কিছুক্ষণ পর হালকা গোঙানির আওয়াজ পাচ্ছিলাম দিনের বেলা অত ভালো বোঝা যায় না, এইসব শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে গেছি হঠাৎ শ্রী এসে দেখে তুলল, আমি শ্রী কে দেখে অবাক হলাম শ্রী এর চোখ ছলছল, কাপড় চোপড়, চুল সব আলু থালু, কপালে সিঁদুর লেপ্টে আছে।
আমি: কি হয়েছে তোর?
শ্রী: কাদতে কাদতে বলল, মা কেমন যেনো করছে।
আমি: কোনো কিছু না ভেবে বললাম, চলতো দেখি।
আমি আর শ্রী তাড়াতাড়ি মায়ের ঘরে গেলাম, গিয়ে দেখি মা উল্টো হয়ে শুয়ে আছে, আর ইমরান মায়ের মাথায় জল ঢালছে।
আমি: কি হয়েছে?
ইমরান: আণ্টি সেন্সলেস হয়ে ঘরের বাইরে পড়েছিল, আমি আর শ্রী ধরাধরি করে ওনাকে এখানে নিয়ে এসছি, তুই এম্বুলেন্স ফোন কর, হাসপাতাল নিয়ে যেতে হবে।
আমি আমিও ইমরান এর কনসার্ন বুঝলাম, এম্বুলেন্স এ ফোন করলাম। 10 মিনিট পর এম্বুলেন্স চলে আসলো আমি মাকে এম্বুলেন্স এ তুলে ইমরান কে বললাম ও যেনো শ্রী কে নি পরে হাসপাতাল এ আসে, আমি আগে মা কে ভর্তি করি।
আমি হাসপাতাল এ গিয়ে মা কে ভর্তি করলাম, ডাক্তার মা কে চেক করছে, আর মা বাইরে বসে ওয়েট করছি। এম্বুলেন্স এর ড্রাইভার এসে আমায় বলল আমি যেনো ভাড়াটা মিটিয়ে দি। আমিও ওর ভাড়াটা মিটিয়ে ওকে ছেড়ে দিলাম। ওয়েটিং হল এ বসে বসে বড্ড টেনশন হচ্ছিল। বাইরে এসে সিগারেট ধরিয়েছি, হঠাৎ সাজেদার ফোন
সাজেদা: তোমার মা এর কি হয়েছে?
আমি: জানি না ভর্তি করলাম এখন দেখি।
সাজেদা: দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি: তাই যেনো হয়।
সাজেদা: টেনশন করো না, আমি যাচ্ছি একটু পরে।
আমি: তুমি এসে কি করবে?
সাজেদা: আমার শাশুরি আমি যাবনা হয়।
সিগারেট শেষ হয়ে গেসলো আমিও সাজেদা কে বলে ভেতরে আসলাম। ভেতরে এসে বসতে যাবো এমন সময় আনাউন্সমেন্ট শুনলাম, রেখা গাঙ্গুলির বাড়ির লোক ডাক্তার ঘোষের চেম্বার ও যোগাযোগ করুন।
আমি দৌড়ে রিসেপশন এ গেলাম, সেখান থেকে জানতে পারলাম, ডাক্তার ঘোষ 3rd floor এ বসেন। আমি 3rd floor এ পৌঁছে ডাক্তার ঘোষের চেম্বার এর সামনে পৌঁছে রিসেপশনিস্ট কে বললাম, রিসেপশনিস্ট জানালো একটু ওয়েট করতে হবে ডাক্তার অন্য পেশেন্ট দেখছেন। আমি ওয়েট করছি প্রায় 40 মিনিট পর আবার জিজ্ঞাসা করলাম বলল আগের পেশেন্ট বের হলেই ডেকে দেবে।
আমি ওয়েট করছি এমন সময় সাজেদা ফোন করল
সাজেদা: তুমি কোথায়?
আমি: হাসপাতাল এ,
সাজেদা: আর এ বাবা হাসপাতাল ও কোথায়?
আমি: তুমি কোথায়?
সাজেদা: হাসপাতাল এর রিসেপশনে
আমি: চলে এসেছো?
সাজেদা: হ্যা
আমি: আমি চারতলায় আছি, ডাক্তার ঘোষের চেম্বার এর সামনে।
সাজেদা: দাড়াও আসছি।
আমি: তুমি চিনে আসতে পারবে?
সাজেদা: দেখই না।
কিছুক্ষণ পর সাজেদা আসলো, আমায় বলল
সাজেদা: কি ঠিক জায়গায় এসেছি তো?
আমি মাথা নাড়লাম
সাজেদা: কতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছো?
আমি: প্রায় এক ঘন্টা।
সাজেদা: দাড়াও।
বলে কাকে ফোন করল একটু ওপাশে গিয়ে কথা বলে এসে বলল চলো।
আমি: কোথায়?
সাজেদা: ডাক্তার এর চেম্বার এ
বলেই গটগট করে এগিয়ে গেলো, দেখলাম রিসেপশনিস্ট কিচ্ছু বলল না।
ভেতরে পৌঁছতেই ডাক্তার কে দেখতে পেলাম বয়স 40 মতো হবে বেশ লম্বা আর সুপুরুষ, ফর্সা। সাজেদা কি দেখেই
ডাক্তার: কি ব্যাপার সাজেদা বেগম, এত বছর পর এই নাচিস কে মনে পড়লো?
সাজেদা: আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ডাক্তার এর সাথে যত কম দেখা করা যায়, ততই ভালো।
ডাক্তার: আমার দিকে তাকিয়ে মুখ টা গোমরা করে বলল, কি ব্যাপার বলো, এমনি এমনি তো আসোনি।
সাজেদা: বুঝতে পেরে মিষ্টি করে বলল, তুমি কি রাগ করলে সুদীপ্ত? আমি আজ তোমার কাছে রেখা গাঙ্গুলির খোজ নিতে এসছি।
ডাক্তার: ও, তা কে হয় তোমার?
সাজেদা: আমার পাশের বাড়ি।
ডাক্তার: আমার দিকে তাকিয়ে, আর ইনি?
আমি কিছু বলার আগেই
সাজেদা: ও আমার দুর সম্পর্কের দেওর।
ডাক্তার: তোমার পাশের বাড়ির ওই মহিলার তো অবস্থা ভালো না।
সাজেদা: কি হয়েছে?
ডাক্তার: তোমায় আর কি বলব, সম্ভবত প্রেগনেন্ট, আর ওই জন্যই, মাথা ঘুরিয়ে পরে গেছে। কিন্তু ভয় টা সেখানে না।
সাজেদা: তবে?
ডাক্তার: ভাবে বলি, ওনার পেছনে মলদ্বার এ ইনফেকশন হয়ে আছে, আর সেটা ভয়ঙ্কর অবস্থা।
সাজেদা: সেটা কি ভাবে হলো।
ডাক্তার: খুব সম্ভবত উনি রিসেন্টলি আনল সেক্সে করেছেন, ওর থেকেই এটা হয়েছে।
সাজেদা: এখন কি হবে তবে?
ডাক্তার: সপ্তাহ খানেক ভর্তি থাকতে হবে, আর একটা ছোট্ট অপারেশন ও করতে হতে পারে, তবে...
সাজেদা: তবে কি?
ডাক্তার: অপারেশন এর জন্য যে ওষুধ গুলো দিয়ে হবে তাতে করে মিসকোরেজ হতে পারে।
সাজেদা: হোক, অসুবিধা নেই।
ডাক্তার: তবে রিসেপশন এ ওর বাড়ির লোক কে ডেকে ফরমালিটিস করে নাও।
সাজেদা আর আমি বেরিয়ে এলাম, সাজেদা কে চিন্তিত দেখে আমি বললাম
আমি: সাজেদা? কি ভাবছো।
সাজেদা: ভাবছি এখন তোমার মায়ের এই অবস্থা কে করলো, আর বাচ্চা টা কার।
আমি: আমি সব জানি।
সাজেদা: কি জানো?
আমি: তোমার দেওর আরশাদ করেছে এইসব।
সাজেদা: কিছু বলতে গিয়েও মাথা নিচু করে নিলো।
আমিও আর কথা বাড়ালাম না নিচে গিয়ে formalities at টাকা পয়সা দিচ্ছি তখন ইমরান আর শ্রী এলো হাতে কিছু টিফিন প্যাক।
আমি: এতক্ষণ এ টাইম হলো?
ইমরান: তোর বোন কিছুর খাবার বানালো, তাই দেরি হয়ে গেলো।
শ্রী: মা কেমন আছে?
আমি: বেড এ দিয়েছে তবে সেন্স ফেরে নি, ডাক্তার বলল ভয়ের কিছু নাই, একটা ছোট্ট অপারেশন হবে, পায়ুপথে এ ইনফেকশন হয়েছে।
আর বেশি কিছু বললাম না, সাজেদা আমার দিকে তাকালো।
আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি, 9 টা বাজে, আমি রিসেপশন এ কথা বললাম রাতে কাউকে থাকতে হবে কিনা? ওরা জানালো বাড়ির একজন থাকলে ভালো হয়, রাতে ডায়পার চেঞ্জ করতে হতে পারে।
শ্রী বলল ও থাকবে, ইমরান বলল ওউ থাকবে এখানেই।
আমি আর সাজেদা 10 টা নাগাদ বাড়ির দিকে রওয়ানা হলাম, আসার সময় সাজেদা বলে আসলো রাতে অসুবিধা হলে ফোন করতে, আর সকালে 9 তার মধ্যে আমরা চলে আসবো, তখন ওরা রেস্ট করতে যেতে পারে