- 1,461
- 2,214
- 159
৫
বাড়ি ফিরে অনুরিমা ভাবতে লাগলো কিভাবে সে সমীর কে বলবে ডাক্তার দেখানোর কথাটা। সমীর ওকে ভুল বুঝবে না তো ? সে তো নিজেও জানেনা সেক্সওলজি টা ঠিক কি, খায় না মাথায় দেয় ? কোনোদিনও তো জানার দরকারই পড়েনি না ! অনুরিমা তাই সমীর অফিস থেকে আসার আগে নেটে একটু রিসার্চ করে নিলো সেক্সওলজি , এবং সেক্সওলজিস্ট সম্পর্কে। সমীর বাড়ি ফিরলো। অনুরিমার সাথে সে সংসার করছে প্রায় দশ বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেলো। তাই অনুরিমার মুখে প্রশ্নের ভাঁজ সে দেখতে পারে , বুঝতে পারে যে অনুরিমার কিছু জিজ্ঞাস্য আছে তার কাছে। সে তাই নিজে থেকেই অনুরিমা কে জিজ্ঞেস করলো , "কিছু বলবে ?"
"হ্যাঁ , ওই আর কি। "
"তা বলো। .."
"তুমি আগে ডিনার করে নাও , তারপর শোয়ার সময়ে বলবো। "
"আচ্ছা , ঠিক আছে। "
ডিনারের পর সমীর জানতে চাইলো অনুরিমার কাছে , তার কি বলার আছে। অনুরিমা ঘুরিয়ে সেক্সওলজিস্টের কথা তুললো।
"সমু , তুমি এটা ভালো মতোই বুঝতে পারছো যে বিগত কয়েকদিন ধরে আমাদের মধ্যে কোনো কিছু ঠিক চলছে না। আর তা কেন সেটাও তুমি জানো। "
"হুমঃ। .."
"তা এটার তো কোনো একটা সলিউশন বের করতে হবে। এভাবে তো চলতে পারেনা। "
"কি সলিউশন বলো ?"
"দেখো সমু , কিছু মনে কোরোনা , তবে আমার ধারণা এটা তোমার একপ্রকার মানসিক সমস্যা। এর একটা ট্রিটমেন্ট হওয়ার দরকার। রাগ কোরোনা , আমি তোমাকে পাগল বলছি না , আর তোমাকে আমি সাইক্রেটিস্ট এর কাছেও নিয়ে যাবো না। আমি ভাবছি একটা সেক্সওলজিস্ট কে দেখানোর কথা। আশা করবো , তুমি এতে না করবে না। "
"যা ভালো বোঝো , করো। আমার কোনো আপত্তি নেই। "
সমীর যে এতো সহজে রাজি হয়ে যাবে সেটা অনুরিমা ভাবতে পারেনি। সুচরিতা ঠিকই বলেছিলো , এখন সে ডমিনেন্ট পজিশনে আছে আর সমীর সাবমিসিভ। অনুরিমা সুচরিতা কে জানালো সমীর রাজি আছে। সুচরিতা সেই মতে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে নিলো। উইকেন্ডে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া ছিল যাতে সমীরের সুবিধা হয়। সুচরিতা অনু কে জানালো ডক্টর রায় এর চেম্বার হাজরা মোড়ে। ঠিকানাটা পাঠিয়ে দিলো।
শনিবার বিকেলে ছিল অ্যাপয়েন্টমেন্ট। সময় মত অনুরিমা আর সমীর হাজির ডক্টরের চেম্বারে। ডাক্তারের রুমের বাইরে শুধু একজন লেডি অ্যাটেনডেন্ট বসে ছিল। আর কোনো পেশেন্ট পার্টি ছিলোনা। গুপ্তরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে সচরাচর তো মানুষ যেতে চায়না , তাই একজন সেক্সওলজিস্টের প্রাইভেট চেম্বারে শুধু নির্জনতা ভীড় করে।
সুচরিতা আগে থেকে অনুরিমাকে বলে দিয়েছিলো , অ্যাপয়েন্টমেন্ট-টা সে অনুর নামেই করেছে। তাই অনু লেডি অ্যাটেনডেন্ট এর কাছে গিয়ে নিজের নাম বললো। সমীর ভাবলো অনুই অ্যাপয়েন্টমেন্ট-টা নিয়েছে , তাই হয়তো নিজের নামটা দিয়েছে। ওদিকে সুচরিতা নিজের ডাক্তার বন্ধুকে বলে রেখেছিলো যে অনুরিমার হাজবেন্ডের সামনে সে যেন তার নাম না নেয়। ওকে বুঝিয়ে রেখেছিলো তার আর অনুর স্বামীর মধ্যেকার সাপে-নেউলের সম্পর্কের ইকুয়েশনটা। লেডি অ্যাটেনডেন্ট অনু ও সমীরকে বসতে বলে চেম্বারের ভেতরে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর বেড়িয়ে এসে বললো , "যান আপনারা। "
অনু ও সমীর ভেতরে ঢুকলো। দেখলো তাদেরই সমবয়সী একজন লোক , বয়স ৩৭-৩৮ হবে , দেখতে মোটামুটি , গায়ের রং তামাটে মতন। কিন্তু আমি ডাক্তারের শারীরিক বর্ণনা কেন দিচ্ছি ? সে তো শুধু ওদের ট্রিটমেন্ট করবে , শলা-পরামর্শ দেবে , তাই না ? দেখা যাক , কি লেখা আছে নিয়তি তে।
ডক্টর রাজীব রায়ের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো , যখন সে প্রথম ঝলকে অনুরিমা কে দেখলো। মনে মনে ভাবলো, "কি অপূর্ব সুন্দরী মহিলা , না জানি ঈশ্বর কতোটা সময় নিয়ে একে বানিয়েছে ! যেমন মুখশ্রী , তেমন শারীরিক গঠন। এক কথায় , লা জবাব।" ডক্টর রায়ের ঘোর ভাঙলো সমীর বললো , "আসবো? ...."
"হ্যাঁনঃ। .... হ্যাঁ হ্যাঁ , আসুন আসুন। " , ডক্টর রায় নিজেকে সামলে নিয়ে বললো।
ডক্টর রায়ের এরূপ চাউনি টা অনু বা সমীর কেউই লক্ষ্য করেনি। আসলে তারা দুজনেই খুব নার্ভাস ছিল , কিভাবে একজন অজানা তৃতীয় ব্যক্তিকে নিজেদের বৈবাহিক জীবনের সমস্যার কথা বলবে ! এটা ভেবেই একটু অন্যমনস্ক ছিল তারা। তাই তাদের নজরটা ডক্টর রায়ের কু'নজরের উপর ঠিক পড়েনি।
ডঃ রায় -- বসুন।
অনু ও সমীর চেয়ার টেনে বসলো।
"বলুন কি সমস্যা ?"
সুচরিতা ওদের সমস্যার ব্যাপারে আগে থেকে ডঃ রায়কে কিছু বলেনি। স্বামী স্ত্রীর সমস্যা তাদের মতো করে তারাই শুধু বলতে পারবে , তাই জন্য। কিন্তু চেম্বারে অনু সমীর বুঝে পাচ্ছিলো না , কে প্রথমে বলবে , কার প্রথমে বলা উচিত , এবং সর্বোপরি কিভাবে বলবে ? ওদের হেজিটেশন দেখে রাজিব বললো , "সমস্যাটা ঠিক কার ? আপনার ? নাকি আপনার ?"
অনু ইতঃস্ততভাবে হাত দেখিয়ে সমীরের দিকে ইশারা করলো। ডঃ রাজীব বুঝলেন সমস্যাটা সমীরের। এটাও বুঝলেন যে তারা দুজনই খুবই সংকোচ বোধ করছেন নিজেদের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে। তাই তিনি ঠিক করলেন এক এক করে দুজন কে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। তিনি অনুকে বাইরে গিয়ে বসতে বললেন। অনু সেইমতো চেম্বার থেকে বেরিয়ে গেলো।
"এবার বলুন , কি সমস্যা ? বাই দা ওয়ে , আপনার নামটা ?"
"সমীর মল্লিক। "
"আচ্ছা তো সমীর বাবু , এবার নিঃসংকোচে সব কথা গুলো বলে ফেলুন দেখি। লজ্জা করবেন না একদম। জানেন না , লজ্জা ঘেন্না ভয় , তিন থাকতে নয়। "
"আমি জানিনা ব্যাপারটা কিভাবে বলবো , বা বোঝাবো। "
"এমনভাবে বলুন , যেন নিজের ছায়া কে বলছেন ও বোঝাচ্ছেন। "
সমীর মাথা নিচু করে বসে রইলো। রাজীব এক গ্লাস জল সমীরের দিকে এগিয়ে দিয়ে সেটা পান করতে বললো। সমীর এক ঢোঁকে পুরো গ্লাসটা শেষ করে দিলো। দিয়ে মুখ মুছে বললো , "আমার মনে হয় , আমি খুব খারাপ একজন স্বামী। "
"আর সেটা কেন মনে হয় আপনার ?"
"আমি মনে মনে অনেক খারাপ চিন্তা ভাবি। আমি চাইনা ভাবতে , তবুও সেটা চলে আসে আমার কল্পনায়। আমি চাইলেও সেটাকে অ্যাভয়েড করতে পারিনা। "
"তা সেই খারাপ চিন্তাটা কি শুনি ?"
সমীর একটু থেমে বললো , "মাঝে মাঝে কল্পনাতে নিজের স্ত্রীকে অন্য কারোর সাথে ভেবে পেলি। মানে ......., আপনি বুঝতে পারছেন তো আমি কি বলতে চাইছি ?"
"হুমঃ। .... তা সেসব ভেবে আপনার রাগ হয় , না ভালো লাগে ?"
"আগে রাগ হতো , এখন কেন জানিনা ........ "
"ভালো লাগে , তাই তো ?"
সমীর নিম্নস্বরে বললো , "হুমঃ। ...."
"বুঝলাম। আপনার স্ত্রী নিশ্চই এসব চায়না। আর সেই জন্যই সে আপনাকে এখানে নিয়ে এসছে। কিন্তু সবচেয়ে বড়ো প্রশ্নটা হলো এখন আপনি কি চান ? আপনি কি মনে করেন , এটা আপনার একটা মানসিক অসুস্থতা , নাকি ওয়াইল্ড ফ্যান্টাসি ?"
"সেটা তো আপনি ভালো বলতে পারবেন , এটা আসলে কি !"
"দেখুন , সবটাই পার্সপেক্টিভের উপর ডিপেন্ড করে। আপনি ব্যাপারটা কে কিভাবে দেখছেন। সবটাই আপেক্ষিক। খানিকটা অর্ধেক ভর্তি জলের গ্লাসের মতো , একদিক দিয়ে দেখলে মনে হবে অর্ধেক পূর্ণ , অপরদিক দিয়ে অর্ধেক খালি। "
"আপনি কি বলছেন আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। "
"মানে , এটা কে ফ্যান্টাসি ভাবলে ফ্যান্টাসি , অসুস্থতা ভাবলে অসুস্থতা। "
"তার মানে আপনি বলতে চাইছেন , আমার এইসব ভাবাটা অস্বাভাবিক নয় ?"
"আচ্ছা আগে এটা বলুন , আপনাদের বিয়ে কতদিন হয়েছে ?"
"প্রায় এগারো বছর। "
"আপনাদের সেক্স লাইফ কিরকম চলছে ?"
"মোটামুটি। .."
"মানে , অ্যাভারেজ , কখনো-সখনো বিলোও অ্যাভারেজ , তাই তো ?
"বলতে পারেন। "
"সপ্তাহে কতোবার মিলিত হন ?"
"ঠিক নেই। "
"আপনার অন্য কোনো সম্পর্ক আছে , এক্সট্রা ম্যারিটাল ? "
"নাহঃ। "
"স্ত্রী কে সন্দেহ করেন ?"
"নাহঃ , ও সেরকম নয়। "
"তাহলে আপনার এই ফ্যান্টাসিটা এসছে আপনার ম্যাড়ম্যাড়ে সেক্স লাইফের জন্য। আপনার সেক্সউয়াল লাইফে আপনি খুব বোড়িং ফিল করছেন , তাই আপনি একটু অন্যরকম কিছু ভাবছেন। "
"হতে পারে। "
"আপনার স্ত্রী এই ব্যাপারে কি করে জানলো ? আপনি নিজে থেকে বলেছেন , নাকি উনি কোনোভাবে জানতে পেরে গেছেন ?"
"আসলে আমি বেশ কয়েকদিন ধরে এইসব কারণে অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলাম , আমার স্ত্রী এর কারণ জানতে জোর করায় আমি বাধ্য হই স্ত্রী কে সবটা বলতে। তারপর থেকে আমাদের মধ্যে কোনোকিছু ঠিক নেই , সি ইস অফেন্ডেড অন মি। "
"আপনি কি কখনো ভেবেছেন , এই কল্পনাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার কথা ?"
"হ্যাঁ ভেবেছি , কিন্তু অনুকে বলবো কিভাবে সেটা বুঝে পাইনি। "
"এখন স্ত্রীয়ের প্রতিক্রিয়া দেখে সেই ভাবনা থেকে সরে এসেছেন , নাকি এখনো সেটাকে পোষণ করে চলেছেন ? "
"কল্পনা করতে তো ভালোই লাগে , বাট সেটাকে বাস্তবের রূপ দেওয়ার কথা কল্পনাও করতে পারিনা। "
"আপনি আমার কাছ থেকে কি চান ? আপনার স্ত্রীয়ের ইচ্ছা মতো আপনাকে এই সো কল্ড মানসিক অসুস্থতার থেকে বের করে আনি , নাকি আপনার কল্পনাকে বাস্তবে রূপায়িত করতে আপনাকে সাহায্য করি ?"
সমীর বুঝে পাচ্ছিলো না এর উত্তর সে কি দেবে ! সে নিজের সম্মানের কথা ভাববে , নাকি লাজ লজ্জা ত্যাগ করে নিজের কামের লালসায় বশীভূত হয়ে এক অজানা ব্যক্তির সাহায্য নেবে নিজের ফ্যান্টাসিকে পূরণ করতে ?
বাড়ি ফিরে অনুরিমা ভাবতে লাগলো কিভাবে সে সমীর কে বলবে ডাক্তার দেখানোর কথাটা। সমীর ওকে ভুল বুঝবে না তো ? সে তো নিজেও জানেনা সেক্সওলজি টা ঠিক কি, খায় না মাথায় দেয় ? কোনোদিনও তো জানার দরকারই পড়েনি না ! অনুরিমা তাই সমীর অফিস থেকে আসার আগে নেটে একটু রিসার্চ করে নিলো সেক্সওলজি , এবং সেক্সওলজিস্ট সম্পর্কে। সমীর বাড়ি ফিরলো। অনুরিমার সাথে সে সংসার করছে প্রায় দশ বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেলো। তাই অনুরিমার মুখে প্রশ্নের ভাঁজ সে দেখতে পারে , বুঝতে পারে যে অনুরিমার কিছু জিজ্ঞাস্য আছে তার কাছে। সে তাই নিজে থেকেই অনুরিমা কে জিজ্ঞেস করলো , "কিছু বলবে ?"
"হ্যাঁ , ওই আর কি। "
"তা বলো। .."
"তুমি আগে ডিনার করে নাও , তারপর শোয়ার সময়ে বলবো। "
"আচ্ছা , ঠিক আছে। "
ডিনারের পর সমীর জানতে চাইলো অনুরিমার কাছে , তার কি বলার আছে। অনুরিমা ঘুরিয়ে সেক্সওলজিস্টের কথা তুললো।
"সমু , তুমি এটা ভালো মতোই বুঝতে পারছো যে বিগত কয়েকদিন ধরে আমাদের মধ্যে কোনো কিছু ঠিক চলছে না। আর তা কেন সেটাও তুমি জানো। "
"হুমঃ। .."
"তা এটার তো কোনো একটা সলিউশন বের করতে হবে। এভাবে তো চলতে পারেনা। "
"কি সলিউশন বলো ?"
"দেখো সমু , কিছু মনে কোরোনা , তবে আমার ধারণা এটা তোমার একপ্রকার মানসিক সমস্যা। এর একটা ট্রিটমেন্ট হওয়ার দরকার। রাগ কোরোনা , আমি তোমাকে পাগল বলছি না , আর তোমাকে আমি সাইক্রেটিস্ট এর কাছেও নিয়ে যাবো না। আমি ভাবছি একটা সেক্সওলজিস্ট কে দেখানোর কথা। আশা করবো , তুমি এতে না করবে না। "
"যা ভালো বোঝো , করো। আমার কোনো আপত্তি নেই। "
সমীর যে এতো সহজে রাজি হয়ে যাবে সেটা অনুরিমা ভাবতে পারেনি। সুচরিতা ঠিকই বলেছিলো , এখন সে ডমিনেন্ট পজিশনে আছে আর সমীর সাবমিসিভ। অনুরিমা সুচরিতা কে জানালো সমীর রাজি আছে। সুচরিতা সেই মতে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে নিলো। উইকেন্ডে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া ছিল যাতে সমীরের সুবিধা হয়। সুচরিতা অনু কে জানালো ডক্টর রায় এর চেম্বার হাজরা মোড়ে। ঠিকানাটা পাঠিয়ে দিলো।
শনিবার বিকেলে ছিল অ্যাপয়েন্টমেন্ট। সময় মত অনুরিমা আর সমীর হাজির ডক্টরের চেম্বারে। ডাক্তারের রুমের বাইরে শুধু একজন লেডি অ্যাটেনডেন্ট বসে ছিল। আর কোনো পেশেন্ট পার্টি ছিলোনা। গুপ্তরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে সচরাচর তো মানুষ যেতে চায়না , তাই একজন সেক্সওলজিস্টের প্রাইভেট চেম্বারে শুধু নির্জনতা ভীড় করে।
সুচরিতা আগে থেকে অনুরিমাকে বলে দিয়েছিলো , অ্যাপয়েন্টমেন্ট-টা সে অনুর নামেই করেছে। তাই অনু লেডি অ্যাটেনডেন্ট এর কাছে গিয়ে নিজের নাম বললো। সমীর ভাবলো অনুই অ্যাপয়েন্টমেন্ট-টা নিয়েছে , তাই হয়তো নিজের নামটা দিয়েছে। ওদিকে সুচরিতা নিজের ডাক্তার বন্ধুকে বলে রেখেছিলো যে অনুরিমার হাজবেন্ডের সামনে সে যেন তার নাম না নেয়। ওকে বুঝিয়ে রেখেছিলো তার আর অনুর স্বামীর মধ্যেকার সাপে-নেউলের সম্পর্কের ইকুয়েশনটা। লেডি অ্যাটেনডেন্ট অনু ও সমীরকে বসতে বলে চেম্বারের ভেতরে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর বেড়িয়ে এসে বললো , "যান আপনারা। "
অনু ও সমীর ভেতরে ঢুকলো। দেখলো তাদেরই সমবয়সী একজন লোক , বয়স ৩৭-৩৮ হবে , দেখতে মোটামুটি , গায়ের রং তামাটে মতন। কিন্তু আমি ডাক্তারের শারীরিক বর্ণনা কেন দিচ্ছি ? সে তো শুধু ওদের ট্রিটমেন্ট করবে , শলা-পরামর্শ দেবে , তাই না ? দেখা যাক , কি লেখা আছে নিয়তি তে।
ডক্টর রাজীব রায়ের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো , যখন সে প্রথম ঝলকে অনুরিমা কে দেখলো। মনে মনে ভাবলো, "কি অপূর্ব সুন্দরী মহিলা , না জানি ঈশ্বর কতোটা সময় নিয়ে একে বানিয়েছে ! যেমন মুখশ্রী , তেমন শারীরিক গঠন। এক কথায় , লা জবাব।" ডক্টর রায়ের ঘোর ভাঙলো সমীর বললো , "আসবো? ...."
"হ্যাঁনঃ। .... হ্যাঁ হ্যাঁ , আসুন আসুন। " , ডক্টর রায় নিজেকে সামলে নিয়ে বললো।
ডক্টর রায়ের এরূপ চাউনি টা অনু বা সমীর কেউই লক্ষ্য করেনি। আসলে তারা দুজনেই খুব নার্ভাস ছিল , কিভাবে একজন অজানা তৃতীয় ব্যক্তিকে নিজেদের বৈবাহিক জীবনের সমস্যার কথা বলবে ! এটা ভেবেই একটু অন্যমনস্ক ছিল তারা। তাই তাদের নজরটা ডক্টর রায়ের কু'নজরের উপর ঠিক পড়েনি।
ডঃ রায় -- বসুন।
অনু ও সমীর চেয়ার টেনে বসলো।
"বলুন কি সমস্যা ?"
সুচরিতা ওদের সমস্যার ব্যাপারে আগে থেকে ডঃ রায়কে কিছু বলেনি। স্বামী স্ত্রীর সমস্যা তাদের মতো করে তারাই শুধু বলতে পারবে , তাই জন্য। কিন্তু চেম্বারে অনু সমীর বুঝে পাচ্ছিলো না , কে প্রথমে বলবে , কার প্রথমে বলা উচিত , এবং সর্বোপরি কিভাবে বলবে ? ওদের হেজিটেশন দেখে রাজিব বললো , "সমস্যাটা ঠিক কার ? আপনার ? নাকি আপনার ?"
অনু ইতঃস্ততভাবে হাত দেখিয়ে সমীরের দিকে ইশারা করলো। ডঃ রাজীব বুঝলেন সমস্যাটা সমীরের। এটাও বুঝলেন যে তারা দুজনই খুবই সংকোচ বোধ করছেন নিজেদের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে। তাই তিনি ঠিক করলেন এক এক করে দুজন কে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। তিনি অনুকে বাইরে গিয়ে বসতে বললেন। অনু সেইমতো চেম্বার থেকে বেরিয়ে গেলো।
"এবার বলুন , কি সমস্যা ? বাই দা ওয়ে , আপনার নামটা ?"
"সমীর মল্লিক। "
"আচ্ছা তো সমীর বাবু , এবার নিঃসংকোচে সব কথা গুলো বলে ফেলুন দেখি। লজ্জা করবেন না একদম। জানেন না , লজ্জা ঘেন্না ভয় , তিন থাকতে নয়। "
"আমি জানিনা ব্যাপারটা কিভাবে বলবো , বা বোঝাবো। "
"এমনভাবে বলুন , যেন নিজের ছায়া কে বলছেন ও বোঝাচ্ছেন। "
সমীর মাথা নিচু করে বসে রইলো। রাজীব এক গ্লাস জল সমীরের দিকে এগিয়ে দিয়ে সেটা পান করতে বললো। সমীর এক ঢোঁকে পুরো গ্লাসটা শেষ করে দিলো। দিয়ে মুখ মুছে বললো , "আমার মনে হয় , আমি খুব খারাপ একজন স্বামী। "
"আর সেটা কেন মনে হয় আপনার ?"
"আমি মনে মনে অনেক খারাপ চিন্তা ভাবি। আমি চাইনা ভাবতে , তবুও সেটা চলে আসে আমার কল্পনায়। আমি চাইলেও সেটাকে অ্যাভয়েড করতে পারিনা। "
"তা সেই খারাপ চিন্তাটা কি শুনি ?"
সমীর একটু থেমে বললো , "মাঝে মাঝে কল্পনাতে নিজের স্ত্রীকে অন্য কারোর সাথে ভেবে পেলি। মানে ......., আপনি বুঝতে পারছেন তো আমি কি বলতে চাইছি ?"
"হুমঃ। .... তা সেসব ভেবে আপনার রাগ হয় , না ভালো লাগে ?"
"আগে রাগ হতো , এখন কেন জানিনা ........ "
"ভালো লাগে , তাই তো ?"
সমীর নিম্নস্বরে বললো , "হুমঃ। ...."
"বুঝলাম। আপনার স্ত্রী নিশ্চই এসব চায়না। আর সেই জন্যই সে আপনাকে এখানে নিয়ে এসছে। কিন্তু সবচেয়ে বড়ো প্রশ্নটা হলো এখন আপনি কি চান ? আপনি কি মনে করেন , এটা আপনার একটা মানসিক অসুস্থতা , নাকি ওয়াইল্ড ফ্যান্টাসি ?"
"সেটা তো আপনি ভালো বলতে পারবেন , এটা আসলে কি !"
"দেখুন , সবটাই পার্সপেক্টিভের উপর ডিপেন্ড করে। আপনি ব্যাপারটা কে কিভাবে দেখছেন। সবটাই আপেক্ষিক। খানিকটা অর্ধেক ভর্তি জলের গ্লাসের মতো , একদিক দিয়ে দেখলে মনে হবে অর্ধেক পূর্ণ , অপরদিক দিয়ে অর্ধেক খালি। "
"আপনি কি বলছেন আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। "
"মানে , এটা কে ফ্যান্টাসি ভাবলে ফ্যান্টাসি , অসুস্থতা ভাবলে অসুস্থতা। "
"তার মানে আপনি বলতে চাইছেন , আমার এইসব ভাবাটা অস্বাভাবিক নয় ?"
"আচ্ছা আগে এটা বলুন , আপনাদের বিয়ে কতদিন হয়েছে ?"
"প্রায় এগারো বছর। "
"আপনাদের সেক্স লাইফ কিরকম চলছে ?"
"মোটামুটি। .."
"মানে , অ্যাভারেজ , কখনো-সখনো বিলোও অ্যাভারেজ , তাই তো ?
"বলতে পারেন। "
"সপ্তাহে কতোবার মিলিত হন ?"
"ঠিক নেই। "
"আপনার অন্য কোনো সম্পর্ক আছে , এক্সট্রা ম্যারিটাল ? "
"নাহঃ। "
"স্ত্রী কে সন্দেহ করেন ?"
"নাহঃ , ও সেরকম নয়। "
"তাহলে আপনার এই ফ্যান্টাসিটা এসছে আপনার ম্যাড়ম্যাড়ে সেক্স লাইফের জন্য। আপনার সেক্সউয়াল লাইফে আপনি খুব বোড়িং ফিল করছেন , তাই আপনি একটু অন্যরকম কিছু ভাবছেন। "
"হতে পারে। "
"আপনার স্ত্রী এই ব্যাপারে কি করে জানলো ? আপনি নিজে থেকে বলেছেন , নাকি উনি কোনোভাবে জানতে পেরে গেছেন ?"
"আসলে আমি বেশ কয়েকদিন ধরে এইসব কারণে অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলাম , আমার স্ত্রী এর কারণ জানতে জোর করায় আমি বাধ্য হই স্ত্রী কে সবটা বলতে। তারপর থেকে আমাদের মধ্যে কোনোকিছু ঠিক নেই , সি ইস অফেন্ডেড অন মি। "
"আপনি কি কখনো ভেবেছেন , এই কল্পনাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার কথা ?"
"হ্যাঁ ভেবেছি , কিন্তু অনুকে বলবো কিভাবে সেটা বুঝে পাইনি। "
"এখন স্ত্রীয়ের প্রতিক্রিয়া দেখে সেই ভাবনা থেকে সরে এসেছেন , নাকি এখনো সেটাকে পোষণ করে চলেছেন ? "
"কল্পনা করতে তো ভালোই লাগে , বাট সেটাকে বাস্তবের রূপ দেওয়ার কথা কল্পনাও করতে পারিনা। "
"আপনি আমার কাছ থেকে কি চান ? আপনার স্ত্রীয়ের ইচ্ছা মতো আপনাকে এই সো কল্ড মানসিক অসুস্থতার থেকে বের করে আনি , নাকি আপনার কল্পনাকে বাস্তবে রূপায়িত করতে আপনাকে সাহায্য করি ?"
সমীর বুঝে পাচ্ছিলো না এর উত্তর সে কি দেবে ! সে নিজের সম্মানের কথা ভাববে , নাকি লাজ লজ্জা ত্যাগ করে নিজের কামের লালসায় বশীভূত হয়ে এক অজানা ব্যক্তির সাহায্য নেবে নিজের ফ্যান্টাসিকে পূরণ করতে ?