গাড়ি ভাড়া করে সোজা পৌছে যায় বাড়ি… দরজায় বেল টিপে অপেক্ষা করতে থাকে সে… মনের মধ্যে নানান আশঙ্কা ছেয়ে থাকে তার…

প্রণবকে বলে অর্নব ওর জন্য ফ্লাইটের টিকিটের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল সকালেই… ওদের অফিসের এজেন্টকে দিয়ে, তাই কোন অসুবিধাই হয়নি সন্ধ্যের ফ্লাইট ধরতে… প্রণব আর অর্নব পৃথাকে কলকাতার এয়ারপোর্টএ পৌছিয়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে রওনা হয়ে গিয়েছে শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে… পৃথা চেয়েছিল অর্নবও ওর সাথেই ফ্লাইটে আসুক, কিন্তু শেষে বুঝেছিল যে সেটা সম্ভব নয়, অর্নব এই ভাবে ঢুকবে কি করে এয়ারপোর্টের মধ্যে? তাই শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়েছিল প্রণব আর অর্নব গাড়িতে শিলিগুড়ি পৌছাবে, আর পৃথা তার আগেই ফ্লাইটে বাড়ি চলে আসবে… কারণ পৃথার পৌছানোটার প্রয়োজন অনেক বেশি…

সুশান্ত পৃথার বাবার কথাটা শুনে একবার চেষ্টা করেছিল বলতে যে সে সাথে যাবে, কিন্তু যখন দেখে যে পৃথা রাজি নয় তাকে সঙ্গে নেবার, আর দ্বিরুক্তি করে নি সে, পিছিয়ে গিয়েছে… শুধু বন্ধুত্বর খাতিরে বলেছিল, ‘যদি দরকার লাগে, সাথে সাথে আমাকে একটা ফোন করে দিস, আমি যা হোক করে পৌছে যাবো তোর ওখানে…’

মাথা নেড়ে শায় দিয়েছিল পৃথা… কারণ সে জানতো অর্নব থাকার পর আর কারুর তার পাশে থাকার প্রয়োজন হবে না…

বাড়ি আসার পর থেকে কোথা থেকে যেন ঝড়ের মত সময় বয়ে যায় পৃথার… দিনরাত এক হয়ে যায় নার্সিংহোম বাড়ি আর বাড়ি নার্সিংহোম করে… জলের মত টাকা খরচ হতে থাকে… কিন্তু তার এতটুকুও আঁচ লাগে না পৃথার বা তার বাড়ির কারুর গায়ে… ঢালের মত তাকে আগলে রাখে প্রণবেকে সামনে রেখে সেই অদৃশ্য মানুষটা… এতটুকুও খামতি হতে দেয় না পৃথার বাবার চিকিৎসায়… একটু একটু করে সুস্থ হয়ে ওঠেন পৃথার বাবা… হাঁফ ছাড়ে সকলে।

প্রণবরা এই ক’দিন একটা হোটেলের ডবল বেডেড রুম বুক করে নিয়েছিল, সেখানেই ছিল দুই বন্ধু… ছিল বলতে এক প্রকার এসে স্নান করে খেয়ে যাওয়া… তা নয়তো রাতদিন থেকেছে দুই জনেই পৃথার সাথে, নার্সিংহোমে…

দিন সাতেক পর ছাড়া পান পৃথার বাপী নার্সিংহোম থেকে, পৃথারা তাকে বাড়ি নিয়ে আসে… ডাক্তার বারবার করে তাদের সাবধান করে দিয়েছে কোন ভাবেই যেন বেশি স্ট্রেসড্‌ না নিতে হয় তাঁকে… সেই মতই তাকে খুব সাবধানে রাখা হয়েছে নিজের ঘরে… একান্ত প্রিয়জন ছাড়া কাউকেই খুব একটা আসতে দেওয়া হচ্ছে না দেখা করতে… শুধু শুধু যাতে ধকল না পড়ে ওনার ওপরে…

বাবাকে গুছিয়ে দিয়ে মায়ের কাছে যায় পৃথা… ‘এবার তুমিও একটু রেস্ট নাও তো… অনেক ধকল গেলো তোমার ওপর দিয়ে…’

এই কয় দিন সত্যিই ভদ্রমহিলার ওপর দিয়ে যথেষ্ট ধকল গিয়েছে… সন্তান দূরে থাকলে যে কি হয়, সেটা উনি বুঝে গেছেন… তাই সেটা ভেবে আরো বেশি উদ্বিগ্ন তিনি… ধীরে ধীরে বয়স বাড়ছে তাদের… তাই আজ না হয় সামলে নিয়েছেন সবাইকে পাশে পেয়ে, কিন্তু ভবিষ্যতেও যে এই ঘটনা ঘটবে না, তারই বা নিশ্চয়তা কি? এবারে যেমন ঠিক সময় পৃথাকে ফোনে পাওয়া যায় নি… তবুও পাশে তাঁর ছোট দেওয়র ছিল, তাই রক্ষে পেয়েছে পৃথার বাবা এ যাত্রায়, কিন্তু যদি না থাকত? তখন কি করতেন উনি? ভাবতেই হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে যেন ওনার… পৃথা কাছে এসে বসতেই ধীর স্বরে বলেন, ‘তুই আর ফিরে যাস না তিতির… দেখলি তো কি কান্ডটা ঘটে গেলো… এর পরও আমাদের ফেলে চলে যাবি?’ চিন্তার ছাপ পড়ে ওনার মুখে।

পৃথা এগিয়ে গিয়ে মায়ের পাশে গিয়ে বসে, হাতের মধ্যে মায়ের হাতটাকে তুলে ধরে বলে, ‘কিন্তু মা, এই ভাবে এখানে বসে থেকেও তো চলবে না আমার… না গেলে হবে বলো?’

‘কেন যাবি? কিসের জন্য? টাকার কি দরকার আমাদের? তোর বাবার কি অভাব পড়েছে যে তোকে চাকরি করে আমাদের খাওয়াতে হবে?’ অভিমান মেশানো গলায় বলেন পৃথার মা।

‘আমি কি টাকার জন্য চাকরী করতে গিয়েছি মা? বাপীর যা আছে, আমি জানি তাতে আমার চাকরী করার কোন প্রয়োজনই নেই… কিন্তু সেটা তো বড় কথা নয়… আমারও স্বনির্ভরতা থাকার দরকার, তাই না? বলো তুমি?’ মায়ের হাতের ওপরে চাপ দিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা।

‘আমি ওসব স্বনির্ভরতা টিরভরতা বুঝি না… বাড়ির মেয়ে বাড়ি থাকবে না, সেটাই আমার কাছে সব থেকে বাজে ব্যাপার… কি ভাবে থাকিস বলতো মা… কে জানে ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করিস কিনা, এই তো শুনলাম জ্বরে পড়েছিলিস… তুই বল, মায়ের মন শায় দেয় এই সব দেখে?’ বলতে বলতে মুখ ভার হয়ে ওঠে পৃথার মায়ের… ‘এবার তোর একটা বিয়ে দিয়ে দেবো আমি… তোর বাপী একটু সুস্থ হোক, আমি ঠিক তোর বিয়ে দিয়ে দেবো…’

‘আমি কি বিয়ে করে বর নিয়ে তোমার কাছেই থাকবো?’ হাসতে হাসতে বলে পৃথা… হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে মাকে নিজের বুকের মধ্যে…

‘না, তা নয়…’ আমতা আমতা করেন উনি।

‘তাহলে? তাহলে আমাকে বিয়ে দিয়ে দিলে তো সেই অন্য জায়গাতেই গিয়ে থাকবো, তাতে আর তোমাদের কি সুরাহা হবে, হু?’ মায়ের চিবুকটা আঙুলে তুলে বলে সে।

‘জানি যা…’ পৃথার হাত থেকে মুখটা সরিয়ে নেন… ‘তবুও তো জানবো যে আমাদের মেয়ে কারুর হাতে রয়েছে, ভালো রয়েছে, তাতেও তো খানিকটা নিশ্চিন্দে থাকতে পারবো…’

‘এখনই যে নেই, তাই বা কে বললো তোমায়?’ চোখের তারায় কৌতুক ঝরে পড়ে পৃথার… মনের মধ্যে অর্নবের নামটা ভেসে ওঠে তার… বুকের মধ্যেটায় কেমন ঢিপঢিপ করে ওঠে অকারণেই…

‘সে যাই বল, একা তো থাকিস… তাই কতটা ভালো থাকতে পারিস সে আমার জানা আছে…’ মুখে ফেরে আদরের মেয়ের জন্য চিন্তার ছায়া…

‘আমি একা থাকি কে বলল তোমায়?’ হাসে পৃথা মিটি মিটি…

‘মানে? আমি তো জানি তুই একাই থাকিস… একলা একটা ফ্ল্যাটে… সেই রকমই তো শুনেছিলাম… আবার কে জুটেছে?’ চিন্তা বাড়ে মায়ের মুখে।

‘আরে, কাজল আছে তো…’ তাড়াতাড়ি করে বলে ওঠে পৃথা, বুঝতে পারে মায়ের মন চিন্তায় আরো বেশি করে উতলা হয়ে উঠছে… ‘খুব ভালো মেয়েটা, জানো মা, আমার হাতে হাতে সব কাজ করে দেয়… ওকে তো প্রণবদাই এনে দিয়েছে, আগেও ওই ফ্ল্যাটেই কাজ করতো, খুব বিশ্বাসী মেয়েটা… আর ভিষন ভালো…’

‘সেটা কথা নয় মা, একটা কাজের লোকের হাতে আমি আমার মেয়েকে ছেড়ে রাখবো, সেটা হয়? তুই কি সেই ভাবে মানুষ হয়েছিস? বলতো তিতির? শেষে আমার এত আদরের মেয়ে কাজের লোকের ভরসায় দিন কাটাবে, আমি বেঁচে থাকতে? না, না, এটা হয় না… আমি তোর বাপীর সাথে কথা বলবো, এর একটা বিহিত করতেই হবে আমায়…’ মাথা নেড়ে বলে ওঠেন পৃথার মা… মুখ পরিষ্কার চিন্তার ছায়া ঘনায় আরো…

‘আরে, তুমি এত ভাবছ কেন আমায় নিয়ে, আমি ঠিক আছি ওখানে… আমার কোন অসুবিধা হচ্ছে না… তুমি বিশ্বাস করো…’ মাকে বোঝাবার আপ্রাণ চেষ্টা করে পৃথা…

‘সে তুই যাই বল, আমি এবার তোর একটা বিয়ে দেবোই… আমি দেখছি তোর ছোটকার সাথে কথা বলে, তোর মামাকেও বলবো একটা ছেলে দেখতে…’ হাত নেড়ে বলে ওঠেন উনি।

‘আচ্ছা, মা, বাপীর এখন এই অবস্থা, এখনই তোমার এই সব চিন্তা মাথায় এলো? কি যে করো না…’ মায়ের কথা ঘোরাবার চেষ্টা করে পৃথা…

‘না, না, সে তুই যাই বলিস তিতির, আমি তোর বাপীর সাথে কথা বলেছি আগেই… উনিও রাজি আমার সাথে, তোর এবার একটা বিয়ে দেবার দরকার… আর তোকে একা একা আমি ফেলে রাখতে চাই না…’ জেদ ধরে রাখেন ভদ্রমহিলা।

‘উফ… তুমি চাইলেই কি হবে নাকি… আমি এক্ষুনি বিয়ে করতে চাই না যে… এই তো সবে চাকরীতে জয়েন করলাম…’ ফের বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা…

‘এই তিতির, তুই একটা আমাকে সোজা সাপটা কথা বলতো… তুই কি কাউকে পছন্দ করেছিস নাকি? তা সেটাই বল… তাকেই না হয় নিয়ে আয়… দেখি কে… এই ভাবে না না বলে যাচ্ছিস কেন?’ চেপে ধরার চেষ্টা করেন পৃথার মা মেয়েকে…

মায়ের কথায় সহসা কাল লাল হয়ে যায় যেন পৃথার… গালের ওপরে লালীমার আভা লাগে… মাথা নীচু করে নেয় সে…

মায়ের নজর এড়ায় না… মেয়ের দিকে ভালো করে ঘুরে বসে হাত রাখেন পৃথার কাঁধে, ‘কে রে তিতির? তোর ব্যাঙ্কেরই কেউ? তা এতদিন বলিস নি কেন? আমরা কি সেই রকম বাবা মা তোর?’ বলতে বলতে মেয়ের চিবুক ধরে মুখটা তুলে ধরেন ওপর দিক করে…

মায়ের চোখে চোখ রাখতে লজ্জা লাগে পৃথার, ঢোক গেলে সে… ‘না, মানে সেটা নয়…’

‘সেটা যে নয়, সেটা তো আমি বুঝছি… কিন্তু কোনটা… সেইটা তো আমায় বল…’ গলার স্বরে স্নেহ ঝরে পড়ে ভদ্রমহিলার…

‘আচ্ছা মা, তোমার জামাইয়ের যদি আগে একটা বিয়ে হয়ে থাকে, তুমি মেনে নিতে পারবে?’ চোখ ভরা ভীতি নিয়ে প্রশ্ন করে পৃথা।

‘আমার মেয়ে যদি তাকে নিয়ে সুখি হয়, না মেনে নেবার কি আছে রে? আমার কাছে আমার মেয়ের সুখটাই বড়, আর কিছু লাগে না আমার… সে গরীব না বড়লোক, তার আগে বিয়ে হয়েছে কি হয়নি সেটা আমার কাছে প্রয়োজনীয় নয়… যেটা প্রয়োজনীয় সে আমার মেয়েকে সুখি রাখতে পারবে কি না… সেটাই জানার দরকার…’ পৃথার কপালে স্নেহের চুম্বন এঁকে দিয়ে বলেন ভদ্রমহিলা।

‘ওহ! মা গো… তুমি কি ভালো… তুমি আমার বেস্ট মা ইন দ্য ওয়ার্ল্ড…’ মা কে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে পৃথা… সারা মুখটা খুশিতে ঝলমল করে ওঠে তার…

পৃথার মাও পৃথাকে জড়িয়ে রাখেন নিজের বুকের মধ্যে… পীঠের ওপরে হাত বোলান আদরের… ‘তা হ্যা রে মা, কি করে ছেলেটা?’ প্রশ্ন করেন তিনি।

‘ব্যবসা… খুব বড় একটা ফ্যাক্টারী আছে কেমিকালএর… ও এখানকার ছেলে নয়, ওর বাড়ি ছত্তিসগড়ে… কিন্তু জানো মা, ওর না কেউ নেই… আগে কানাডায় থাকতো, ওখানেই বিয়ে করেছিল, কিন্তু ওর আগের বউএর ক্যান্সার হয়েছিল, মারা গিয়েছিল, তারপর থেকে ও এখানে, মানে কলকাতাতেই থাকে… আমি তো ওর ফ্ল্যাটেই থাকি ভাড়া…’ আবেগে যেন সব বলতে ইচ্ছা করে পৃথার, তার মাকে… এতদিন এই সব বলতে না পেরে যেন হাঁফিয়ে উঠেছিল সে মনে মনে… আজ সব উগরে দিতে চায় মায়ের কাছে…

‘কেউ নেই বলছিস… সব দিক দেখে নিয়েছিস তো… আর কিছুই না, আজকাল যা সব শুনি…’ মনের মধ্যে একটু শঙ্কার বাসা বাঁধে কোথাও…

‘হ্যা মা, আমি সব দিক দেখে শুনে তবেই এগিয়েছি… বড্ডো ভালো ছেলে… একটু বয়স বেশি ঠিকই, কিন্তু আমাকে ভিষন সামলে রাখে… এই যে বাপীর চিকিৎসার টাকা, সব তো ওই দিয়েছে, ওর বন্ধুর হাত দিয়ে…’ মাকে বলতে পেরে যেন নিজেকে খুব হাল্কা লাগে পৃথার।

‘ও… ওই ছেলেটি… প্রণবদা প্রণবদা করছিলিস যাকে?’ জিজ্ঞাসা করেন পৃথার মা…

‘হ্যা… ওই তো অর্নবের বন্ধু… ওর ব্যবসার পার্টনারও… আমাকে এখানে আসার টিকিট যোগাড় করে আমাকে প্লেনে তুলে দিয়ে শিলিগুড়ি চলে এসেছে, যাতে বাপীর চিকিৎসার কোন অসুবিধা না হয় দেখতে…’ উজ্জল মুখে উত্তর দেয় পৃথা।

‘তা অর্নব… হ্যা অর্নবই তো বললি নামটা… তা অর্নব আসে নি?’ প্রশ্ন করেন ভদ্রমহিলা।

‘হ্যা এসে…’ বলতে গিয়েই থমকায় পৃথা… তাড়াতাড়ি সামলে নেয় কথা… এসেছে বললে সে জানে মা বলবেন তাকে নিয়ে আসার জন্য, তখন তো আর এক বিপদ হবে, কাকে আনবে সে? একটা কায়াহীন মানুষকে? ‘না, মানে ও আসতে পারে নি, একটু আটকে গেছে, তাই তো বন্ধুকে পাঠিয়েছে এখানে…’ তাড়াতাড়ি করে বলে ওঠে সে।

‘ওহ! তা এখন একবার বলে দে আসতে… তুই এখানে থাকতে থাকতেই আমরা কথা বলে নিই ওর সাথে…’ বলে ওঠেন পৃথার মা।

‘এ…এখানে আসতে বলবো?’ ঢোক গেলে পৃথা… কি করে পরিস্থিতি সামলাবে বুঝতে পারে না… অর্নবকে এদের সামনে হাজির করবে সে কি করে? সেটা যে একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার একটা… মা যদি অর্নবকে এই অবস্থায় দেখে, তবে তো ভিমরি খাবে, তখন মাকে রাজি করানো একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়বে তার কাছে, যতটা সহজে মা মেনে নিয়েছে অর্নবকে, তখন ততটাই বেঁকে বসবে যে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না…

‘হ্যা… এখানে… আমাদের তো একবার কথা বলতে হবে ছেলেটির সাথে… বিয়ে বলে কথা, আর চারপাঁচটা আত্মীয় সজনের সাথে আলাপ পরিচয় হবে, তবেই না জিনিসটা একটা জায়গায় পৌছাবে… তুই এখানে থাকতেই বরং ওকে আসতে বলে দে… ততদিন না হয় তুই আমাদের কাছেই থাক…’ স্বাভাবিক স্বরে কথা বলে উঠে দাঁড়ান পৃথার মা, ‘নাঃ একবার যাই তোর বাবার কাছে, মানুষটা ঘরে একা আছে, আর তাছাড়া ওনাকেও কথাটা জানিয়ে রাখি…’ বলতে বলতে পা বাড়ান ঘরের বাইরে।

‘এবার কি হবে?’ মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকে পৃথা… ‘দুম করে আনন্দের মধ্যে বলে তো দিলাম অর্নবের কথাটা মায়ের কাছে, কিন্তু এখানে যে ডেকে পাঠাবে মা, সেটা তো মাথায় ছিল না… এখন?’



৩৯।।

‘চলো, মা তোমার সাথে কথা বলবে বলে ডেকেছে…’ হোটেলের রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে ওঠে পৃথা…

বাড়ি থেকে মাকে একটু আসছি বলে চলে এসেছে সোজা অর্নবের হোটেলে। আসলে একবার অর্নবের সাথে কথা না বলা অবধি সে নিশ্চিন্ত হতে পারছিল না কিছুতেই… তার তো মাথাতেই আসছে না কি ভাবে মায়ের সামনে ওঠা এই সিচুয়েশনটা হ্যান্ডেল করবে ও… মা রাজি, কিন্তু কার সাথে তার বিয়ে দেবে? যাকে দেখা যায় না? মা যদি জানতে পারে, তাহলে তার মুখের এক্সপ্রেশনটা কিরকম হবে ভাবতেই পৃথার বুক শুকিয়ে যাচ্ছিল… তাই বাড়ি থেকে বেরিয়েই একটা রিক্সা নিয়ে সোজা অর্নবের হোটেলে এসে হাজির হয়েছে… পৃথাকে আসতে দেখে প্রণব আর থাকে নি ঘরে… আসছি একটু বলে বাহানা দেখিয়ে পৃথাকে ঘরের মধ্যে রেখে বেরিয়ে গিয়েছে প্রায় সাথে সাথেই… সে জানে কাবাবে হাড্ডি হওয়া না তার বন্ধু চাইবে, না ব্যাপারটা ভালো দেখাবে… তার থেকে দুই কপোত কপোতিকে একান্তে ছেড়ে দেওয়াই শ্রেয় বলে মনে করেছে প্রণব…

‘মা ডেকেছে মানে?’ অর্নবের বিস্মিত কন্ঠ স্বর ভেসে আসে ঘরের মধ্যে থেকে… অর্নবের গলার স্বর কানে যেতেই বুকের মধ্যেটায় কেমন তোলপাড় করে ওঠে যেন… সারা শরীরের মধ্যে শিহরণ খেলে যায়… গলার মধ্যে একরাশ ভালোবাসা উঠে এসে দলা পাকায়… গাঢ় হয়ে ওঠে চোখের দৃষ্টি… দ্রুততা পায় নিঃশ্বাস… পৃথা ফিরে রুমের দরজাটাকে বন্ধ করে দেয়… লক তুলে দেই ছিটকিনির… শিলিগুড়ি আসা ইস্তক নানান ভাবে সময় বয়ে গিয়েছে, কখনও বাপীর চিন্তায়, সঙ্কায়, উদ্বেগের মধ্যে দিয়ে, আবার বাপী নার্সিং হোম থেকে ফেরার পর অন্যান্য আত্মীয় সজনদের আসা যাওয়ার মধ্যে দিয়ে… তাই এই ক’দিনে ও অর্নবের সান্নিধ্য থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল ভিষন ভাবে…

অর্নব এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে তার তিতিরের দিকে… পৃথাকে এতদিন পর রুমের মধ্যে দেখে তারও ভেতরে বুকের মধ্যে দামামা বেজে ওঠে… এই কটা দিন সেও অন্য কিছু ভাবার অবকাশ পায় নি পৃথাকে নিয়ে, কিন্তু আজ, এই ভাবে, একাকী হোটেলের রুমের একান্তে পৃথাকে দেখে অস্থির হয়ে ওঠে তার মন… স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে পৃথার দিকে… সাজ একেবারেই সামান্য বলা যেতে পারে পৃথার… পরনে একটা আকাশি নীল জেগিংস আর গায়ের ওপরে চাপানো রয়েছে গাঢ় সবুজ রঙের টি-শার্ট… জেগিংসটা পায়ের সাথে যে ভাবে টাইট হয়ে চেপে বসে আছে, তাতে সেটাকে শরীরের দ্বিতীয় চামড়া বললেও অত্যক্তি করা হয় না… গোল সুডৌল মাংসল পুরুষ্টু থাইগুলো যেন আরো বেশি করে আকর্শনীয় হয়ে উঠেছে তাতে… পৃথা সামনে ফিরে থাকলেও অনতি দূরে দাঁড়িয়েও অর্নবের বুঝতে অসুবিধা হয় না ভারী উত্তল নিতম্ব কি পরিমানে এবং কতটা লোভনীয় ভাবে ঠেলে ফুটে রয়েছে জেগিংসএর কাপড় ভেদ করে… গায়ের ওপরের টি-শার্টটাও যথাবিধ শরীরের সাথে চেপে বসে রয়েছে, যাতে দেহের চড়াই উৎরাই গুলো চোখের সামনে যেন মেলে ধরে হাতছানি দিয়ে ডাকছে অর্নবকে… ব্রায়ে বাঁধা পরা সুগোল বুকদুটো ঠেলে উঠে রয়েছে বেশ খানিকটা… কাঁধ থেকে একটা বড় ব্যাগ ঝুলিয়ে রাখা…

ধীর পায়ে এগিয়ে যায় অর্নব… একেবারে সামনে গিয়ে দাঁড়ায় পৃথার… অর্নবের এগিয়ে আসা অনুভব করে পৃথাও… বুঝে ফের শিহরীত হয় সে… খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে যায় ঘাড়ের রোঁয়া… আস্তে আস্তে হাত তোলে সে… বাড়ায় সামনের পানে… ছোয়া পায় তার ভালোবাসার মানুষটার দেহটায়… নিজেও কয়এক কদম এগিয়ে দাঁড়ায়… হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে অর্নবের গলাটাকে… মুখ নামায় মানুষটার অদেখা বুকটার ওপরে… মাথা রাখে ঘাড় কাত করে… হাত তুলে আঙুলের বিলি কাটে অর্নবের বুকের লোমে… ফিসফিসায় পৃথা, ‘মাকে বলেছি আমি…’ একটু থেমে দম নেয়… কথাটা বলতে বলতে আরো যেন গলে, মিশে যেতে চায় অর্নবের বুকের মধ্যে… ‘মা… রাজি হয়েছে আমাদের বিয়ের…’ বলতে বলতেই কোথা থেকে যেন একরাশ লজ্জা ঘিরে ধরে পৃথাকে… তাড়াতাড়ি ঘাড় ঘুরিয়ে মুখ লোকায় সে অর্নবের বুকের মাঝে… লাল হয়ে ওঠে ফর্সা কানের লতীদুটো তার…

উত্তরে কিছু বলে না অর্নব… পৃথার চিবুকটাকে হাতে নিয়ে তুলে ধরে নিজের মুখের পানে, তারপর ঝুঁকে ঠোঁটটাকে ডুবিয়ে দেয় পৃথার পাতলা ঠোঁটের ওপরে… গালের দাড়ি ভেসে বেড়ায় পৃথার মুখে, গলায়… দুজন দুজনের ঠোঁট নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, ভুলে যায় কি কথা শুরু হয়েছিল তাদের… হারিয়ে যায় তারা একে অপরে ঠোঁটের মধ্যে…

দরজায় নক শুনে তাড়াতাড়ি আলাদা হয় দুজনে… এগিয়ে দরজা খুলে ধরে পৃথা… ওপাশে একজন রুম সার্ভিসের ছেলে দাড়িয়ে আছে দেখে… পৃথাকে দেখে বলে সে, ‘স্যর বললেন রুমে দু-কাপ কফি দিয়ে যেতে, তাই…’

দরজার পাশ থেকে সরে দাঁড়ায় পৃথা, ছেলেটি ঘরের মধ্যে ঢুকে নামিয়ে রাখে কফির ট্রে’টাকে টেবিলের ওপরে… তারপর কেমন একটা সন্দিঘ্ন চকিত দৃষ্টি হেনে তাকায় পৃথার দিকে, যেন মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন ঘুরে বেড়ায় ছেলেটির… মেয়েটি একা, অথচ দেখে যেন মনে হচ্ছে আরো কেউ ছিল ঘরে… মেয়েটির মাথার চুল অবিনস্ত… বাথরুমের দরজাটাও খোলা, এই নয় যে কেউ রয়েছে বাথরুমে… কফিও অর্ডার দেওয়া হয়েছে দু-কাপ… ঠিক যেন মেলাতে পারে না সে… ওকে এই ভাবে ইতস্থত করতে দেখে পৃথা প্রশ্ন করে, ‘আর কিছু বলবে?’

পৃথার প্রশ্নে থতমত খায় ছেলেটি, তবুও আর একবার ঘরের মধ্যে নজর ঘুরিয়ে মাথা নিচু করে বেরিয়ে যায়… পৃথা বন্ধ করে দেয় দরজাকে ফের… ঘাড়ের ওপরে গরম নিঃশ্বাসে ছোঁয়া পড়ে তার… দুটো বলিষ্ঠ হাত দুই পাশ থেকে জড়িয়ে ধরে তার শরীরটাকে পেছন থেকে… হাতের একটা তালু মেলে থাকে তার তলপেটের ওপরে অপর হাতে তালু এসে পড়ে সগঠিত স্তনের ঠিক নীচটায়… আবেশে শিথিল হয়ে যায় পৃথার শরীর… নিজের দেহটাকে পেছন পানে হেলিয়ে দেয় সে অর্নবের বুকের ওপরে… অর্নব মুখ নীচু করে ঠোঁট রাখে পৃথার খোলা গলার পাশে… পৃথার মনে হয় যেন ওই তপ্ত ঠোঁটের ছোয়ায় পুড়ে গেল তার ওই জায়গার চামড়াটা… ‘অর্নব…’ ফিসফিসিয়ে ওঠে পৃথা… ‘কি করছহহহহ…’ আরামে দুচোখ মুদে আসে তার… ঘন হয়ে ওঠে নিঃশ্বাস… বুকের মধ্যে তোলপাড় করে এক অব্যক্ত অনুভূতি…

ছোট ছোট চুমু এঁকে দিতে থাকে পৃথার খোলা ঘাড়ের চামড়ায় অর্নব… আস্তে আস্তে সেই চুম্বনের রেখা উঠে আসে পৃথার কানের পেছন দিকে… আলতো স্পর্শে জিভ ঠেকায় কানের পেছনদিকটায়… পৃথার মতই ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করে সে, ‘কেন… কি করেছি আমি?’

কানের পাশে উষ্ণ ঠোঁটের স্পর্শ পেতেই সারা শরীরটার মধ্যে শিহরণ খেলে যায় পৃথার… সিরসির করে ওঠে পুরো দেহটা তার… ‘আহহহহহ…’ চাপা শিৎকার বেরিয়ে আসে মুখ থেকে… ‘জানো না কি করছ?’ চাপা স্বরে বলে সে… ‘এই রকম করলে আমি নিজেকে সামলাতে পারি না যে…’

‘কে বলেছে সামলাতে নিজেকে?’ কানের লতীটাকে মুখের মধ্যে টেনে নেবার আগে প্রশ্ন করে অর্নব…

সারা শরীরে যেন আগুন ধরে যাচ্ছে মনে হয় পৃথার… বুকের নীচে থাকা অর্নবের হাতটাকে তুলে নিজেই চেপে ধরে নরম স্তনদুটোর ওপরে… আরো এলিয়ে দেয় দেহটাকে অর্নবের দিকে… ‘ইশশশশ… আমি যে আর পারছি না গো… সারা শরীর কেমন করছে… নিজেকে আটকে রাখতে পারছি না যে…’ ফিসফিস করে বলে ওঠে পৃথা…

‘আমি কি তোমায় নিজেকে আটকে রাখতে বলেছি?’ বলতে বলতে কানের গর্তের মধ্যে জিভটাকে প্রবেশ করিয়ে দেয় অর্নব…

‘ওহ! মাহহহ…’ সিঁটিয়ে ওঠে পৃথা… অর্নবের হাতটাকে প্রাণপনে চেপে ধরে নিজের বুকের ওপরে… ‘ইশশশশ… এখন এমন কোরো না গো… যদি প্রণবদা এসে পড়ে… ইশশশশ কি লজ্জায় পড়ে যাবো বলো তো…’ মুখে বলে ঠিকই, কিন্তু নিজের উত্তল নিতম্বটাকে ঠেলে দেয় অর্নবের কোলের দিকে… স্পর্শ পায় স্ফিত হয়ে ওঠা পুরুষাঙ্গটার নিজের নরম নিতম্বের দুই দাবনার বিভাজিকায়…

পৃথার কাঁধটা ধরে ঝট করে ঘুরিয়ে দেয় তাকে নিজের দিকে করে, ‘প্রণব এখন আসবে না’ ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে অর্নব… তারপর ঝুঁকে নিজের ঠোঁটটাকে মিলিয়ে দেয় পৃথার ঠোঁটের সাথে… দুহাত তুলে আঁকড়ে ধরে অর্নবকে পৃথা… ব্রা আর টি-শার্টের আড়ালে থাকা নরম বুকদুটো নিষ্পেশিত হতে থাকে অর্নবের চওড়া বুকের ওপরে… ‘আমায় আদর করো… আদর করো আমায়…’ অর্নবের ঠোঁট থেকে মুখ তুলে বিড়বিড় করে বলে ওঠে পৃথা… তারপর ফের এগিয়ে বাড়িয়ে দেয় নিজের ঠোঁটটাকে তার মানুষটার পানে… অর্নবও ফের তুলে নেয় পৃথার ঠোঁটটাকে নিজের মুখের মধ্যে… জিভটাকে ঢুকিয়ে দেয় পৃথার মুখে… দুটো জিভ একে অপরের সাথে খেলা করতে থাকে… অর্নবের একটা হাত নেমে যায় পৃথার পীঠ বেয়ে উত্তল নিতম্বটার ওপরে… হাতের তালু চেপে বসে নরম দাবনায়… চাপ বাড়ে… ‘উমমমম…’ গুনগুনিয়ে ওঠে পৃথা অর্নবের জিভটাকে মুখের মধ্যে চুষতে চুষতে… নিজের বুকটাকে আরো চেপে ধরে অর্নবের সাথে… সেও হাত নামিয়ে দেয় অর্নবের পীঠের ওপর থেকে তাদের শরীরের মাঝে… হাতের মুঠোয় চেপে ধরে অর্নবের পৌরষটাকে যেটা এতক্ষন তার তলপেটের ওপরে ঢুঁ মারছিল বারংবার… মুঠোয় ধরে ওপর নিচে করে হাতটাকে… নখের আঁচড় কাটে পুরুষাঙ্গটার সংবেদনশীল মাথায়…

নিজের লিঙ্গের মাথায় পৃথার আঙুলের ছোঁয়া পড়তেই কোঁকিয়ে ওঠে অর্নব… খুলে যায় তাদের একে অপরে সাথে আটকে থাকা মুখের জোড়… ‘আহহহহহ…’ শিৎকার বেরিয়ে আসে অর্নবের মুখ থেকে… পৃথার ঠোঁটের কোনে হাসির রেখা ফুটে ওঠে… আরো জোরে চেপে ধরে পুরুষাঙ্গটাকে তার নরম হাতের মুঠোর মধ্যে… নাড়ায় সেটিকে ওপর নিচে করে…

হাঁটু গেড়ে বসে পড়তে যায় অর্নবের সামনে, পুরুষাঙ্গটাকে হাতের মধ্যে বাগিয়ে ধরে… অর্নবের বুঝতে অসুবিধা হয় না কেন পৃথা বসে পড়তে চাইছে, তাই তাড়াতাড়ি করে তার কাঁধটা ধরে আটকায়… ‘এখন নয়… পরে…’ ফিসফিসিয়ে জানায় সে… ‘আই ওয়ান্ট ইয়ু… নাও…’

‘দেন টেক মী…’ উত্তরে ফিসফিসায় পৃথাও… ফের সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে অর্নবের গালে হাত রেখে মুখটা তুলে এগিয়ে দেয় সামনের পানে… চেপে ধরে নিজের ঠোঁটটাকে আবার… চুমু খায় অর্নবের মুখে মুখ রেখে…

অর্নব পৃথার পরা টি-শার্টটাকে ধরে এক লহমায় খুলে ফেলে দেয় মাটিতে… পৃথা হাতটাও যেন সংক্রিয় ভাবে চলে যায় নিজের শরীরের পেছন দিকে… খুলে ফেলে লাল রঙের ব্রায়ের হুক… দেহের থেকে সেটাকে ছাড়িয়ে ছুড়ে ফেলে দেয় দূরে… কোমরের কাছে জেগিংসের বোতামগুলো পটাপট খুলে ফেলে ক্ষিপ্র গতিতে… কোমর বেকিয়ে চুড়িয়ে সেটাকেও নামিয়ে দেয় দেহ থেকে নীচে… এক পায়ের চাপে চেপে ধরে টান মেরে খুলে দেয় শরীর থেকে জেগিংসটাকে আপন গরজে… সেই সাথে খুলে ফেলে পরে থাকা ছোট্ট প্যান্টিটাও… তারপর একেবারে জন্মদিনের পোষাকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাত তোলে সামনের পানে… বলে ওঠে, ‘টেক মী… মেক লাভ টু মী সোনা… এসো…’

অবলীলায় পৃথার শরীরটাকে তুলে নেয় শূণ্যে… দুই হাতে… পাঁজাকোলা করে… হাত পেঁচিয়ে ধরে অর্নবের গলাটাকে পৃথা… তার হাতের ভরসায় ঝুলতে থাকে সে ঘরে শূণ্যে… ওই ভাবেই তাকে নিয়ে এগিয়ে যায় ঘরের মধ্যে পাতা দুটো বিছানার একটার দিকে… নামিয়ে দেয় পৃথাকে বিছানার ওপরে… পৃথাও জড়িয়ে রাখা হাত দিয়ে টেনে নেয় অর্নবকে নিজের দিকে… বিছানায় শুয়ে… অনুভব করে অর্নবের ভারী লোমশ দেহটা নিজের দেহের ওপরে… তার বুকের লোমগুলো ঘসা খায় নগ্ন নরম বুকের ওপরে, বোঁটায়, বোঁটার বলয়ে… নিজের দুই পা দুই দিকে ছড়িয়ে দিয়ে তুলে ধরে জঙ্ঘাটাকে অর্নবের পানে… ডান হাতটাকে নামিয়ে দিয়ে মুঠোয় ধরে শক্ত লিঙ্গটাকে… সেটাকে ধরে ওটার মাথাটাকে ঘসে ভিজে ওঠা যোনিওষ্ঠে… সামনে পেছনে করে ঘসে চলে তার ব্যাকুল যোনির মুখে… দুজনেই গুঙিয়ে ওঠে আরামে… একটু একটু করে লিঙ্গটাকে নিজের যোনির ওপরে ঘসার ব্যাসটাকে কমিয়ে আনতে থাকে পৃথা… তারপর একটা সময় সেটা শুধু ঠেঁকে যোনির মুখটায়… আলতো করে নীচ থেকে কোমরটাকে তুলে ধরে সে… আর অনুভব করে কি অবলিলায় তার রসে হড়হড়ে হয়ে ওঠা যোনির মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে ওই রকম স্ফিত লিঙ্গের মাথাটা… ‘উমমমম…’ দাঁতে দাঁত চেপে গোঙায় সে…

কুনুইয়ে ভর রেখে দেহেটাকে একটু তুলে ধরে অর্নব, তারপর পৃথার পানে তাকিয়ে চাপা কুন্ঠিত গলায় বলে ওঠে, ‘কিন্তু তিতির… আমার কাছে যে কন্ডোম নেই… এটা একবার ভাবা উচিত ছিল, তাই না… এখন তো…’

‘আমারও এখন সেফ নয়…’ ফিসফিসিয়ে জানায় পৃথা… হাত তুলে গাঢ় আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরে বুকের ওপরে তুলে থাকা অর্নবের শরীরটাকে… টেনে নেয় অর্নবকে নিজের বুকের ওপরে সে… ঠোঁটটা তুলে ডুবিয়ে দেয় অর্নবের ঠোঁটের ওপরে অক্লেশে… পৃথার মুখের মধ্যেই যেন অর্নবের কথাগুলো হারিয়ে যায় এই ভাবে… অনুভব করে সে তার লিঙ্গের ওপরে পৃথার যোনির ভেজা নরম উষ্ণ পেশীর চাপ… পৃথার এই কামনভরা আলিঙ্গনে কেমন যেন দূর্বল হয়ে পড়ে সে… মনের মধ্যে উঠে আসা কুন্ঠাটা মিলিয়ে যেতে থাকে একটু একটু করে…

তাও সে আরো একবার শেষ চেষ্টা করে… ‘কিন্তু… কিন্তু যদি তুমি প্রেগনেন্ট হয়ে পড়ো?’ ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করে পৃথাকে…

‘তাহলে আমার মত সুখি কেউ হবে না…’ ঠোঁটের কোনে হাসি মাখিয়ে উত্তর দেয় পৃথা গাঢ় স্বরে… চোখের তারায় ঘরের বৈদ্যুতিক আলো যেন ঝিলিক দেয়…

‘কিন্তু… ইফ ইয়ু হ্যাভ আ বেবী?’ সসংকোচে প্রশ্ন করে অর্নব…

হাসিটা মোছে না পৃথার ঠোঁট থেকে… আস্তে করে ঘাড় নেড়ে উত্তর দেয় পৃথা… ‘ইট উইল বী ইয়োর বেবী… আই’ল বী গ্ল্যাড টূ হ্যাভ ইয়োর বেবী…’

কিন্তু তবুও কুন্ঠা যায় না অর্নবের… আরো যেন বেশি করে কুন্ঠীত হয়ে পড়েছে সে যখন জেনেছে যে পৃথা সেফ নয় এখন… শুরুটা হয়তো সেই করেছিল ঠিকই, কিন্তু হটাৎ করেই ব্যাপারটা মাথায় আসতে অস্বস্থিটা শুরু হয় তার মধ্যে… অথচ তার পুরুষাঙ্গের চারপাশে পৃথার চেপে বসে থাকা যোনির কোমল চাপটাও সে অগ্রাহ্য করতে পারে না কোনমতেই… দ্বিধা যেন কিছুতেই সরাতে পারে না মনের মধ্যে থেকে অর্নব…

এই ভাবে চুপ করে থাকা দেখে অর্নবের মনের দ্যুবিধা বুঝধে অসুবিধা হয় না পৃথার… আরো গাঢ় আলিঙ্গনে টেনে নেয় অর্নবকে নিজের বুকের মধ্যে… উত্তেজনায় শক্ত হয়ে ওঠা বুকের বোঁটাগুলো চেপে বসে অর্নবের লোমশ ছাতির ওপরে… ফিসফিসায় পৃথা… ‘আই লাভ ইয়ু অর্নব… আমি তোমার জীবনে থাকতে চাই… যে কোন উপায়ে… তাতে যদি আমি আজ প্রেগনেন্ট হয়েও যাই… তাই সই… আমি তোমার মধ্যে একেবারে মিশে একাকার হয়ে যেতে চাই… একেবারে তোমার হয়ে যেতে চাই অর্নব… প্লিজ… আর কিছু ভেবো না… আমায় নাও… আমায় ভালোবাসো অর্নব… তোমার তিতির তোমার ভালোবাসা পাবার জন্য উন্মুখ হয়ে রয়েছে… এখন আর কিছু ভেবো না… প্লিজ… আই লাভ ইয়ু সোনা… লাভ ইয়ু…’

তাও প্রায় মিনিট খানেক চুপ করে থাকে অর্নব… তারপর ধীরে ধীরে নিজের মুখ নামিয়ে দেয় পৃথার পানে… ঠোঁটের সাথে মিলিয়ে দেয় ঠোঁট… গভীর চুম্বন এঁকে দেয় পৃথার পাতলা নরম ঠোঁটেতে…

‘আই লাভ ইয়ু টু, তিতির…’ ঠোঁটের ওপর থেকে মুখটা তুলে গাঢ় স্বরে বলে ওঠে অর্নব… ‘আমি তোমায় আমার জীবনে পেয়ে ধন্য তিতির… ধন্য আমি… তোমার ভালোবাসা পেয়ে… তোমাকে সরিয়ে রাখার ক্ষমতা আমার নেই… ক্ষমতা নেই আমার তোমার ভালোবাসা অস্বীকার করার…’

‘দেন টেক মী বেবী…’ মৃদু হেসে উত্তর দেয় পৃথা… ‘আই ওয়ান্ট ইয়ু ইন্সাইড মী… আই ওয়ান্ট ইয়ু সো ব্যাড…’

পৃথার কথায় অর্নবের বুকের মধ্যেটায় যেন ধকধক করে ওঠে আবেগে… তাও সে সেকেন্ডের কয়এক ভগ্নাংশ ইতস্থত করে যেন কোমরটাকে সামান্য তুলে ধরতে… তারপর নামায় কোমর… পৃথার শরীরের মধ্যে ঢুকে যায় তার দৃঢ় লিঙ্গটা অনায়াসে… পৃথার যোনির মধ্যেটা এতটাই ভিজে উঠেছে যে মাত্র বার দুয়েক চেষ্টা করতে হয় তাকে ঢোকাবার জন্য… শেষে প্রায় পুরো লিঙ্গটাই সেঁদিয়ে যায় একেবারে পৃথার নরম যোনির অভ্যন্তরে… লিঙ্গের শেষে ঝুলতে থাকা অদৃশ্য অন্ডকোষটা এসে ঠেঁকে পৃথার সুগোল নিতম্বে…

‘ওহহহহহ… অর্নব… ইট ফিলস্‌ সো গুড টু হ্যাভ ইয়ু ইন্সাইড মী…!’ ফিসফিসিয়ে জানায় পৃথা… অর্নবকে জড়িয়ে ধরে মুখটাকে তুলে খুঁজে নেয় তার ঠোঁটটাকে ফের… নিজে জিভটাকে পুরে দেয় অর্নবের মুখের মধ্যে… পা তুলে পুরুষ্টু উরুর সাহায্যে কাঁচি দিয়ে ধরে অর্নবের কায়াহীন কোমরটাকে… বুকটাকে ঠেলে রাখে অর্নবের বুকের সাথে… নীচ থেকে তোলা দেয় কোমরের অর্নবের ছন্দের সাথে… অনুভব করে কি ভাবে তার দেহটাকে ভরিয়ে তুলেছে অর্নবের স্ফিত পুরুষাঙ্গটা… হটাৎ করে সে বুঝতে পারে খুব শিঘ্রই তার অর্গাজম হতে চলেছে… খুব শীঘ্রই পেতে চলেছে সে চরম সুখ… কাঁপন ধরে তার পায়ের পেশিতে… কেঁপে ওঠে তলপেট… তাড়াতাড়ি অর্নবের কোমর থেকে পা খুলে নামায় বিছানার ওপরে… হাঁটুর থেকে মুড়ে পায়ের পাতায় ভর রাখে সে… অর্নবের কোমরের ধাক্কার সাথে তাল মিলিয়ে তুলে তুলে দেয় নিজের জঙ্ঘাটাকে অর্নবের পানে… গ্রহণ করে অর্নবের শক্ত পুরুষাঙ্গটাকে নিজের দেহের গভীরের পরম ভালোবাসায়…

অর্নবের কোমরের আন্দোলনের গতি বাড়ে… দ্রুত ঢুকতে বেরুতে থাকে শক্ত লিঙ্গটা পৃথার ভেজা যোনির মধ্যে… ঠেলে ঠেলে প্রায় গুঁজে দেয় নিজের পুরুষাঙ্গটাকে অর্নব… যোনির ভেতরের শিরাউপশিরায় ঘর্সন লাগে তার লিঙ্গের সাথে… পৃথার যোনির মধ্যে ছড়িয়ে দেয় অফুরন্ত পুলকের কম্পন… যে কম্পন ছড়িয়ে পড়তে থাকে যোনি থেকে আরো অভ্যন্তরে… ছড়িয়ে পড়ে শরীরের কোনায় কোনায়… প্রথম দিকে শুধু মাত্র অল্প অল্প গোঙানী বেরিয়ে আসছিল পৃথার মুখ থেকে রমনসুখে… কিন্তু আস্তে আস্তে সে গোঙানী বাড়তে থাকে… রূপান্তরিত হতে থাকে প্রবল শিৎকারে… ঘন হয়ে উঠতে থাকে তার নিঃশ্বাস… সংকোচন অনুভূত হয় জরায়ুর মধ্যে… একটা অদ্ভুত খিঁচুনিতে কেঁপে ওঠে পৃথার দেহটা… থেকে থেকে কেঁপে ওঠে শরীরের নিম্নাঙ্গ… ‘ওহহহহহ… ইশশশশশ…’ পৃথা হিসিয়ে ওঠে অর্নবের চওড়া কাঁধটাকে খামচে ধরে… চেপে ধরে তাকে নিজের বুকের সাথে আরো কষে… ঠেলে দেয় নিজের বুকটাকে অর্নবের পানে যত শক্তি আছে তাই দিয়ে… বন্ধ করে নেয় চোখদুটোকে চেপে… যোনির পেশি দিয়ে কামড়ে ধরার চেষ্টা করে আসা যাওয়া করতে থাকা পুরুষাঙ্গটাকে প্রবল ভাবে… অনুভব করে পৃথা, অর্নবের দেহের প্রতিটা ধাক্কা কেমন ভাবে মৃদু ঝাঁকি দিয়ে উঠছে তার নরম তলতলে নিতম্বের দাবনাদুটো… ভেজা যোনির ওষ্ঠের সাথে অর্নবের নগ্ন শরীরের আঘাতে একটা কেমন থপথপে আওয়াজ ভরে উঠেছে ঘরের মধ্যেটায়… অর্নবের লিঙ্গটা ঢুকছে বেরুচ্ছে তার যোনির মধ্যে থেকে কি সুন্দর গতিতে… সবল, কিন্তু বেদনাদায়ক নয়… আরামদায়ক… পৃথা অনুভব করে তার যোনির ওষ্ঠগুলোয় সঞ্চারিত হচ্ছে রক্ত… ফুলে উঠছে সেগুলো আরো বেশি করে… ভিজে উঠছে সে সময়ের সাথে আরো বেশি… আরো দ্রুত…

‘ওহহ তিতির… তোমার ভেতরটা কি টাইট…’ ফিসফিসিয়ে বলে অর্নব কোমরের আন্দোলনকে একই গতিতে রেখে দিয়ে… একবারের জন্যও থামে না সে… যদিও তার অভিলাষা এখনি নিজের বীর্যস্খরণ নয়… সে চায় আগে পৃথার রাগমোচন হয়ে যাক… কিন্তু যে পরিমানে আরামের মধ্যে দিয়ে সে চলছে, কতক্ষন তার পক্ষে নিজেকে ধরে রাখা সম্ভব তাতে সে যথেষ্ট সন্দিহান…

‘ওহহহহহ মাহহহহ… উমমমম্ফফফফফফ…’ মুখ বিকৃত করে দাঁতে দাঁত চেপে কোঁকিয়ে ওঠে পৃথা… শিৎকারটা অদ্ভুত ভাবে বেরিয়ে আসে নিঃশ্বাসের সাথে মিলে মিশে… কিছু একটা বলার চেষ্টা করেছিল হয়তো অর্নবের কথায়, কিন্তু শুরু করার আগেই সুনামীর মত আছড়ে পড়ে যেন সুখটা… হাতের নখ বিঁধে যায় অর্নবের খোলা কাঁধের মাংসপেশির মধ্যে… অনুভব করে পৃথা তার দেহের গভীরে যেন তরঙ্গের পর তরঙ্গ আছড়ে পড়ছে… প্রচন্ড সুখটা তার শরীরের যোনির প্রতিটা শিরাউপশিরা বেয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে পেটে, বুকে, গলায়, মুখে, হাতে, পায়ে… সব… সর্বত্র… থরথর করে কাঁপতে থাকে তার পুরো শরীরটাই… কোঁকিয়ে ওঠে সে ঘটতে থাকা প্রচন্ড রাগমোচনের অভিঘাতে… ‘ওহ!… ওহ! মাই গড… আহহহহহ…’

‘তিতির… আমার… আমারও হবে…’ হাফাতে হাফাতে বলে ওঠে অর্নব… তার পক্ষে আর নিজেকে ধরে রাখা সম্ভব হয় না… লিঙ্গের চারপাশ থেকে কামড়ে ধরা যোনির পেশির সুখে সে নিজেকে সামলাতে পারে না আর… দাঁতে দাঁত চেপে ধরে সে প্রাণপনে… আরো বেড়ে যায় তার কোমরের আন্দোলনের গতি… ঠেসে ঠেসে ধরতে থাকে আরো ফুলে বেড়ে ওঠা লিঙ্গটাকে পৃথার নরম ভেজা যোনির মধ্যে… অনুভব করে নিজের পুরুষাঙ্গের মাথাটার সংবেদনশীলতার বৃদ্ধি…

‘গিভ ইট টু মী, বেবী, ডোন্ট পুল আউট… কাম ইন্সাইড মী!!!’ ফ্যাঁসফ্যাঁসে গলায় বলে ওঠে পৃথা… হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরে অর্নবের গলাটাকে… অন্য হাত তুলে বোলায় অর্নবের দাড়িভরা গালের ওপরে… অনুভব করে অর্নবের বেড়ে ওঠা নিঃশ্বাস প্রশ্বাস… ‘কাম ইন্সাইড মী, বেবী… কাম ইন্সাইড মী…’ ফিসফিসিয়ে বলে চলে সে বারংবার অর্নবের কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে… পাদুটোকে আরো ফাঁক করে মেলে ধরে তার শরীরের মধ্যে অর্নবের ভালোবাসার বীজ গ্রহণ করার অদ্যম আকাঙ্খায়… যোনির পেশি দিয়ে সবলে কামড়ে ধরে তার শরীরের ভেতরে থাকা অর্নবের দৃঢ় পুরুষাঙ্গটাকে…

‘উমমফফফ…’ পৃথার কানে আসে অদেখা অর্নবের গোঙানী… আর সেই সাথে নিজের শরীরের অভ্যন্তরে অনুভূত হয় তপ্ত লাভার প্রবেশের… ‘আহহহহ…’ প্রবল আরামে শিৎকার বেরিয়ে আসে পৃথার মুখের মধ্যে থেকে… প্রানপনে আঁকড়ে ধরে অর্নবের কায়াহীন দেহটাকে নিজের বুকের সাথে… ফের কেঁপে ওঠে তার জঠর… কেঁপে ওঠে সুঠাম থাইদুটো অর্নবের কোমরটাকে আঁকড়ে ধরে… কাঁপন ধরে তলপেটে, নিতম্বে, যোনির প্রতিটা পরতে… অর্নবের বীর্যস্খলনের সাথেই পুণরায় উপভোগ করতে থাকে তার দ্বিতীয়বারের রাগমোচন…

খানিকক্ষন দুজনেই চুপচাপ শুয়ে থাকে একে অপরের শরীরের সাথে এক হয়ে… কানে বাজে দুজনের গভীর নিঃশ্বাসের শব্দ শুধু… আলিঙ্গনের মধ্যেই পৃথা অনুভব করে ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে আসা অর্নবের শরীরটাকে…

আস্তে আস্তে পৃথাকে ছেড়ে উঠে বসে অর্নব… গভীর গলায় বলে ওঠে, ‘যাও… বাথরুমে ধুয়ে এসো…’

আর একবারও কথা বাড়ায় না পৃথা, মন চায় আরো একটু শুয়ে থাকতে… উপভোগ করতে অর্নবের দেহের নির্যাসটাকে নিজের শরীরের মধ্যে নিয়ে… কিন্তু অর্নবের মুখের ওপরে আর কথা বলে না, চুপচাপ বিছানা থেকে উঠে বাথরুমে গিয়ে ঢোকে… হান্ড শাওয়ারটা হাতে নিয়ে জলের ধারাটাকে ঘুরিয়ে ধরে যোনি লক্ষ্য করে… আঙুল ঢুকিয়ে পরিষ্কার করতে থাকে শরীরের ভেতরে জমে থাকা অর্নবের ভালোবাসার অফুরাণ দান… খানিকটা নিজের আঙুলের ডগায় নিয়ে মুখের সামনে তুলে ধরে সে… ভালো করে চেয়ে থাকে হড়হড়ে সাদা পদার্থটার পানে… তারপর আঙুলটাকে পুরে দেয় মুখের মধ্যে… স্বাদ নেয় অর্নবের বীর্যের সাথে নিজের দেহরসের সংমিশ্রনে তৈরী রস… মনে মনে বলে ওঠে পৃথা… ‘মাই লাভ… মাই অর্নব…’ তারপর ফের ব্যস্ত হয়ে পড়ে নিজেকে পরিষ্কার করাতে…
 

soukoli

Member
389
58
29
৪০।।

‘ভাবলাম এবার বোধহয় বর্ষাকালটা শেষ হলো… কিন্তু কোথায় কি, আবার কেমন আকাশটা ভার করে আছে দেখো… গুমোটও পড়েছে বেশ… শেষ হয়েও যেন শেষ হতে চাইছে না বৃষ্টিটা… পুজোও তো এসে গেলো প্রায়… কে জানে বাবা… এবার আবার পূজোয় বৃষ্টি হবে কি না… এত দেরীতে পূজো, তাও যদি বৃষ্টি হয়…’ অফিসের ব্যাগটা কাঁধ থেকে নামিয়ে রাখতে রাখতে বলে পৃথা… সে জানে তারই অপেক্ষায় অর্নব ড্রইংরুমে বসে থাকে… যতক্ষন না সে ফেরে… এটা যে কত বড় পাওনা তার কাছে সেটা সেই বোঝে মনে মনে… এক এক সময় মনে হয় তার, এই যে অর্নব বাড়িতে বসেই অফিসের কাজ সামলায়, সেটা তো ও বেরুতে পারে না বলেই… কিন্তু যদি ও বেরুতে? তখন কি এই মুহুর্তটা পৃথা উপভোগ করতে পারতো? নাহঃ… হয়তো পারতো না ঠিকই… কিন্তু তাতে যে অখুশি হতো, সেটাও তো জোর দিয়ে বলা যায় না… হয়তো খুশিই হতো, আর পাঁচটা সাধারণ মেয়েদের মত… পৃথা জানে, তার মনের এই কথা যদি কোন ভাবে অর্নব জানতে পারে, তবে কতটা আঘাত পাবে সে… তার জীবনের সাথে এই কারণে জড়াতে চাইনি অর্নব কিছুতেই, সেই প্রথমদিন থেকে… অনেক ভাবে অনেক চেষ্টায় তবে রাজি করাতে পেরেছিল পৃথা… তারপর থেকে আর পেছন ফিরে তাকায় নি… দুজনেই… একে অপরে মধ্যে হারিয়ে গিয়েছে অসীম ভালোবাসায়… অর্নবও নতুন করে জীবনের মানে খুঁজে পেয়েছে পৃথাকে ভর করে… সেটা শুধু সে বোঝে না, মর্মে মর্মে উপলব্ধি করে… আর করে বলেই যখন মনের মধ্যে এই ধরণের ভাবনা উঠে আসে, মরমে মরে যায়… আপন স্বার্থপরতায় অপরাধ বোধে ভোগে… ছি ছি… মানুষটাকে আজ সেই তো এই সম্পর্কে টেনে এনেছে, আর সেই কিনা… জোর করে দূরে ঠেলে সরিয়ে দেয় ভাবনাগুলো মনের ভেতর থেকে… কিন্তু চাইলেই কি যায় দুর্ভাবনা? এবারে অনেক কষ্টে মাকে সামলেছে… এড়িয়েছে অর্নবকে তাদের সাথে আলাপ করিয়ে দেওয়া থেকে… মা বার বার করে বলে দিয়েছে পরের বার এলে যেন অর্নবকে সাথে নিয়েই আসে… সেদিন সে যে কি করবে ভাবলেই হা পা ঠান্ডা হয়ে যায় পৃথার… অর্নবকেও খুলে বলতে পারে না কিছুতেই… আঘাত পাবে… হয়তো ফের ওর মনের মধ্যের দ্বিধাটা ফিরে আসবে, যেটা অনেক কষ্ট করে সরিয়ে দিয়েছে পৃথা… কিন্তু নিজেও যে প্রচন্ড অস্বস্থির মধ্যে দিয়ে চলেছে… কি ভাবে ম্যানেজ করবে মা’কে? কি বোঝাবে সে যদি সেই ভাবে চেপে ধরে তাকে? একটা ব্যাপারে সে একটু হলেও নিশ্চিত যে বাপীর শরীর খারাপ হওয়ার ফলে দুম করে ওরা কলকাতায় চলে আসবে না মেয়ের কাছে, কিন্তু যদি না বাপীর এই ঘটনাটা ঘটতো, মাকে বিশ্বাস নেই, হয়তো দেখা যেতো এসে হাজির হতো মেয়ের কাছেই… আলাপ করতে চলে আসতো হবু জামাইয়ের সাথে… ভাবলেই ঘেমে ওঠে পৃথা…

‘হ্যা… আজও মনে হচ্ছে বৃষ্টি নামবে… ক’দিন ধরেই তো খবরে জানাচ্ছিল যে একটা নাকি বেশ বড়সড় নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে… তীব্র ঘুর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে এদিকেই…’ অর্নবের গলার স্বরে সম্বিত ফেরে পৃথার… তাড়াতাড়ি নিজের অপ্রস্তুত ভাবটাকে গুছিয়ে ফেলে… মুখ তুলে একটা হাসি উপহার দেয় অর্নবের গলার স্বর লক্ষ্য করে…

আজও বড্ড সুন্দর লাগছে পৃথাকে… হাল্কা কচি কলাপাতা রঙের চুড়িদার কুর্তিটায় বেশ মানিয়েছে পৃথাকে… এমন ভাবে ঘরের মধ্যে হেঁটে বেড়াচ্ছে যেন দেখে মনে হবে সদ্য গাছ থেকে ঝড়ের হাওয়ায় একটা কচি পাতা ঝরে পড়েছে… হাওয়ার তালে নেচে বেড়াচ্ছে ঘরের মধ্যে… মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে পৃথার পানে সোফায় বসে থাকা অর্নব… তার মনে হয় এই নবীন পাতাটাকে হাতে ধরলেও যেন লজ্জাবতীর মত কুঁকড়ে গুটিয়ে যাবে নিজের ভেতরে… তম্বী দেহটা আঁটো কুর্তির আড়ালে আরো যেন প্রস্ফুটিত হয়ে উঠেছে… গাঢ় স্বরে ডাকে… ‘তিতির…’

বুকের ওপর থেকে পাতলা ওড়নাটাকে খুলে হাতের মধ্যে নিয়ে সবে পা বাড়িয়েছিল বেডরুমের দিকে, অর্নবের ডাকে থমকে দাঁড়ায়… মুখ তুলে সোফার পানে তাকিয়ে ভ্রু তুলে সাড়া দেয় সে… ‘উউউ…’

ওই ভাবে ঘাড় তুলে সাড়া দেওয়াটা ভিষন ভালো লাগে অর্নবের… বুকের মধ্যেটায় যেন কি একটা ঝড় ওঠে তার… ইচ্ছা করে পৃথার ওই নরম শরীরটাকে টেনে চেপে ধরে বুকের মধ্যে… আদরে আদরে ভরিয়ে দেয় মাথার চুল থেকে পায়ের নখ অবধি… ‘বাইরে মনে হচ্ছে বেশ হাওয়া ছেড়েছে… ছাদে যাবে?’

‘যাবে ছাদে? কিন্তু যদি বৃষ্টি নামে?’ বৃষ্টিতে ভিজতে বরাবরই পৃথার খুব ভালো লাগে… আগেও কত যে এই রকম বৃষ্টিতে তাদের বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে ভিজেছে, তার ইয়ত্তা নেই… মায়ের চোখ লুকিয়ে বৃষ্টি নামলেই পালাতো ছাদে… তারপর বৃষ্টি দাঁড়িয়ে নাচতো, গাইতো গলা ছেড়ে… পরে মা এসে বকা দিয়ে নামিয়ে নিয়ে যেত… কি অদ্ভুত, আজও অফিস থেকে ফেরার পথে আকাশের দিকে তাকিয়ে ইচ্ছা করছিল আগের মত ভেজে, কিন্তু সে ইচ্ছা আজকাল আর প্রকাশ করে না সে, কারণ সে জানে, ওই ঘটনার পর থেকে অর্নব বাজ পড়াকে খুব ভয় পায়… একটা কেমন ট্রমা গড়ে উঠেছে মনের মধ্যে অর্নবের, তাই সেও কখনও উল্লেখ করে না ছাদে গিয়ে বৃষ্টিতে ভেজার… অর্নবের মুখে শুনে আনন্দে চোখদুটো চকচক করে ওঠে তার… কিন্তু পরক্ষনেই ভাবে, সত্যি যদি বৃষ্টি নামে, তখন? যদি বাজ পড়ে… কিন্তু অর্নব যখন নিজের থেকেই চাইছে…

‘চলো না… যাই… আজ কেন জানি না, ভিষন ইচ্ছা করছে তোমার সাথে ছাদে গিয়ে দাঁড়াতে… ঝড়ের হাওয়ার মুখে… গায়ে মাখতে প্রকৃতির খোলা হাওয়াটাকে…’ ঘাড়ের একেবারে কাছে অর্নবের গলার স্বরে ঘুরে দাড়ায় পৃথা… কখন সোফা থেকে উঠে পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে সে খেয়াল করে নি… অর্নবের বুকের ওপরে হাত রেখে উত্তর দেয় সে, ‘বেশ… চলো… তোমার যখন ইচ্ছা করছে…’

‘কেন তোমার ইচ্ছা করছে না?’ জিজ্ঞাসা করে অর্নব…

হাসে পৃথা… চোখের কটা মণিতে ঝিলিক খেলে যায়… ‘করছে তো… জানো… আমার না এই ভাবে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিষন ভালো লাগে… আগে তো…’ বলতে বলতে থমকে যায় সে… ভাবে যদি অর্নবের কষ্ট হয় শুনে… এতদিন মনের মধ্যে তার এই ইচ্ছাটাকে চেপে রেখেছে জানলে পৃথা সুনিশ্চিত, খারাপ লাগবে অর্নবের, শুধু এই ইচ্ছাটাই বা কেন? সে দেখেছে, তার মুখ থেকে কোন কথা খসার সাথে সাথেই সেটা পূরণ করার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে কিভাবে অর্নব… সেখানে যেটা ভয় পায় মানুষটা, কি ভাবে তাকে বলতো সে?

‘আগে কখনো বলো নি তো?’ প্রশ্ন করে অর্নব… ‘কেন?’

‘এমনি… তাই…’ কথা এড়ায় পৃথা… ‘যাবে?’… তারপর একটু ভেবে বলে, ‘কিন্তু যদি বাজ পড়ে? তুমি…’

‘পড়ুক না… ক্ষতি কি? তুমি তো আমার সাথে থাকবে… তুমি আমার পাশে থাকলে যে কোন ভয়কে আমি জিতে নিতে পারি… এখনও বোঝনি?’ গাঢ় স্বরে বলে ওঠে অর্নব… হাত রাখে পৃথার কাঁধে…

মাথা নাড়ে পৃথা… ‘হু… জানি তো…’

.

ছাদে এসে দাঁড়ায় দুজনে… আকাশে তখন ঘন ধূসর মেঘের আনাগোনা… সন্ধ্যের অন্ধকারে আকাশটা একটা ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে যেন… ঝোড়ো হাওয়া বইছে বেশ জোরে জোরে… ছাদের তারে ক্লিপে আটকানো ফ্ল্যাটের কারুর জামা কাপড় তখনও তোলা হয় নি, ঝোড়ো হাওয়ায় উড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে সেই গুলো… পৎপৎ করে আওয়াজ তুলছে…

ছাদের আলসের ধারে এসে দাঁড়ায় ওরা… বেশ উঁচু ওদের ফ্ল্যাটটা… ছাদের ওপর থেকে অনেকটা দূর অবধি চোখে পড়ে… আশপাশের বাড়ির জানলা দিয়ে ঘরের আলো বেরিয়ে চতুর্দিকটা কেমন মায়াবী দৃশ্য এঁকে রেখেছে যেন… কোমর অবধি থাকা ছাদের পাঁচিলের গায়ে হেলান দিয়ে বুকের মধ্যে টেনে নেয় পৃথাকে অর্নব… পৃথা অর্নবের কোমরটা জড়িয়ে ধরে মাথা নামায় লোমশ বুকের ওপরে… পৃথার অগোছালো ঝাকড়া চুল উড়ে বেড়ায় হাওয়া ভেসে… ঢেকে দিতে চায় অর্নবের অদেখা মুখ চোখগুলো… চুলের গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে অর্নবের ভেতরটা…

‘এই তিতির… একটা গান শোনাবে?’ আবদার করে অর্নব…

অর্নবের বুকের ওপর থেকে মুখ তুলে তাকায় পৃথা, হাসে… ‘কি গান শুনবে?’ প্রশ্ন করে সে।

‘যে কোন একটা… আনন্দের… ভালোবাসার…’ উত্তর দেয় অর্নব…

‘উউউমমমম…’ খানিক ভাবে পৃথা, কুর্তির পকেট থেকে ফ্ল্যাটের চাবিটা বের করে রাখে ছাদের পাঁচিলের ওপরে, একটু দূরের দিক করে, যাতে তাদের হাতে লেগে পড়ে না যায় নীচে… তারপর সরে যায় খানিকটা ছাদের ভেতর দিক করে… গায়ের ওড়নাটাকে ভালো করে পেঁচিয়ে নেয় নরম সুগোল বুকগুলোর ওপর দিয়ে… বেঁধে দেয় কোমরের একপাশটায়… তারপর শরীরটাকে বেঁকিয়ে ধরে নাচের ভঙ্গিমায়… ‘আজ শুধু তোমায় গান নয়… নাচও দেখাবো আমি… এটা শুধু আমার সোনার জন্য…’ বলে শুরু করে নাচের তালে তালে গান গাইতে…

মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তার তিতিরের দিকে… এত ভালো নাচে মেয়েটা? কি অপূর্ব ছন্দে গানের তালে হিল্লোল তুলছে দেহে… হাতের মুদ্রায় তৈরী করে চলেছে গানের ছন্দ… ঘুরে ফিরে মনের সমস্ত আনন্দ ঢেলে দিয়ে সে নেচে চলেছে আপন খেয়ালে…

প্রাণ চায় চক্ষু না চায়, মরি একি তোর দুস্তরলজ্জা।

সুন্দর এসে ফিরে যায়, তবে কার লাগি মিথ্যা এ সজ্জা॥

মুখে নাহি নিঃসরে ভাষ, দহে অন্তরে নির্বাক বহ্নি।

ওষ্ঠে কী নিষ্ঠুর হাস, তব মর্মে যে ক্রন্দন তন্বী!

মাল্য যে দংশিছে হায়, তব শয্যা যে কণ্টকশয্যা

মিলনসমুদ্রবেলায় চির- বিচ্ছেদজর্জর মজ্জা॥

পেছন থেকে হাততালির আওয়াজে চমকে ঘুরে তাকায় পৃথা… দেখে ছাদের দরজা ঠেলে এগিয়ে আসছেন অলোকবাবু… মুখে গাল এঁটো করা হাসি লেগে রয়েছে ওনার… সন্ধ্যের আবছায়া অন্ধকারেও পৃথার বুঝতে অসুবিধা হয় না ভদ্রলোকের লোলুপ চোখের চাহনি ঘুরে বেড়াচ্ছে তার শরীরের ওপর থেকে নীচ অবধি… অপ্রস্তুত হাসি হেসে তাড়াতাড়ি টেনে বেঁধে রাখা ওড়নার বাঁধনটা খুলে দেয় সে… ঠিক করে সেটাকে ভাজ করে বুকের ওপরে ফেলে রাখে… প্রশ্ন করে… ‘এই ঝড়ে আপনি ওপরে, ছাদে এলেন?’

কথায় কথায় বেশ অনেকটাই এগিয়ে এসেছেন ততক্ষনে ভদ্রলোক… ওই আধো-অন্ধকারের মধ্যেও পৃথার নজর এড়ায় ভদ্রলোকের চোখের মনিতে লালসার ঝিলিক… তাকে একা এই ভাবে ছাদে দেখতে পাবেন, এটা যেন ওনার কাছে পরম প্রাপ্তি… নির্জন ছাদে একটা একাকী পৃথার মত তম্বী দেহের মেয়েকে পেয়ে কামনার আগুনে ধিকিধিকি জ্বলতে থাকে অলোকবাবুর সারা দেহটা… ঠোঁটা চেটে নিয়ে বলে ওঠেন, ‘ছাদে না এলে তোমাকে এই ভাবে তো দেখতে পেতাম না… বাহ! তুমি তো বেশ ভালো নাচো… অবস্য তোমার শরীরটাই এত সুন্দর, এত লোভনীয়, ভালো তো নাচবেই…’ বলতে বলতে নজর বোলান পৃথার শরীরের প্রতিটা খাঁজে…

‘না, মানে ওই আর কি… এমনই… মনে হলো তাই…’ কুন্ঠিত গলায় উত্তর দেয় পৃথা… কেমন যেন অর্নবের সামনে একজন অনাহুত ব্যক্তি তার দিকে এই ভাবে মন্তব্য করাটা সে ঠিক নিতে পারে না… ভালো লাগে না… অস্বস্থি হয় ভেতর ভেতর… সে জানে, যদি ভদ্রলোক তাকে একা ভেবে কিছু খারাপ মতলবে তার দিকে হাত বাড়াতে যান, অর্নব সেটা হতে দেবে না, কিন্তু তবুও… সুশান্তর ঘটনাটার পর থেকে তার সেই আত্মবিশ্বাসএর জায়গাটাতেই কেমন নড়ে গিয়েছে, ভুলে গিয়েছে মানুষের লোলুপতা প্রত্যাহত করার শক্তিটাই… অথচ এই পৃথাই এক সময় কি অবলীলায় না ঘুরে বেরিয়েছে পাহাড়ে পর্বতে, বনে জঙ্গলে… আসলে জন্তুদের মুখোমুখি হওয়া আর ভদ্রমুখোশের আড়ালে থাকা প্রকৃত জন্তুদের সাথে সংঘাত যে কতটা আলাদা, সেই দিন থেকেই তার সামনে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে… আগে হলে এই অলোকবাবুকে নিয়েই কতই না মজা করেছে, প্রলুব্ধ করেছে সে… কিন্তু আজ কেন জানে না সে, এই খোলা ছাদে অন্ধকার আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে একটা অস্বস্থি হয় তার…

‘তুমি কি ঘরেও এই ভাবেই নাচো? বাহ! খুব ভালো… নাচের তালে তালে তোমার সারা শরীরটা কেমন কি সুন্দর করে দুলে দুলে উঠছিল… তোমার অবস্য চেহারাটা বেশ ভালো… হেঁ হেঁ…’ বলতে বলত দেঁতো হাসেন ভদ্রলোক… আরো খানিকটা এগিয়ে আসেন পৃথার দিকে…

পৃথা স্পর্শ পায়ে কাঁধের ওপরে অর্নবের হাতের… সাথে সাথেই যেন তার কিছুক্ষন আগের হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাসটা ফিরে আসে… আগের পৃথা হয়ে ওঠে সে… ঠোঁটের কোনে খেলে যায় একরাশ দুষ্টুমীর হাসি… ‘ভালো লেগেছে আপনার আমার নাচ?’ প্রশ্ন করে সে…

গদগদ গলায় বলে ওঠেন অলোকবাবু, ‘উফফফ ভালো লেগেছে মানে… কি সুন্দর করে নাচছিলে তুমি… আমি তো ভাবতেই পারিনি তুমি এতো ভালো নাচতে পারো… বাহ! খুব ভালো লাগছিল… আসলে…’

অলোকবাবুর মুখের কথাটা প্রায় কেড়ে নেয় পৃথা, ‘হ্যা… ঠিক বলেছেন… ও’ও মনে হয় পছন্দ করে…’

থমকে যান ভদ্রলোক, পৃথার কথাটা শুনে… ‘ও’ও… মানে?’ অবাক গলায় প্রশ্ন করেন উনি…

‘হ্যা… ওই তো… আমার ঘরে যে থাকে… কেন? শোনেন নি আগে?’ প্রশ্ন করে ফিরিয়ে পৃথা।

‘তোমার ঘরে?’ আরো অবাক হন ভদ্রলোক… ‘তুমি তো একাই থাকো… তাই তো জানতাম…’

‘একাই তো… কিন্তু আবার ও’ও থাকে আমার সাথে…’ রহস্য করে উত্তর দেয় পৃথা…

‘ঠিক বুঝলাম না… অন্য কেউও থাকে নাকি তোমার সাথে?’ কৌতুহলী হয়ে ওঠে অলোকবাবুর স্বর… রসের সূত্র খুজতে চেষ্টা করেন পৃথার কথার মধ্যে দিয়ে… ‘কে? কে আসে? রাতে আসে?’

‘না, না… রাতে আসবে কেন… সব সময়ই তো আমি উপলব্ধি করি ওকে… আমার আশে পাশে… কেন আপনি শোনেন নি ব্যাপারটা…’

একটু কেমন ধাঁধায় পড়ে যান ভদ্রলোক… আগে শুনেছিলেন ঠিকই ব্যাপারটা… কিন্তু অতটা গুরুত্ব দেন নি কখনই… ভেবেছিলেন যে হয়তো ওটা বাজে লোকের রটনা… নিজে তো তার কোন প্রত্যক্ষ প্রমাণ পান নি, তাই… ‘মানে কে থাকে বলো তো?’ চোখের ওপর থেকে ততক্ষনে লোলুপতা সরে গিয়েছে, বদলে গিয়েছে অদম্য কৌতুহলে…

‘সেটা ঠিক বলতে পারবো না, বুঝলেন, কথা তো হয় নি, তবে ভিষন ভাবে বুঝতে পারি… প্রায় সব সময়ই আমাকে ঘিরে থাকে ও… কেমন যেন আমায় সর্বদা বডিগার্ডের মত রক্ষা করে চলে…’ মিচকি হেসে উত্তর দেয় পৃথা…

‘ওহ! তাই? আমিও শুনেছিলাম আগে ঠিকই, কিন্তু আসলে বিশ্বাস করি নি… নিজে তো কখনও কিছু বুঝতে পারি নি… তা তুমি যখন বলছ, কারন যতই হোক তুমি থাকো ঘরে…’ বলতে বলতে হাতটা কপালের ওপরে একবার বুলিয়ে নেন… বোঝা যায় ঝোড়ো হাওয়াতেও কপালের ওপরে বোধহয় বিন্দু বিন্দু ঘামের রেখা দেখা দিয়েছে…

‘আরে ঘর কি বলছেন… আমি যেখানে যাই, সেখানেই তো ওর উপস্থিতি উপলব্ধি করি… সব জায়গায়… আমাকে যেন ঘিরে থাকে সবসময়…’ মুখটাকে যতটা সম্ভব সিরিয়াস করে বলে ওঠে পৃথা…

‘মা… মানে… এখানেও কি উপলব্ধি করছ নাকি?’ চকিতে চারপাশটায় চোখ বুলিয়ে জিজ্ঞাসা করেন পৃথাকে…

‘হ্যা তো… এখানেও তো বুঝতে পারছি… তা না হলে এত নিশ্চিন্তে এই সন্ধ্যের অন্ধকারে ছাদে চলে আসবো, বলুন, মনের সুখের নাচতে পারতাম নাকি?’ বলতে বলত ইচ্ছা করেই দুটো হাত মাথার ওপরে সোজা সুজি তুলে দেয় সে… বুকটাকে একটু এগিয়ে দিয়ে আড়মোড়া ভাঙে হাতের টানে…

অলোকবাবু পৃথার বুকের ওপরে দৃষ্টি দিয়েই চট করে সরিয়ে নেন কি মনে করে… ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করেন… ‘তুমি এখানেও ওই ওকে অনুভব করছো?’ ফের জিজ্ঞাসা করে ওঠেন তিনি।

‘হ্যা তো… আচ্ছা দেখবেন… ওই যে দেখছেন দড়িতে কাপড়খানা হাওয়ায় উড়ছে… দেখতে পাচ্ছেন তো…’ ছাদের দড়িতে ঝুলতে থাকা সাদা কাপড়টার দিকে ইশারা করে পৃথা… সেই দিকে মুখ ফিরিয়ে তাকান ভদ্রলোক…

‘হ্যা… তো?’ ফ্যাসফ্যাসে গলায় প্রশ্ন করেন তিনি।

‘এবার দেখুন… কেমন এত হাওয়াতেও কাপড়টা চুপ করে দাঁড়িয়ে যাবে…’ বলে ওঠে পৃথা।

বিস্ফারিত চোখে অলোকবাবু দেখেন সত্যিই উড়তে থাকা কাপড়টা হটাৎ করে সোজা হয়ে দাড়িয়ে পড়ে… এত হাওয়ার মধ্যেও এতটুকুও নড়ে না সেটা… যেন কেউ ওটাকে হাত দিয়ে টেনে ধরে রেখেছে…

ধড়াস করে ওঠে ভদ্রলোকের বুকের ভেতরটা… শুকিয়ে যায় গলা… মুখ তুলে একবার তাকায় পৃথার পানে… সে চোখে আর বিশ্ময় বা লোভ নেই… আছে একরাশ ভয়… তাড়াতাড়ি করে বলে ওঠেন তিনি… ‘আআআ…আমি যাই… কে…কেমন… তোমার কাকিমা আবার এ…একা আছেন তো…’ বলে আর এতটুকুও দাঁড়ান না… দ্রুত নেমে যান সিড়ি দিয়ে নিচের দিকে… একবারের জন্যও পেছন ফিরে তাকাবার চেষ্টা করেন না উনি কোনমতেই…

ভদ্রলোককে এই ভাবে দৌড়ে পালিয়ে যেতে খিলখিল করে হেসে ওঠে পৃথা, হাসতে হাসতে প্রায় গড়িয়ে পড়ার উপক্রম হয় তার… অর্নব এগিয়ে এসে টেনে নেয় পৃথাকে নিজের বুকের মধ্যে… তখনই আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে অঝোর ধারায়… দুটো আলিঙ্গনবদ্ধ প্রেমিকযুগলকে শীতল বারিতে জিজিয়ে দিয়ে…



৪১।।

‘বৃষ্টি নেমে গেছে… চলো নীচে চলে যাই এবার…’ পৃথাকে বলে ওঠে অর্নব…

‘আর একটু থাকি না… প্লিজ…’ অর্নবের বুক থেকে মুখ তুলে আবদার করে পৃথা… ঝোড়ো হাওয়ার সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির ঝাপটায় ভিজে উঠতে থাকে দুজনেই… বৃষ্টির ছিটে অর্নবের গায়ে, মাথায়, দাড়ির ওপরে পড়ে একটা অদ্ভুত অবয়ব তৈরী করে চলে ওই আধো অন্ধকারের মধ্যে… কায়াহীন দেহটার চারধারে একটা রূপরেখা তৈরী হয় উঠতে শুরু করে… পৃথা মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকে চোখের সন্মুখে গড়ে উঠতে থাকা অস্ফুট অবয়বটার দিকে…

‘কি দেখছ?’ প্রশ্ন করে অর্নব…

‘তোমায়…’ বুকের ভেতর থেকে যেন কথাটা বেরিয়ে আসে পৃথার…

‘আমায়?’ অবাক হয় অর্নব… ‘কি করে?’

‘এই তো তুমি… আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছো…’ বলতে গিয়ে কেঁপে ওঠে পৃথা… এক অদ্ভুত আনন্দে… অস্ফুট স্বরে বলে সে… ‘তোমার মুখ, গাল, দাঁড়ি, গোঁফ, কাঁধ, বাহু, হাত, বুক, পা… আমি সব দেখতে পাচ্ছি সোনা… সব…’ কাঁপা হাত তুলে রাখে অর্নবের গালের দাড়ির ওপরে… মাখিয়ে দিতে থাকে আকাশ থেকে ঝরে পড়া বৃষ্টির জলের ফোঁটাগুলো অর্নবের সারা দেহে… ‘এই তো তুমি… আমার অর্নব… আমার…’ বলতে বলতে যেন গলা বুজে আসে পৃথার… কাঁপতে থাকে সে ঘটনার অভিঘাতে… সে দেখছে… দেখছে তার অর্নবকে… ঝাপসা… কিন্তু তবুও, তার চোখে ধরা পড়ছে অর্নবের অবয়ব… যত দেখে ততই যেন মহীত হয়ে যায় সে… বুকের মধ্যেটায় তোলপাড় করে ওঠে যেন… এইটুকু দেখেই সে আপ্লুত… ভাবতে ভাবতেই অর্নবের ঘাড়ের কাছে হাত রেখে টেনে নেয় নিজের পানে আবছায়া মুখটাকে… নিজের ঠোঁটদুটো ফাঁক করে মিলিয়ে দেয় অর্নবের ঠোঁটের সাথে… জিভে লাগে বৃষ্টির জোলো স্বাদ… জিভটাকে ঢুকিয়ে দেয় অর্নবের উষ্ণ মুখের মধ্যে… খুঁজে নেয় অর্নবের জিভটাকে আপন জিভের সাহায্যে… খেলা করে সেটাকে নিয়ে… হাত ঘুরে বেড়ায় পেশল কাঁধের ওপরে, বাহুতে…

বাহু থেকে হাত নেমে আসে অর্নবের শরীরের পাশে… দেহের ধার ধরে ঘুরে বেড়ায় পৃথার হাতদুটো দুই পাশে… বাহুমূল থেকে কোমর অবধি, আবার পরক্ষনেই ফিরে উঠে যায় ওপর পানে… হাতের বুড়ো আঙু্লের ছোয়া লাগে অর্নবের চওড়া ছাতির বৃন্তের সাথে… আঙুল দিয়ে নাড়ায় অর্নবের বুকের বোঁটাটাকে… অনুভব করে ওর ছোয়ায় কি ভাবে শক্ত হয়ে উঠছে সে দুটো… পৃথার মুখেই গুঙিয়ে ওঠে অর্নব… ‘উমমম…’

অর্নবের গোঙানি কানে যেতেই আরো উৎসাহিত হয়ে ওঠে পৃথা… তির্যক চোখে একবার তাকায় আবছায়া মুখটার পানে, দেহের পাশ থেকে হাত নিয়ে এসে রাখে অর্নবের বুকের ওপরে… বোলায় বৃষ্টি ভেজা লোমের আড়ালে থাকা শক্ত বোঁটাদুটোর ওপরে আলতো করে… স্পর্শ নেয় হাতের আঙুলের ওপরে বৃন্তের শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে ওঠাটাকে… তারপর ডান হাতটাকে সরিয়ে দিয়ে মুখ বাড়ায় সে… জিভ ছোয়ায় বৃষ্টির জলে ভিজে ওঠা লোমের আড়ালে থাকা বৃন্তটায়… জিভ বোলায় ওটার চারপাশে… ছোট্ট বলয়টাকে ঘিরে… অর্নবের মনে হয় যেন সারা শরীরটা সিরসির করে উঠতে শুরু করেছে… হাত তুলে চেপে ধরে পৃথার মাথাটাকে নিজের বুকের ওপরে… পৃথাও মুখের মধ্যে টেনে নেয় ছোট্ট বৃন্তটাকে… চোষে, জিভ বোলায়, মাঝে মাঝে কুরে দেয় দাঁত দিয়ে হাল্কা করে… তারপর একটা সময় বদলে নেয় অপর বৃন্তটাকে মুখের মধ্যে… সেটাকেও একই ভাবে আদর করতে থাকে মুখের সাহায্যে… নিজের শরীরটা একটু একটু করে সাড়া দিচ্ছে, সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় না তার… মুখ দিয়ে অর্নবের বুকের বোঁটাটাকে নিয়ে খেলা করতে করতে উরু ঘসে সে একটার সাথে আর একটার… বৃষ্টির জলে ওপরের পোষাক ভিজে উঠেছে ঠিকই, কিন্তু ভেতরের প্যান্টিটা যে এতক্ষনে রসে ভিজে চপচপে হয়ে উঠেছে, সেটা বুঝতে বাকি থাকে না পৃথার…

কতকটা প্রায় জোর করেই বুকের ওপর থেকে পৃথার বাহু ধরে টেনে আলাদা করে দেয় অর্নব… পৃথার চোখের তারায় কামনার আগুন চোখে পড়ে… ‘এ বার চলো… আর বৃষ্টিতে থাকা ঠিক হবে না… এবার থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে…’ কোন রকমে বলে অর্নব… কিন্তু নিজেই বোঝে কথার মধ্যে যেন সেই জোরটাই হ্রাস পেয়েছে…

‘নাহ!… আই ওয়ান্ট ইয়ু টু মেক লাভ টু মী…’ অর্নবের ঝাপসা অবয়বের দিকে তাকিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে পৃথা… ছাদের পাঁচিলের গায়ে ঠেস দেয় সে পিছিয়ে গিয়ে…

‘এখানে? এই বৃষ্টির মধ্যে? কিন্তু…’ অপ্রস্তুত অর্নব বাধা দেবার চেষ্টা করে…

‘নো কিন্তু… এখনই চাই তোমায় আমার… এখানেই…’ ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলে পৃথা… স্বরের মধ্যে আর অনুরোধ নয়… যেন আদেশের সুর মিশে থাকে… যে আদেশ একমাত্র প্রচন্ড অধিকারবোধ থেকেই তৈরী হওয়া সম্ভব…

‘কিন্তু বৃষ্টি হয়ে গেছে যে…’ তাও একবার মানাবার চেষ্টা করে অর্নব… ঝোড়ো হাওয়ায় এলোমেলো হয়ে যায় জলে ভিজে ওঠা বড়বড় চুল আর দাড়িগুলো…

‘জানি… আই ওয়ান্ট ইয়ু টু মেক লাভ টু মী ইন দ্য রেন… আমার অনেকদিনের ইচ্ছা…’ চাপা গলায় বলে পৃথা… ‘করবে না আমায়?… টেক মী… ফাক মী ইন দিস ডাউনপোর…’ বলতে বলতে কামিজের হেমটা ধরে খুলতে যায় শরীর থেকে…

অর্নব হাত তুলে থামায় পৃথাকে… ‘ওটা খোলার দরকার নেই… ওটা পরাই থাক…’

থমকায় পৃথা… হাতের মুঠোয় তখন ধরা কামিজের হেমটা… বোঝার চেষ্টা করে অর্নবের কথার মানে… তারপরই উজ্জল হয়ে ওঠে ওর মুখ… খুশি হয় অর্নবের তার শালিণতা রক্ষা করার তাগিদ দেখে… কেউ যদি হটাৎ করে এসেও পড়ে, পৃথা কামিজটা নামিয়ে দিয়ে নিজের নারীত্বের আড়াল করতে পারবে সাথে সাথে… ঠোঁটের কোনে সন্তুষ্টির হাসি খেলে যায় তার… কামিজের হেমটা ছেড়ে দিয়ে কোমর থেকে লেগিংসটাকে একটানে খুলে ফেলে… তারপর প্যান্টিটাও… দুটোকে ফেলে দেয় ছাদের মেঝেতে… গায়ের ওড়নাটাকে আবার বুকের ওপর দিয়ে ফিরিয়ে পেঁচিয়ে বেঁধে দেয় কোমরের একপাশে… হাত বাড়ায় অর্নবের কোলের দিকে… হাতে ঠেকে শক্ত হয়ে উঁচিয়ে থাকা উত্তেজনায় অসম্ভব উতপ্ত হয়ে থাকা পৌরষটা… ‘ইয়ু আর আলরেডি হার্ড…’ ফিক করে হেসে ফেলে সে… মনে মনে ভাবে… ইশ… বাবুর মনে শখ অথচ মুখে কতই না, না না… অসভ্য একটা… ভাবতে ভাবতেই অর্নবের লিঙ্গটাকে ধরে টেনে নেয় নিজের দিকে… অর্নব দু পা আরো এগিয়ে আসে… দৃঢ় লিঙ্গটার মাথাটা ঠেকে পৃথার কুর্তির আড়ালে থাকা তলপেটের ওপরে… তাড়াতাড়ি করে অপর হাতটা দিয়ে কুর্তির কাপড়টাকে সরিয়ে দেয় পৃথা… নিজের ত্বকের ওপরে ছোয়া দেয় শক্ত হয়ে থাকা লিঙ্গটা… হাতের টানে টেনে সরিয়ে দেয় চামড়াটাকে ওটার মাথাটার থেকে… তারপর সেটাকে মুঠোয় ধরে আরো খানিকটা নামিয়ে নিয়ে রাখে নিজের দুই উরুর ফাঁকে, পশমএর মত নরম লোমে আচ্ছাদিত যোনিবেদীর ওপরে… ঘসে সেখানটায় বার কয়েক… মন পেতে চায় আরো বেশি… আরো অনেকটা স্পর্শ লিঙ্গটার, নিজের শরীরের ওপরে… পায়ের আঙুলে টিক দিয়ে শরীরটাকে উঁচু করে ধরে খানিকটা… এবার লিঙ্গটা পৌছে যায় যোনির মুখে… শরীরের ভেতর থেকে চুঁইয়ে বেরিয়ে আসা রস মেখে যায় বৃষ্টি ভেজা লিঙ্গের মাথাটায়… ঘসে যোনিমুখে… চোখ বন্ধ হয়ে আসে ভিষন আরামে পৃথার… চাপ বাড়ে হাতের মুঠোর… বাড়ে ঘসার তীব্রতাও… ফুলে ওঠে নাকের পাটা… নিঃশ্বাস নেয় বড় বড়… বৃষ্টির ঠান্ডা জলে ভিজে ওঠা কামিজটাও যেন কমাতে অপারগ তার দেহের বাড়তে থাকা তাপমাত্রার…

‘উমমম…’ গুঙিয়ে ওঠে অর্নব নিজের লিঙ্গের মাথায় এই ভাবে ঘর্ষন পড়ার ফলে… টেনে নেবার চেষ্টা করে পেছন পানে নিজের কোমরটাকে… অর্নবের এই ছটফটানি এড়ায় না পৃথার নজরও… আরো যেন জেদ চেপে যায় তার… এই ভাবে আঙুলের ডগায় শরীরটাকে তুলে ধরে রাখতে কষ্ট হয় তার… তবুও সে হাল ছাড়ে না… পাদুটো আরো খানিকটা ফাঁক করে মেলে ধরে নিজের উরুদুটোকে… কোমর থেকে ঠেলে এগিয়ে বাড়িয়ে ধরে যোনিটাকে অর্নবের লিঙ্গের দিকে… এবার প্রায় মুখের কাছে ছোঁয়া লাগে পুরুষাঙ্গটার মাথাটার… ভেজা পাপড়িদুটো সরে যেন জায়গা করে দেবার চেষ্টা করে আপনা থেকেই… ‘আহহহহহ… ইশশশশ…’ সিঁটিয়ে ওঠে ভালো লাগায়…

প্রায় জোর করেই পৃথার বাহুদুটো ধরে টেনে নেয় অর্নব নিজের দিকে… মুখ ঝুঁকিয়ে চেপে ধরে তার ঠোটটাকে পৃথার ঠোঁটের সাথে… পুরে দেয় জিভটাকে ওর মুখের মধ্যে… দুটো জিভ একে অপরে সাথে খেলায় মেতে ওঠে যেন…

অর্নব এই ভাবে ওকে টেনে নেবার ফলে আবার ভালো করে পা রেখে দাঁড়ায় পৃথা… অর্নবের পুরুষাঙ্গটা আটকা পড়ে থাকে তার দুই উরুর মাঝে, যোনির মুখে… ওর শরীর থেকে প্রচন্ড তাপ বেরিয়ে এসে যেন পুড়িয়ে দিতে থাকে অর্নবের লিঙ্গটার ওই অংশটা… অর্নবের লিঙ্গ ছেড়ে দিয়ে আঁকড়ে ধরে বাহুদুটোকে… ঠেলে বাড়িয়ে দেয় নিজের ভেজা কামিজের আড়ালে থাকা নরম মুঠিভর বুকদুটোকে অর্নবের ছাতির মধ্যে… নিষ্পেশিত হতে থাকে অর্নবের বুকের সাথে…

অর্নব মুখ তুললে ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে পৃথা… ‘এবার করো… আর পারছি না যে সোনা… আমার সব ভেসে যাচ্ছে ওখানটায়… এই দেখো…’ বলতে বলতে অর্নবের একটা হাত তুলে নিয়ে গুঁজে দেয় নিজের দুই পায়ের ফাঁকে… অর্নবের হাতে লাগে উষ্ণ রসের স্পর্শ…

অর্নব আর দ্বিরুক্তি করে না… নেমে আসা কুর্তিটাকে ধরে সরিয়ে দেয় সামনের থেকে… এগিয়ে আসে আরো খানিকটা সামনের দিকে সে…

‘নাহ!…’ হটাৎ করে অর্নবের তলপেটে হাত রেখে বাধা দেয় পৃথা… অর্নব ভুরু কুঁচকে তাকায় পৃথার দিকে… পৃথা না দেখতে পেলেও বুঝতে পারে অর্নবের জিজ্ঞাসা ভরা চাহনি… গভীর গলায় সে বলে ওঠে… ‘নাহ!… এ ভাবে নয়… আই ওয়ান্ট ইয়ু টু টেক মী ফ্রম বিহাইন্ড…’ বলতে বলতে ঘুরে যায় সে… পাঁচিলের ওপরে হাত রেখে দাঁড়ায়… নিজের বর্তুল উত্তল নিতম্বটাকে এগিয়ে, বাড়িয়ে ধরে অর্নবের দিকে… ‘টেক মী নাও… ফাক মী ফ্রম বিহান্ড…’

শরীরটাকে সামনে হেলিয়ে নিজের নিতম্বটাকে তার দিকে বাড়িয়ে রাখার ফলে হাল্কা রঙের কুর্তির বৃষ্টি ভেজা কাপড়টা যে ভাবে নিতম্বের সাথে লেপটে রয়েছে, তাতে শরীরের উত্তলতা ঢাকার থেকে আরো যেন শতগুন বাড়িয়ে তুলেছে সেটি… ওই আবছায়া অন্ধকারেও পরিষ্কার, নিতম্বের লোভনীয় বর্তুলতা, দুটো মাংসল তালের মাঝের অববাহিকা… কাঁপা হাতে স্পর্শ করে পৃথার নিতম্বটাকে অর্নব… ওহ!… কি উষ্ণ মনে হয় তার… ঠান্ডা কাপড়ের আড়াল থাকা সত্তেও… হাত ফেরায় নিতম্বের গোলাকৃত ত্বকের ওপরে… চাপ দেয় সামান্য… তুলতুলে মাংসের তালটা যেন আপনা থেকেই ডেবে যায় খানিকটা… হাত তুলে নিতেই ফের শীয় জায়গায় ফিরে আসে সেটার বর্তুলতা… আবার হাত রাখে… এবার নিতম্বের ওপরে শুধু মাত্র হাল্কা স্পর্শ রেখে বুলিয়ে কোমরের ওপরে থামে… একটু একটু করে গোটাতে থাকে কুর্তিটাকে, ঝুলে থাকা ভেজা কাপড়টাকে ধরে… আর দুটো কলাগাছের কান্ডের মত দুধ সাদা মসৃণ পুরুষ্টু থাই উন্মুক্ত হতে থাকে তার চোখের সামনে… বৃষ্টির জলে যেন আরো চিকন হয়ে উঠেছে সে দুটির ত্বক… উরুর শেষে প্রকাশ পেতে থাকে নিতম্ব… গোল… ফর্সা… ধীরে ধীরে উন্মেলিত হতে থাকে… কুর্তিটার কাপড় গুটিয়ে উঠে গেল সম্পূর্ণ ভাবে বেরিয়ে পড়ে দুটো ধবধবে সাদা চামড়ায় মোড়া ওলটানো তানপুরার খোলের মত দুটো নিতম্বের দাবনা, দুটোকে গভীর অববাহিকায় আলাদা করে রেখে দিয়েছে কেউ যেন… ঘন মেঘাচ্ছন্ন সন্ধ্যের অন্ধকারে নিজস্ব দ্যুতিতে একটা অদ্ভুত সাদা আলো বিকরিত হচ্ছে যেন সেই নিতম্ব থেকে… চোখ ঝলসে যায় সেই বিকিরণে… পৃথা দুই পা নাড়িয়ে একটু হেলিয়ে ধরে দেহটাকে… এই ভাবে দেহের দুলুনিতে তলতল করে ওঠে মাংসল দাবনা দুটো… তীব্র আকাঙ্খায় চকচক করে ওঠে অর্নবের চোখ… উত্তেজনায় যেন ফেটে পড়তে যায় দৃঢ় লিঙ্গটা… কোমর বাড়িয়ে এগিয়ে ধরে সেটিকে আরো খানিকটা… দুই পায়ের ফাঁকে বাড়িয়ে দেয় লিঙ্গের মাথাটাকে… স্পর্শ পায় উষ্ণ যোনির মুখ… রসে ভিজে হড়হড়ে হয়ে রয়েছে সেটি… অন্ধকার না হলে হয়তো দেখতে পেত যোনির মুখে এসে জমে থাকা রসের বিন্দুও… লিঙ্গটাকে ধরে চামড়াটাকে টেনে নামিয়ে দেয় অর্নব… আরো খানিকটা এগিয়ে যায় সামনের পানে… ঠেকায় পুরুষাঙ্গর মাথাটাকে যোনির ঠিক মুখটায়… কানে আসে পৃথার চাপা শিৎকার… ‘আহহহহহহ…’

নিতম্বের নরম মাংসে হাত বোলাতে বোলাতে কোমর দোলায় আস্তে আস্তে… দৃঢ় লিঙ্গটা ঘসা খায় যোনির মুখে… পৃথা আরো খানিকটা ঝুঁকে যায় সামনের পানে… প্রায় নিজের বুকটাকে এগিয়ে দিয়ে দেহের ভার রাখে ছাদের কর্কশ পাঁচিলের ওপরে… উরুদুটো আরো বেগদ খানেক মেলে ধরে দুই পাশে… তুলে ধরে নিজের নিতম্বটাকে অর্নবের পানে… দেহের নীচ থেকে হাত গলিয়ে দিয়ে আঙুল ছোয়ায় যোনির মুখে ঘসতে থাকা লিঙ্গের মাথাটায়… তারপর সেটাকে নিজেই যোনির মুখটায় চেপে ধরে রেখে দেহটাকে সামনে পেছনে করে আন্দোলিত করতে থাকে আস্তে আস্তে… যেন আরো ভালো করে তার দেহের রস পুরুষাঙ্গটার মাথায় মাখিয়ে দেবার অভিপ্রায়…

হটাৎ অর্নব পেছিয়ে যায় একটু… যোনির মুখ থেকে টেনে বের করে নেয় তার লিঙ্গটাকে…

এই ভাবে টেনে নেওয়াতে পৃথাও অবাক হয়… প্রশ্ন মাখা চোখে ঘাড় ফিরিয়ে বোঝার চেষ্টা করে সে…

অর্নব একবার পেছন ফিরে তাকায় ছাদের ঘরের দরজার দিকে… তারপর নিশ্চিন্ত হলে, পৃথার নিতম্বের দাবনার ওপরে বারেক হাত বুলিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে সে… মেলে রাখা দুই উরুকে সামনে রেখে… তার মুখটা সমান্তরাল হয়ে থাকে পৃথার বাড়িয়ে রাখা নিতম্বের সাথে… হাতের টানে নরম দাবনাদুটোকে দুই পাশে টেনে ধরে… ত্বকের দ্যুতিতেই চোখে পড়ে ছোট্ট পায়ুছিদ্রটা… আশপাশের চামড়ার রঙের তুলনায় বেশ গাঢ়… এক মনে তাকিয়ে থাকে সেটার দিকে মহিত চোখে… আকাশ থেকে ঝরে পড়া বৃষ্টির জল মসৃণ নিতম্বের ওপরে পড়ে ছিটকে ছিটকে এসে লাগে তার চোখে মুখে… খানিকটা গড়িয়ে গিয়ে নিতম্বের অববাহিকা বেয়ে নেমে যায় আরো নীচের পানে… মাংসল নিতম্বটাকে ধরে মুখ বাড়ায় অর্নব… জিভ বের করে ছোয়া দেয় পায়ুছিদ্রের ওপরে… ‘ইশশশশশ…’ পৃথার হিসিয়ে ওঠা কানে আসে… জিভটাকে সরু করে ছোট ছোট আঘাত করতে থাকে পায়ুছিদ্রের মুখটায়… চাপ দেয় জিভ দিয়ে… লম্বা লম্বী চেটে দেয় নীচ থেকে ওপর অবধি… পৃথার ক্রমাগত বেরিয়ে আসা শিৎকার থামতে চায় না… ছাদের পাঁচিলটায় হাতের তেলো রেখে আরো ঠেলে দেয় কোমর থেকে নিতম্বটাকে অর্নবের পানে… জিভের অভিমুখ বুঝে নিজের দেহটাকে সেই মত নাড়ায় আরো ভালো করে পায়ুছিদ্রের ওপরে স্পর্শ পাবার প্রবল আকাঙ্খায়… দেহের নীচ দিয়ে হাত নিয়ে গিয়ে চেপে ধরে যোনির মুখে ভগাঙ্কুরটায়… আঙুলের চাপে চক্রাকারে ঘোরায় সেটাকে নিয়ে… হাতের আঙুল ভরে ওঠে তারই নিজের শরীর থেকে চুঁইয়ে বেরিয়ে আসা উষ্ণ রসে…

অর্নব পায়ুছিদ্র ছেড়ে আরো খানিকটা নেমে যায় জিভ বোলাতে বোলাতে… পৌছে যায় যোনির মুখে… সামান্য ঝুঁকে মুখটা গুঁজে দেয় দুটো সুঠাম উরুর মধ্যে… জিভ ঠেকায় যোনিমুখে… মুখে লাগে বৃষ্টির জলে সাথে মিশে থাকা পৃথার শরীরের কষাটে নোনতা রস… জিভ নাড়িয়ে মুখের মধ্যে টেনে নিতে থাকে বেরিয়ে আসা রসগুলো… আরো খানিকটা এগিয়ে দেয় যেখানটায় তখনও চেপে ধরা রয়েছে পৃথার আঙুলগুলো, ভগাঙ্কুরটার ওপরটায়… পৃথার আঙুলটাতেই চাটে সে… তাড়াতাড়ি আঙুল সরিয়ে নেয় পৃথা… জায়গা করে দেয় অর্নবের জিভটাকে নিজের ভগাঙ্কুরে ছোঁয়া পাবার আশায়… পায়… স্পর্শ পায় ভগাঙ্কুরে অর্নবের জিভটার… আর পেতেই যেন সারা শরীরে কি একটা ঝিলিক মেরে যায়… যেন মনে হয় একটা বিদ্যুতের শিখা খেলে গেল যোনির মুখ থেকে মাথা অবধি… ‘আহহহহহ…’ গুঙিয়ে ওঠে সে… কোমর থেকে কুঁচকে ধরে দেহটাকে বারদুয়েক… ফের খুলে মেলে দেয় অর্নবের দিকে… মেলে ধরে তার যোনিটাকে অর্নবের মুখের সামনে…

হাত তুলে বুড়ো আঙুলের চাপ রাখে ভগাঙ্কুরটার ওপরে… তারপর জিভ পুরে দেয় যোনির মধ্যে অর্নব… ওপর নীচে করে নাড়ায় জিভটাকে যোনির মধ্যে রেখে… স্বাদ নেয় জিভ বেয়ে মুখের মধ্যে গড়িয়ে আসা পৃথার শরীরের জমা রসের ধারার…

বৃষ্টির বেগ আরো বৃদ্ধি পায়… আকাশ ভাঙা বৃষ্টি নামে ছাদের ওপরে শারীরিয় খেলায় মত্ত থাকা দুটো দেহের ওপরে… ঠান্ডা জলের ফোঁটাগুলো যেন তিরের মত এসে বেঁধে দুজনের দেহে… কিন্তু কারুর সে দিকে কোন হুস থাকে না… অর্নব ব্যস্ত থাকে জিভের সাহায্যে পৃথার দেহের রস পান করতে আর তার অভিঘাতে আগুন জ্বলে যেন পৃথার সারা শরীরে… ছটফট করতে থাকে সে… ছাদের পাঁচিলটা হাতে ধরে কোমর নাচায়… ঠেলে ঠেলে ধরে নিজের যোনিটাকে অর্নবের মুখের ওপরে… থেকে থেকে হিসিয়ে ওঠে চোখ বন্ধ করে… অনুভব করে তলপেটের মধ্যে তৈরী হতে থাকা কম্পন… অনুভব করে তিরতির করে কাঁপতে শুরু করেছে দেহের প্রতিটা অঙ্গ… তার থাই, তলপেট, নিতম্ব… ওই ঠান্ডা আবহাওয়াতেও তীব্র উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ছে দেহের প্রতিটা কোনে… তপ্ত লাভার স্রোত যেন ধীরে ধীরে জায়গা করে নিচ্ছে তার প্রতিটা রন্ধ্রের মধ্যে… তপ্ত হয়ে উঠছে তার বুক… শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে বুকের বোঁটাদুটো… হাত তুলে খামচে ধরে নিজের বুকের একটা নরম স্তন… গায়ের জোরে সেটাকে নিষ্পেশিত করতে থাকে হাতের মুঠোয় পুরে… আঙুলের চাপে চেপে ধরে স্তনবৃন্তটাকে… টেনে ধরে সেটাকে শরীর থেকে তফাতে… রগড়ায় সেটাকে দুটো আঙুলের চাপে রেখে… ‘মাহহহহহহ… ওহহহহহহ… আই অ্যাম দেয়ার… ওহহহহহহ… গডডডড্‌… সাক মী… ফাক মী উইথ ইয়োর টাং… ওহহহহহ… ইশশশশ… ইটস্‌ কামিংনননন…’ তলপেটটা খিঁচে ধরে তার… অর্নবের মুখের মধ্যেই ঝিনিক দিয়ে ওঠে বার কয়েক… তারপরই প্রায় চিৎকার করে গুঙিয়ে ওঠে পৃথা… ‘ওহহহহ ফাকককক… মীইইইইইইই… আই অ্যাম কামিংননননন…’

অর্নব অনুভব করে তার গালে চেপে বসা নরম মসৃন উরুটার মধ্যের পেশিগুলোয় থরথর কাঁপন… পুরো পাটাই কাঁপতে শুরু করে পৃথার… কাঁপে তার তলপেট… যোনি দিয়ে কামড়ে ধরার অদম্য চেষ্টা করে তার দেহের মধ্যে পুরে রাখা অর্নবের জিভটাকে… যোনির ভেতর থেকে উষ্ণ তরল রস হড়হড়িয়ে বেরিয়ে আসে… ভরে ওঠে অর্নবের মুখের মধ্যেটায়… অর্নব কোঁৎকোঁৎ করে গিলে খেয়ে নিতে থাকে পৃথার দেহের রস… যার খানিকটা উপচিয়ে গড়িয়ে পড়ে অর্নবের কষ বেয়ে…

রস খসিয়ে এলিয়ে পড়ে পৃথা… হাঁটু ভেঙে প্রায় বসে পড়তে যায় ছাদের ওপরে… দেহের সব শক্তি যেন এক লহমায় নিঃশেষিত হয়ে গিয়েছে… অর্নব তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়িয়ে জাপটে ধরে নেয় পৃথার কোমরটাকে… আটকায় তাকে পড়ে যাওয়া থেকে… ছাদের খরখরে পাঁচিলের ওপরে গাল রেখে হাঁফায় পৃথা… বন্ধ করে রাখে চোখ… দম নেয় জোরে জোরে নিঃশ্বাস টেনে…

অপেক্ষা করে অর্নব পৃথাকে একটু শান্ত হওয়ার… তারপর যখন বোঝে অনেকটাই আয়ত্তে নিজেকে নিয়ে এসেছে পৃথা… কোমরটাকে একটু এগিয়ে বাড়িয়ে দেয় সামনের পানে… দৃঢ় লিঙ্গটাকে ফের গুঁজে দেয় পৃথার দুই থাইয়ের মাঝখান দিয়ে যোনির পানে… ছোয়া দেয় যোনির মুখে…

পৃথা হাত নামিয়ে বাড়িয়ে ধরে অর্নবের পুরুষাঙ্গটাকে নিজের যোনির মুখটায়… তারপর সেটাকে সেট করে দেয় তার দেহের প্রবেশপথে… ফ্যাসফ্যাসে স্বরে বলে ওঠে… ‘ইয়েস… নাও… পুট ইট ইন… ফাক মী…’

অর্নবকে দ্বিতীয়বার আর কিছু বলতে হয় না, সে ঠেলে ঠেসে ধরে তার কোমরটাকে পৃথার দেহের পানে… যোনির মধ্যে অবলীলায় হড়কে ঢুকে যায় উত্তেজনায় শক্ত হয়ে থাকা তার পুরুষাঙ্গটা… গুঙিয়ে ওঠে পৃথার দেহের মধ্যে অর্নবকে উপলব্ধি করে… ‘আহহহহ…’

হাত রাখে নিতম্বটার শেষে বক্রতা পাওয়া সরু কোমরটায়… সেখানকার নরম মাংসটাকে খামচে ধরে হাতের মুঠোয়… তারপর কোমরটাকে সামান্য পিছিয়ে আনে… ততটাই, যাতে না তার দৃঢ় পুরুষাঙ্গটা একেবারে বেরিয়ে আসে পৃথার শরীর থেকে… তারপর ফের ঠেলে দেয় কোমর এগিয়ে… ঢুকিয়ে দেয় সেটাকে পৃথার দেহের অভ্যন্তরে… কানে আসে পৃথার অস্ফুট শিৎকার… ‘উমফফফফ… আহহহহ…’ একটা ছন্দ তৈরী করে এবার… একটু একটু করে গতি বাড়তে থাকে অর্নবের কোমরের আন্দোলনের… বৃষ্টির জলের আওয়াজ ছাপিয়ে সারা ছাদের মধ্যে ভেসে বেড়ায় দুটো দেহের মিলনের শব্দ… থপথপ থপথপ… প্রতিবার দেহের আঘাতের সাথে তরঙ্গ সৃষ্টি করে পৃথার নরম নিতম্বের নীচের চর্বির পরতে… অদ্ভুত ভাবে ছোট ছোট ঢেউ তুলে মিশে যায় নিতম্ব থেকে কোমরের পানে… পৃথা কমিয়ে আনে দুই পায়ের দূরত্ব… চেপে ধরে আরো বেশি করে গুঁজে থাকা অর্নবের পুরুষাঙ্গটাকে নিজের যোনির পেশি দিয়ে… ঠেলে এগিয়ে দেয় কোমরটাকে অর্নবের পানে আরো… ছাদের পাঁচিলে হাত রেখে মাথা তোলে… বন্ধ করে রাখে চোখ… শুধু শরীর দিয়ে মিলনের আনন্দ উপভোগ করে চলে সে… অনুভব করার চেষ্টা করে কি ভাবে তার যোনির প্রতিটা কোষের সাথে ঘর্ষন খেয়ে ঢুকছে আর বেরুচ্ছে অর্নবের দৃঢ় লিঙ্গটা… আহহহহহ… কি আরাম… মনের মধ্যে প্রচন্ড ভালো লাগাটাকে এক মুহুর্তের জন্যও হারাতে চায় না সে… বিড়বিড় করে বলে চলে… ‘ইয়েস বেবী… লাইক দ্যাট… ফাক মী বেবী… ফাক মী… উফফফ… ইটস্‌ অ্যামেজিং টু ফীল ইয়ু ইন্সাইড… ফাক মী… গিভ ইট টু মী…’

অর্নবের মনে হয় যেন পুরুষাঙ্গটার মাথায় আগুন ধরে গিয়েছে… কুঁচকে কুঁচকে ওঠে তার অদৃশ্য অন্ডকোষটা… মাথা তুলে হেলিয়ে দেয় পেছন দিকে… চোখে মুখে ঝরে পড়ে বৃষ্টির বড় বড় ফোটা… ঝরে পড়ে বুকে, কাঁধে… বুঝতে পারে আর বেশিক্ষণ তার পক্ষে নিজেকে ধরে রাখা সম্ভব হবে না… যে কোন মুহুর্তে বীর্যস্খলন অনিবার্য… তাকায় সামনের পানে… তাকায় বাড়িটার অনতিদূরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রান্সফর্মারটায় বৃষ্টির ফোঁটা পরে চিকচিক করে ওঠা আগুনের ফুলকির দিকে… তার মধ্যেও ঠিক এই রকমই আগুনের ফুলকি ছিটকে ছিটকে উঠছে… আর সেই আগুন ছড়িয়ে যাচ্ছে দেহের ওই বিশেষ অঙ্গটার মধ্যে… আরো জোরে খামচে ধরে পৃথার কোমরটাকে… এর ফলে পৃথার লাগলো কিনা খেয়াল থাকে না তার… কোঁকিয়ে ওঠে দাঁতে দাঁত চেপে সে… ‘উমফফফফ… আগগহহহ… আমার… হবেহহহহ…’ জানান দেয় পৃথাকে… সর্বশক্তি নিয়ে গেঁথে দিতে থাকে পুরুষাঙ্গটাকে পৃথার শরীরের মধ্যে সে…

‘ইয়েস বেবী… কাম… কাম ইন্সাইড মী… ভরিয়ে দাও আমায়… আই ওয়ান্ট ইয়ু টু কাম ইন্সাইড মী… দাও সোনা দাও…’ বিড়বিড়িয়ে ওঠে পৃথা… আরো ঠেলে দেয় কোমরটাকে অর্নবের দিকে… ভালো করে ছাদের পাঁচিলটাকে চেপে ধরে তৈরী হয় দেহের মধ্যে অর্নবের প্রাণরস নেবার জন্য…

‘ওহহহহ… উমফফফফ… আগগগহহহহহ…’ গুঙিয়ে ওঠে অর্নব… আর একবার কোমরটাকে পিছিয়ে এনে প্রাণপনে ঠেসে ধরে পুরুষাঙ্গটাকে পৃথার যোনির মধ্যে… তপ্ত লাভার মত উগড়ে দিতে থাকে দলা দলা বীর্য… ভরিয়ে তোলে পৃথার তরুণ যোনির মধ্যেটা… কেঁপে কেঁপে ওঠে অর্নবের বলিষ্ঠ থাইদুটো বীর্যস্খলনের অভিঘাতে…

একটু পর, পৃথার শরীর থেকে নেতিয়ে আসা লিঙ্গটাকে টেনে বের করে নিয়ে পাঁচিলে হেলান দিয়ে দাঁড়ায় অর্নব, হাঁফাতে থাকে পৃথার পাশে দাঁড়িয়ে… পৃথাও সোজা হয়ে দাঁড়ায়… এগিয়ে এসে হাত রাখে অর্নবের বুকের ওপরে… ফিসফিসিয়ে বলে, ‘থ্যাঙ্ক ইয়ু… আমার অনেক দিনের শখ ছিল বৃষ্টিতে তোমার সাথে ইন্টারকোর্স করার… আজ তুমি আমার আশা পূরণ করে দিয়েছ… থ্যাঙ্ক ইয়ু সো মাচ বেবী… লাভ ইয়ু…’ বলতে বলতে এগিয়ে জড়িয়ে ধরে ক্লান্ত অর্নবের দেহটাকে… মাথা রাখে অদৃশ্য বুকটার ওপরে… কানে শোনে বুকের মধ্যে হৃদপিন্ডটার তখনও উত্তেজনায় ফুলে ফুলে উঠতে থাকা ধুকপুকানি… অনুভব করে যোনির ভেতর থেকে চুঁইয়ে বেরিয়ে সুডোল উরু বেয়ে গড়িয়ে নামতে থাকা অর্নবের উষ্ণ বীর্যের ধারা… আকাশটা গুড়গুড় করে ডেকে ওঠে… দুজনের তপ্ত শরীরটা ঠান্ডা হতে থাকে আরো বেড়ে ওঠা প্রবল বৃষ্টির ধারায়…



৪২।।

‘নাহ!… এবার ঘরে চলো… আজ অনেক ভিজেছি বৃষ্টিতে…’ অর্নবের বুক থেকে মুখ তুলে বলে ওঠে পৃথা… অদৃশ্য হাতটাকে ধরে টান দেয় সাথে করে নিয়ে যাবার তাগিদে… অন্য হাতে ধরে রাখে খানিক আগে শরীর থেকে খুলে ফেলা লেগিংস আর দেহের রস মেখে থাকা প্যান্টিটা… ফিরিয়ে আর পরতে ইচ্ছা করে না তার… আর তাছাড়া এই ভেজা লেগিংস পরাও সম্ভব নয় এখন… তাই হাতে করে নিয়ে যাওয়াই শ্রেয় বলে মনে করে…

আজ অর্নবের ভিষন ভালো লাগছে বৃষ্টির জলে এই ভাবে ভিজতে… কত দিন… না, না… কত বছর যে সে এই ভাবে খোলা আকাশের নীচে ভেজেনি… বৃষ্টি নামলেই তার মনে পড়ে যেতো সেই সেদিনের ঘটনাটা… বাজের আওয়াজে চমকে চমকে উঠত ফ্ল্যাটের নিভৃত কোনায়… কিন্তু আজ পৃথাকে পাশে পেয়ে তার মনে হচ্ছে সে মুছে দিতে পেরেছে তার সেই অনর্থক ভীতিটাকে… আরো, আরো ভিজতে ইচ্ছা করে তার এই তুমুল বৃষ্টির ধারার নীচে দাঁড়িয়ে… গাঢ় কন্ঠে সে বলে, ‘তুমি যাও… আমি আসছি… আর একটু থাকি…’

‘না সোনা… তোমায় একা ছেড়ে যাবো না আমি… তাহলে আমিও থাকি তোমার সাথে…’ আদুরে গলায় বলে ওঠে পৃথা… আসলে অর্নবকে একা এই ভাবে ছাদে ছেড়ে যেতে মন চায় না তার কিছুতেই…

‘দূর বোকা মেয়ে… আমি কি বাচ্ছা ছেলে? যে আমাকে সাথে করে নিয়ে যেতে হবে?’ হাসতে হাসতে বলে অর্নব…

‘কেন? বাচ্ছা ছেলেদেরই কি শুধু শাসন দরকার? এই ধাড়ী খোকাটার দরকার নেই?’ চোখ পাকায় পৃথা…

‘আমি ধাড়ী খোকা?’ হাসতে হাসতে প্রশ্ন করে অর্নব…

‘হুউউউ… ধাড়ী খোকাই তো… একটা ভিষণ মিষ্টি দুষ্টু বদমাইশ ছেলে…’ বলতে বলতে এগিয়ে এসে অর্নবের ভেজা দাড়িতে হাত রাখে… লেগে থাকা বৃষ্টির জলগুলো মুছে দেবার চেষ্টা করে দাড়ির ওপর থেকে… ‘দেখো তো… কি রকম ভিজে গেছো তুমি… আরো বৃষ্টিতে থাকলে এবার ঠান্ডা লেগে যাবে যে সোনা…’ গলার স্বরে অর্নবের প্রতি উৎকন্ঠার আভাশ মিশে যায়…

পৃথার কোমরটা ধরে টেনে নেয় নিজের পানে অর্নব, ‘আমায় এত কেন ভালোবাসো তিতির?’

অর্নবের হাতের ছোঁয়া যেন গলে যায় পৃথা… ঢুকে যায় অর্নবের বুকের মধ্যে সে… বুকের লোমের মধ্যে মুখ গুঁজে গুনগুনায়, ‘ইশশশ… বয়েই গেছে ভালোবাসতে… একটা বিচ্ছিরি অসভ্য লোক…’

‘কিন্তু এই বিচ্ছিরি অসভ্য লোকটার জন্য যে মেয়েটা পাগল… সেটা কি মুখে বললে তবে বুঝবো?’ গাঢ় স্বরে বলে অর্নব…

‘কে বলেছে সব বুঝতে? আমি কি বলেছি নাকি?’ বলতে বলতে হাত তুলে আঁচড় কাটে ছাতির ওপরে…

‘সব কি বলে দিতে হয়?’ মাথা নামায় পৃথার ভেজা চুলের ওপরে… চুমু খায় সেখানে…

আকাশ ডেকে ওঠে গুড়গুড় করে…

‘না গো… বড্ডো চিন্তা হয় তোমায় নিয়ে… তোমার যদি শরীর খারাপ হয়, আমি কি করবো বলো তো? আর পাঁচটা লোকের মত যদি তোমায় দেখতে পেতাম, আমার হয়তো এতটা চিন্তা থাকতো না, কিন্তু…’ বলতে বলতে বুকের থেকে মুখ থেলে থাকায় আবছায়া অবয়বটার পানে… হাত তুলে ফের রাখে অর্নবের গালের ওপরে… ‘তুমি যে আমার কাছে কি, তুমি জানো না…’ বলতে বলতে গলার স্বর বুজে আসে আবেগে…

‘আমার কিচ্ছু হবে না… তুমি আছো না!’ আস্বস্থ করার চেষ্টা করে অর্নব…

‘হ্যা… লোকটা সব জেনে বসে আছে… কতদিন পর বৃষ্টিতে ভিজলে বলো তো… এখন যদি ঠান্ডা লেগে যায়?’ ফের গলার স্বরে উৎকন্ঠা ফিরে আসে পৃথার…

‘ও আচ্ছা… আমি ভিজলাম… আমি তো বৃষ্টি আসতেই বলেছিলাম নীচে যেতে… তখন কে আটকেছিল শুনি… কে আদর খাবার জন্য আমার বুকের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল?’ হাসতে হাসতে বলে অর্নব…

শুনে কান লাল হয়ে ওঠে পৃথার… তাড়াতাড়ি অর্নবের বুকের মধ্যে মুখ লোকায় সে… ‘বেশ করেছি আদর খেয়েছি…’ গুনগুনিয়ে বলে ওঠে অর্নবের বুকের মধ্যে থেকে… ছোট ছোট চুমু খায় বুকের লোমে… একটা হাতের বেড়ে জড়িয়ে ধরে অর্নবের দেহটাকে… চেপে ধরে পায়রার মত নরম বুকটাকে অর্নবের ছাতির সাথে… শরীরের সাথে লেপ্টে থাকা ভেজা কুর্তির কাপড়টা বিশেষ আড়াল সৃষ্টি করতে পারে না… অর্নব নিরাকার দেহের ওপরে স্পর্শ পায় শক্ত নুড়ির মত স্তনের বোঁটার…

শক্তিশালী হাতের আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরে পৃথার নরম দেহটাকে নিজের বুকের মধ্যে… হাত রাখে পৃথার ভেজা পীঠে… অন্য হাতটা দিয়ে পৃথার চিবুকটা ধরে তুলে ধরে তার মুখটাকে ওপর পানে… তারপর মুখ নামিয়ে ছুয়ে দেয় নিজের ওষ্ঠ প্রিয়ার ওষ্ঠে… ‘উমমম…’ গুঙিয়ে ওঠে পৃথা… হাত তুলে খামচে ধরে বৃষ্টির জলে ভিজে ওঠা অর্নবের বড় বড় চুলটাকে হাতের মুঠোয়… টেনে ধরে রাখে তার মুখটাকে নিজের মুখের ওপরে… গুঁজে দেয় জিভটাকে অর্নবের মুখের মধ্যে… আরো মিশে যাওয়ার চেষ্টা করে অর্নবের বুকের মধ্যে সে…

দুটো জিভ মুখের মধ্যে খেলা করে বেড়ায়… ঘুরে বেড়ায় একে অপরকে সাথে নিয়ে… কারুর মুখে কোন কথা থাকে না… শুধু নিঃশ্বাস ঝরে পড়ে অপরের ভেজা মুখের চামড়ার ওপরে… পৃথার পীঠের ওপরে থাকা অর্নবের হাতটা নেমে যায় নীচের পানে… হাতের তালুর মধ্যে চেপে ধরে পৃথার সুগোল নিতম্বের নরম দাবনা একটা… চটকায় সেটাকে হাতের মধ্যে নিয়ে মুখের মধ্যে পুরে রাখা জিভটাকে চুষতে চুষতে… মনে পড়ে যায় সে দুটির সৌন্দর্যের কথা, কিছুক্ষন আগেই যেটা সে মন ভরে নিরিক্ষণ করেছিল… গুঁজে দিয়েছিল মুখ এই হাতের মুঠোর মধ্যে ধরা নরম নিতম্বের অববাহিকায়… জিভের সাহায্যে কামনার আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল পৃথার শরীরে ওর এই নরম নিতম্বের ফাঁকে থাকা পায়ুছিদ্র লেহনে…

‘উমমম…’ অর্নবের মুখের মধ্যেই ফের গুঙিয়ে ওঠে পৃথা… আপন জঙ্ঘাটাকে ঠেলে দেয় সামনের পানে… ভেজা কুর্তির আড়ালে থাকা লোমে আবৃত যোনিবেদীটা ঠেঁকে অর্নবের জানুর সাথে… ‘উমমম…’ জানুর স্পর্শে গোঙায় সে… কোমরটাকে ডাইনে বাঁয়ে করে ঘসে ঠেসে ধরে যোনিটাকে অর্নবের জানুর সাথে… একটু একটু করে ফের তপ্ত হয়ে উঠতে থাকে দুটো শরীর… হাত থেকে খসে পড়ে ধরে রাখা ভেজা লেগিংস আর প্যান্টি… অর্নবের আদুল পীঠের মাংসে পৃথার আঙুলের নখের আঁচড় পড়ে… কোন রকমে মুখ তুলে ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে সে… ‘আদর করো আমায়… লাভ মী ওয়ান্স মোর…’ যেন স্থান কাল পাত্র পরিবেশ পরিস্থিতি… সব… সব কিছু বিস্মৃত হয়ে গিয়েছে তাদের কাছে… যেন এই পৃথিবীতে শুধুই তারা… দুটো মাত্র প্রাণ… মিশে যেতে থাকা দুটো ভালোবাসা ভরা শরীর… আর কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই কোথাও…

পৃথার কথায় স্ফিত হয়ে উঠতে থাকে অর্নবের পুরুষাঙ্গটা ফের… মাথা তুলে দাঁড়াতে থাকে পৃথার কোলের মধ্যে… হাতের পেষণ বাড়ে তার… নির্মম শক্তিতে আরো জোরে চেপে ধরে পৃথার নরম তুলতুলে নিতম্বটাকে… একটা হাত তুলে রাখে পৃথার বুকের ওপরে… চেপে ধরে মুঠিভর স্তন… মুখ নামিয়ে ফের চেপে ধরে নিজের ঠোঁট পৃথার ঠোঁটের ওপরে…

কড়…কড়…কড়াৎ…

কাছেই কোথাও একটা বাজ পড়ে সম্ভবতঃ… আঁধার আকাশটা চিরে আলোকিত করে বিদ্যুতের লকলকে রেখা ছুটে যায় এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে… দুজনেই কেমন অজানা আতঙ্কে কেঁপে ওঠে…

তাড়াতাড়ি অর্নবকে ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায় পৃথা… ‘এই… আর না… চলো… নীচে যাই…’ গলার স্বরে উদ্বেগ ফুটে ওঠে… ‘আর থাকা উচিত হবে না এখানে…’ মেঝেতে পড়ে থাকা কাপড়গুলো তুলে নেয় ফের হাতের মধ্যে…

এবার অর্নবও আর বারণ করে না… বাজ পড়তেই কেমন যেন গুটিয়ে যায় সে… যেন পুরানো আতঙ্কটা ফের ফিরে আসে তার বুকের মধ্যে… পৃথার হাতটাকে চেপে ধরে মুঠোয়… ভীত গলায় বলে ওঠে, ‘হ্যা… সেই ভালো… চলো নীচেই যাই…’

দ্রুত হেঁটে পার হয়ে যায় ছাদটাকে… ছাদের দরজা ঘুরে সবে একটা পা দিয়েছে সিড়িতে, হটাৎ করে পৃথার মনে পড়ে ফ্ল্যাটের চাবিটা তার কাছে নেই… সেটা সে পাঁচিলের ওপরে রেখেছিল তখন… সেটা খেয়াল হতেই সে বলে ওঠে, ‘আরে! চাবিটা ফেলে চলে যাচ্ছি… দাঁড়াও… নিয়ে আসি…’ বলে ফিরে যাবার জন্য উদ্যত হয় পৃথা…

বাধা দেয় অর্নব… তার কাঁধে হাত রেখে বলে… ‘তুমি থাকো… আমি নিয়ে আসছি…’

অর্নবের বাজ পড়ার প্রতি ভয়ের কথা পৃথার অজানা নয়… তাই সে বাধা দিতে যায়… বলে ওঠে… ‘কিন্তু…’ কিন্তু তার মুখের কথা শেষ হয় না… তার আগেই বোঝে অর্নব তার পাশে নেই… দৌড়ে বেরিয়ে গিয়েছে খোলা ছাদে, ঘরের চাবি আনতে… একরাশ উৎকন্ঠায় তাকিয়ে থাকে পৃথা শূণ্য অন্ধকার ছাদের পানে… বৃষ্টির ঝাপটায় দৃষ্টি আড়াল করা ছাদের দিকে দরজার এপার থেকে… ভেজা কুর্তি থেকে জল চুঁইয়ে পড়ে ভিজে ওঠে শুকনো মেঝে…

কড়…কড়…কড়াৎ…

পৃথার চোখ দুটো ঝলসে যায় একটা প্রচন্ড সাদা আলোর ঝলকানিতে… আর সেই সাথে কান ফাঁটা আওয়াজে… সাথে সাথেই নিকশ কালো অন্ধকারে ডুবে যায় পুরো ফ্ল্যাট বাড়িটাই… ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে সে…

হটাৎ কেঁপে ওঠে পৃথার শরীরটা… অর্নব?… তাড়াতাড়ি চোখ খুলে তাকায় সামনের পানে… প্রথমটায় সব ঝাপসা ঠেকে… চকিত আলোর ঝলকানি মনে হয় যেন অন্ধ করে দিয়েছে তাকে… তারপর একটু একটু করে সয়ে আসে অন্ধকারটা… ভালো করে তাকায় সে… অর্নব?… বুকের ভেতরটা ছ্যাঁৎ করে ওঠে পৃথার… বুঝতে অসুবিধা হয় না বাজটা তাদের বাড়িতেই পড়েছে… দৌড়ে ছাদের মধ্যে বেরিয়ে আসে… অস্ফুট গলায় ডাক দেয়… ‘অর্নব!’ কোন সাড়া পায় না… ফের ডাকে… ‘অর্নব!’ এবারেও কোন সাড়া আসে না তার ডাকে… বুকের ভেতরটা শুকিয়ে যায় পৃথার… শিরদাঁড়া বেয়ে একটা হীমশীতল অনুভুতি নেমে যায় যেন… মুচড়ে ওঠে বুকটা… ‘অর্নব!’ ফের ডাক দেয় সে… এবার আর একটু জোরে… পাগলের মত ইতি উতি তাকায়… কেউ নেই… থাকবেই বা কি করে? তাকে তো দেখতে পাবে না খালি চোখে এই ভাবে… তবে কি? না, না… তা কি করে হবে? অর্নবের কিচ্ছু হয় নি… হতে পারে না… সে যে বলেছিল আমি সাথে আছি, ওর কিচ্ছু হবে না… তবে সাড়া দিচ্ছে না কেন? ‘অর্নব কোথায়? সাড়া দাও না অর্নব… প্লিজ…’ গলার মধ্যেটায় পাকিয়ে ওঠে কান্নাটা… ঠেলে বেরিয়ে আসতে চায় সেটা… ‘ওহ! ফর গডস্‌ সেক… সাড়া দাও না… প্লিজ অ্যান্সার মীইইইইইই… অর্নঅঅঅঅঅব!’ আরো গলা চড়ে… চিৎকারের সাথে কান্না মিলে মিশে একাকার হয়ে থাকে… পাগলের মত ছুটে যায় ছাদের পাঁচিলটার দিকে… যেখানটায় চাবিটা রাখা ছিল… বৃষ্টির জলের সাথে মিশে যায় চোখের কান্না… ‘অর্নওওওওওব!’ চিৎকার করে ডাক দেয় ছুটে যেতে যেতে…

কিছুতে হোঁচট খেয়ে ছিটকে পড়ে পৃথা ছাদের বৃষ্টিতে ভেজা কর্কশ কঠিন মেঝেতে… ছেঁচে যায় হাঁটু আর কুনুইটা… ‘মাগো…’ কোঁকিয়ে ওঠে যন্ত্রনায়… হাতের মধ্যে ধরা পরনের প্যান্টি আর লেগিংসটা ছিটকে দূরে গিয়ে পড়ে…

কোন রকমে হামাগুড়ি দিয়ে উঠে বসে সে… হাত বোলায় হাঁটুর ওপরে… এই ভাবে ছেঁচড়ে পড়ে কেটে গিয়েছে বেশ খানিকটা… তার ওপরে বৃষ্টির জলে জ্বালা করে কাটা জায়গা… ফের মনে পড়ে যায় অর্নবের কথা… ভুলে যায় নিজের শরীরের যন্ত্রনা… তাড়াতাড়ি করে উঠে দাঁড়াতে যায় সে… আর তখনই নজর পড়ে তার পায়ের কাছেই পড়ে থাকা দেহটার দিকে…

‘কেহহহ…’ ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞাসা করে পৃথা… হাতে পায়ের ভরে হামা দিয়ে এগিয়ে যায় উপুড় হয়ে পড়ে থাকা দেহটার দিকে… বুকের মধ্যেটায় একটা অনাহুত ভয় দামামা পেটায় যেন… ‘কেহহহহ…’ ফের প্রশ্ন করে অস্ফুট স্বরে… জোরে কথা বলতেও যেন ভয় হয় তার… কান্না ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করে উপুড় হয়ে থাকা নগ্ন দেহটাকে… তাড়াতাড়ি মুখের ওপরে এসে পড়া বৃষ্টি জল মুছে নেয়… চোখদুটোয় হাত বুলিয়ে পরিষ্কার করে কান্নার জলের রেশ… আরো খানিকটা কাছে এগিয়ে যায়… বড় বড় চুলগুলো লেপটে রয়েছে সারা মাথার থেকে নেমে ঘাড়ের ওপরে… পেশল পীঠটা তার দিকেই ফেরানো… হাতটাকে বাড়াতে যায় পড়ে থাকা শরীরটার দিকে… পরক্ষনেই টেনে পিছিয়ে নেয়… ইতস্থত করে… তারপর ফের হাত বাড়ায়… আলতো করে হাত রাখে নগ্ন পীঠের ওপরে… স্পর্শ করে দেহটাকে… সারা শরীরটায় একটা শিহরণ খেলে যায় দেহটাকে স্পর্শ করা মাত্রই… হুমড়ি খেয়ে পড়ে পৃথা… চিৎকার করে ডাক দিয়ে ওঠে… ‘অর্নওওওওব!’

দেহটাকে ধরে চিৎ করে দেয় সে… আধো অন্ধকারের মধ্যেই ঝুঁকে পড়ে শরীরটার মুখের ওপরে… এক মুখ দাড়ি ভরা গালের ওপরে হাত রাখে… ‘সোনা… অর্নব… শুনতে পাচ্ছ… দেখো না সোনা… এই দেখো… তোমার তিতির… চোখ খোলো না সোনা… প্লিজ… প্লিজ… একবার তাকাও… দেখো… তোমার তিতির তোমার কাছে… বলো না সোনা… তাকাও না তোমার তিতিরের দিকে…’ পাগলের মত হাত বোলায় দাড়ি ভরা গালে, মাথায়, কপালে… ঝুঁকে পড়ে চুমু খায় মুখটায় একের পর এক… ক্রমাগত ডেকে চলে সে… ‘অর্নব সোনা… এই যে আমি… তাকাও… প্লিজ…’

কেমন ভয় হয় তার… তারপরই অমূলক ভয়টাকে সরিয়ে দিতে সচেষ্ট হয়ে ওঠে… ‘না, না… আমার অর্নবের কিচ্ছু হবে না… আমি জানি… ও বলেছিল তিতির ওর সাথে থাকলে ওর কিছু হবে না…’ উপঝরন্তে পড়া বৃষ্টি নীচে বসে পাগলের মত প্রলাপ বকে চলে সে… তাড়াতাড়ি করে ঝুকে পড়ে দেহটার বুকের ওপরে… কান পাতে সেখানে… কানে আসে ক্ষীণ হৃদস্পন্দন… উঠে বসে ঝাঁকাতে থাকে দেহটাকে ধরে… যত গায়ের শক্তি অবশিষ্ট আছে, তাই দিয়েই… এক নাগাড়ে ডাক দিয়ে যেতে থাকে… ‘অর্নব… ওঠো… অর্নব… প্লিজ কথা বলো… প্লিজ… আমি জানি তোমার কিছু হবে না… তুমি শুধু একবার তোমার তিতিরকে ডাকো… অর্নব…’

হটাৎ চুপ করে যায় পৃথা… কেমন যেন মনে হয় তার একটা অস্ফুট গোঙানীর আওয়াজ শোনে সে… তাড়াতাড়ি করে দেহটার বুকের ওপর থেকে মাথা তুলে ঝুঁকে পড়ে মুখের ওপরে… কান খাড়া করে শোনা চেষ্টা করে… ‘ওওওফফফফ…’ হ্যা… এই তো… অর্নব সাড়া দিয়েছে… হাত তুলে গলার কাছটায় ছোয়ায় সে… অনুভব করার চেষ্টা করে দেহটার প্রাণস্পন্দন… ‘উমমমফফফ…’ একটা অস্ফুট আওয়াজ বেরিয়ে আসে দেহটার মুখ থেকে… ফের ঝুঁকে পড়ে পৃথা… চাপা স্বরে ডাক দেয়… ‘অর্নব… শুনতে পাচ্ছ?’

নিজের মুখের ওপরে উপলব্ধি করে এসে পড়া নিঃশ্বাসের স্পর্শ… ঝুঁকে গালটা চেপে ধরে দেহটার গালের সাথে… কানে আসে অস্ফুট স্বরের ডাক… ‘তিতির…’

গাল ছেড়ে তাড়াতাড়ি উঠে বসে পৃথা… দুহাত দিয়ে দেহটাকে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে… ‘হ্যা সোনা… এই তো আমি… কষ্ট হচ্ছে সোনা?’ বলে ঠিকই কিন্তু অর্ধেক কথা মিশে হারিয়ে যায় কান্নার সাথে…

খুব ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকায় অর্নব… পরক্ষনেই বন্ধ করে নেয়… তারপর আবার তাকায়… হাত তোলে… রাখে বুকের ওপরে থাকা পৃথার পীঠের ওপরে… অনেক কষ্টে টেনে টেনে বলে ওঠে… ‘আমি ঠিক আছি… তুমি ভেবো না…’

হাউহাউ করে কেঁদে ওঠে পৃথা… দুহাত দিয়ে মাটির ওপরে পড়ে থাকা অর্নবের শরীরটাকে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে… ‘ওহ! সোনা… আমি জানতাম তোমার কিচ্ছু হবে না… এই দেখো তোমায় দেখতে পাচ্ছি আমি… তোমায় দেখতে পাচ্ছি… ওহ! সোনা… আমার…’ বলতে বলতে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকে অর্নবের সারা মুখমন্ডল…

খুব আস্তে আস্তে উঠে বসার চেষ্টা করে অর্নব… পৃথা পেছন থেকে ঠেকনা দিয়ে সাহায্য করে তাকে… উঠে বসলে পাশে এসে বসে… প্রবল বৃষ্টির ধারা দুজনকেই যেন ধুইয়ে দিতে থাকে… যেন দুজনেরই নবজন্ম হয় তখনই…

বেশ খানিকক্ষন অপেক্ষা করে কোনরকমে টলতে টলতে উঠে দাঁড়ায় অর্নব… পৃথার কাঁধে হাতের ভর রেখে বলে, ‘কি হয়েছিলো বলো তো?’

‘জানি না… মনে হয় বাজটা ওই ট্রান্সফর্মারেই পড়েছিল, আর তাতেই…’ আর বলতে পারে না সে… যদি ট্রান্সফর্মারে না পড়ে… ভাবতেই কেঁপে ওঠে ভয়ে সারা শরীরটা তার… ‘ছাড়ো ওসব কথা… নীচে চলো…’ বলে ছাদের পাঁচিল থেকে হাতে তুলে নেয় চাবির গোছাটাকে… নিজের ওড়নাটা গায়ের থেকে খুলে জড়িয়ে দেয় অর্নবের নগ্ন কোমর পেঁচিয়ে… তারপর তাকে ধরে ধীরে ধীরে নেবে যায় নিজের ফ্ল্যাটের দিকে…



অতঃকিম্‌

‘এই, জানো… রাই না, ভিষন অভিমানী হয়ে উঠেছে দেখছি… ভাবতে পারো? ও কাজলর সাথে কথাই বলছিল না… ওই টুকু একটা মেয়ে… কি? না কাজল একটু জোর গলায় রাইকে বলেছিল দুধটা তাড়াতাড়ি করে খেয়ে নিতে… বলো… এখন থেকেই ওই রকম অভিমানী হয়ে উঠেছে মেয়ে তোমার… বকা ঝকা তো দূর, এতটুকুও জোরে কথা বলা যায় না ওর সাথে…’ অর্নবের সাথে গাড়িতে যেতে যেতে বলে পৃথা…

‘হুম… এ আর আশ্চর্যের কি? মেয়ের মা কে দেখতে হবে তো… তাই না?’ স্টিয়ারিংএ হাত রেখে সামনের পানে তাকিয়ে ছুঁড়ে দেয় কথাটা অর্নব পৃথার দিকে…

পাশের সিটে বসা পৃথা সাথে সাথে ঘাড় ফেরায় লক্কা পায়রার মত… চোখ পাকিয়ে বলে ওঠে… ‘কি? আমার মেয়ে বলে এমন হয়েছে? মেয়ের মত আমিও অভিমানী?’

আড় চোখে একবার নিজের সুন্দরী স্ত্রীর পানে তাকিয়ে মিচকি হেসে, ফের সামনের দিকে তাকিয়ে বলে অর্নব… ‘না, না… ভুল বললাম, আমার বউটা একটুও অভিমানী নয়… শুধু যা মাঝে মধ্যেই গালটা ভারী হয়ে যায়… তখন না আদর করলে এই মিষ্টি মেয়েটার গালটা কিছুতেই আগের মত হয়ে ওঠে না… তাই না? ঠিক আমাদের ছোট্ট রাইয়ের মত…’

‘ভালো হবে না কিন্তু… এই ভাবে যদি আমার লেগ পুল করো তাহলে আমি তোমার সাথে যাবো না বলে দিচ্ছি…’ অভিমানী গলায় বলে ওঠে পৃথা…

‘আচ্ছা বাবা, আচ্ছা… আমারই বোঝা ভুল হয়ে গেছে… বউটা আমার একদম অভিমানী নয়… একটু যা বেশিই আদুরে… তাই তো? এবার ঠিক বললাম তো?’ হাসতে হাসতে বলে অর্নব…

চোখের কোলে ভালোবাসা চিকচিক করে পৃথার… ‘বেশ করি আদর খাই… আরো… আরো… আরো বেশি বেশি করে আদর খাবো আমি… দেখি আমায় আদর না করে বাবু কেমন থাকতে পারে…’ গোলা পায়রার মত ঘাড় বেঁকিয়ে বলে ওঠে সে…

আর কথা বাড়ায় না অর্নব, একবার চোখ ফিরিয়ে আপাদমস্তক দেখে নেয় পাশে বসা নিজের স্ত্রীকে… লাল শাড়ীটায় অপূর্ব লাগছে পৃথাকে… গায়ে ম্যাচিং ব্লাউজ… চুলগুলো ঝাকড়া বলে সেগুলো বেশ সাজিয়ে একটা খোঁপা করেছে মাথার ওপরে… কি ভাবে ম্যানেজ করেছে কে জানে… অবস্য সেটা জানার বিশয়ও নয় অর্নবের… ও ব্যাপারে সে একটু অজ্ঞই বলা যেতে পারে… চুলের সিঁথিতে ছোট্ট করে টানা দেওয়া সিঁদুরের দাগটা পৃথার মুখের ঔজ্জল্য যেন শতগুন বাড়িয়ে দিয়েছে… পাতলা ঠোঁট দুটো বেশ গাঢ় রঙের লিপস্টিকে রাঙানো… দুই হাতে বেশ অনেকগুলো সোনার চুড়ি পরেছে আজ… অন্য সময় এতটা সাজে না ও… কিন্তু আজ খুব মন দিয়ে সেজেছে… একেবারেই অন্য রকম লাগছে আর পাঁচটা দিনের থেকে… সেই আট বছর আগের বিয়ের দিনের পৃথা হয়ে গিয়েছে যেন… একেবারে নববধূর মত বসে রয়েছে তার পাশটিতে… বাড়িতে এখন শ্বশুর শাশুড়ি এসে রয়েছে বলে বেরুবার সময় কিছু বদমাইশি করার চেষ্টা করে নি অর্নব, যদি ওনারা না থাকতো… ভাবতেই মনে মনে হেসে ওঠে সে…

‘এই, গাড়ি চালাতে চালাতে ওই রকম হাসছ কেন গো?’ অর্নবকে মিচকি হাসতে দেখে প্রশ্ন করে পৃথা…

‘না… কিছু না…’ বলে ওঠে অর্নব…

‘উহু… নিশ্চয়ই কিছু… আমায় বলছ না… বলো না কেন হাসলে…’ এর জিজ্ঞাস করে পৃথা…

‘না… ভাবছিলাম আজ বাড়িতে তোমার বাপি, মা না থাকলে আমাদের বেরুতে অনেক দেরী হয়ে যেত… তোমাকে আবার নতুন করে সাজতে হতো…’ গলার স্বরে যতটা সম্ভব গাম্ভীর্য ফিটিয়ে তোলার চেষ্টা করে অর্নব…

‘আমাকে আবার সাজতে হতো? কেন?’ অবাক গলায় প্রশ্ন করে পৃথা…

‘বাহ!… নতুন করে সাজতে হতো না? আমার বউটাকে এত সুন্দরী লাগছে, সেখানে আমি তাকে বিছানায় তুলে না নিয়ে গিয়ে কি ছাড়তাম নাকি?’ ফের আড় চোখে একবার তাকিয়ে নিয়ে উত্তর দেয় অর্নব…

‘ওরে বুড়ো… মাথায় খালি ওই জিনিসটা ঘুরে বেড়ায়, না?’ চোখ পাকায় পৃথা…

‘ও… আমি এখন বুড়ো হলাম? কই… অন্য সময় তো বুড়ো বলো না? তখন তো আর পারছি না… আর পারছি না করে ছটফট করো…’ হাসে অর্নব…

‘যাহ!… তুমি না…’ লাল হয়ে ওঠে পৃথার ফর্সা গাল… হাত বাড়িয়ে স্টিয়ারিং ধরা অর্নবের হাতের ওপরে হাত রেখে বলে, ‘তবে সত্যিই অর্নব… তোমার যা দম… না পেলে বুঝতাম না… আচ্ছা আচ্ছা যোয়ানকেও হার মানিয়ে দেবে…’ বলে খিলখিল করে হেসে ওঠে সে… ‘নাও… মনে হচ্ছে এসে গেছি… ওই বাড়িটাই না?’

আজ পৃথা আর অর্নব এসেছে সুশান্তর পঞ্চম বিবাহবার্ষিকির নিমন্ত্রন রক্ষার্থে… তারা আজ সুখি দম্পতি… বিয়ে করে নিয়েছে প্রায় বছর আষ্টেক হয়ে গেল… একটি রাজকন্যার জন্ম দিয়েছে পৃথা… ফ্ল্যাটে আর থাকে না… ছোট্ট এক কামরার ফ্ল্যাটটা ভাড়ায় দিয়ে উঠে এসেছে একটা বাড়ি কিনে নিয়ে, যেখানে তাদের সংসার আনন্দে সুখে ভরে থাকে সবসময়… প্রণবকে অনুরোধ করেছিল স্ত্রী পুত্র নিয়ে তাদের কাছেই চলে আসতে, কিন্তু প্রণব তাতে রাজি হয় নি, হেসে বলেছে, সে নাকি কাবাব মে হাড্ডি হতে চায় না… আর জোরও করে নি তারা… মাঝে মধ্যে শিলিগুড়ি থেকে পৃথার বাপী আর মা এসে থাকেন… তাদের ছোট্ট রাই সঙ্গ পায় নিজের দাদান দিম্মার… একটু একটু করে বড়ো হয়ে উঠছে সেও… দেখতে নাকি একেবারে পৃথার মত হয়েছে…

‘এই… কি দেখছ ওই ভাবে?’ ভুরু তুলে প্রশ্ন করে পৃথা… সুশান্তের ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে… ওই তিক্ষ্ণ চোখ জোড়াকে তার শাড়ির আঁচলের ফাঁকে ঘুরে বেড়াতে বুঝে… এখন অর্নব যেন ওই ছবির থেকেও আরো অনেক বেশি আকর্ষনীয় হয়ে উঠেছে… চেহারের মধ্যে একটা বেশ ভারিক্কি ভাব এসেছে… সুঠাম জিম করা চেহারায় আরো বেশি করে সেক্সি মনে হয় দেখলেই… এই এত বছর ধরে ওর সাথে ঘর করলেও, আজও যেন ওর দিকে তাকালে সিরসির করে ওঠে শরীরটা পৃথার… বুকের মধ্যে ঝড় ওঠে… কি অদ্ভুত আমেজ ছড়িয়ে পড়ে দেহে অর্নবের চোখে চোখ রাখলেই… ভুরুর কাটা দাগটা যেন আরো বেশি করে টানে ওকে, যত দিন যাচ্ছে ততই…

‘তোমায়…’ ছোট্ট করে উত্তর দেয় অর্নব…

‘ধ্যাৎ… আমাকে আবার নতুন করে কি দেখবে?’ মুখে বলে ঠিকই, কিন্তু স্বামীর কথায় যেন ভালো লাগায় গলে যায় সে…

‘তোমার শরীরটা কিন্তু আগের থেকে আরো ভরাট হয়ে উঠেছে…’ গাঢ় গলায় বলে অর্নব…

‘তাই বুঝি?’ গুনগুনিয়ে ওঠে পৃথা…

‘হুম… আগের থেকেও বেশ ভরাট হয়ে উঠেছে বুকগুলো… এখন শাড়ীর আঁচলও পুরো ঢেকে রাখতে পারে না… দেখলেই কেমন মুখ ডুবিয়ে দিতে ইচ্ছা করে দুটো বুকের খাঁজে…’ চাপা স্বরে বলে অর্নব…

‘যাহ! অসভ্য বুড়ো… শখ কত… এখন রাস্তাঘাটেও আমাকে ওই ভাবে দেখে… ইশশশ… লজ্জা করে না আমার?’ লাল হয়ে ওঠে কান দুটো অর্নবের কথা শুনে… বুকের মধ্যে রিনরিনে সুখ ঘোরে…

‘আমার কি দোষ? তোমায় দেখলেই যদি আদর করতে ইচ্ছা করে আমার…’ বলে ওঠে অর্নব…

‘যাহ!… দুষ্টূ… বেলটা টিপবে? নাকি দরজার এপারে দাঁড়িয়ে শুধু বউকেই দেখে যাবে? হুম? রাতে যা অসভ্যতামী করার কোরো… বুঝেছ? এখন বেলটা টেপো…’ বলে ওঠে পৃথা… কানের লতী গরম ঠেকে… গালদুটো কি লাল হয়ে উঠেছে?



**সমাপ্ত**
 
Top