• If you are trying to reset your account password then don't forget to check spam folder in your mailbox. Also Mark it as "not spam" or you won't be able to click on the link.

Adultery স্বামীর কল্পনা স্ত্রীয়ের যন্ত্রণা

Manali Bose

Active Member
1,461
2,214
159
পর্ব ২৫
নতুন মানুষের আগমন ?
কাকোল্ড ফ্যান্টাসি নিয়ে এবার রিসার্চ করতে শুরু করলো অনুরিমা। একজন পুরুষ বিশেষ করে একজন স্বামী কিভাবে কাকোল্ড-এ পরিণত হয়, সে কি কি চায় এই ফ্যান্টাসি থেকে, পরবর্তী ক্ষেত্রে দাম্পত্য জীবনে এর কি প্রভাব পড়ে সব নিয়ে রীতিমত গবেষণা করতে লাগলো। সে খুঁজে পেলো একটি শব্দ, "Bull ", অর্থাৎ সেই ব্যক্তি যে কাকোল্ড হাসবেন্ডের স্ত্রীকে তার সামনেই সম্ভোগ করে, এবং হাসবেন্ডকে হিউমিলিয়েট করে। আর সেই হাসবেন্ড তাতে আনন্দও পায় !

সবটা বুঝে অনুরিমা সিদ্ধান্ত নিলো যে, সে এবার একটা Bull এর খোঁজ করবে ! আদিত্য বা রাজীব, কাউকেই সে আর bother করবে না। কারণ সবটা গোপনে রাখতে চায় সে, যাতে কাক পক্ষীতেও টের না পায়। তবে কি অনুরিমা অবশেষে মেনে নিলো সমীরের ফ্যান্টাসিটা কে? সমীরকে ঠিক করতে গিয়ে কি সে এক চরম বিপদ ডেকে আনতে যাচ্ছিলো ? সত্যি কি সে একা সবকিছু সামলাতে পারবে ? সে যে এসব ব্যাপারে বড্ড বেশি অনভিজ্ঞ !

তাও সে এই অগ্নিপরীক্ষাটা দেবে বলেই সিদ্ধান্ত নিলো। অনলাইনে খোঁজ করতে লাগলো একটা বেটার সাইট, যেখানে সে Bull এর খোঁজ পাবে। একটি ডেটিং সাইট পেলো। সাহস করে সেখানে নিজের অ্যাকাউন্ট ওপেন করলো। শুরু হলো খোঁজ। কয়েকজনের সাথে কথাবার্তা চলতে লাগলো। প্রথমেই সে নিজের কাহিনীর পসাড় মেলে ধরেনি। আগে একজন বিশস্ত কাউকে পাবে, তারপর ধীরে ধীরে নিজেকে আনফোল্ড করবে, তার আগে নৈব নৈব চঃ! আর এর মধ্যে সমীরের কান্ডকারখানাও সমান ভাবে বিদ্যমান ছিল, যা অনুরিমাকে ঠেলে দিচ্ছিলো মৃত্যুর দিকে , নৈতিকতার মৃত্যুর দিকে। প্রায় প্রতিরাতে সমীরের এরকম স্লিপ অফ টাং হচ্ছিলো, যাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিলো সমীর নিজেকে অন্য কারোর জায়গায় কল্পনা করে নিজের স্ত্রীয়ের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হচ্ছে। অনুরিমা এবিষয়ে রিয়েক্ট করা বন্ধ করে দিয়েছিলো। জানতো, বলে আর কোনো লাভ হবেনা। বারবার সমীর তাকে মিথ্যে আশ্বাস দেবে যে সে নিজেকে শুধরে নেবে, কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন দেখা যাবেনা। তাই অনুরিমা চুপচাপ সবকিছু সহ্য করে নিতে লাগলো। আর সমীর ভাবলো অনুরিমা এতে used to হয়ে গ্যাছে।

অনুরিমা অনলাইনে মনের মতো কাউকে পাচ্ছিলো না যাকে সে বিশ্বাস করে সবকথা বলতে পারবে এবং নিজের কাজে লাগাতে পারবে। সবাই মেয়ে দেখে সুযোগ বুঝে শুধু flirt করছিলো। তাই অনুরিমা সেই সাইটে পেইড সাবস্ক্রিপশন নিলো, প্রিমিয়াম মেম্বারশিপ, যাতে এই কাজের জন্য সে কোনো অথেন্টিক ও পেশাদার কাউকে পেতে পারে। অবশেষে সে একজনকে খুঁজে পেলো, যার user id তে নাম ছিল Bull_7387 , bio তে লেখা ছিল Always at your service .. সাহস করে অনুরিমা add request পাঠালো। কিছুক্ষণ বাদে accept এও হয়েগেলো। শুরু হলো কথা বার্তা। প্রথম দিকে অনুরিমা ছদ্মনাম-ই নিয়েছিলো, user id ছিলো Sweet_Girl_Jinia , bio তে লেখা ছিল Searching for Love .. যেহেতু লোকটার নামেই ছিল Bull, তাই কথা বলার purpose টা দু'পক্ষের কাছেই খুব cliear ছিল প্রথম থেকে। শুধু অপেক্ষা ছিল কে প্রথম কথাটা পাড়বে, এবং কিভাবে ?

Primary introduction, এবং কিছু formal কথাবার্তার পর পেশাগত কারণে Bull-ই প্রথমে সোজাসুজি জিজ্ঞেস করে বসলো, কবে এবং কোথায় ? কোনো ভনিতা না করেই সোজা টপিকে এন্ট্রি ! অনুরিমা চমকে উঠলো ! থতমত খেয়ে রিপ্লাই করলো, কি ??

"কি আবার বুঝতে পাচ্ছো না ? আমার বুল আইডি দেখেই তো ম্যাসেজ করেছো। বুল মানে নিশ্চই জানো !"

"হুমঃ। ...."

"তাহলে জিনিয়া, আসল কথায় আসা যাক এবার। .. তবে আগে বলো এই প্রোফাইলটা কার ? Hot wife এর নাকি cuckold husband এর ? পয়সা দিয়ে প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন নিয়ে আমার প্রোফাইল অবধি যখন পৌঁছেছো, তখন এটা আর যাই হোক টাইম পাস করার জন্য তৈরি কোনো ফেক অ্যাকাউন্ট নয়। তবে অনেক হাসবেন্ড female account খুলে ম্যাসেজ দেয়, তাড়াতাড়ি রিপ্লাই ও অ্যাটেন্শন পাওয়ার জন্য। অনেকে আবার বউকে রাজি করার আগেই আমাদের কাছে পৌঁছয়, তারপর আমাদেরকেই দায়িত্ব দেয় ছলে বলে কৌশলে বউকে পরকীয়াতে ফাঁসিয়ে নিজের ফ্যান্টাসি-কে পরিণতি দিতে। আগেই বলে রাখছি, সেরকম কেস হলে কিন্তু এক্সট্রা চার্জ লাগবে। সহজ সরল বাঙালি সাদাসিধে ঘরোয়া বউদের ফাঁসাতে কিন্তু অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়।"

"আপনারা এসবও করেন ??"

"করতে হয় বইকি। তবে আমরা আজ পর্যন্ত কোনো মেয়েকে এক্সপ্লয়েট করিনি, জোর জবরদস্তি তো দূরের কথা, ইভেন ডেসপারেট হয়ে ওঠা হাসবেন্ড-রা সেটা করতে বললেও আমরা করিনা। তাই পয়সাওসুল গ্যারান্টি বা সাফল্যের হার ১০০ শতাংশ হয়না কখনো। কিন্তু তার ফলে কোনো মানি ব্যাক স্কিম নেই। It's a non-refundable investment .."

"আচ্ছা আপনি যে বারবার আমরা আমরা বলছেন, আপনার কি কোনো টিম আছে, যারা একসাথে এসব করে ??"

"না না, আমরা বলতে আমি আমাদের Bull কমিউনিটির কথা বলছি। এই ওয়েবসাইটে রেজিস্টার্ড সকল bull দের কিছু ethics মেইনটেইন করতে হয়, যাতে সাইটের বিশ্বস্ততা বজায় থাকে পরিষেবা প্রাপকদের কাছে। প্রাইভেসী বজায় রাখার জন্য কোনো বুল-ই নিজের কাস্টমারের ডিটেলস অন্য কোনো বুলের সাথে শেয়ার করেনা। এই ব্যাপারে আপনি একশো শতাংশ গ্যারান্টি নিতে পারেন, তাও আবার লিখিত ভাবে, যদি চান।"

"আচ্ছা , এই করে আপনাদের সংসার চলে যায় ??"

"দেখুন আপনি এটা সীমা অতিরিক্ত প্রশ্ন করলেন।.. তাও আপনাকে বলি, কাস্টমার যা বুকিং ফিস দেয়, তার একটা certain percent ওয়েবসাইট কতৃপক্ষ কমিশন হিসেবে নেয়। বাকিটা বুল বা জিগোলো, যাকে অ্যাপয়েন্ট করা হয়, সে পায়। ওয়েবসাইটের আরো সাইড ইনকাম থাকে বিভিন্ন কন্ডোম ও কন্ট্রাসেপ্টিক অ্যাড ও স্পনসরশিপ থেকে। আমাদের অনেক সময়ে হাসবেন্ড বা ওয়াইফ পার্সোনাল ডিটেক্টিভ হিসেবেও ব্যবহার করে, অর্থাৎ আমরা পরকীয়া করাতে এবং ধরাতে দুটোতেই সাহায্য করি। কিন্তু ওই যে আগেই বললাম, আলাদা আলাদা কাজের জন্য আলাদা আলাদা ফিস চার্জ করি। এছাড়াও বাকি সাইড খরচাও কাস্টমার-দের বহন করতে হয়। বর্তমানে এইসব ফ্যান্টাসির চাহিদা খুব বেড়েছে, তাই পেইড কাস্টমারদের অভাব হয়না। আমরা আউটস্টেশন সার্ভিসও দিয়ে থাকি। কখনো কখনো শহরের বাইরে, বা রাজ্যের বাইরেও যেতে হয়। শুধু তো urban sector এ নয়, ছোট শহর এবং জেলাতেও চাহিদা রয়েছে। তবে ওই যে বললাম সাইড খরচা গুলো আপনাদেরই বহন করতে হয়, যাতায়াত খরচা থেকে হোটেল ভাড়া, খাওয়া দাওয়া সব। এটাই আমাদের পেশা, আর এতে আমার মতো বুল দের ভালোই ইনকাম হয়। শুধু বুল নয়, জিগোলো, ম্যাসাজ এবং প্রাইভেট ডিটেক্টিভ সার্ভিসও দিয়ে থাকি। কিন্তু আমার প্রেফারেন্স হলো থ্রিসাম বা কাকোল্ড সার্ভিস, তাই ইউসার আইডি-টা বুল হিসেবেই বানিয়েছি। এবার আপনি বলুন , আপনি সত্যিই মেয়ে নাকি ছেলে ? আই মিন , হট ওয়াইফ নাকি কাক্কু ? আর আমার থেকে কিধরনের সার্ভিস চান ?"

বুলের কথা শুনে অনুরিমা অনেকক্ষণ চিন্তা করলো। ওদিকে বুল সুইট গার্ল জিনিয়া অনলাইন দেখে তার রিপ্লাই পাওয়ার জন্য ওয়েট করতে লাগলো। তারপর কিছুটা অধৈর্য হয়ে বুল আবার ম্যাসেজ করলো , "কি হলো ? কিছু বলবেন, নাকি আমি চললাম ? দেখুন আমি এখানে টাইমপাস করতে বসিনি, এটা আমার পেশা। আমাকে বিশ্বাসযোগ্য মনে হলে কথা আগে বাড়ান, নাহলে এখানেই কথোপকথনের ইতি করুন। "

এই ম্যাসেজ পাওয়ার পর তড়িঘড়ি অনুরিমা ওরফে জিনিয়া রিপ্লাই করে বসলো, "না না আমি রাজি। "

"তাহলে বিস্তারিত করে বলুন, কে আপনি, আর কিই চান? কথা দিচ্ছি, সবকথা দায়িত্বের সাথে গোপন রাখা হবে, ১০০ শতাংশ গ্যারান্টি। "

অনুরিমা কিছুটা সময় নিয়ে রিপ্লাই দিলো, "আমি সত্যি সত্যিই একজন মেয়ে, তবে জিনিয়া আমার নাম নয়। আমার হাসবেন্ড কাকোল্ড ফ্যান্টাসি মাথায় নিয়ে মত্ত। তাকে কিছুতেই সঠিক পথে নিয়ে আনা যাচ্ছেনা। আমি রাজি না হওয়ায় সে এই ব্যাপারটা নিয়ে না এগোলেও, মনে মনে সে এখনও এটিকে পুষে বেড়াচ্ছে। আমি তাই চাই তার এই ফ্যান্টাসিটা-কে একবারের জন্য বাস্তব রূপ দিতে, তবে সেটা তার অজান্তেই। এমনভাবে, যেন সে বুঝতে না পারে এটা প্রিপ্ল্যান।"

"হুমঃ, আপনার ব্যাপারটা খুব ইন্টারেস্টিং। তাই এভাবে চ্যাটে সব কথা ডিসকাস করা যাবেনা। আমাদের সামনাসামনি একদিন বসতে হবে। ভয় নেই, এমন কোনো জায়গায় ডাকবোনা যেখানে আপনার আসতে অস্বস্তি বোধ হবে। ভর দুপুরে কোনো এক লোকালয়ের রেস্টুরেন্টে দেখা করতে পারি আমরা, যদি আপনার বিশ্বাস থাকে আমার উপর।"

"বিশ্বাস না রেখেও উপায় কি বলুন। দীঘিতে সাঁতার কাঁটতে নেমে কি আর কুমিরের ভয় পেলে হয় !"

"কুমির নয়.... বুল, মানে ষাঁড় !!"

"আচ্ছা .... আপনাকে আমি পরে জানাবো দেখা করার দিনক্ষণ। "

"ঠিক আছে, তবে আপনাকে আগে একটা কাজ করতে হবে। আমার প্রোফাইলে গিয়ে বুক দা বুল অপশনে ক্লিক করবেন। সেখানে ডেট এন্ড টাইম টা মেনশন করতে হবে, কবে আপনি আমার অ্যাপয়েনমেন্ট চান তার জন্য। বুকিং ফিস ওয়ান টাইম, তারপর কাজ বুঝে ফিস চার্জ হবে। চিন্তা করবেন না, সবকিছু খুব গোপন রাখা হবে। প্রাইভেসীর গ্যারান্টি এখানে হানড্রেড পার্সেন্ট। এইসব ফর্মালিটিস কমপ্লিট হয়েগেলে আমাকে বুকিং আইডি-টা শেয়ার করে দেবেন, তাহলেই যেখানে বলবেন সেখানে এই বান্দা হাজির।"

"এসব কি আজকেই করতে হবে ?", কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে অনুরিমা টেক্সট করলো।

"না , তবে আপনার অ্যাড রিকোয়েস্ট-টা যতোক্ষণ আমি অ্যাকসেপ্ট করে রেখেছি ততোক্ষণ আমিই আপনার জন্য অ্যাভেইলেবল থাকবো, অর্থাৎ আমি আপনাকে সার্ভিস দেব। আমার প্রোফাইলটা আগামী ৪৮ ঘন্টা আপনার জন্য লক থাকবে, তাই যা ডিসিশন নেওয়ার এই দুদিনের মধ্যে নিয়ে নেবেন। তারপর কিন্তু আমি আপনার অ্যাড রিকোয়েস্ট ক্যান্সেল করে দেবো।"

"মাত্র ৪৮ ঘন্টা !! তার মধ্যেই জানাতে হবে আমাকে ??"

"সাধারণত আমি ক্লায়েন্টদের ২৪ ঘন্টার বেশি সময় দিই না, কারণ কেউ যদি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিয়ে আমার সাথে contact করে তার মানে ধরে নেওয়া যায় সেই মানুষটি একপ্রকার নিশ্চিত হয়েই আমার সাথে যোগাযোগ করেছে, তাই তার আর ভাবনা চিন্তার বেশি অবকাশ থাকার কথা তো নয়। কিন্তু আপনার ব্যাপারটা একটু কমপ্লিকেটেড দেখছি। আপনি নিজে রাজি নন, কিন্তু নিজের স্বামীর সুপ্ত ইচ্ছে পূরণ করার জন্য যোগাযোগ করেছেন, তাও আবার স্বামীর অজান্তেই। সত্যিই ম্যাডাম, আপনাকে স্যালুট ! আপনার স্বামী খুব লাকি।"

"হুম...."

"যাই হোক, বেশি কথা আর বাড়াচ্ছি না, দুদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিন। যদি রাজি থাকেন, তাহলে যে প্রসিডিউর বললাম, সেটা ফলো করে আমাকে জানাবেন। মাঝে বুকিং করতে কোনো টেকনিক্যাল সমস্যা হলেও বলবেন, আমি সাহায্য করে দেবো। তবে মনে থাকে যেন, আজ বুধবার, বৃহস্পতির পর শুক্রবার হলো লাস্ট ডেট। তারপর কিন্তু অন্য কাউকে আপনাকে খুঁজে নিতে হবে।"

এই বলে Bull_7387 অফলাইন হয়েগেলো। রয়েগেলো অনলাইন Sweet_Girl_Jinia, তবে কিছুক্ষণ। ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলো ওয়েবসাইটের অথেন্টিসিটি-টা, Bull_7387 এর প্রোফাইলটা, এবং বুকিং এর প্রসিডিউর-টা। কিন্তু এখুনি তাড়াহুড়ো করে কিছু করলো না। ভাবনার জন্য সময় নিলো। হাতে তো আছে দুটো দিন এখনো। দেখাই যাক..... ভাগ্য কোন পথে অনুরিমাকে ধাবিত করে।

 

Manali Bose

Active Member
1,461
2,214
159
পর্ব ২৬

সর্বনাশের খেলায় নেমে ধর্ম জাতপাত দেখা বিলাসিতা মাত্র


ওয়েবসাইট থেকে সাইন আউট করে ল্যাপটপ অফ করে অনুরিমা বাড়ির কাজ সারতে লাগলো। মাথায় সবসময়ে সেই এক চিন্তা ঘুরছিলো, সমীর ও তার বিদঘুটে ফ্যান্টাসি ! কি করবে আর কি করবেনা, কিচ্ছু ভেবে পাচ্ছিলো না। সে ঠিক করলো একবার অন্তত সমীরের সাথে খোলাখুলি আলোচনা করবে তার ওই ফ্যান্টাসিটা নিয়ে। একটা অন্তিম চেষ্টা করে দেখবে বিনা যুদ্ধে রাজা ও তার রাজ্যপাট কে জিতে নেওয়ার। এই সংসারটাই তো তার কাছে একটা রাজ্যপাট, যার বর্তমান রাজা হলো বাড়ির একমাত্র ওয়ার্কিং ম্যান সমীর, এবং রানি হলো সে নিজে।

সেই মতো রাতে শুতে যাওয়ার আগে অনুরিমা কথাটা পাড়লো। নাহঃ, অনলাইনে বুলের সাথে কথা বলার ব্যাপারটা নয়, সেটা তো অনুরিমার কাছে লাস্ট অল্টারনেটিভ অপশন। সব দরজা বন্ধ হলে তবেই সেই দরজায় সে কড়া নাড়বে। কিন্তু তার আগে বাকি দরজা গুলো ধাক্কা দিয়ে দেখবে, খোলে কিনা। অনুরিমা ঠিক সেটাই করছিলো।

"সমীর ...."

"বলো ...."

"তুমি কি আদেও সিরিয়াস নিজেকে নিয়ে?"

"মানে?"

"সমীর তুমি কেন বুঝতে পারছো না, তোমার একটা মেয়ে আছে, সাজানো গোছানো সংসার আছে।..... তাও তুমি......."

"তুমি কি বলছো আমি সত্যিই বুঝতে পারছিনা !"

"তাই ?? তুমি কিছুই বুঝতে পারছো না? এই যে প্রতি রাতে নিজেকে অন্য পুরুষ ভেবে আমার সাথে মিলিত হও, এটা কতোটা লজ্জার ও অপমানের আমার কাছে সেটা বুঝতে পারো ??"

"ওহঃ , কাম অন অনু।.... এটা এমন কি ব্যাপার ! আমি তো আগের মতো তোমাকে জোর করছি না কিছু করতে। আমি এখন মনে মনে কি ভাববো সেটাও তুমি ঠিক করে দেবে ?"

"তুমি আমাকে প্রমিস করেছিলে সমীর যে তুমি নিজের এই মানসিক ব্যাধিটা-কে কাটিয়ে উঠবে। "

"তোমার মনে নেই ডক্টর রয় কি বলেছিলেন ! এটা কোনো মানসিক ব্যাধি নয়। ইট'স কোয়াইট ন্যাচারাল। "

"ন্যাচারাল হবে বাকিদের কাছে, আমার কাছে নয়। "

"তাহলে সেটা তোমার সমস্যা, অনুরিমা। "

"তুমি এতোটা ডেসপারেট হয়েগেছো সমীর ! এখন কোনো কিছুতেই তোমার কিচ্ছু যায় আসছে না ?? চক্ষুলজ্জা বলে আর কিচ্ছু অবশিষ্ট নেই ?? আমি যদি সত্যি অন্য কারোর সাথে এসব করি, তাহলে তুমি খুশি হবে তো ??"

"হ্যাঁ, হবো। শুধু হবোই না, তাড়িয়ে তাড়িয়ে তা নিজের চোখে দেখে উপভোগও করবো। হয়েছে ?? "

রাগের মাথায় এসব বলে সমীর পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো। অনুরিমার কাছে এবার সবটা জলের মতো পরিষ্কার হয়েগেলো। সে অবশেষে বুঝে গেলো তার এখন কি করণীয়। নাহঃ! অনেক কষ্ট করেও এই সর্বনাশটা আটকানো গেলো না। তাকে এবার এই অগ্নিপরীক্ষায় নিজের মান-ইজ্জত কে আহুতি দিতেই হবে। সে আর বেশি দেরী না করে তক্ষুনি রাগে অভিমানে ল্যাপটপ অন করে বসলো। সেই ওয়েবসাইটে সাইন ইন করে বুল বুকিং প্রসিডিউর ফলো করতে লাগলো। ফাইনাল পেমেন্টে ক্লিক করার আগে একবার সমীরের দিকে চেয়ে রইলো। সমীর তখন নাক ডেকে ঘুমোচ্ছিলো। তার কোনো দৃক্পাত না দেখে অনুরিমা আরোই ফ্রাস্ট্রেটেড ফীল করতে লাগলো।

"সমীর কি এখন একটুও তার মন বোঝেনা?? ঝগড়া করে উল্টো দিকে মুখ করে ঘুমিয়ে পড়লো ! একবার আমাকে মানানোর চেষ্টা পর্যন্ত করলো না ! ঠিক আছে, তবে তো এর একটা নিস্পত্তি করতেই হবে। তোমাকে আমি ভালোবেসে বাঁধতে চেয়েছিলাম। নিজেও শুধু তোমার হয়ে থাকতে চেয়েছিলাম। তুমিই থাকতে দিলে না। আজ যে সর্বনাশের খেলায় আমি নামতে চলেছি, তার অশুভ সূচনা তুমি করে দিয়েছো। এবার শুধু পরিণামের অপেক্ষা। একদিন এমন আসবে যেদিন তুমি আজকের এই ব্যবহারের জন্য পস্তাবে, মিলিয়ে নিও। "

মনে মনে সমীরকে এই কথা বলে চোখের জল মুছে সে ফাইনাল পেমেন্টে ক্লিক করে দিলো। বুকিং ডান ! Bull_7387 প্রোফাইলে বুকিং আইডি শেয়ার করে দিলো। ঘটনাক্রমে Bull_7387 তখন অনলাইন ছিল। বুকিং কনফার্মেশন পেয়ে তৎক্ষণাৎ সে ম্যাসেজ দিলো।

"হাই। ..... তাহলে ?? এতো তাড়াতাড়ি মন বানিয়ে নিলেন ? অবশ্য বানাবেন নাই বা কেন ! পেইড সাবস্ক্রিপশন যখন আগে থেকে নেওয়া ছিল তার মানে সেখানেই হাফ অফ ইওর মাইন্ড এগ্রিড টু ডু দিস অ্যাডভেঞ্চার। বাকি মনটা কে তৈরি করানো ছিল জাস্ট সময়ের অপেক্ষা।.... আচ্ছা তবে আবার সেই পুরোনো প্রশ্নে ফিরে যাই, কবে এবং কোথায় ??"

আগের বারের মতো এবার আর অনুরিমার বুঝতে অসুবিধা হলোনা, প্রশ্নের প্রসঙ্গটা ঠিক কি ? সে তাই ঝট্পট উত্তর দিয়ে দিলো, "কালকে ঠিক দুপুর ১২টায়, The Tea Trove Cafe, Park Street .."

"কালকেই !! ওয়াহঃ! আপনি তো দেখছি খুব তাড়াহুড়োতে আছেন !"

"হ্যাঁ, যখন একটা স্টেপ নেবো বলে ঠিক করেছি তখন শুভস্য শীঘ্রম। তাছাড়া আজকের পর আমার কাছে সবটা খুব ক্লিয়ার হয়েগেলো, আমার মনে আর কোনো দ্বিধা নেই। আপনি কাল ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় চলে আসবেন, দেরী করবেন না যেন। আমি এখন অফ হলাম, ঘুমোতে যাবো। Good Night....."

ওপার থেকে বুলের কোনো রিপ্লাইয়ের ওয়েট না করেই আমাদের স্যুইট গার্ল জিনিয়া সাইন আউট করে দিলো। অনলাইনে 'জিনিয়া'-কে অফ হয়ে যেতে দেখে বুলও আর কোনো ফর্মাল ম্যাসেজ দিলো না, লাইক 'গুড নাইট', 'কালকে দেখা হচ্ছে' etc etc.. এসব রোড সাইড রোমিও-রা করে, কোনো প্রফেশনাল বুল নয়। এটা তার কাছে পেশা, এবং জিনিয়া ওরফে অনুরিমা হলো তার জাস্ট একজন ক্লায়েন্ট, দ্যাটস ইট !

পরের দিন The Tea Trove এ বসে বুল অপেক্ষা করছিলো তার ক্লায়েন্ট জিনিয়ার জন্য। কিছু সময় পশ্চাদ শাড়ি পরিহীত সাধারণ সাজে অনুরিমা প্রবেশ করলো সেই ক্যাফেতে। সাধারণ সাজেও অনুরিমার মতো অপরূপা-দের সবসময়ে অসাধারণই লাগে, তাই সাধারণ সাজ বলাটা কখনোই উপযুক্ত নয়, বিশেষ ভাবে অনুরিমার ক্ষেত্রে।

অনুরিমাকে দেখে বুল বাবু হাঁ হয়ে গেলো। বিশ্বাস করতে পাচ্ছিলোনা এতো সুন্দরি মেয়ে তার ক্লায়েন্ট, এবং একে সম্ভোগ করার জন্য সে টাকাও পাবে !! উল্টে তো তাকেই টাকা দেওয়া উচিত। বিশ্বাস করতে আরোই কষ্ট হচ্ছিলো এটা ভেবে যে এর স্বামীই নাকি চায় কাকোল্ড হয়ে অন্য পুরুষকে দিয়ে একে চোদাতে !! হায় কপাল ! কতোই রঙ্গ দেখবো দুনিয়ায় ! এরকম মেয়ের স্বামীও নাকি যৌনতায় অতৃপ্ত হয়ে কাকোল্ড হতে চায় ?? কি নেই এই মায়াবী মখমলি নরম শরীরে ! এই ভেবে সে অনুরিমাকে আপাদমস্তক স্ক্যান করতে লাগলো চোখ দিয়ে।

"আপনিই কি মিস্টার বুল?"

"হুঁহঃ, ....... হ্যাঁ হাঁ। .... আমিই সেই অধম যাকে আপনি choose করেছেন, নিজের জন্য..... ", চেতনা ফিরে অনুরিমার বুক থেকে চোখটা সরিয়ে উর্ধপানে তাকিয়ে বুল বাবু বললেন। অনুরিমা চেয়ার টেনে বুলের সামনাসামনি মুখ করে বসলো। কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ থাকলো। এবার বুল-ই ইনিশিয়েট নিলো কথা বলার, "আগে কিছু অর্ডার দেওয়া যাক? ভীষণ খিদে পেয়েছে। আসলে বাড়ি থেকে কিছু খেয়ে আসিনি তো। আপনি এতো দামি একটা ক্যাফেতে আমাকে ডেকেছেন, তাই পেট টা খালি করে এসছি।"

বুলের এই সহজ সরল কথায় অনুরিমা ফিকঃ করে হেসে ফেললো। হয়তো এটাই চেয়েছিলো বুল, might be a part of tricks to ease her. তা সে যাই হোক না কেন, অন্তত কিছু মুহূর্তের জন্য হলেও অনুরিমার মুখে হাসি তো ফুটে ছিল, তার এই বিষাদে ভরে যাওয়া জীবনে অল্প আলো বাতাস তো খেললো। এর জন্য বুল বাবু-কে দশে দশ !

অনুরিমা নিজের মুচকি হাসি চেপে বললো , "ঠিক আছে, তাহলে আগে কিছু অর্ডার-ই দিই। বলুন কি খাবেন?"

বলতে বলতেই ওয়েটার মেনু কার্ড নিয়ে হাজির। সেটা টেবিলে রেখে দিলো। মেনু কার্ডটা হাতে নিয়ে খুলে অনুরিমা জিজ্ঞেস করলো লোকটি-কে সে কি খাবে? মিস্টার বুল বললেন As her wish, যেটা তার ইচ্ছে। মেনু কার্ডটা বুলের দিকে এগিয়ে দিয়ে অনুরিমা বললো, আজকে তিনি অনুরিমার কথায় এখানে এসছেন। হতে পারে তাকে সে বুক করেছে, কিন্তু তবুও সেই মানুষটা অনুরিমার অতিথি। তাই অতিথি নিজেই ডিসাইড করুক, সে কি খাবে। এই কথা বুল বাবাজীবনের মন ছুঁয়ে গেলো। সে মেনু কার্ডটা হাতে নিয়ে প্রথমে অনুরিমাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলো, তারপর বললো, "আমি অনেক কাস্টমারের সাথে ডিল করেছি, কিন্তু আপনার মতো দিল-দরদী মানুষ একটাও দেখিনি। সবাই শুধু নিজের ফায়দা-য় আসে, আর খালি ধান্ধায় থাকে কি করে খরচ কম করা যায়। আর এদিকে আপনি আমাকে এত বড়ো ক্যাফেতে ডাকলেন, তারপর আমাকেই আমার মনের মতো খাবার অর্ডার দিতে বলছেন ! সত্যি ম্যাডাম, আপনার কোনো তুলনা হয়না। একদিকে আপনি স্বামীর ফ্যান্টাসি পূরণের জন্য তাকে না জানিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করেছেন, তার উপর আমাকে এত সম্মান দিচ্ছেন। আপনাকে তাহলে আমি কথা দিচ্ছি, আপনার সমস্যা সমাধান না করে আমি এই কেস-টা ছাড়বো না। আপনি যা করতে বলবেন, আমি ঠিক তাই করবো।.... বাই দা ওয়ে, আমার নাম রাকিব মন্ডল, ছোট্ট করে রকি", এই বলে সে অনুরিমার দিকে আবার হাত বাড়িয়ে দিলো, এবার হ্যান্ডশেকের জন্য।

অনুরিমাও সৌজন্যতার খাতিরে নিজের হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক-টা সারলো। কথাবার্তা শুনে ও হাবভাব দেখে রাকিবকে তার বিশ্বাসযোগ্যই মনে হলো। সেই বিশ্বাসের উপর ভর করে অনুরিমা নিজের আসল পরিচয়টা দিয়ে দিলো, "আমার আসল নাম অনুরিমা, ছোট্ট করে অনু।"

"ওহঃ আচ্ছা।..... ওয়েবসাইটে কেউ নিজের আসল নাম দেয় না, সেটাই খুব স্বাভাবিক। তবে আমার নাম শুনে নিশ্চই বুঝতে পেরেছেন আমি মুসলমান, তাতে আপনার সমস্যা নেই তো?"

"যে সর্বনাশের খেলায় আমি নেমেছি , যেখানে আরো বড়ো পরীক্ষা আমার জন্য অপেক্ষা করে হয়তো বসে রয়েছে, সেখানে সেই খেলার শরিকের জাতপাত, ধর্ম দেখাটা বিলাসিতা মাত্র।"

"সর্বনাশের খেলা কেন বলছেন? আমি আপনার কোনো সর্বনাশ করবো না, প্রতিটি পদক্ষেপেই আপনার থেকে আমি পারমিশন নেবো। "

"সর্বনাশ আপনি করবেন সেটা কখন বললাম? সর্বনাশ তো নিয়তি আমার সাথে করবে। যাই হোক, আপনি আগে খাবারটা অর্ডার দিন। দেখে মনে হচ্ছে আপনার খুব খিদে পেয়ে গ্যাছে।"

"ঠিক বলেছেন। আমি বরঞ্চ এখন খাবারেই আপাতত কন্সেন্ট্রেট করি। হা হা হা হা । ...."

অনেক খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে রাকিব মেনু কার্ডটা দেখলো। খাবারের নাম গুলো খুব খটমট ছিল। তাই সে মেনু কার্ডটা অনুরিমাকে দিয়ে বললো, অনুরিমাই পছন্দমত খাবার অর্ডার দিক। কারণ সে বুঝতে পারছেনা কোনটা কি খাবার?

এই শুনে অনুরিমা জোরে জোরে হাসতে লাগলো। হাসি যেন থামছিলোই না। অনুরিমাকে হাসতে দেখে রাকিব ওর রূপে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। সে অনুরিমার দিকে এক নাগাড়ে চেয়ে ছিল। হাসতে হাসতে অনুরিমা সেটা লক্ষ্য করলো। হাসি থামিয়ে রাকিবকে সে জিজ্ঞেস করলো এরকম একদৃষ্টি তে রাকিবের তার দিকে তাকিয়ে থাকার কারণ? রাকিব সরলভাবে উত্তর দিলো, হাসলে নাকি অনুরিমাকে জান্নাতের হুর মনে হয়। অনুরিমা এবার হালকা হাসলো। প্রশংসা পেতে কারই না ভালো লাগে।

বেশি কিছু না বলে অনুরিমা মেনু কার্ডটা হাতে নিয়ে পছন্দসই খাবার গুলো choose করতে লাগলো। মনে মনে ভাবলো, রাকিব তো মুসলিম, নন-ভেজ এ ওর নিশ্চই কোনো আপত্তি থাকবে না। তাই ওয়েটার-কে ডেকে রাকিবের জন্য সে Turkish Lamb Burger, Crispy Fried Chicken সাথে Virgin Mojito অর্ডার দিলো। সে নিজে সকালে ব্রেকফাস্ট করে এসেছে তাই নিজের জন্য শুধু একটা Caffe Latte নিলো।

ওয়েটার অর্ডার নিয়ে চলে গেলো। তারপর তাদের মধ্যে আসল কথা শুরু হলো। রাকিব জানতে চাইলো পুরো ব্যাপারটা, এবং তাকে ঠিক কি কি করতে হবে সেটা। অনুরিমাও সব খুলে বলতে লাগলো। কথা চলতে লাগলো অনেকক্ষণ। তারই মধ্যে ওয়েটার খাবার নিয়ে চলে এলো। অনুরিমা রাকিবকে আগে খেয়ে নিতে বললো, তারপর বাকি কথা হবে। ক্ষুদার্ত রাকিব লোভনীয় সব বিদেশী খাবার দেখে যেন ঝাঁপিয়ে পড়লো, গপ গপ করে খেতে লাগলো। অনুরিমা ভাবলো এ কোনো আদিম মানব-কে সে ডেকে এনেছে ? তবে এটাও ঠিক আদিম মানবদের মর্দন যথেষ্ট বেদনাদায়ক হয়, যাকে করে তার জন্যও এবং যে দেখবে তার জন্যও। সমীর, be ready for that..... মনে মনে তা জানান দিলো অনুরিমা।

অনুরিমা আস্তে আস্তে নিজের Caffe Latte শেষ করতে লাগলো। টেবিলের অপরদিকে বসা রাকিবও কথা ছেড়ে এখন শুধু খাওয়াতে মনোনিবেশ করেছিলো। কিছুক্ষণের মধ্যে দুজনে নিজ নিজ খাওয়ার শেষ করলো। হাত মুখ ফ্রেশ করে পূনরায় নিজের নিজের কেদারায় এসে স্থাপিত হলো তারা।

- "তাহলে, সেই কথাই রইলো অনুদি। ...."

- "যে শরীরটার সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হবেন তাকে দিদি বলছেন ??"

- "সেটা তো একটা কারণবশত, তাই বলে কি আপনার প্রাপ্য সম্মানটুকু আপনাকে দেবোনা? আপনি তো আর বাজারের রেন্ডি নন, বড়ো বাড়ির বউ। "

- "তাও, বাজারের মেয়ের সাথে পার্থক্য কি রইলো বলুন? আমাকেও তো সেই নিজের শরীরটাকে নিয়ে কমপ্রমাইস করতে হচ্ছে, সেটাও আবার নিজের স্বামীর জন্যই ", এই বলে অনুরিমা কাঁদতে কাঁদতে লাগলো। রাকিব চেয়ার থেকে উঠে অনুরিমার কাছে এলো। কাঁধে হাত রেখে শান্ত্বনা দিয়ে বললো, "কেঁদো না please.... এখন থেকে আপনি শুধু আমার কাস্টমার নন, বন্ধুও। আমি তোমাকে অনু বলে ডাকবো, এবং আপনি নয় তুমি করে ডাকবো। "

চোখের জল মুছে কিছুটা সামলে নিয়ে অনুরিমা বললো, "অনু দি নয়, অনুও নয়, তুমি আমায় অনুরিমা বলে ডাকবে কেমন। হ্যাঁ, আপনির বদলে তুমি করে সম্বোধন করতে পারো, কিন্তু আমায় দিদি বলবে না, নাহলে দিদি ও ভাইয়ের পবিত্র সম্পর্কের মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে। কয়েকদিনের জন্য হলেও তোমার সাথে আমি এক অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হতে চলেছি, সেই কথাটা আমাদের ভুললে চলবে না রাকিব। সত্যি বলতে কি, তোমাকে এতটাও আপন করে নিতে পারছি না যে আমি তোমাকে অনু ডাকে অনুমতি দিতে পারি। তাই তুমি আমাকে আমার পুরো নাম ধরেই ডাকবে, অনুরিমা। "

- "ঠিক আছে, তাহলে তাই হবে, অনুরিমা ", এই বলে রাকিব পূনরায় নিজের চেয়ারে গিয়ে বসলো। পরবর্তী পদক্ষেপের দিনক্ষণ, কার্যপ্রণালী সব ফাইনালাইস করে ওঠার পর ছিল বিদায়ের পালা। দুজনেই সিট্ ছেড়ে উঠলো। একে অপরের সাথে করমর্দন সেরে ক্যাফে থেকে বেরিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যের দিকে রওনা দিলো। যাওয়ার আগে ভদ্রতার খাতিরে রাকিব অনুরিমাকে বললো সে তাকে একটু এগিয়ে দেবে। কিন্তু খুব বিনয়ের সাথে অনুরিমা তা প্রত্যাখ্যান করলো। রাকিবও তাই নিজের সীমা বুঝে বেশি জোরাজুরি করলো না আর।
 

Sasha!

The woman with spirits ✨
Staff member
Divine
Sectional Moderator
12,590
10,506
214
Hello everyone.

We are Happy to present to you The annual story contest of XForum


"The Ultimate Story Contest" (USC).


"Chance to win cash prize up to Rs 8000"
Jaisa ki aap sabko maloom hai abhi pichhle hafte hi humne USC ki announcement ki hai or abhi kuch time pehle Rules and Queries thread bhi open kiya hai or Chit Chat thread toh pehle se hi Hindi section mein khula hai.

Well iske baare mein thoda aapko bata dun ye ek short story contest hai jisme aap kisi bhi prefix ki short story post kar sakte ho, jo minimum 700 words and maximum 7000 words ke bich honi chahiye (Story ke words count karne ke liye is tool ka use kare — Characters Tool) . Isliye main aapko invitation deta hun ki aap is contest mein apne khayaalon ko shabdon kaa roop dekar isme apni stories daalein jisko poora XForum dekhega, Ye ek bahot accha kadam hoga aapke or aapki stories ke liye kyunki USC ki stories ko poore XForum ke readers read karte hain.. Aap XForum ke sarvashreshth lekhakon mein se ek hain. aur aapki kahani bhi bahut acchi chal rahi hai. Isliye hum aapse USC ke liye ek chhoti kahani likhne ka anurodh karte hain. hum jaante hain ki aapke paas samay ki kami hai lekin iske bawajood hum ye bhi jaante hain ki aapke liye kuch bhi asambhav nahi hai.

Aur jo readers likhna nahi chahte woh bhi is contest mein participate kar sakte hain "Best Readers Award" ke liye. Aapko bas karna ye hoga ki contest mein posted stories ko read karke unke upar apne views dene honge.

Winning Writer's ko well deserved Cash Awards milenge, uske alawa aapko apna thread apne section mein sticky karne ka mouka bhi milega taaki aapka thread top par rahe uss dauraan. Isliye aapsab ke liye ye ek behtareen mouka hai XForum ke sabhi readers ke upar apni chhaap chhodne ka or apni reach badhaane kaa.. Ye aap sabhi ke liye ek bahut hi sunehra avsar hai apni kalpanao ko shabdon ka raasta dikha ke yahan pesh karne ka. Isliye aage badhe aur apni kalpanao ko shabdon mein likhkar duniya ko dikha de.

Entry thread 15th February ko open ho chuka matlab aap apni story daalna shuru kar sakte hain or woh thread 5th March 2024 tak open rahega is dauraan aap apni story post kar sakte hain. Isliye aap abhi se apni Kahaani likhna shuru kardein toh aapke liye better rahega.

Aur haan! Kahani ko sirf ek hi post mein post kiya jaana chahiye. Kyunki ye ek short story contest hai jiska matlab hai ki hum kewal chhoti kahaniyon ki ummeed kar rahe hain. Isliye apni kahani ko kayi post / bhaagon mein post karne ki anumati nahi hai. Agar koi bhi issue ho toh aap kisi bhi staff member ko Message kar sakte hain.



Story se related koi doubt hai to iske liye is thread ka use kare — Chit Chat Thread

Kisi bhi story par apna review post karne ke liye is thread ka use kare — Review Thread

Rules check karne ke liye is thread ko dekho — Rules & Queries Thread

Apni story post karne ke liye is thread ka use kare — Entry Thread

Prizes
Position Benifits
Winner 4000 Rupees + Award + 5000 Likes + 30 days sticky Thread (Stories)
1st Runner-Up 1500 Rupees + Award + 3500 Likes + 15 day Sticky thread (Stories)
2nd Runner-UP 1000 Rupees + 2000 Likes + 7 Days Sticky Thread (Stories)
3rd Runner-UP 750 Rupees + 1000 Likes
Best Supporting Reader 750 Rupees + Award + 1000 Likes
Members reporting CnP Stories with Valid Proof 200 Likes for each report



Regards :- XForum Staff
 
  • Like
Reactions: Pradip Mitra

Aditi Roy

New Member
57
41
34
কয়েকটা দিন কেটে গেলো। সমীরের সাহসেই কুলোচ্ছিলোনা এধরণের কথা অনুরিমার সামনে রাখতে। অনুরিমা কি ভাববে ? ওর চোখে সে কতোটা নিচে নেমে যাবে এসব বলার পর ? কিন্তু মন ? মনের খিদে ? সেটা কে সামাল দ্যায় কি করে ? সমীরের তো এখন অফিসেও মন বসছিলো না। বারবার এসব উদ্ভট চিন্তা মাথায় আসে। তার আর ভালো লাগছে না। সে হাঁফিয়ে উঠেছে নিজের মনের সাথে দ্বন্দ্ব করতে করতে।

এরই মধ্যে একদিন হঠাৎ রাস্তায় অনুরিমার সাথে দেখা সুচরিতার। তার সেই পুরোনো রুমমেট যাকে সমীর পছন্দ করতো না। অনুরিমা তিন্নি কে নিয়ে একটু বেড়িয়ে ছিল , বিগ বাজারে টুকিটাকি জিনিস পত্র কিনতে। আর সেখানেই কলেজ বন্ধুর সাথে দেখা।

"কি রে অনু ? চিন্তে পারছিস ? "

"আরে , সুচরিতা তুই ! কেমন আছিস ? কতোদিন পর !"

"তুই তো একটুও চেঞ্জ হোসনি দেখছি। সেই অপরূপা সুন্দরীই রয়েগেছিস। বিয়ের পর তো আর যোগাযোগ রাখিস নি। হ্যা রে , সমীর আছে তো নাকি ছেড়ে দিয়েছিস ওকে , হি হি। "

"ধ্যাৎ , যতো সব বাজে কথা। আমার সব ঠিকই আছে , তোর কথা বল। "

সুচরিতা না জানুক , অনুরিমা তো মনে মনে জানে কেন সে তার কলেজের বন্ধুর সাথে যোগাযোগ রাখেনি। তার স্বামীই রাখতে বারণ করেছিল। আগেই বলেছি সমীর ঠিক পছন্দ করতো না সুচরিতা কে। আর না করার যথেষ্ট কারণও ছিল। ভীষণ বাচাল , যখন তখন আলটপকা মন্তব্য করে দ্যায়। এই যেমন ছোট্ট তিন্নির সামনেই জিজ্ঞেস করে বসলো, ওর মা কি ওর বাবা কে ছেড়ে দিয়েছে ? এটা কোনো কথার কথা হলো !

দুজনের অনেকদিন পর দেখা। তাই একটা ক্যাফেতে ঢুকে বেশ কিছুক্ষণ কথা বার্তা হলো , অল্প-স্বল্প পেট পুজো হলো। সুচরিতা তিন্নি কে একটা চকলেট কিনে দিলো , যদিও অনুরিমা না করছিলো , তবুও সে জানে তার বান্ধবীর কথা সে কলেজ লাইফ থেকেই ফেলতে পারেনা। দুজনের মধ্যে ফোন নম্বরের আদান-প্রদান হলো। তারপর অনুরিমা সুচরিতার সাথে যোগাযোগ রাখার প্রমিস করে তিন্নি কে নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো।

অনুরিমা ভাবছিলো সুচরিতার সাথে দেখা করার কথাটা সে সমীরকে বলবে কি না। কিন্তু সে তো কোনোদিনও তার স্বামীর কাছ থেকে কিচ্ছুটি লুকোয়নি। তাহলে আজ কেন অন্যথা করবে। রাতের বেলা তিন্নি ঘুমোনোর পর অনু সমীরকে আজকের ঘটনাক্রম শুরু থেকে সব বললো। সুচরিতার কথা শুনে সমীর তেমন ভাবে কোনো রিএক্ট করলো না , যা অনুরিমা কে একটু অবাক করলো।

অনুরিমা কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করছিলো সমীর প্রচন্ডভাবে সব ব্যাপারে উদাসীন হয়ে পড়েছে। অনুরিমার সমীরের জন্য চিন্তা হচ্ছিলো। অনুরিমা তাই ফের জিজ্ঞেস করলো সমীর কে সবকিছু ঠিক আছে। সমীর চুপ করে রইলো। কোনো উত্তর দিলো না। অনু এবার সমীর কে জড়িয়ে ধরে আরো আদর করে জিজ্ঞেস করলো , "সমু , কি হয়েছে , বলোই না সোনা !"

"কি করে বলি তোমায় অনু , তুমি আমায় ভুল বুঝবে। "

"তোমার কি আমার উপর এইটুকু বিশ্বাস নেই সোনা , এতোদিনে তুমি আমায় এই চিনলে ? তুমি সৎ ভাবে কিছু বললে আমি কেন তার ভুল ব্যাখ্যা করতে যাবো ?"

সমীর চুপ করে রইলো , তা দেখে অনুরিমা আবার বললো , "এবার দয়া করে বলবে , কি এমন কথা যা তুমি আমায় বলতে পারছো না ?"

"আচ্ছা অনু , তুমি কি খুশি ?"

"মানে ?"

"মানে , তোমার একঘেয়েমি লাগেনা এই জীবনটা নিয়ে ?"

"আচ্ছা সমু , তোমার জীবনে কি অন্য কেউ এসছে ?", আতঙ্কিত হয়ে অনুরিমা জিজ্ঞেস করলো। সচরাচর বিবাহীত মহিলারা নিজের স্বামীকে নিয়ে যেরকম ওভারথিঙ্কিং করে থাকে আর কি, অনুরিমাও তার ব্যাতিক্রম ছিলোনা।

"ধুর , তুমি কি বলোনা , সত্যি ! তোমার মতো এতো সুন্দরী মেয়ে কে ছেড়ে আমি অন্য কোথাও মন দেবো , সেটা ভাবলেও বা কি করে। "

"তাহলে ? ব্যাপারটা কি ?"

"সেটাই তো বলবো বলবো করে বলে উঠতে পারছি না। একটু ধৈর্য ধরে শুনতে হবে। "

"ঠিক আছে , বলো। "

"আচ্ছা আমাদের যে এতো বছর বিয়ে হয়ে গেলো , তোমার একবারও একঘেয়েমী লাগেনা , আমাদের সেক্সউয়াল লাইফ নিয়ে ?"

"সত্যি বলতে এখন এতো বছর পর আমাদের জীবনের প্রায়োরিটি অনেকটা বদলে গ্যাছে , তাই নয় কি ? আমরা আরো বেশি সংসারী হয়েছি। আমাদের মেয়ে হয়েছে , তার দেখভাল করাটা আমাদের কর্তব্য। তাই এখন আর এসব নিয়ে অতো ভাবিনা। তাছাড়া আমরা তো প্রায়ই মিলিত হই। সবকিছু তো ঠিকই আছে। "

"তুমি আসলে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিয়েছো বলেই তোমার অসুবিধা হচ্ছেনা। "

"কেন ? তোমার বুঝি সমস্যা হচ্ছে ? আমি কি তোমাকে সুখী করতে পাচ্ছিনা ?"

"নাহঃ , সেরকম নয়। এখন মনে হচ্ছে আমিই ভুল। আমার এখন তোমার মতো নিজের কাজে , সংসারে মন দেওয়া উচিত। তা না করে আমি কিসব আলটপকা জিনিস ভাবছি। "

"আচ্ছা তুমি কি আমাকে নিয়ে আনস্যাটিসফাইড , বিছানায়?"

"তোমায় কি করে বলি , সমস্যাটা তোমার নয় , আমার। বেশ কয়েকমাস ধরে আমার মাথায় এক অদ্ভুত চিন্তা জেঁকে বসেছে , যেটা আমি কিছুতেই নামাতে পারছি না। "

"কি চিন্তা , বলো। "

"বলে লাভ নেই। তুমি আমাকে ভুল বুঝবে। এটা এক ধরণের বিকট ফ্যান্টাসি। "

"আরে বাবাহঃ, বলেই দেখো না। আমি তো তোমার স্ত্রী নাকি। আমাকে বলবে না তো কাকে বলবে। প্রমিস করছি , আমি কিচ্ছু মাইন্ড করবো না।"

"তুমি কাকোল্ড ফ্যান্টাসির কথা শুনেছো ?"

"কাকোল্ড ফ্যান্টাসি ? নাহঃ তো। তুমি তো জানোই এসব ব্যাপারে আমার নলেজ একটু কম। আমি তো আর সুচরিতার মতো এঁচোড়ে পাকা নই। হি হি। .."

"তোমাকে তাহলে কয়েকটা এরোটিক গল্প পড়তে দিচ্ছি , যা কাকোল্ড ফ্যান্টাসি নিয়ে লেখা। সেগুলো পড়লে তুমি বুঝতে পারবে , আমি কি বলতে চাইছি। কিন্তু একটাই রিকোয়েস্ট , দয়া করে আমাকে ভুল বুঝো না। তোমাকে আমি কোনো ব্যাপারেই কোনো কিছু করতে বাধ্য করবো না। মানুষের চাহিদার কোনো সীমা পরিসীমা নেই , তাই হয়তো এসব খেয়াল আমার মাথায় এসেছে। ভালো না লাগলে , এই ব্যাপারটা ভুলে যেও। মনে কোরো যে এরকম কোনো কথা আমাদের মধ্যে কোনোদিনও হয়নি। ঠিক আছে।.... "

"আচ্ছা বেশ , আমি পড়বো , জানবো তোমার কি এমন ফ্যান্টাসি আছে যা আমাকে বলতে তুমি এতোটা দ্বিধা বোধ করছো। আর ইন কেস যদি ভালো লাগে , তাহলে তোমাকে জানাবোও। কেমন। ...."

সমীর ড্রয়ার থেকে একটা পেনড্রাইভ বের করে দিলো , সেটা অনুরিমার হাতে দিয়ে বললো , "এতে সেই গল্পগুলো রয়েছে। কালকে তিন্নি কে স্কুলে দিয়ে এসে , বাড়ির সব কাজ সেরে ল্যাপটপে কানেক্ট করে সব গুলো পোড়ো। "

"ঠিক আছে। ", এই বলে অনুরিমা সমীরের কাছ থেকে পেনড্রাইভ টা নিয়ে নিজের কাছে রেখে দিলো।

পরের দিন নিয়মমাফিক সমীর অফিসের জন্য বেড়িয়ে গেলো। অনুরিমা তিন্নিকে স্কুলে দিয়ে এলো। ফেরাটা ওর ঠাকুরদা নিয়ে আসে স্কুল থেকে। সেদিন সমীরের আরোই অফিসের কাজে মন বসছিলো না। খুব টেনশন হচ্ছিলো ওর এটা ভেবে যে বাড়ি ফিরে অনুর কোনো রূপটা ওকে ফেস করতে হবে। অনু কি খুব রেগে যাবে এসব দেখে ? সারাটা দিন অনু একবারও ফোন করেনি। রোজ তো এরকম হয়না। ও কি এখন ওইসব সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ গল্পগুলো পড়ছে আর মনে মনে আমার প্রতি ক্ষোভে ফেটে পড়ছে ? নাহলে জল খেতে খেতেও আমি এতো বিষম খাচ্ছি কেন ? জানিনা বাড়ি গিয়ে কি দেখবো ?

এসি ঘরে বসেও সমীর এসব আকাশকুসুম ভেবে নিজের বিপি বাড়াচ্ছে , আর দর দর করে ঘামছে। ওর নিজেরও অনুকে ফোন করার সাহস হচ্ছে না। ও শুধু কাঁপা কাঁপা হাতে অনুকে একটা মেসেজ করলো , "খাওয়া হয়েছে?"

অনু কোনো রিপ্লাই দিলো না , যা যথেষ্ট ছিল সমীরকে একটা মিনি হার্ট অ্যাটাক দেওয়ার জন্য। অবশেষে সমীর ভাবলো , "যা হবে বাড়ি গিয়ে দেখা যাবে। আমি তো শুধু নিজের গভীর সুপ্ত বাসোনাটাই সৎ ভাবে নিজের স্ত্রীয়ের কাছে প্রকাশ করেছি মাত্র। খুব জোড় কি আর হবে , রাগ করবে , অশান্তি করবে। আমি মাথা নিচু করে ওর সব রাগ কে অ্যাবসর্ব করে নেবো। পারলে পা ধরে ক্ষমাও চেয়ে নেবো। কিন্তু এই বিকট ফ্যান্টাসিকে এতো মাস ধরে কাউকে না বলে নিজের ভেতরে রেখে বয়ে নিয়ে চলার থেকে তো মুক্তি পাবো। "
খুব ভালো গল্প।
 

Aditi Roy

New Member
57
41
34
৪ (চার) ----

সুচরিতা অনুর হাত সরিয়ে জিজ্ঞেস করলো , "কি হয়েছে রিমা , আমাকে বল। "

অনুরিমার চোখ ছল ছল করছিলো। সে কাঁদো কাঁদো গলায় বললো , "আমি কিভাবে তোকে বলবো বুঝতে পারছি না রে। আমার খুব লজ্জা করছে। সমীর ইস টোটালি চেঞ্জড নাও। "

"শোন্ রিমা , আমাকে বলা মানে তোর নিজের আয়না কে বলার সমান। কাম অন রিম্স , we used to be best buddies during our college days । তুই কি সব কথা ভুলে গেছিস। আমরা একে অপরের কাছ থেকে কোনো কথা গোপন করতাম না। we shared everything. তাহলে আজ কি হলো তোর ?"

"প্রমিস কর , তুই এই কথা গুলো কাউকে বলবি না। "

"আমি কাকেই বা বলতে যাবো বল। "

"ইদানিং সমীর খুব অদ্ভুত চিন্তা করতে শুরু করেছে। আমি ভাবতেও পারিনি , ও কখনো আমার সম্পর্কে এরকম ভাবনা পোষণ করবে ! "

"কি ভাবছে ? কি ওর ভাবনা ?"

"ওর একটা ফ্যান্টাসি রয়েছে। .."

"কি ?"

অনুরিমা গলার আওয়াজ নিচু করে বললো , "তুই কাকোল্ড সম্পর্কে শুনেছিস ?"

"আঃহ্হ্হঃ। ..", সুচরিতা অবাক হয়ে মুখে হাত দিয়ে বসলো, তারপর বললো , "সিরিয়াসলি ! সমীর সত্যি এখন এসব ভাবছে ?"

অনুরিমা মাথা নিচু করে বসে রইলো। সুচরিতা কিছুটা সেকেন্ড নিজেকে সামলে নিয়ে অনুরিমার হাত ধরে জিজ্ঞেস করলো , "তা তুই কি ভাবছিস ওর এই ফ্যান্টাসিটা কে নিয়ে ?"

"মানে ? তুই বলতে কি চাইছিস ?", অনুরিমা হঠাৎ সুচরিতাকে ঝাঁঝিয়ে কথাটা বললো।

"রিল্যাক্স , এতো উত্তেজিত হোসনা। একটু প্র্যাক্টিক্যাল হও। দেখ এটা তো সত্যি যে সমীরের মাথায় এই কথাটা এসছে , তুই নিজেই সেটা বললি। আর তোর রিঅ্যাকশন দেখে বোঝাই যাচ্ছে যে তুই এসব কথা নিজের কল্পনাতেও আনতে পারিস না। তাই তো ? "

অনুরিমা চুপ করে রইলো। সুচরিতা বললো , "এবার বল , সমীর কি তোকে ফোর্স করছে এসবের জন্য ?"

"নাহঃ , ও এই কথাটা শুধু একবারই তুলেছিল। তারপর আমি এমন অশান্তি করেছি যে দ্বিতীয়বার বলার সাহস পায়নি আর। "

"ব্যাস , তাহলে তো ঝামেলা মিটেই গেলো। "

"কিন্তু , তারপর থেকে ....."

"তারপর থেকে কি ?"

"তারপর থেকে আমাদের সম্পর্কের তার টা কেমন জানি কেটে গ্যাছে মনে হচ্ছে। ও ভয়ে একথা আর তুলছে না ঠিকই , কিন্তু আমি বেশ বুঝতে পারছি , এই ব্যাপারটা ও এখনো নিজের মাথা থেকে নামাতে পারেনি। আর এতে মনে মনে ও অশান্তিতে ভুগছে , আর আমিও। আমাদের মধ্যে এখন বেশ কয়েকদিন ধরে ঠিক মতো কথাও হচ্ছেনা। "

"তাহলে তুই ওর সাথে কথা বল। বলে দ্যাখ ওর ভেতরে এখন কি চলছে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কোনো ব্যাপার নিয়ে টানাটানি চললে সেটা কে ঝুলিয়ে রাখতে নেই। আমাকে তো দেখছিস , আমি ঘর পোড়া গরু। "

সুচরিতার কথা শুনে অনুরিমা ঠিক করলো যে সে আজই নিজের স্বামীর সাথে বসবে , এবং বসে কথা বলে সবকিছু ক্লিয়ার করে নেবে। সেই মতো রাতে অনুরিমা সমীরের কাছে গেলো , এবং ওদের কথোপকথন শুরু হলো।

"কি ভেবেছো ? মাথা থেকে ভূতটা নেমেছে তোমার ?"

"তুমি কিসের কথা বলছো ?"

"বুঝতে পারছো না , তোমার সেই ফ্যান্টাসির কথা বলছি। "


সমীর প্রথমে ভাবলো অনুরিমা কে কি জবাব দেবে সে। তারপর ঠিক করলো যে যা হওয়ার দেখা যাবে , কিন্তু সে নিজের কাছে এবং নিজের স্ত্রীয়ের কাছে সৎ থাকবে। তাই সে বললো , "দেখো অনুরিমা , আমি জানি আমার এসব জিনিস ভাবা অপরাধ। কিন্তু আমি তো শুধু এটা তোমাকেই বলেছি , আর কাউকে তো নয়। আমাদের বিয়ের প্রায় এক দশক হয়ে গেছে। আমরা দুজনেই সংসারের নিত্যকার ঝুট ঝামেলার মধ্যে ফেঁসে আছি। তারপরও যেটুকু সময় পাই, আমি যদি ভুলবশত সে সময়ে তোমায় নিয়ে অন্য কিছু ভেবেও থাকি , তাতে আমি কি খুব বড়ো অপরাধ করে ফেলেছি ?"

"তুমি বুঝতে পারছো না , তোমার এই ভাবাটা কতোটা বিষাক্ত ভাবনা ? এরকম কেউ ভাবে নিজের স্ত্রীকে নিয়ে ? ছিঃ। "

"তুমি কি এখন আমাকে ঘেন্না করতে শুরু করেছো ?"

"করবো না ? নিজেকে কোথায় এনে নামিয়েছো তুমি নিজেই সেটা দেখো , এবং বোঝার চেষ্টা করো। "

"অনু , এটা শুধু আমার একটা ফ্যান্টাসি , সেক্সউয়াল ফ্যান্টাসি। "

"ফ্যান্টাসি মানে তো কল্পনা , আর কল্পনা মানে ভাবনা। তুমি আমাকে অন্য কারোর সাথে ভেবেছো ! এটা কি করে ভাবতে পারো তুমি ? আমি তোমার স্ত্রী সমু। নিষিদ্ধ পল্লীর কোনো পতিতা নই। "

"অনু , তুমি কিন্তু এবার বাড়াবাড়ি করছো ! তুমি এসব কি বলছো ?"

"তাহলে আর কি বলবো , বলো ? তুমি হয়তো মনে মনে চেয়েইছো আমাকে অন্য কারোর সাথে শুতে দেখতে ! নিজের কল্পনাকে বাস্তবে রূপায়ণ হতে দেখতে। একবার ভেবে দেখো সমু , কোনো স্বামী কি এটা চাইতে পারে ? তার উপর তুমি এতো পোসেসিভ স্বামী ! এখন কোথায় গেলো সেইসব পোসেসিভনেস তোমার ? সমু আমার দিকে চেয়ে দেখো , আমি তোমার স্ত্রী , অনুরিমা বসু মল্লিক , এই মল্লিক পরিবারের বউ , সমীর মল্লিকের স্ত্রী। আমি কোনোদিনও নিজের স্বামী ব্যাতিত অন্য কারোর কথা নিজের কল্পনাতেও আনিনি। কলেজ লাইফে প্রথমবার প্রেমে পড়ি , তাও সেটা তোমারই প্রেমে। তুমি আমার প্রথম এবং শেষ প্রেম। তুমি ছাড়া আর অন্য কোনো পুরুষ আমার জীবনে কোনোদিনও আসেনি, আর আসবেও না। এই কথাটা ভালো করে মাথায় ঢুকিয়ে নাও তোমার। "

এই বলে অনুরিমা মুখ ঘুরিয়ে ঘুমোতে চলে গেলো। সেদিন সমীরও কিছু বললো না আর। সেই রাতটাও স্বামী স্ত্রীর মধ্যেকার অমীমাংসিত ঝামেলার সাক্ষী হয়ে থেকে গেলো।

অনুরিমা ঠিক করলো সে সুচরিতার সাথে আবার দেখা করবে , এবং এই বিষয় নিয়ে কথা বলবে। কারণ এই কথা তো সে আর অন্য কাউকে বলতে পারবে না। একমাত্র সুচরিতাই আছে যাকে সে শেয়ার করতে পারবে।

বিকেলে অনুরিমা গেলো সুচরিতার সাথে দেখা করতে নন্দনের কাছে মোহরকুঞ্জে। সুচরিতা একটা কাজে অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে এসছিল। যেমনটা আগে বলেছি ডিভোর্সের পর সুচরিতা এখন স্বাধীন ঝাড়া হাত-পা হয়ে যাওয়া একজন নারী। চাকরির সাথে সাথে সে টুকিটাকি শিল্প-সাহিত্য নিয়েও চর্চা করতে থাকে। যাই হোক , দুই বান্ধবীতে আবার বসলো গল্প করতে।

"কি রে , হঠাৎ করে এতো জরুরি তলব ? আমি যখন দেখা করতে বলি তখন তো নিজের সংসারের হাজার একটা বাহানা দিস। শশুর-শাশুড়ি বাড়িতে থাকবে না , তিন্নির টিউশন আছে , সমীরের এই হয়েছে , ওই হয়েছে , আরো কতো কি। আর এখন ? আমি অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে এসছিলাম , একটা এক্সহিবিশন ছিল। পুরোটা না দেখেই বেরিয়ে এলাম , তোর জন্য , তোকে টাইম দিয়ে রেখেছিলাম বলে। "

"আই এম সরি রে ", এই বলে অনুরিমা মাথা নিচু করে চোখের জলটা মুছে নিলো।

"হেই , কি হয়েছে তোর ? সব ঠিক আছে ? আরে আমি তো জাস্ট এমনি বললাম , কিছু মনে করিসনা প্লিজ। তোর জন্য তো আমার জান হাজির , মাই ডার্লিং !"

"কিচ্ছু ঠিক নেই রে !"

"তুই কি সমীরের সাথে সেই ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলেছিলিস ? আই মিন ওর সেই ফ্যান্টাসি-টা নিয়ে ?"

"হুমঃ। .."

"তা কি হলো , তারপর ?"

"কি আর হবে ?"

"ও কি এখনো চায় এসব করতে ?"

"মুখে কিছু বলছে না , তবে ওর হাব-ভাব দেখে কেন জানিনা আমার সেরকমই কিছু মনে হচ্ছে। "

"তা তুই কি ঠিক করলি ? "

"মানে ?"

"মানে , তুই কি ওর ফ্যান্টাসিটা কে এনকারেজ করবি ?"

"তুই কি পাগল হয়েছিস ? আমি এসব কথা নিজের দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারিনা ! হাও কুড ইউ সে দিস ?"

"দেখ তুই হয়তো ভাবতে পারিস না , বাট অনেকে ভাবে , এবং ইমপ্লিমেন্টও করে। "

"কি বলছিস তুই এসব !"

"ওই জন্যই বলি ডার্লিং , ঘর সংসার থেকে একটু বেরো , বেড়িয়ে দুনিয়াটা কে দেখ। এটা এখন সোশ্যাল মিডিয়ার এক ভার্চুয়াল দুনিয়া। এই সমাজে এখন অনেক কিছু হয় , লোক চক্ষুর আড়ালে। "

"সে যাই হোক না কেন , আমি ওসবের মধ্যে একদম নেই। "

"তা তুই নাই বা থাক, কিন্তু জানতে তো কোনো অপরাধ নেই। "

"তুই হেয়াঁলি না করে , সোজাসুজি বলবি , এক্সাক্টলি কি বলতে চাইছিস। "

"খুব সিম্পল। তোরা একটা সেক্সওলজিস্ট এর সাথে কনসাল্ট কর। দেখ তুই চাসনা এসব করতে , সমীর মনে মনে হয়তো চায় , কিন্তু ভয়ে তোকে খোলাখুলিভাবে বলতে পারছে না। এভাবে মনে মনে দ্বন্দ্ব চললে তো তোদের স্বামী স্ত্রী সম্পর্কের মধ্যে তো ফাটল ধরে যাবে , সেটা নিশ্চই তুই চাইবি না। তোকে একটা ডিসিশন নিতে হবে। হয় তুই সমীরের ফ্যান্টাসিটা কে অ্যাপ্রুভ করে সেটা কে সত্যি করবি , আর নতুবা সমীরকে ওই ফ্যান্টাসির মোহঃ মায়া থেকে সরিয়ে আনবি। আমি জানি তুই সেকেন্ডটাই করার চেষ্টা করবি। প্রথম অপশনটা তোর সামনে রাখা বৃথা। তবে যেটাই হোক না কেন , বোথ অফ ইউ শুড হ্যাভ কনসাল্ট উইথ আ সেক্সওলজিস্ট ফর দিস পারপাস। আমার এক বন্ধু সেক্সওলজিস্ট , নাম ডক্টর রাজীব রায় , আমাদেরই বয়সী। আমি ওর নাম্বার তোকে দিচ্ছি। তুই বললে আমি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে নিতে পারি। "

"রাজীব রায় , ছেলে তো। ওকে কি করে বলবো সব। "

"কাম অন অনুরিমা , সেক্সওলজি বিভাগে তুই দেশে ক'জন মহিলা ডাক্তার কে পাবি বল তো ? আর সে তো তোর পরিচিত নয় , তোরা যাবি নিজেদের সেক্সউয়াল প্রবলেম নিয়ে কথা বলতে , ও ডক্টর , ওর এটাই পেশা , এইসব সমস্যা নিয়ে ডিল করা। সো অতো হিচকিচাস না। "

"কিন্তু সমীর রাজি হবে ? "

"আলবাত হবে। এখন তুই ডমিনেটিং পজিশনে আছিস , আর ও নিজের মরমে মরছে। তুই যদি এখন ওকে চাঁদেও যেতে বলিস , ও তোর সাথে সেখানেও যেতে রাজি হয়ে যাবে। শুধু বলিস না , আমি তোকে ডাক্তারের নম্বরটা দিয়েছি। বলবি তুই ইন্টারনেট থেকে সার্চ করে পেয়েছিস। আমিও রাজীবকে বলে রাখবো যে ও যেন সমীরের সামনে আমার নাম না নেয়। আমি জানি সমীর আমাকে পছন্দ করেনা , সেই কলেজ এর টাইম থেকেই। আমি আসলে ঠিক ওর টাইপের মেয়ে নই , তাই ওর চোখে আমি সবসময়ে একটা বাচাল , উৎশৃঙ্খল মেয়ে ছিলাম , এবং অ্যাম প্রিটি সিওর এখনও ওর ভাবনাটা আমার প্রতি ওরকমই রয়েছে। আসলে এতে আমি সমীরের দোষ দেখিনা, এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মেয়েদের জন্য কিছু গতে বাধা নিয়ম রয়েছে , যেগুলো আমি কোনোদিনই মানিনি। তাই বেশিরভাগ পুরুষেরই চক্ষুশূল আমি , তা সে সমীর হোক বা আমার স্বামী আদিত্য , সরি প্রাক্তন স্বামী। "
Swapping নিয়ে কোন ভালো বাংলা গল্প আছে?
 
Top