• If you are trying to reset your account password then don't forget to check spam folder in your mailbox. Also Mark it as "not spam" or you won't be able to click on the link.

Adultery স্বামীর কল্পনা স্ত্রীয়ের যন্ত্রণা

md sohag

New Member
4
3
3
তোমার লেখাগুলো সুন্দর কিন্তু আপডেট আসে অনেক দেরিতে যেটা দিয়ে মজা কম লাগে তারাতাররি আেডেট দিলে ভালো হতো
 

Aliazamsujan

New Member
22
14
4
দিদি প্লিজ গল্পটার আপডেট দিয়েন
অনেকদিন ধরে গল্পটার আপডেটের অপেক্ষায় আছি
 

md sohag

New Member
4
3
3
তুমি তো আপডেটই দাও না এত সময় লেগে চটি লেখার কোন প্রয়োজন হয় না যদি তাড়াতাড়ি গল্প আপডেট দিতে পারো তাহলে পোস্ট করিও
 
  • Like
Reactions: Manali Bose

Manali Bose

Active Member
1,461
2,214
159
পর্ব ১৩

পরের দিন সকালে অনুরিমা দেখে তার ফোন সুচরিতার মেসেজ। সে বারবার অনুরিমাকে বোঝানোর চেষ্টা করছে সে বিশ্বাসঘাতক নয় , সে অনুরিমার কোনো বিশ্বাস ভাঙেনি। তার প্রাক্তন স্বামী অনুরিমার মতোই তার একজন বিশস্ত বন্ধু , যে কোনো কথা পাঁচকান করবে না , উপরন্তু সে সাহায্যই করবে। তাই সে সমীরের ব্যাপারটা আদিত্য কে জানিয়ে ছিল।

এরই মধ্যে অনুরিমার রাগ কিছুটা ঠান্ডা হয়েছিল। সে ভাবলো একবার তার বন্ধুর কথাটা তার শোনা উচিত। সে তাই সুচরিতাকে আবার মিট করতে বললো। কিন্তু এবার আদিত্যকে না নিয়ে আসার কথা কড়া ভাবে জানিয়ে দিলো। সুচরিতা রাজি হয়েগেলো তার এই শর্তে।

সেদিনই বিকেলে অনুরিমা আবার গেলো সুচরিতার সাথে দেখা করতে। সে যে দোটানার মধ্যে রয়েছে তাতে পারলে শত্রুকেও সে একবারের জন্য বিশ্বাস করতে পারে , সুচরিতা তাও তো ওর বান্ধবী ছিল , সেটাও আবার কলেজ জীবনের।

অনুরিমার সাথে দেখা হওয়া মাত্র সুচরিতা ওকে সব খুলে বলতে লাগলো। আদিত্য কৌতূহলবশত অনুরিমার সম্পর্কে ওর কাছে জানতে চেয়েছিলো। তখন ও আদিত্যকে সব খুলে বলে অনুরিমা এবং সমীরের সমস্যার ব্যাপারে। তখন আদিত্যও চায় অনুরিমার এই জীবনযুদ্ধে তার সৈনিক হতে। তাই সুচরিতা সেদিন তার প্রাক্তন স্বামীকে নিয়ে এসেছিলো অনুরিমার সাথে দেখা করাতে।

সুচরিতার যুক্তিতে অনুরিমা কিছুতেই কনভিন্সড হচ্ছিলো না। অনেকবার করে বোঝানোর পর ফাইনালি অনুরিমা মেনে নিলো সুচরিতার সব যুক্তি। কিন্তু একটা শর্তে , অনুরিমা না চাইলে বা অনুরিমাকে না বলে সুচরিতা আর কোনো কথা আদিত্য সেনগুপ্তকে বলবে না। তবেই অনু বিশ্বাস করে আবার সব কথা সুচরিতার সাথে শেয়ার করতে পারবে , নতুবা নয়। এই শর্তে সুচরিতা এক কথায় রাজি হয়েগেলো। এরপর জিজ্ঞেস করতে লাগলো কেন অনু তাকে আজ ডেকে পাঠালো , শুধুই কি তাদের মধ্যে সবকিছু শর্ট আউট করতে নাকি আরো কিছু কথা আছে যা বলার আছে।

অনুরিমা আস্তে আস্তে নিজের কথার বাক্স খুলতে লাগলো। সে বললো রাজীব তাকে কি কি করতে বলেছে। শুনে তো সুচরিতা অবাক ! মুখে হাত দিয়ে সে বসে পড়লো। ভাবতেই পারছে না , যে বান্ধবী তার কোনোদিন সমীর ব্যাতিত আর কারোর কথা কল্পনাতেও আনেনি , তাকে কিনা এখন অন্য পুরুষকে চুমু খেতে হবে তাও সেটা সমীরকে "সুস্থ" করার জন্য !

"আর ইউ সিরিয়াস ? তুই এটা পারবি করতে ?"

অনুরিমা খুব হেসিটেট ফীল করছিলো , কি বলে উঠবে বুঝে উঠতে পারছিলোনা। সুচরিতা অনুরিমার দ্বন্দ্ব অনুভব করতে পারছিলো। সে অনুরিমার হাতটাকে আলতো ভাবে ধরে বললো , "দেখ অনু , আমি জানি তুই এখন অনেক বড়ো ধর্মসংকটে পড়েছিস। এই পরিস্থিতিতে কোনো একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছনো তোর পক্ষে খুবই কঠিন। কিন্তু তুই যদি আমার সাজেশন চাস , তাহলে আমি বলবো , রাজীবের কথাটা তোর একবার ভেবে দেখা উচিত। ওর কথায় কিন্তু যুক্তি রয়েছে। সর্বোপরি ও একজন সেক্সওলজিস্ট, এসব ব্যাপারে তোর আমার থেকে ও বেশি বুঝবে। "

"কি গ্যারান্টি আছে সুচরিতা , যে রাজীব যা বলছে সেটা আমার আর সমীরের ভালোর জন্য। হতেই পারে এর পেছনে ওর কোনো অন্য উদ্দেশ্য আছে। "

"আমি বুঝতে পারছি , তুই ঠিক কি বলতে চাইছিস। আসলে দোষ তোর নয়। তুই ওর ব্যাপারে সবটা জানিসনা তাই এইভাবে ভাবছিস। কিন্তু আমি তো ওকে চিনি। আমি জানি ও এরকম ছেলেই নয়। ও খুব ভালো ছেলে , কিন্তু বেচারার জীবনে অনেক দুঃখ রয়েছে। "

"দুঃখ ! কিসের দুঃখ ?"

"রাজীব নিজের স্ত্রী মৌ-কে খুব ভালোবাসতো। ওদের লাভ ম্যারেজ ছিল। বিয়ের প্রথম কয়েকটা বছর খুব সুখেই কাটছিলো। কিন্তু ওদের জীবনে একটা শূন্যস্থান ছিল, ওদের বাচ্চা হচ্ছিলো না। রাজীব নিজের উদ্যোগে ডাক্তারের কাছে গিয়ে টেস্ট করে জানতে পারে যে সে সম্পূর্ণ সুস্থ ও সক্ষম। তার স্ত্রীয়ের মধ্যে কিছু সমস্যা রয়েছে যা চিকিৎসা করলে সেরে যাবে। ব্যাপারটা খোলসা করে সে মৌ-কে জানায়নি , পাছে সে দুঃখ পায়। সে বলতো সমস্যা একটা রয়েছে দুজনের যা চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব। কিন্তু মৌ ভাবতো সমস্যা বুঝি শুধু রাজীবের রয়েছে , নিজের অক্ষমতা ঢাকতে সে এই সমস্যাকে ভাগ করে নিতে চাইছে। প্রথম প্রথম মৌ এসব নিয়ে কিছু বলতো না। কিন্তু একদিন হঠাৎ রাজীব জানতে পারে তার আদরের মৌ তার সাথে প্রতারণা করছে। সে তার অফিসের এক কলিগের সাথে পরকীয়াতে জড়িয়ে পড়েছে। রাজীব তারপরেও চেষ্টা করেছিলো নিজের বিয়েটাকে বাঁচানোর। কিন্তু ওর স্ত্রী নাছোড়বান্দা ছিল। রাজীবের নামে সে মিথ্যে অভিযোগ আনতে লাগলো। বললো রাজীব নাকি ইম্পোটেন্ট , সে তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে অক্ষম , আর এই মিথ্যে কথাটা সে রটিয়ে দেবে। লোকলজ্জার ভয়ে তাই রাজীব বাধ্য হয় মৌ কে নিঃশর্ত ডিভোর্স দিতে। কিন্তু রাজীব তো জানতো তার মধ্যে কোনো অসুবিধা ছিলোনা। তার স্ত্রী তার ভালোমানুষির সুযোগ নিয়ে তাকে জাস্ট ব্ল্যাকমেইল করেছিল সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য। এরপর রাজীব সেক্সওলজি নিয়ে পড়াশুনা করতে লাগলো। ও প্রথমে একজন জেনারেল মেডিসিনের ডক্টর ছিল। তারপর সেখান থেকে স্ট্রিম চেঞ্জ করে সেক্সওলজি বিভাগে চলে এলো। যাতে ওর মতো আর কোনো স্বামীকে এরকম সমস্যার মুখোমুখি না হতে হয়। ও যদি মেডিসিনের ডাক্তারিটা চালিয়ে যেত তাহলে আজ না জানি কতদূর পৌঁছে যেত। যৌন বিষয়ে কথা বলতে ক'জনই বা আসে। সবাই যে লোক লজ্জার ভয় পায়। কিন্তু তবুও রাজীব সেক্সওলজির ক্লিনিকই চালায়। আশা করছি এবার তোর ওকে নিয়ে সব ডাউট ক্লিয়ার হয়েছে ?"

সব কথা শুনে অনুরিমা মাথা নিচু করে বললো , "আমি জানতাম না ওনার জীবনে এতো কিছু ঘটে গ্যাছে ", মনে মনে অনুরিমার একটু খারাপ লাগলো , রাজীবকে নিয়ে স্বল্প সিমপ্যাথির উদয় হলো।

"তাই তোকে বলি , আগে থেকে কারোর ব্যাপারে কোনো জাজমেন্ট দিয়ে বসিস না। এই যেমন তুই আদিত্যকেও ভুল বুঝলি। সেও কিন্তু শুধু তোর হেল্প করতেই চেয়েছে। ওর সাথে আমার বিয়েটা টেকেনি ঠিকই ফর সাম ফ্যামিলি ইস্যুস, কিন্তু তবুও বলবো মানুষ হিসেবে ও সত্যি অতুলনীয় , এখনও তাই ওকে মনে মনে আমি খুব রেসপেক্ট করি।"

অনুরিমা আর কিচ্ছু বুঝতে চাইছিলো না। ওর মাথা হ্যাং হয়েগেছিলো এতো ভাবনার যানজটে। সে মাথায় হাত চেপে বসেছিলো। সুচরিতা ওকে সময় দিচ্ছিলো নিজের ভাবনাগুলো কে একের পর এক সাজিয়ে সেই যানজটকে মুক্ত করার। অবশেষে অনুরিমা মুখ খুললো। .......

"তাহলে তুই কি অ্যাডভাইস করছিস ?"

"আমি রাজীবকে ভালোমতো চিনি। ও খুব বিশ্বস্ত ছেলে। আমার মনে হয় ওর সবকথা তোর অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলাটাই একমাত্র অপশন। ও যদি এখন তোকে জলে ঝাঁপও দিতে বলে তাহলেও তোর সেটাই করা উচিত। ওর উপর বিশ্বাস করে দেখ , ঠকবি না। "

সেদিনের মতো অনুরিমা ও সুচরিতার মধ্যেকার বাক্যালাপ শেষ হলো। অনুরিমা বাড়ি ফিরে এলো , আর ভাবতে লাগলো তার পরবর্তী পদক্ষেপ কি হওয়া উচিত। অনেক ভাবনা চিন্তা করার পর সে নিজের ফোনটা হাতে নিলো , নিয়ে রাজীবকে কল দিলো। রাজীব ধরলো , ফোনটা।

অনুরিমা বুকে পাথর চাপা দিয়ে রাজীবকে বললো সে সব শর্তে রাজি আছে। রাজীব যা যা বলবে অনুরিমা তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে , তাতে যদি তার স্বামী পূনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে তাহলে তাই ঠিক। রাজীব তাকে আরেকদিন দেখা করতে বললো। জানালো তাদের "রিহার্সাল" খুব শীঘ্রই শুরু করতে হবে নাহলে অনেক দেরী হয়ে যাবে সমীরকে মূলস্রোতে ফেরাতে। অনুরিমা রাজীবকে অনুরোধ করলো এসব যতোটা সম্ভব কম করার চেষ্টা করতে , কারণ সে সমীরের পতিব্রতা স্ত্রী , তাকে এসব কাজ শোভা পায়না। পাঁকে পড়ে সে এসব করতে বাধ্য হচ্ছে। রাজীব ফোনে আশ্বাস দিয়ে বললো কমল তো পাঁকেই ফলে। গায়ে কাদা না মাখলে আগামী দিন পদ্মের ন্যায় সুশোভিত হবে কি করে ! রাজীবের ইঙ্গিত বুঝতে অনুরিমার অসুবিধা হলো না। সে ইতিবাচক সম্মতি দিয়ে ফোন রেখে দিলো।

সেই সপ্তাহের শনিবার রাজীব তাদের আসতে বারণ করে দিলো। জানতো যে এসেও কোনো লাভ নেই। যেই সমাধান সে বার করেছে তার জন্য আগে অনুরিমাকে তৈরী হতে হবে। তার আগে সমীরের সাথে সিটিং করে কি হবে। অনুরিমা কে রাজীব অনুরোধ করলো তাদের পরিকল্পনার সম্পর্কে সমীরকে কিছু না জানাতে , খানিকটা কাউন্সেলিং এর স্বার্থেই। কিন্তু অপরদিকে রাজীব সমীরের সাথে আলাদা ভাবে ফোনে কথা বলে রেখেছিলো ! কবে কোথায় সে অনুরিমার সাথে দেখা করবে সব ডিটেইলস সমীরকে আগাম দেবে বলে আশ্বাস দিয়ে রেখেছিলো !

আসলে রাজীব তখন ডাবল গেম খেলছিলো, তাদের স্বার্থেই। রাজীব অনুরিমাকে যথা সম্ভব সেক্সচুয়ালি ওপেন করার চেষ্টা করছিলো , অপরদিকে সমীরকে কিছুটা হলেও কাকোল্ড অভিজ্ঞতার স্বাধ দেওয়ার চেষ্টা করছিলো। যাতে দুদিকটাই বজায় থাকে। এর মাধ্যমে সে নিজের সেই থিওরির উপরই কাজ করছিলো , যেখানে দুজন দুই বিপরীত প্রান্তে দাঁড়িয়ে , দুজনকে একত্রে মধ্য বিন্দুতে নিয়ে আনতে হবে। এক কথায় শিয়ালদাহ আর নিউ জলপাইগুড়ির ট্রেন দুটিকে ফারাক্কায় নিয়ে আসার ব্যাপার।

আসলে ফ্ল্যাশব্যাকে গেলে বোঝা যাবে যে রাজীবের বাজপাখির নজর থেকে সেদিন সমীর লুকোতে পারেনি। ভিক্টোরিয়ায় সে যতোই ছদ্মবেশে যাক , অনুরিমা না পারলেও রাজীব ঠিক সমীরকে চিনতে পেরেছিলো। তখন কিছু না বললেও পরে ফোন করে রাজীব সেই কথা সমীরকে জানায়। ধরা পড়ে সমীর বাধ্য হয় স্বীকার করতে যে সে ভিক্টোরিয়ায় নিজের স্ত্রী ও রাজীবের উপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে গেছিলো, সন্দেহের বশে নয় , তবে কৌতূহলবশে। রাজীব বুঝতে পারে সমীর তার কাকোল্ড ফ্যান্টাসির তাড়নায় এসব করেছিলো। রাজীব তখন সমীরকে আশ্বাস দ্যায় যে তার গোপনে তার স্ত্রীয়ের সাথে সে কোনো অভিসারে লিপ্ত হবে না। যা করবে , বা যদি কিছু করার থাকে তাহলে সেটা সমীরকে সাক্ষী রেখেই করবে।

এরপর শুরু হয় রাজীবের পরবর্তী পরিকল্পনা। সে অপেক্ষা করতে থাকে অনুরিমার ফোন কলের। এর মাঝে অনুরিমা সুচরিতার কাছে পরামর্শ নিতে যায়। তারপর অবশেষে অনুরিমা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে সে রাজীবের সব কথা মানবে , সমীরকে ঠিক করার স্বার্থে। তাই সে বহুকাঙ্খিত ফোন কলটি করেই ফেলে রাজীবকে এবং বলে সে রাজি , রাজীবের সব কথা মেনে চলতে।
 

Manali Bose

Active Member
1,461
2,214
159
পর্ব ১৪

পরের সপ্তাহের সোমবার রাজীব অনুরিমাকে মানি স্কোয়ারে আসতে বলে, দুপুরবেলায় , যাতে অনুরিমা বাড়ির সব কাজ সেরে নিশ্চিন্তে আসতে পারে। সমীরকেও সে টাইম এন্ড লোকেশন জানিয়ে দ্যায় , সেই মতো সমীরও অফিস থেকে হাফ ডে নিয়ে ন্যায়। দুটো নাগাদ অনুরিমা মানি স্কোয়ারে এসে পৌঁছয়। তার আগে সে তিন্নিকে স্কুল থেকে বাড়ি নিয়ে আসে , যাতে তার শ্বশুর শাশুড়ি কে কষ্ট করতে না হয়।

রাজীব মানি স্কোয়ারে অনুরিমার জন্য অপেক্ষারত ছিল। অনুরিমাকে দেখা মাত্র সে তার পানে এগিয়ে গেলো। অনুরিমাও তখন খেয়াল করলো তাকে। দুজনের মধ্যে প্রথমে ফর্মাল হাই-হ্যালো হলো, তারপর রাজীব অনুরিমাকে অনুরোধ করলো মলের ভেতর যেতে। দুজনে একসাথে প্রবেশ করলো মানি স্কোয়ারে।

অনুরিমা জানতে চাইলো রাজীব কেন তাকে আজ মানি স্কোয়ারে দেখা করতে বললো। রাজীব উত্তর দিলো যে আজ সে প্ল্যান করেছে মানি স্কোয়ারের পিভিআর এ নূন শো দেখার। সোমবারের এই সময় পিভিআর এর হল প্রায় খালিই থাকে , তাই প্রাইভেসী নিয়ে কোনো সমস্যা হবেনা। এখানেই সেই রিহার্সাল শুরু করা যাবে।

রিহার্সালের কথা শুনে অনুরিমার বুক ধড়পড় করতে লাগলো। সে কিছুটা আঁতকে উঠে বললো , "আজকেই ! আজ থেকেই ওসব করতে হবে ?"

কিছুটা বিরক্তিভাব মুখে নিয়ে রাজীব বললো , "তাহলে তোমাকে আজকে ডাকলাম কেন অনুরিমা ? শুধু গল্প করার জন্য ? এইটুকু কমন সেন্স তোমার নেই ?"

রাজীবের বকা খেয়ে অনুরিমার মুখ ভিজে বেড়ালের মতো চুপসে গেলো। সে বেশি উচ্চবাচ্য করতে পারলো না। অনুরিমার অবস্থা দেখে এবার রাজীব একটু নরম গলায় বললো , "দেখো অনুরিমা , ভিক্টোরিয়ার মতো কোনো খোলা জায়গায় এসব করলে তোমার অস্বস্তি বাড়তো বই কমতো না। আর আমার বাড়িতেও তুমি আসতে না , আমি জানি। আসবেই বা কেন , আমি তো তোমার কয়েকদিনের পরিচিত মাত্র। তাই এখনও পর্যন্ত তোমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস না অর্জন করতে পারাটাই স্বাভাবিক। অগত্যা এমন একটি জায়গা আমাদের বেছে নিতে হতো যেখানে আমাদের প্রাইভেসী ডিস্টার্ব করার মতো লোক প্রায় থাকবেনা বললেই চলে। অনেক ভেবেচিন্তে তাই এর থেকে ভালো সময় ও জায়গা আমি আপাতত খুঁজে পাইনি। দুপুরের শো তে , তাও আবার সোমবারে , লোকে এই সময় সিনেমা দেখতে আসেনা বললেই চলে। বিশ্বাস নাহলে হলের ভেতরে গেলেই বুঝতে পারবে। তাও আমি প্রাইম রো তে পেছনের দিকে টিকিট কেটেছি , যাতে স্বল্প সম্ভাবনাও না থাকে তোমার প্রাইভেসী নষ্ট করার। তাছাড়া যে গুটি কয়েকজন থাকবে তাদের চোখ অন্ধকারে সিলভার স্ক্রিনেই থাকবে , তোমার দিকে নয়। তাই তোমার কোনো ভয় নেই।...... এসো আমার সাথে, তুমি নির্দ্বিধায় আমায় বিশ্বাস করতে পারো। "

অনুরিমা আর কোনো অহেতুক প্রশ্ন না করে রাজীবের কথা মতো তার সাথে পিভিআর এর সিনেমা হলের দিকে যেতে লাগলো। রাজীব আগে থেকে অনলাইনে সিট দেখে টিকিট কেটে রেখেছিলো। তাই তারা সোজা সিনেমা হলে প্রবেশ করলো। অনুরিমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিলো নার্ভাসনেসে। তারা টিকিট নাম্বার অনুযায়ী পিছনের দিকে প্রাইম সিটে গিয়ে বসলো। আশানরুপ ভাবেই হল প্রায় ফাঁকা ছিল। কিন্তু সেইসব দিকে অনুরিমার মন ছিল। তার মন তখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলো 'রিহার্সাল' এর জন্য। রিহার্সাল তো নয় যেন অগ্নিপরীক্ষা ছিল তার কাছে।

ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সে রাজীবকে বললো , "দেখুন , বেশি কিছু আমি করতে পারবো না। আমার ব্যাপারটা একটু বুঝুন। আমি যা করছি শুধু আমার স্বামীর জন্য , শুধু তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য। তাই আমার মনে হয় আমাদের ওপর ওপর যা করার করতে হবে , যতোটা না করলেই নয় , অতো গভীরভাবে লিপ্ত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। "

রাজীব কিছুটা ভেবে ঠান্ডা মাথায় বললো , "আমি জানি আপনি যা করছেন নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে করছেন , সমীরবাবুর ভালোর জন্য করছেন। তবে আপনাকে একটা কথা বলি শুনুন, ......... আপনি নিশ্চই মহাভারত পড়েছেন?.... সেখানে সবচেয়ে পবিত্র নারী ছিলেন দ্রৌপদী , যার বস্ত্রহরণের প্রচেষ্টার কারণেই মহাভারতের যুদ্ধ লেগেছিলো। সেই দ্রৌপদীর কয়টি স্বামী ছিল ? .. পাঁচটি ! কি করে তার পাঁচটি স্বামী হলো ? সে স্বয়ংবরে শুধু অর্জুনকে পছন্দ করেছিল। শুধু অর্জুনকেই সে ভালোবাসতো। কিন্তু তার শাশুড়ির কথায় তাকে তার বাকি চার ভাইয়ের সাথেও বিয়ে করতে হয়েছিলো। বিয়েটা তার খানিকটা অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও পরে সে পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলো। পাঁচ ভাইয়ের সাথে সমান ভাবে সে সংসার করেছিল। প্রত্যেকের সাথে ক্রমান্বয়ে এক বছর করে সে দাম্পত্য জীবন কাটাতো। প্রত্যেকের সাথে সে সহবাসে লিপ্ত হয়েছিল এবং প্রত্যেকের সন্তানের জননী হয়েছিল। আমরা সবাই সতী সাবিত্রীর উদাহরণ দিই , কিন্তু আমরা ভুলে যাই যে এই দেশ যতোটা সাবিত্রীর ততোটা দ্রৌপদীরও। তাই কখনো কখনো পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে পরিবর্তন করাই হলো এক আদর্শ নারীর উপযুক্ত লক্ষণ। পাপ পুণ্য এসব আপেক্ষিক ব্যাপার। যদি সেই যুগে একাধিক পুরুষের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েও দ্রৌপদী কোনো পাপ করে না থাকে তাহলে এই যুগে আমার সাথে বসে আপনিও এখন কোনো পাপ করতে যাচ্ছেন না। কোনো কাজের পিছনে যদি যথার্থ কোনো কারণ থাকে তাহলে সেই কাজ যতোই নিকৃষ্ট হোক না কেন , তাকে কখনোই পাপ বলে গণ্য করা হয়না। "

বলতে বলতে হলের আলো নিভে গেলো, সিনেমা শুরু হতে যাবে বলে। লম্বা একটা নিঃশ্বাস ফেলে রাজীব বললো , "আশা করছি , আপনি আমার কথা গুলো বুঝতে পেরেছেন। এবার তাই দয়া করে আমি যা করতে চলেছি তার সাথে সায় দিয়ে একটু সহযোগিতা করুন আমায়।"

এই বলে রাজীব অনুরিমার দিকে হাত বাড়ালো। তাকে আলতো করে স্পর্শ করলো। অনুরিমার বুকের ভেতর যেন এক দমকা হাওয়া বয়ে গেলো। আর চার পাঁচটা দিনের মতোই সেদিন অনুরিমা একটি সুতির শাড়ি পড়েছিল , সাথে হাফ হাতা ব্লাউজ , যা আপামর মধ্যবিত্ত ঘরণীরা পড়ে থাকে। কচি কলাপাতা রঙের ছিল শাড়ি ও ব্লাউজটি। যা তার রূপকে আরো বেশি স্নিগ্ধ ও পবিত্র করে তুলছিলো। কিন্তু এই পবিত্রতা সে কতোক্ষণ আর ধরে রাখতে পারবে , তা ছিল তখন লাখ টাকার প্রশ্ন !

আলতো ছোঁয়ার পর রাজীব কিছু মুহূর্তের মধ্যেই অনুরিমাকে নিজের বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করলো। অনুরিমা হতচকিত হয়েগেলো ! এতো তাড়াতাড়ি রাজীব এতোটা এগিয়ে যাবে সেটা সে কল্পনা করতে পারেনি। সে শুধু মৃদুস্বরে বলে উঠলো , "আস্তে !! এখন তো সবেমাত্র অন্ধকার নেমেছে হলে। এখনও না জানি কত দর্শকের আনাগোনা হতে পারে। "

প্রত্যুত্তরে রাজীব বললো , "তারা কেউ আমাদের দেখতে আসবে না। অন্ধকারে আমাদের খুঁজেও পাবেনা। চারিদিকে চেয়ে দেখো তো অনুরিমা , কাউকে দেখতে পাচ্ছ কিনা ? আমাদের আশে পাশে , বা কেউ আমাদের দিকে চেয়ে আছে কিনা ! "

সরল মনে অনুরিমা মুখ বাড়িয়ে চেয়ে দেখলো। নাহঃ , কেউ নেই আশে পাশে। অন্ধকারে বিশেষ বোঝা না গেলেও, গুটিকয়েক যারা এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসেছে , বেশিরভাগই তারা কাপল , কারণ তারা সব দুটি মাথা এক করে নিজেরদের মধ্যেই মত্ত হয়েছিলো। কেউ দেখছেও না একে অন্যদের দিকে তাকিয়ে। কারোর অতো ইন্টারেস্ট নেই ঘাড় ঘুরিয়ে অপর কোনো কপোত-কপোতির যুগলবন্দী দেখার।

কিন্তু একটি নজর পিছনের সারিতে কোণের দিকে বসা এক ছদ্মবেশী পুরুষের ছিল , যে মূলত এসেই ছিল রাজীবের দ্বারা অনুরিমার প্রশিক্ষণ প্রাপ্তির সাক্ষী হতে। সে আর কেউ নয় , অনুরিমার স্বামী সমীর ! যাকে আগে থেকেই রাজীব বাবু সব জানিয়ে রেখেছিলো। অন্ধকারে অনুরিমার চোখ তাকে খেয়াল করেনি , বা খেয়াল করলেও তার ছদ্মবেশী চেহারার পিছনে আসল লোকটাকে চিনতে পারেনি। সেই লোকটা দেখলো কিভাবে স্বল্পদিনের পরিচয়ে পরিচিত এক ডাক্তার তার স্ত্রী-কে হঠাৎ জড়িয়ে ধরেছে। তার স্ত্রী একটু চেষ্টা করছে ঠিকই সেই বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য কিন্তু স্বল্প চেষ্টায় পর্বতকে তো আর টলানো যায়না !
 
Last edited:

yours_devil666

Shaitan sabke andar hota hai .
157
140
44
Nice update
পর্ব ১৩

পরের দিন সকালে অনুরিমা দেখে তার ফোন সুচরিতার মেসেজ। সে বারবার অনুরিমাকে বোঝানোর চেষ্টা করছে সে বিশ্বাসঘাতক নয় , সে অনুরিমার কোনো বিশ্বাস ভাঙেনি। তার প্রাক্তন স্বামী অনুরিমার মতোই তার একজন বিশস্ত বন্ধু , যে কোনো কথা পাঁচকান করবে না , উপরন্তু সে সাহায্যই করবে। তাই সে সমীরের ব্যাপারটা আদিত্য কে জানিয়ে ছিল।

এরই মধ্যে অনুরিমার রাগ কিছুটা ঠান্ডা হয়েছিল। সে ভাবলো একবার তার বন্ধুর কথাটা তার শোনা উচিত। সে তাই সুচরিতাকে আবার মিট করতে বললো। কিন্তু এবার আদিত্যকে না নিয়ে আসার কথা কড়া ভাবে জানিয়ে দিলো। সুচরিতা রাজি হয়েগেলো তার এই শর্তে।

সেদিনই বিকেলে অনুরিমা আবার গেলো সুচরিতার সাথে দেখা করতে। সে যে দোটানার মধ্যে রয়েছে তাতে পারলে শত্রুকেও সে একবারের জন্য বিশ্বাস করতে পারে , সুচরিতা তাও তো ওর বান্ধবী ছিল , সেটাও আবার কলেজ জীবনের।

অনুরিমার সাথে দেখা হওয়া মাত্র সুচরিতা ওকে সব খুলে বলতে লাগলো। আদিত্য কৌতূহলবশত অনুরিমার সম্পর্কে ওর কাছে জানতে চেয়েছিলো। তখন ও আদিত্যকে সব খুলে বলে অনুরিমা এবং সমীরের সমস্যার ব্যাপারে। তখন আদিত্যও চায় অনুরিমার এই জীবনযুদ্ধে তার সৈনিক হতে। তাই সুচরিতা সেদিন তার প্রাক্তন স্বামীকে নিয়ে এসেছিলো অনুরিমার সাথে দেখা করাতে।

সুচরিতার যুক্তিতে অনুরিমা কিছুতেই কনভিন্সড হচ্ছিলো না। অনেকবার করে বোঝানোর পর ফাইনালি অনুরিমা মেনে নিলো সুচরিতার সব যুক্তি। কিন্তু একটা শর্তে , অনুরিমা না চাইলে বা অনুরিমাকে না বলে সুচরিতা আর কোনো কথা আদিত্য সেনগুপ্তকে বলবে না। তবেই অনু বিশ্বাস করে আবার সব কথা সুচরিতার সাথে শেয়ার করতে পারবে , নতুবা নয়। এই শর্তে সুচরিতা এক কথায় রাজি হয়েগেলো। এরপর জিজ্ঞেস করতে লাগলো কেন অনু তাকে আজ ডেকে পাঠালো , শুধুই কি তাদের মধ্যে সবকিছু শর্ট আউট করতে নাকি আরো কিছু কথা আছে যা বলার আছে।

অনুরিমা আস্তে আস্তে নিজের কথার বাক্স খুলতে লাগলো। সে বললো রাজীব তাকে কি কি করতে বলেছে। শুনে তো সুচরিতা অবাক ! মুখে হাত দিয়ে সে বসে পড়লো। ভাবতেই পারছে না , যে বান্ধবী তার কোনোদিন সমীর ব্যাতিত আর কারোর কথা কল্পনাতেও আনেনি , তাকে কিনা এখন অন্য পুরুষকে চুমু খেতে হবে তাও সেটা সমীরকে "সুস্থ" করার জন্য !

"আর ইউ সিরিয়াস ? তুই এটা পারবি করতে ?"

অনুরিমা খুব হেসিটেট ফীল করছিলো , কি বলে উঠবে বুঝে উঠতে পারছিলোনা। সুচরিতা অনুরিমার দ্বন্দ্ব অনুভব করতে পারছিলো। সে অনুরিমার হাতটাকে আলতো ভাবে ধরে বললো , "দেখ অনু , আমি জানি তুই এখন অনেক বড়ো ধর্মসংকটে পড়েছিস। এই পরিস্থিতিতে কোনো একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছনো তোর পক্ষে খুবই কঠিন। কিন্তু তুই যদি আমার সাজেশন চাস , তাহলে আমি বলবো , রাজীবের কথাটা তোর একবার ভেবে দেখা উচিত। ওর কথায় কিন্তু যুক্তি রয়েছে। সর্বোপরি ও একজন সেক্সওলজিস্ট, এসব ব্যাপারে তোর আমার থেকে ও বেশি বুঝবে। "

"কি গ্যারান্টি আছে সুচরিতা , যে রাজীব যা বলছে সেটা আমার আর সমীরের ভালোর জন্য। হতেই পারে এর পেছনে ওর কোনো অন্য উদ্দেশ্য আছে। "

"আমি বুঝতে পারছি , তুই ঠিক কি বলতে চাইছিস। আসলে দোষ তোর নয়। তুই ওর ব্যাপারে সবটা জানিসনা তাই এইভাবে ভাবছিস। কিন্তু আমি তো ওকে চিনি। আমি জানি ও এরকম ছেলেই নয়। ও খুব ভালো ছেলে , কিন্তু বেচারার জীবনে অনেক দুঃখ রয়েছে। "

"দুঃখ ! কিসের দুঃখ ?"

"রাজীব নিজের স্ত্রী মৌ-কে খুব ভালোবাসতো। ওদের লাভ ম্যারেজ ছিল। বিয়ের প্রথম কয়েকটা বছর খুব সুখেই কাটছিলো। কিন্তু ওদের জীবনে একটা শূন্যস্থান ছিল, ওদের বাচ্চা হচ্ছিলো না। রাজীব নিজের উদ্যোগে ডাক্তারের কাছে গিয়ে টেস্ট করে জানতে পারে যে সে সম্পূর্ণ সুস্থ ও সক্ষম। তার স্ত্রীয়ের মধ্যে কিছু সমস্যা রয়েছে যা চিকিৎসা করলে সেরে যাবে। ব্যাপারটা খোলসা করে সে মৌ-কে জানায়নি , পাছে সে দুঃখ পায়। সে বলতো সমস্যা একটা রয়েছে দুজনের যা চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব। কিন্তু মৌ ভাবতো সমস্যা বুঝি শুধু রাজীবের রয়েছে , নিজের অক্ষমতা ঢাকতে সে এই সমস্যাকে ভাগ করে নিতে চাইছে। প্রথম প্রথম মৌ এসব নিয়ে কিছু বলতো না। কিন্তু একদিন হঠাৎ রাজীব জানতে পারে তার আদরের মৌ তার সাথে প্রতারণা করছে। সে তার অফিসের এক কলিগের সাথে পরকীয়াতে জড়িয়ে পড়েছে। রাজীব তারপরেও চেষ্টা করেছিলো নিজের বিয়েটাকে বাঁচানোর। কিন্তু ওর স্ত্রী নাছোড়বান্দা ছিল। রাজীবের নামে সে মিথ্যে অভিযোগ আনতে লাগলো। বললো রাজীব নাকি ইম্পোটেন্ট , সে তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে অক্ষম , আর এই মিথ্যে কথাটা সে রটিয়ে দেবে। লোকলজ্জার ভয়ে তাই রাজীব বাধ্য হয় মৌ কে নিঃশর্ত ডিভোর্স দিতে। কিন্তু রাজীব তো জানতো তার মধ্যে কোনো অসুবিধা ছিলোনা। তার স্ত্রী তার ভালোমানুষির সুযোগ নিয়ে তাকে জাস্ট ব্ল্যাকমেইল করেছিল সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য। এরপর রাজীব সেক্সওলজি নিয়ে পড়াশুনা করতে লাগলো। ও প্রথমে একজন জেনারেল মেডিসিনের ডক্টর ছিল। তারপর সেখান থেকে স্ট্রিম চেঞ্জ করে সেক্সওলজি বিভাগে চলে এলো। যাতে ওর মতো আর কোনো স্বামীকে এরকম সমস্যার মুখোমুখি না হতে হয়। ও যদি মেডিসিনের ডাক্তারিটা চালিয়ে যেত তাহলে আজ না জানি কতদূর পৌঁছে যেত। যৌন বিষয়ে কথা বলতে ক'জনই বা আসে। সবাই যে লোক লজ্জার ভয় পায়। কিন্তু তবুও রাজীব সেক্সওলজির ক্লিনিকই চালায়। আশা করছি এবার তোর ওকে নিয়ে সব ডাউট ক্লিয়ার হয়েছে ?"

সব কথা শুনে অনুরিমা মাথা নিচু করে বললো , "আমি জানতাম না ওনার জীবনে এতো কিছু ঘটে গ্যাছে ", মনে মনে অনুরিমার একটু খারাপ লাগলো , রাজীবকে নিয়ে স্বল্প সিমপ্যাথির উদয় হলো।

"তাই তোকে বলি , আগে থেকে কারোর ব্যাপারে কোনো জাজমেন্ট দিয়ে বসিস না। এই যেমন তুই আদিত্যকেও ভুল বুঝলি। সেও কিন্তু শুধু তোর হেল্প করতেই চেয়েছে। ওর সাথে আমার বিয়েটা টেকেনি ঠিকই ফর সাম ফ্যামিলি ইস্যুস, কিন্তু তবুও বলবো মানুষ হিসেবে ও সত্যি অতুলনীয় , এখনও তাই ওকে মনে মনে আমি খুব রেসপেক্ট করি।"

অনুরিমা আর কিচ্ছু বুঝতে চাইছিলো না। ওর মাথা হ্যাং হয়েগেছিলো এতো ভাবনার যানজটে। সে মাথায় হাত চেপে বসেছিলো। সুচরিতা ওকে সময় দিচ্ছিলো নিজের ভাবনাগুলো কে একের পর এক সাজিয়ে সেই যানজটকে মুক্ত করার। অবশেষে অনুরিমা মুখ খুললো। .......

"তাহলে তুই কি অ্যাডভাইস করছিস ?"

"আমি রাজীবকে ভালোমতো চিনি। ও খুব বিশ্বস্ত ছেলে। আমার মনে হয় ওর সবকথা তোর অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলাটাই একমাত্র অপশন। ও যদি এখন তোকে জলে ঝাঁপও দিতে বলে তাহলেও তোর সেটাই করা উচিত। ওর উপর বিশ্বাস করে দেখ , ঠকবি না। "

সেদিনের মতো অনুরিমা ও সুচরিতার মধ্যেকার বাক্যালাপ শেষ হলো। অনুরিমা বাড়ি ফিরে এলো , আর ভাবতে লাগলো তার পরবর্তী পদক্ষেপ কি হওয়া উচিত। অনেক ভাবনা চিন্তা করার পর সে নিজের ফোনটা হাতে নিলো , নিয়ে রাজীবকে কল দিলো। রাজীব ধরলো , ফোনটা।

অনুরিমা বুকে পাথর চাপা দিয়ে রাজীবকে বললো সে সব শর্তে রাজি আছে। রাজীব যা যা বলবে অনুরিমা তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে , তাতে যদি তার স্বামী পূনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে তাহলে তাই ঠিক। রাজীব তাকে আরেকদিন দেখা করতে বললো। জানালো তাদের "রিহার্সাল" খুব শীঘ্রই শুরু করতে হবে নাহলে অনেক দেরী হয়ে যাবে সমীরকে মূলস্রোতে ফেরাতে। অনুরিমা রাজীবকে অনুরোধ করলো এসব যতোটা সম্ভব কম করার চেষ্টা করতে , কারণ সে সমীরের পতিব্রতা স্ত্রী , তাকে এসব কাজ শোভা পায়না। পাঁকে পড়ে সে এসব করতে বাধ্য হচ্ছে। রাজীব ফোনে আশ্বাস দিয়ে বললো কমল তো পাঁকেই ফলে। গায়ে কাদা না মাখলে আগামী দিন পদ্মের ন্যায় সুশোভিত হবে কি করে ! রাজীবের ইঙ্গিত বুঝতে অনুরিমার অসুবিধা হলো না। সে ইতিবাচক সম্মতি দিয়ে ফোন রেখে দিলো।

সেই সপ্তাহের শনিবার রাজীব তাদের আসতে বারণ করে দিলো। জানতো যে এসেও কোনো লাভ নেই। যেই সমাধান সে বার করেছে তার জন্য আগে অনুরিমাকে তৈরী হতে হবে। তার আগে সমীরের সাথে সিটিং করে কি হবে। অনুরিমা কে রাজীব অনুরোধ করলো তাদের পরিকল্পনার সম্পর্কে সমীরকে কিছু না জানাতে , খানিকটা কাউন্সেলিং এর স্বার্থেই। কিন্তু অপরদিকে রাজীব সমীরের সাথে আলাদা ভাবে ফোনে কথা বলে রেখেছিলো ! কবে কোথায় সে অনুরিমার সাথে দেখা করবে সব ডিটেইলস সমীরকে আগাম দেবে বলে আশ্বাস দিয়ে রেখেছিলো !

আসলে রাজীব তখন ডাবল গেম খেলছিলো, তাদের স্বার্থেই। রাজীব অনুরিমাকে যথা সম্ভব সেক্সচুয়ালি ওপেন করার চেষ্টা করছিলো , অপরদিকে সমীরকে কিছুটা হলেও কাকোল্ড অভিজ্ঞতার স্বাধ দেওয়ার চেষ্টা করছিলো। যাতে দুদিকটাই বজায় থাকে। এর মাধ্যমে সে নিজের সেই থিওরির উপরই কাজ করছিলো , যেখানে দুজন দুই বিপরীত প্রান্তে দাঁড়িয়ে , দুজনকে একত্রে মধ্য বিন্দুতে নিয়ে আনতে হবে। এক কথায় শিয়ালদাহ আর নিউ জলপাইগুড়ির ট্রেন দুটিকে ফারাক্কায় নিয়ে আসার ব্যাপার।

আসলে ফ্ল্যাশব্যাকে গেলে বোঝা যাবে যে রাজীবের বাজপাখির নজর থেকে সেদিন সমীর লুকোতে পারেনি। ভিক্টোরিয়ায় সে যতোই ছদ্মবেশে যাক , অনুরিমা না পারলেও রাজীব ঠিক সমীরকে চিনতে পেরেছিলো। তখন কিছু না বললেও পরে ফোন করে রাজীব সেই কথা সমীরকে জানায়। ধরা পড়ে সমীর বাধ্য হয় স্বীকার করতে যে সে ভিক্টোরিয়ায় নিজের স্ত্রী ও রাজীবের উপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে গেছিলো, সন্দেহের বশে নয় , তবে কৌতূহলবশে। রাজীব বুঝতে পারে সমীর তার কাকোল্ড ফ্যান্টাসির তাড়নায় এসব করেছিলো। রাজীব তখন সমীরকে আশ্বাস দ্যায় যে তার গোপনে তার স্ত্রীয়ের সাথে সে কোনো অভিসারে লিপ্ত হবে না। যা করবে , বা যদি কিছু করার থাকে তাহলে সেটা সমীরকে সাক্ষী রেখেই করবে।

এরপর শুরু হয় রাজীবের পরবর্তী পরিকল্পনা। সে অপেক্ষা করতে থাকে অনুরিমার ফোন কলের। এর মাঝে অনুরিমা সুচরিতার কাছে পরামর্শ নিতে যায়। তারপর অবশেষে অনুরিমা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে সে রাজীবের সব কথা মানবে , সমীরকে ঠিক করার স্বার্থে। তাই সে বহুকাঙ্খিত ফোন কলটি করেই ফেলে রাজীবকে এবং বলে সে রাজি , রাজীবের সব কথা মেনে চলতে।
 
  • Love
Reactions: Manali Bose

yours_devil666

Shaitan sabke andar hota hai .
157
140
44
পর্ব ১৪

পরের সপ্তাহের সোমবার রাজীব অনুরিমাকে মানি স্কোয়ারে আসতে বলে, দুপুরবেলায় , যাতে অনুরিমা বাড়ির সব কাজ সেরে নিশ্চিন্তে আসতে পারে। সমীরকেও সে টাইম এন্ড লোকেশন জানিয়ে দ্যায় , সেই মতো সমীরও অফিস থেকে হাফ ডে নিয়ে ন্যায়। দুটো নাগাদ অনুরিমা মানি স্কোয়ারে এসে পৌঁছয়। তার আগে সে তিন্নিকে স্কুল থেকে বাড়ি নিয়ে আসে , যাতে তার শ্বশুর শাশুড়ি কে কষ্ট করতে না হয়।

রাজীব মানি স্কোয়ারে অনুরিমার জন্য অপেক্ষারত ছিল। অনুরিমাকে দেখা মাত্র সে তার পানে এগিয়ে গেলো। অনুরিমাও তখন খেয়াল করলো তাকে। দুজনের মধ্যে প্রথমে ফর্মাল হাই-হ্যালো হলো, তারপর রাজীব অনুরিমাকে অনুরোধ করলো মলের ভেতর যেতে। দুজনে একসাথে প্রবেশ করলো মানি স্কোয়ারে।

অনুরিমা জানতে চাইলো রাজীব কেন তাকে আজ মানি স্কোয়ারে দেখা করতে বললো। রাজীব উত্তর দিলো যে আজ সে প্ল্যান করেছে মানি স্কোয়ারের পিভিআর এ নূন শো দেখার। সোমবারের এই সময় পিভিআর এর হল প্রায় খালিই থাকে , তাই প্রাইভেসী নিয়ে কোনো সমস্যা হবেনা। এখানেই সেই রিহার্সাল শুরু করা যাবে।

রিহার্সালের কথা শুনে অনুরিমার বুক ধড়পড় করতে লাগলো। সে কিছুটা আঁতকে উঠে বললো , "আজকেই ! আজ থেকেই ওসব করতে হবে ?"

কিছুটা বিরক্তিভাব মুখে নিয়ে রাজীব বললো , "তাহলে তোমাকে আজকে ডাকলাম কেন অনুরিমা ? শুধু গল্প করার জন্য ? এইটুকু কমন সেন্স তোমার নেই ?"

রাজীবের বকা খেয়ে অনুরিমার মুখ ভিজে বেড়ালের মতো চুপসে গেলো। সে বেশি উচ্চবাচ্য করতে পারলো না। অনুরিমার অবস্থা দেখে এবার রাজীব একটু নরম গলায় বললো , "দেখো অনুরিমা , ভিক্টোরিয়ার মতো কোনো খোলা জায়গায় এসব করলে তোমার অস্বস্তি বাড়তো বই কমতো না। আর আমার বাড়িতেও তুমি আসতে না , আমি জানি। আসবেই বা কেন , আমি তো তোমার কয়েকদিনের পরিচিত মাত্র। তাই এখনও পর্যন্ত তোমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস না অর্জন করতে পারাটাই স্বাভাবিক। অগত্যা এমন একটি জায়গা আমাদের বেছে নিতে হতো যেখানে আমাদের প্রাইভেসী ডিস্টার্ব করার মতো লোক প্রায় থাকবেনা বললেই চলে। অনেক ভেবেচিন্তে তাই এর থেকে ভালো সময় ও জায়গা আমি আপাতত খুঁজে পাইনি। দুপুরের শো তে , তাও আবার সোমবারে , লোকে এই সময় সিনেমা দেখতে আসেনা বললেই চলে। বিশ্বাস নাহলে হলের ভেতরে গেলেই বুঝতে পারবে। তাও আমি প্রাইম রো তে পেছনের দিকে টিকিট কেটেছি , যাতে স্বল্প সম্ভাবনাও না থাকে তোমার প্রাইভেসী নষ্ট করার। তাছাড়া যে গুটি কয়েকজন থাকবে তাদের চোখ অন্ধকারে সিলভার স্ক্রিনেই থাকবে , তোমার দিকে নয়। তাই তোমার কোনো ভয় নেই।...... এসো আমার সাথে, তুমি নির্দ্বিধায় আমায় বিশ্বাস করতে পারো। "

অনুরিমা আর কোনো অহেতুক প্রশ্ন না করে রাজীবের কথা মতো তার সাথে পিভিআর এর সিনেমা হলের দিকে যেতে লাগলো। রাজীব আগে থেকে অনলাইনে সিট দেখে টিকিট কেটে রেখেছিলো। তাই তারা সোজা সিনেমা হলে প্রবেশ করলো। অনুরিমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিলো নার্ভাসনেসে। তারা টিকিট নাম্বার অনুযায়ী পিছনের দিকে প্রাইম সিটে গিয়ে বসলো। আশানরুপ ভাবেই হল প্রায় ফাঁকা ছিল। কিন্তু সেইসব দিকে অনুরিমার মন ছিল। তার মন তখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলো 'রিহার্সাল' এর জন্য। রিহার্সাল তো নয় যেন অগ্নিপরীক্ষা ছিল তার কাছে।

ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সে রাজীবকে বললো , "দেখুন , বেশি কিছু আমি করতে পারবো না। আমার ব্যাপারটা একটু বুঝুন। আমি যা করছি শুধু আমার স্বামীর জন্য , শুধু তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য। তাই আমার মনে হয় আমাদের ওপর ওপর যা করার করতে হবে , যতোটা না করলেই নয় , অতো গভীরভাবে লিপ্ত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। "

রাজীব কিছুটা ভেবে ঠান্ডা মাথায় বললো , "আমি জানি আপনি যা করছেন নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে করছেন , সমীরবাবুর ভালোর জন্য করছেন। তবে আপনাকে একটা কথা বলি শুনুন, ......... আপনি নিশ্চই মহাভারত পড়েছেন?.... সেখানে সবচেয়ে পবিত্র নারী ছিলেন দ্রৌপদী , যার বস্ত্রহরণের প্রচেষ্টার কারণেই মহাভারতের যুদ্ধ লেগেছিলো। সেই দ্রৌপদীর কয়টি স্বামী ছিল ? .. পাঁচটি ! কি করে তার পাঁচটি স্বামী হলো ? সে স্বয়ংবরে শুধু অর্জুনকে পছন্দ করেছিল। শুধু অর্জুনকেই সে ভালোবাসতো। কিন্তু তার শাশুড়ির কথায় তাকে তার বাকি চার ভাইয়ের সাথেও বিয়ে করতে হয়েছিলো। বিয়েটা তার খানিকটা অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও পরে সে পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলো। পাঁচ ভাইয়ের সাথে সমান ভাবে সে সংসার করেছিল। প্রত্যেকের সাথে ক্রমান্বয়ে এক বছর করে সে দাম্পত্য জীবন কাটাতো। প্রত্যেকের সাথে সে সহবাসে লিপ্ত হয়েছিল এবং প্রত্যেকের সন্তানের জননী হয়েছিল। আমরা সবাই সতী সাবিত্রীর উদাহরণ দিই , কিন্তু আমরা ভুলে যাই যে এই দেশ যতোটা সাবিত্রীর ততোটা দ্রৌপদীরও। তাই কখনো কখনো পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে পরিবর্তন করাই হলো এক আদর্শ নারীর উপযুক্ত লক্ষণ। পাপ পুণ্য এসব আপেক্ষিক ব্যাপার। যদি সেই যুগে একাধিক পুরুষের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েও দ্রৌপদী কোনো পাপ করে না থাকে তাহলে এই যুগে আমার সাথে বসে আপনিও এখন কোনো পাপ করতে যাচ্ছেন না। কোনো কাজের পিছনে যদি যথার্থ কোনো কারণ থাকে তাহলে সেই কাজ যতোই নিকৃষ্ট হোক না কেন , তাকে কখনোই পাপ বলে গণ্য করা হয়না। "

বলতে বলতে হলের আলো নিভে গেলো, সিনেমা শুরু হতে যাবে বলে। লম্বা একটা নিঃশ্বাস ফেলে রাজীব বললো , "আশা করছি , আপনি আমার কথা গুলো বুঝতে পেরেছেন। এবার তাই দয়া করে আমি যা করতে চলেছি তার সাথে সায় দিয়ে একটু সহযোগিতা করুন আমায়।"

এই বলে রাজীব অনুরিমার দিকে হাত বাড়ালো। তাকে আলতো করে স্পর্শ করলো। অনুরিমার বুকের ভেতর যেন এক দমকা হাওয়া বয়ে গেলো। আর চার পাঁচটা দিনের মতোই সেদিন অনুরিমা একটি সুতির শাড়ি পড়েছিল , সাথে হাফ হাতা ব্লাউজ , যা আপামর মধ্যবিত্ত ঘরণীরা পড়ে থাকে। কচি কলাপাতা রঙের ছিল শাড়ি ও ব্লাউজটি। যা তার রূপকে আরো বেশি স্নিগ্ধ ও পবিত্র করে তুলছিলো। কিন্তু এই পবিত্রতা সে কতোক্ষণ আর ধরে রাখতে পারবে , তা ছিল তখন লাখ টাকার প্রশ্ন !

আলতো ছোঁয়ার পর রাজীব কিছু মুহূর্তের মধ্যেই অনুরিমাকে নিজের বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করলো। অনুরিমা হতচকিত হয়েগেলো ! এতো তাড়াতাড়ি রাজীব এতোটা এগিয়ে যাবে সেটা সে কল্পনা করতে পারেনি। সে শুধু মৃদুস্বরে বলে উঠলো , "আস্তে !! এখন তো সবেমাত্র অন্ধকার নেমেছে হলে। এখনও না জানি কত দর্শকের আনাগোনা হতে পারে। "

প্রত্যুত্তরে রাজীব বললো , "তারা কেউ আমাদের দেখতে আসবে না। অন্ধকারে আমাদের খুঁজেও পাবেনা। চারিদিকে চেয়ে দেখো তো অনুরিমা , কাউকে দেখতে পাচ্ছ কিনা ? আমাদের আশে পাশে , বা কেউ আমাদের দিকে চেয়ে আছে কিনা ! "

সরল মনে অনুরিমা মুখ বাড়িয়ে চেয়ে দেখলো। নাহঃ , কেউ নেই আশে পাশে। অন্ধকারে বিশেষ বোঝা না গেলেও, গুটিকয়েক যারা এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসেছে , বেশিরভাগই তারা কাপল , কারণ তারা সব দুটি মাথা এক করে নিজেরদের মধ্যেই মত্ত হয়েছিলো। কেউ দেখছেও না একে অন্যদের দিকে তাকিয়ে। কারোর অতো ইন্টারেস্ট নেই ঘাড় ঘুরিয়ে অপর কোনো কপোত-কপোতির যুগলবন্দী দেখার।

কিন্তু একটি নজর পিছনের সারিতে কোণের দিকে বসা এক ছদ্মবেশী পুরুষের ছিল , যে মূলত এসেই ছিল রাজীবের দ্বারা অনুরিমার প্রশিক্ষণ প্রাপ্তির সাক্ষী হতে। সে আর কেউ নয় , অনুরিমার স্বামী সমীর ! যাকে আগে থেকেই রাজীব বাবু সব জানিয়ে রেখেছিলো। অন্ধকারে অনুরিমার চোখ তাকে খেয়াল করেনি , বা খেয়াল করলেও তার ছদ্মবেশী চেহারার পিছনে আসল লোকটাকে চিনতে পারেনি। সেই লোকটা দেখলো কিভাবে স্বল্পদিনের পরিচয়ে পরিচিত এক ডাক্তার তার স্ত্রী-কে হঠাৎ জড়িয়ে ধরেছে। তার স্ত্রী একটু চেষ্টা করছে ঠিকই সেই বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য কিন্তু স্বল্প চেষ্টায় পর্বতকে তো আর টলানো যায়না !
Joldi kore next update ta den bonnu.
 
  • Love
Reactions: Manali Bose
Top